বয়ান নাম্বার (৪)***
৫-৪-২০১৯ইং জুমার নামাজের পূর্বে।
স্থান:-বাইতুল আমান জামে মসজিদ.
আলোচক:
হযরতুল আল্লাম শাহ মুফতী আব্দুল ওয়াহীদ কাসেমী দা.বা.।
মুহতামিম: জামিয়া ইমদাদিয়া দারুল উলূম মুসলিম বাজার মাদরাসা মিরপুর-১২ ঢাকা।
الحمد لله الحمد لله نحمده ونستعينه ونستغفره ونؤمن به ونتوكل عليه ونعوذ بالله من شرور انفسنا ومن سيئات اعمالنا من يهده الله فلا مضل له ومن يضلله فلا هادي له ونشهد ان لا اله الا الله وحده لا شريك له ونشهد ان سيدنا وسندنا وحبيبنا ومولانا محمدا عبده ورسوله الذي ارسله بالحق بشيرا ونذيرا و داعيا الى الله باذنه و سراجا منيرا فقد قال الله تعالى في كلامه المجيد والفرقان الحميد اعوذ بالله من الشيطان الرجيم بسم الله الرحمن الرحيم.
(١) من يعمل سوئا يجز به ولا يجد له من دون الله وليا ولا نصيرا.
وقال في موضع اخر
(٢)فكلا اخذنا بذنبه فمنهم من ارسلنا عليه حاصبا ومنهم من اخذته الصيحة ومنهم من خسفنا به الارض ومنهم من اغرقنا وما كان الله ليظلمهم ولكن كانوا انفسهم يظلمون.
وقال رسول الله صلى الله عليه وسلم.
(١)ما مِن قوم ٍيظهرُ فيهم الرطزنا إلَّا أخذوا بالسَّنةِ،
وقال في موضع اخر ولا فحشى الزنا في قوم الا كفر فيهم الموت او كما قال النبي صلى الله تعالى عليه وسلم صدق الله مولانا العظيم وصدق رسوله النبي الكريم ونحن على ذلك لا من الشاهدين والشاكرين والحمد لله رب العالمين.
اللهم صل على محمد وعلى ال محمد كما صليت على ابراهيم وعلى ال ابراهيم انك حميد مجيد اللهم بارك على محمد وعلى ال محمد كما باركت على ابراهيم وعلى ال ابراهيم انك حميد مجيد سبحانك لا علم لنا الا ما علمتنا انك انت العليم الحكيم سبحان الله وبحمده سبحان الله العظيم لا اله الا الله الحليم الكريم سبحان الله رب العرش العظيم
আলহামদুলিল্লাহ ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ
আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের লাখো কোটি শুকর যিনি আমাদেরকে রজব মাসের একেবারে শেষ প্রান্তে আল্লার ঘর মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করার জন্য আসার বাসার তৌফিক দান করেছেন সেজন্য আল্লাহ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে শুকরিয়া আদায় করি আলহামদুলিল্লাহ।
আমরা এত বড় ভাগ্যবান যে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে ওনার প্রিয় হাবিব মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে লাইলাতুল মেরাজে উনার নিজের কাছে ডেকে নিয়ে সমস্ত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামদের উপরে যেভাবে সম্মানিত করেছেন পাশাপাশি উনার উসিলায় আমাদেরকেও তথা ওনার উম্মতদেরকেও সম্মানের এতো উঁচু পর্যায়ে পৌঁছেছেন যদি আমরা মত পর্যন্ত সেজদায় পড়ে শুকরিয়া আদায় করতে চাই তবু আদায় করে শেষ করা যাবেনা।
আমরা শুনেছি এবং হাদীস শরীফের মধ্যে অসংখ্য হাদিস দ্বারা এটা প্রমাণিত যে মে’রাজে আল্লাহ তা’আলা প্রথমে এই উম্মতের জন্য হাদিয়া, উপঢৌকন হিসেবে উনার প্রিয় হাবিবকে পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছিলেন ।
(বড় আজিব মাসআলা হলো…প্রথম আসমান থেকে সপ্তম আসমান পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা উনার আম্বিয়াদের (আ:) দিয়ে যেভাবে সাজিয়ে রেখেছেন আরে সুবহানাল্লাহ।) হযরত মূসা আ:কে তো আল্লাহ তায়ালা প্রথম আসমানে রাখতে পারতেন রেখেছেন উপরের দিকে ইব্রাহিম আ: এর নিচে (আল্লাহু আকবার) কারন…..
নামাজের হাদিয়া নিয়ে নবীজি যখন ফিরে আসবেন মুসা আঃ যদি প্রথম আসমানে থাকতেন তাহলে রাসুলের অনেক কষ্ট হতো তাই মাঝামাঝি জায়গায় রেখেছেন যেন আল্লাহতালার কাছে যেতে আসতে বেশি কষ্ট না হয় আবার যেন উদ্দেশ্যও পূরণ হয়।
পথিমধ্যে হযরত মুসা আঃ জিজ্ঞাসা করেছেন. আপনার উম্মতকে আল্লাহ কি দিয়েছেন?
নবীজী বলেন আমার উম্মতকে আল্লাহ তায়ালা ৫০ ওয়াক্ত নামাজ দান করেছেন মুসা আ: বলেন আমি আমার উম্মতকে দেখেছি তাদের দ্বারা আমি পরীক্ষিত এটা আপনার উম্মত পারবে না।
মূসা আঃ এর মাধ্যমে এই ঘটনা কেন ঘটলো আল্লাহ তা’আলা তো প্রথমেই করতে পারতেন?
জবাব:-আমাদের বুঝানোর জন্য আমাদের অনুধাবনের জন্য যে আল্লাহ আমাদের উপরে কত বড় নেয়ামত দান করেছেন!
فبأي آلاء ربكما تكذبان
অর্থ হে জ্বিন আর মানব সম্প্রদায় তোমরা আল্লাহর কোন নেয়ামতকে অস্বীকার করতে পারো?
এ আয়াতে কারিমাটা হল কালামুল্লাহ এর অংশ।
কালামুল্লাহ(كلام الله)কাকে বলা হয়?
মহাক্বিকিনে কেরাম কালাম শব্দের ব্যাখ্যা করেছেন
ما يخرج من قلبه ما يخرج من صدره
কালাম বলা হয় ওই কথাকে যা মানুষের অন্তরের কথাটা যা মুখ দিয়ে বের হয়।
বিসমিল্লাহ সূরা নাস পর্যন্ত সবকিছুই কালামুল্লাহ সব আল্লাহর কথা আল্লাহ পাকের মুখ দিয়ে একথা বের হয়েছে।
কেউ যদি বলে আল্লাহর কি মুখ আছে.?
জবাব:- হ্যাঁ অবশ্যই আছে।
দলিল..
১, কুরআনে তো আল্লাহ পাকের হাতের কথাও রয়েছে..
يد الله فوق ايديهم
২,
وهو السميع البصير
অর্থ:- তিনি শোনেন এবং দেখেন।
শোনা আর দেখার জন্য কান ও চোখের প্রয়োজন। তবে ليس كمثله شيء
👉আল্লাহর রাসূল সা: এর চোখ,কান, মাথা চুল এবং সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বর্ণনা তো এসেছে তাহলে আল্লাহ তায়ালার অঙ্গ প্রত্যঙ্গের বর্ণনা কেমন সেগুলো একটু বলুন?
১ম জবাব:-
ليس كمثله شيء
সেগুলা আমাদের মত নয়।সেগুলো কেমন তা একমাত্র আল্লাহ তা’আলাই ভালো জানেন।
২য় জবাব:-
ما لا عين رات ولا اذن سمعت ولا خطر على قلبي بشر.
আল্লাহ তালার নেয়ামতের বর্ণনা যদি এমন হয় তাহলে আল্লাহ তায়ালার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বর্ণনা কে করবে আর কিভাবে দিবে?
(আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার)
৩য় জবাব:-রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লামের ব্যাপারে কবিরা একথা বলেছেন যে
بلغ العُلا بكمالـــــــهِ كشف الدُجى بجمالـهِ حَسُنت جميعُ خصالهِ صَلُّوا عليه و آلــــــهِ
দুনিয়ার কবিরা বলেছে আল্লাহ পাক তাঁর রাসূলকে যে মর্যাদা দিয়েছেন সে বর্ণনা দেওয়া কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়।
আল্লাহর রাসূলের মর্যাদার বর্ণনা যদি কোন মানুষের পক্ষে দেওয়া সম্ভব না হয় তাহলে আল্লাহ পাকের বর্ণনা মানুষ কিভাবে দিবে!?এই শক্তি তো কারোর নাই।
সেই মহান আল্লাহ তাআলা তার হাবিবের মাধ্যমে যে উপঢৌকন যে হাদিয়া এই উম্মতকে দিয়েছেন উনি প্রথমেই দিতে পারতেন কিন্তু বারবার নিয়েছেন কমিয়েছেন আবার নিয়েছেন আবার কমিয়েছেন আমাদের উপলব্ধিতে আসার জন্য।
আর আমার আপনার অবস্থা আল্লাহ তায়ালা জানেন..
আরে ভাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজির সংখ্যা কত কয়জন আসে পাঁচ ওয়াক্তে? সাপ্তাহিক নামাজির সংখ্যা কত,বাৎসরিক নামাজির সংখ্যা কতো বলেন!!?
আচ্ছা যদি আমাদের জন্য পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হতো?
لايكلف الله نفسا الا وسعها لها ما كسبت وعليها ما اكتسبت.
আল্লাহ বলেন আমি আমার বান্দার সাধ্যের বাহিরে কোন কিছু চাপিয়ে দেইনি।
আল্লাহ তাআলা তো ارحم الراحمين তিনি তো الغفور الرحيم আল্লাহ তো ستار العيوب
ٹوٹے رشتا وہ جوڑ دیتا بات رپے جو چھوڑ دیتا ہی
ان کے لطف و کرم کا کیا کہنا ہزاروں مانگو کڑور دتا ہے
এক বুজুর্গ বলেন আল্লাহ তো ওই যাত যিনি কারো সম্পর্ক যদি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তিনি সেটাকে জোড়ে দেন
উনার মেহেরবানির কথা কি আর বলবো দুনিয়াতে কোন সন্তান বাবার কাছে যতটুকু চায় বাবা ততটুকুই দেয় কিন্তু তিনি এমন এক মহান সত্তা তার কাছে যখন কোন বান্দা কোন কিছু চায় এক চায় তো আল্লাহ তাকে একের বিনিময়ে কোটি দান করেন।
لطف سجن دم بدم قہر سجن گاہ گاہ
اے بھے سجن واہ واہ وے بھے سجن واہ واہ
এক বুজুর্গ বলেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আল্লাহ আমাদেরকে যখন যে অবস্থায় রাখেন সেটাই আমাদের জন্য মঙ্গল।(الله اکبر الله اکبر)
ও আমার ভাইয়েরা!
দুনিয়ার সাধারণ জিনিস নষ্ট হলে যদি সেটা বেকার না হয় নষ্ট না হয়
আমি আপনি পানি পান করে রাস্তায় বোতল ফেলে দিলাম টোকাইরা যদি সেই বোতলটাকে নিয়ে ভাঙ্গাড়ির দোকানে বিক্রি করার পরে তা দিয়ে যদি আবার নতুন কিছু বানাতে পারে সাধারন একটা প্লাস্টিকের বোতল যদি বেকার না হয়
আল্লাহ তাআলার কোন বান্দা যদি যৌবন কাল থেকে ইবাদাত বন্দেগী করে তাহলে সেই ইবাদাতের মর্যাদা হল
در جوانی توبہ کردن شیوائے پیغمبریست
একজন নবী তাওবা করলে যে সাওয়াব আর মর্যাদা অর্জন হয় একজন যুবক গুনাহ করে তওবা করলে আল্লাহ তা’আলা তাকেও সেই সাওয়াব আর মর্যাদা দান করে।
من بكى من خشيه الله حرم الله عليه النار
আল্লাহ রসুল বলেছেন আল্লাহর কোন বান্দা যখন আল্লাহর ভয়ে কাঁদে এবং তার চোখ দিয়ে যখন পানি বের হয় তখন আল্লাহ তার জন্য জাহান্নামের আগুনকে হারাম করে দেন।
এবং আল্লাহ তা’আলা বলেন ও আমার বান্দারা তোমরা যেভাবে যৌবনে সুন্দর করে ইবাদাত করেছ কোন চিন্তা করার কারন নাই দুনিয়ার সাধারণ একটা প্লাস্টিক বোতল যদি বেকার না হয় তাহলে তুমি ঈমানদার হয়ে তোমার দিলের মধ্যে যখন কালেমা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ আছে যৌবনে সবকিছু ছেড়ে দিয়ে শয়তান তোমাকে দিয়ে কোন একটা কিছু করাতে চেয়েছে সবকিছুকে তুমি ত্যাগ করে আমি আল্লাহর পছন্দকে তুমি প্রাধান্য দিয়ে যৌবনে যখন গুনাহের জন্য কেঁদে কেঁদে আমি আল্লাহর কাছে তওবা করছ বৃদ্ধ হওয়ার কারণে আগের মত তাহাজ্জুদ, আওয়াবীন, ইসরাক, চাশত, জিকির, তিলাওয়াত করতে পারো না..
(لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنْسَانَ فِي أَحْسَنِ تَقْوِيمٍ
ثُمَّ رَدَدْنَاهُ أَسْفَلَ سَافِلِينَ
তোমাকে তো আমি বানিয়েছি তোমার অঙ্গ প্রতঙ্গ সম্পর্কে আমি ভালোভাবে জানি) তাই বৃদ্ধকালে তুমি যদি না করতে পারো তাহলে বৃদ্ধ বয়সেও সেটাকে অমি বৃথা যেতে দিবো না।
আল্লাহ তায়ালা সূরা তিনের মধ্যে বলেছেন… ثُمَّ رَدَدْنَاهُ أَسْفَلَ سَافِلِينَ
تفسير البغوي — البغوي (٥١٦ هـ)
এর মধ্যে এসেছে…
قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: هُمْ نَفَرٌ رُدُّوا إِلَى أَرْذَلِ الْعُمُرِ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ ﷺ، فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى عُذْرَهُمْ. وَأَخْبَرَ أَنَّ لَهُمْ أَجْرَهُمُ الَّذِي عَمِلُوا قَبْلَ أَنْ تَذْهَبَ عُقُولُهُمْ(٤) .
قَالَ عِكْرِمَةُ: لَمْ يَضُرَّ هَذَا الشَّيْخَ [كَبِرُهُ](٥) إِذْ خَتَمَ اللَّهُ لَهُ بِأَحْسَنِ مَا كَانَ يَعْمَلُ(٦) .
وَرَوَى عَاصِمُ الْأَحْوَلُ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: “إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ” قَالَ: “إِلَّا الذين [آمنوا] “(٧) قرؤا الْقُرْآنَ، وَقَالَ: مَنْ قَرَأَ الْقُرْآنَ لَمْ يُرَدُّ إِلَى أَرْذَلِ الْعُمُرِ(٨) ﴿فَلَهُمْ أَجْرٌ غَيْرُ مَمْنُونٍ﴾ غَيْرُ مَقْطُوعٍ، لِأَنَّهُ يُكْتَبُ لَهُ كَصَالِحِ مَا كَانَ يَعْمَلُ. قَالَ الضَّحَّاكُ: أَجْرٌ بِغَيْرِ عَمَلٍ، ثُمَّ قَالَ: إِلْزَامًا لِلْحُجَّةِ:
বৃদ্ধকালে বিছানায় শুইয়ে শুইয়েও আমি আল্লাহ তোমাকে সে সকল আমলের সওয়াব দান করে দিব।