বয়ান নাম্বার (১)***
২৪-১০২০১৯ বৃহস্পতিবার।
আলোচক:
হযরতুল আল্লাম শাহ মুফতী আব্দুল ওয়াহীদ কাসেমী দা.বা.।
মুহতামিম: জামিয়া ইমদাদিয়া দারুল উলূম মুসলিম বাজার মাদরাসা মিরপুর-১২ ঢাকা।
স্থান:- ঢালকা নগর খানকা।
اعوذ بالله من الشيطان الرجيم
وَلَوۡلَا فَضۡلُ ٱللَّهِ عَلَیۡكُمۡ وَرَحۡمَتُهُۥ لَٱتَّبَعۡتُمُ ٱلشَّیۡطَـٰنَ إِلَّا قَلِیلࣰا
وقال فى موضع آخر
وَلَوۡلَا فَضۡلُ ٱللَّهِ عَلَیۡكُمۡ وَرَحۡمَتُهُۥ مَا زَكَىٰ مِنكُم مِّنۡ أَحَدٍ أَبَدࣰا.
আমরা এমন এক জায়গায় রয়েছি আমাদের হযরতজির ব্যাপারে শাইখুল হাদিস হাবিবুর রহমান সাহেব দা: বা: বলেছেন।
আমি হযরযির এক আদনা মুরিদ হিসাবে বলি… যেটা আমার এহসাস।
এলম দিয়ে ইবাদত দিয়ে কেউ তার আখেরকে নিরাপদ রাখতে পারবে এটার কোন দলিল নেই।কোন দলিল নেই। কারন,
(এক) হাজার বছর ইবাদত করেছে ইবলিশ যার ব্যাপারে আল্লাহ বলেছেনঃ
قال فاخرج منها فانك رجيم
وان عليك لعنتي الى يوم الدين
ইবলিশ কিয়ামত পর্যন্তের জন্য মালউন হয়েছে। ইবাদত এমন কোন জায়গা নেই যেখানে ইবলিশের সেজদা ছিলো না।
(দুই)
বালআম ইবনে বাউরার ব্যাপারে আয়াত নাযিল হয়েছে  ৩০০ বছর পর্যন্ত ইবাদত করেছে আয়াত নাযিল হয়েছে আল্লাহ পাক বলেছেন لو شئنا لرفعناه بها ولكنه اخلد الى الارض واتبع هواه
হুজুর বলেছেন আসলে এখানে আমাদের কথা বলা না এখানে আমদের হযরতজি কথা বলবেন।
👉আমরা কি পেলাম হযরতজি থেকে!? কি পেলাম?
সৈয়দ সুলাইমান নাদবিয়া আলাইহির রহমাহ উনাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল
حضرت آپ جیسی اتنی بڑے عالم حکیم الامت تھانوی کے یہاں؟ آپ اتنی بڑے علامہ؟
হযরতজি যে কথা বলেছিলেন যে
بھائی حکیم الامت کی یہاں آنے کے بعد مجھے اپنی جہالت کی بارے میں علم ہوا
হাকিমুল উম্মাতের কাছে আসার পরে আমার মূর্খতার এলেম হয়েছে ।
যদি হাজার বার কসম খেয়ে বলি..
যদি হাজার বার কসম খেয়ে বলি..
হানেছ হবোনা ইনশাআল্লাহ ।
হযরতজির এখানে আসার পরেও আমাদের-আমার ব্যক্তিগত আমার হাজারো লক্ষ্য জাহালত প্রকাশ পাচ্ছে হার কদমে কদমে হযরতজি এত আন্তরিকতার সাথে এতো দরদের সাথে আমাদেরকে ইসলাহ করছেন ।

আমরা যাব কোথায় আমাদের যাওয়ার জায়গা কোথায় ?
যদি কাউকে প্রশ্ন করা হয় আসমান থেকে পানি কে নাযিল করেন?
জবাব তো হবে আল্লাহ তাআলা নাযিল করেন।
কিন্তু মাধ্যম কি? আকাশের মেঘ।
যদি প্রশ্ন করা হয় সন্তান কে দান করেন? উত্তর তো হবে আল্লাহ দান করেন ।
কিন্তু মাধ্যম কি ? মাধ্যম তো হলো পিতা-মাতা।
যদি প্রশ্ন করা হয় গুনাহ থেকে বাঁচার আল্লাহকে ভয় করার তৌফিক কে দেন? উত্তর তো হবে আল্লাহ দেন ।
যদি বলা হয় মাধ্যম কে ?
মাধ্যম তো হলো শাইখ (মাশাআল্লাহ মাশাআল্লাহ) মাধ্যম তো শাইখ।

মাঝে মধ্যে মনে হয়
دور بیٹھا کوئی دعائیں دیتا ہے میں ڈوبتا ہوں سمندر اچھال دیتا ہے
হার কদমে কদমে মনে হয় হযরতজির দোয়া আমাদের শামিলে হাল।
আমাদের মুফতি শহিদুল ইসলাম সাহেবকে বলেছিলাম…আজ থেকে সাত বছর আগে তখন আমার ছেলের অপারেশন হয়েছিল হাড়ের অপারেশন হয়েছিল এক বছর বয়সে সেই ব্যাঙ্গালোরে অপারেশন হয়েছিল তখন আমার যে ইহসাস ছিল আমার মনে হয়েছে হযরতজির কারামত আমাকে বিদেশে বসে দেখার তৌফিক হয়েছে।

সেই ব্যাঙ্গালোরের জমিনে বাংলাদেশের ডাক্তাররা বলেছিল যে ফিফটি ফিফটি চান্স ফিফটি ফিফটি।
আমি হযরতজির সাথে পরামর্শ করেছি হযরত জি বলেছিলেন…ভাই জলদি নিয়ে যাও জলদি নিয়ে যাবে এক মুহূর্ত দেরি করবে না ওখানে নিয়ে যাও।

যখন অপারেশন হবে অপারেশনের আগে আমি তো বাবা অপারেশনের আগে হযরতজির কাছে দোয়ার জন্য ফোন করেছি হযরত তখন খাস কামরায় ছিলেন।হযরতজি বলেন ভাই তুমি বাবা হয়ে তুমি যদি এমন হচ্ছ তোমার আহলিয়া কি করবে তুমি স্বাভাবিক হও।

শাইখুল হাদিস সাহেব হযরতজির সম্পর্কে যে কথা বলেছেন।
হযরতজি কখনো একথা বলেন না যে আমি তোমার জন্য দোয়া করেছি। এটা বলেন না।
বলেন যে ভাই তোমার জন্য আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আমাদের (আলহামদুলিল্লাহ) দোয়া করার তৌফিক হয়েছে।
হযরতজির এ কথা বলার পরে আমার মনে হল যে আমার দিল থেকে একটি পাহাড় নেমে গেল।
অপারেশন হলো ৫ ঘন্টা যেখানে বাংলাদেশে ডাক্তার বলেছিল ফিফটি ফিফটি চান্স ডাক্তার বলেছে অপারেশনের পরে
ہم نے زندگی میں بہت آپریشن کیا ہے لیکن اس آپریشن کے بعد ہمیں پتہ ہی نہیں چلا ہم نے کیا؟
তখন আমার মনে হয়েছে
دور بیٹھا کوئی دعائیں دیتا ہے میں ڈوبتا ہوں سمندر اچھال دیتا ہے
তাহলে আমার হযরতজি দা:বা: এর খাস তাওয়াজ্জু এবং খাস দোয়া।
আল্লাহ তাআলা আমাদের যে কথায় এনেছেন! কোথায় এনেছেন!!
এবাদত করে এলেম দিয়ে আখের কারোর নিরাপদ হতেই পারে না বুখারীর ভিতরে যে রেওয়াতে এসেছে
هم الجلساء لا يشقى جليسهم
এটার ব্যাখ্যায় হযরত ইবনে হাজার আসকলানি রহ: লিখেছেন
ان جليسهم يندرج معهم في جميع ما فضل الله عليهم اكراما لهم
যে আল্লাতালা আহলুল্লাদেরকে যা কিছু দান করেন এটার থেকে উনাদের সাথে যারা থাকেন তারা মাহরুম হন না। আমাদের হযরতজি দামাত বারাকাতুহুমের দ্বিতীয় জামাতা যিনি আমাদের জামিয়া হাকিমুল উম্মাতের ভাইস প্রিন্সিপাল উনি যে কথা বলেছেন… (আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার)।

মা যত খাবে তার বাচ্চা তত দুধ পায়। এটা বড়দের কথা।
(আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার) যে আসলে আমাদের তো কিছু নেই হযরতজি দা: বা: এর উপরে আল্লাহ তায়ালার যে ফজল ও করম নাজিল হয় এটার ওসিলায় আল্লাহ তায়ালা আমাদের পেটও ভরে দেন।আমাদের দিল তো ভরে দেন।
আমাদের তো কিছু নেই কিন্তু মনে হয় যখন প্রতিমাসিক এস্তেমায় বা যখনি আমরা খালি ভান্ড নিয়ে এখানে আসি যাওয়ার পরে মনে হয় পুরা ভান্ডটা উপচে পড়ে যাচ্ছে। এটা তো
هم الجلساء لا يشقى جليسهم
বালআম ইবনে বাউরার আখের কি হবে এটা সে বলতে পারে নাই কিন্তু আল্লাহ তাআলা আহলুল্লার সহবাতের আখের যে নেয়ামত ইমাম বুখারি আলাইহির রাহমা তো রেওয়ায়াত নকল করে দিয়েছেন
هم الجلساء لا يشقى جليسهم
আহলুল্লার সহবত যারা উঠাবে তারা কোনদিন মাহরুম হবে না ইনশাআল্লাহ।
এটার ধারাবাহিকতায় ইমাম মালেক আলাইহির রহমাহ বলে গিয়েছেন
لن يصلح اخر هذه الامة الا بما صلح باولها
এই উম্মতের শুরুটা যেটার দ্বারা হয়েছে ইসলা শুরুতে যে ধারাই হয়েছে উম্মতের শেষ তবকার এসলা ওই ধারাতেই হবে।

এই উম্মতের শুরু ধারা সাহাবায়ে কেরাম রা: উনাদের জন্য সাহাবী ছাড়া অন্য কোন শব্দ যদি ডিকশনারিতে থাকতো তাহলে আল্লাহ তায়ালা উনাদের জন্য অন্য শব্দই নির্বাচিত করতেন কিন্তু এমন এক শব্দ আল্লাহ তায়ালা নির্বাচন করেছেন সাহাবীদের জন্য সাহাবী শব্দ নির্বাচন করেছেন। এর দ্বারা বোঝা গেল সহবাতের কত দাম!
সাহাবায়ে কেরাম যদি সহবাতের দ্বারা সাহাবী হয়ে থাকেন তাহলে এই জামানার মধ্যেও আমাদের জন্য এত বড় সৌভাগ্য এত বড় দৌলত দান করেছেন আমাদের জন্যও সুযোগ রয়েছে ।
আল্লাহ তায়ালা বলেছেন
الم يأنن الذين امنوا ان تخشع قلوبهم لذكر الله ما نزل من الحق
এখনো কি সময় হয়নি আল্লাহকে ভয় করার ?
আল্লাহকে ভয় করার রাস্তা তো একটাই।
সত্যবাদীদের সহবাত উঠানোর রাস্তা তো আমাদের চোখের সামনেই রয়েছে মুফতি এমদাদ সাহেব বলে গিয়েছেন বড় আফসোসের কথা বাইরের থেকে কেউ আসলে তাকে আমরা খুব কদর করি কিন্তু আমাদের চোখের সামনে আমাদের মাঝে আল্লাহ তায়ালা এত বড় দৌলত রেখেছেন
ہنوز آں ابرِ رحمت در فشاند
خامو خمخواہ نہ با نمرو نشاند
আগেও যা ছিল এখনো তাই রয়েছে। জুনায়েদ বাগদাদি যদি আগেও থেকে থাকে এই জামানায়ও জুনাইদ বাগদাদী রয়েছেন এই জামানায়ও কুতুব রয়েছেন এই জামানায়ও রুমিয়ে জামানা রয়েছেন
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এত বড় জামিউল কামালাত এত বড় শখসিয়াত এত বড় হাস্তি আমাদের সামনে রেখেছেন
আমাদের সকলকে হযরতজির থেকে উপকৃত হওয়ার হযরতজির সহবত নিয়ে আগে বাড়ার তৌফিক দান করেন।
আমিন।
اخر دعوانا ان الحمد لله رب العالمين.

 

Check Also

আব্দুল্লাহ সালেহী: **বয়ান নাম্বার (৫)*** ১৮/১২/২০১৯ ঈসায়ী স্থান: নবাবগঞ্জ, মানিকগঞ্জ। আলোচক: হযরতুল আল্লাম শাহ মুফতী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.