পরদিন সকাল বেলা। রাসেল ঘুম থেকে উঠে প্রস্তুতি নিচ্ছে কলেজে যাবে। ভাবলাম ওর সঙ্গে আমিও একটু ঘুরে আসি। ওদের বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষালয়টা একটু দেখে আসি। বুদ্ধিচর্চার টিচারদের সাথে একটু সাক্ষাত তো করে আসি। ওর ক্লাসরুমের কাছে যেতেই শুনি এক নাস্তিক টিচার ক্লাসে প্রবেশ করে বলছেন,
: তোমরা কি ক্লাসে কোন ট্রেন বা গাড়ি দেখতে পাচ্ছো ?
: না। স্টুডেন্টরা জবাব দিলো।
: যেহেতু এখানে ট্রেনের অস্তিত্ব নাই, তাই দেখতে পাচ্ছো না। মূলত যার অস্তিত্ব আছে, তা দেখা যায়। আর যা দেখা যায় না, তার অস্তিত্ব নাই।
আমি শুনছিলাম আর ভাবছিলাম, এত বড় বোকা লোক! সে আবার টিচার! আশ্চর্য! তবে কিছুই বলছিলাম না। চুপচাপ শুনছিলাম দেখি আর কী বলে? কিছুক্ষণ যেতে না যেতেই আবার তিনি ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বললেন,
: তোমরা কি ক্লাসরুমে কোনো চেয়ার দেখতে পাচ্ছো?
: জ্বী স্যার।
: আসলে চেয়ারের অস্তিত্ব আছে বলেই দেখতে পাচ্ছো। আসলে যা দেখা যায় না, তার অস্তিত্ব বিশ্বাস করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
স্যার ব্রেনওয়াশ করেই যাচ্ছেন, কিন্তু তখনও ক্লিয়ার বলছিলেন না যে তিনি কি বুঝাতে চাচ্ছেন। একটু পর তিনি ক্লিয়ারলি বলেই বসলেন,
: আচ্ছা তোমরা কি আল্লাহকে দেখতে পাও?
: না তো স্যার।
এবার টিচার বললেন,
: আল্লাহকে দেখতে পাও না কেন জানো? কারণ যার অস্তিত্ব নাই, তাকে দেখা যায় না। যদি আল্লাহ বলতে কিছু থাকতো, তাহলে পৃথিবীতে তা দেখা যেতো।
যখন তাদের টিচার স্পষ্ট করে আল্লাহ তা’আলার অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন করেই ফেললো। তখন কী আমার চুপ থাকা ঠিক? নিশ্চয় না। আমি আর কাল বিলম্ব না করে বললাম স্যার, ছাত্রদের ইমার্জেন্সি একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করতে হবে। অনুমতি চাচ্ছি।
: হ্যাঁ। বলুন।
: আসসালামু আলইকুম। ছাত্র ভাইয়েরা, তোমরা কী তোমাদের এই স্যারের আকল (মেধা) দেখতে পাচ্ছো?
: না।
: তাহলে যেহেতু এই স্যারের আকল দেখা যাচ্ছে না, সুতরাং বুঝা গেলো স্যারের আকলেরও অস্তিত্ব নাই। আর যার আকল নাই সে হলো,বে-আক্কেল পাগল। আর কোন বে-আক্কেল বা পাগলের কোন কথা তোমরা বিশ্বাস করা বোকামী নয় কী?
: ছাত্ররা আমার বক্তব্য শুনেই অট্রহাসি দিয়ে পুরো ক্লাসরুমে হাসির ঝড় তুলে দিলো। স্যার লজ্জায় দ্রুত রুম থেকে বের হয়ে পাশে গিয়ে সিগারেট টানা শুরু করে দিলো।