: তুই যখন মায়ের গর্ভে ছিলি তুই কী দেখেছিলি যে পৃথিবীদি নামক একটা জগৎ আছে?
: না।
: তাহলে না দেখে যদি বিশ্বাস করা যৌক্তিক না হয়, তাহলে গর্ভে থাকাকালিন সময় পৃথিবি যে আছে এটা বিশ্বাস করা কী অযৌক্তিক ছিলো?
: মায়ের পেটে থেকে তো পৃথিবি দেখা সম্ভব নয়। কারণ অনেক আবরণের মধ্যে ছিলাম। কিন্তু আমি তো দুনিয়ায় এসে দেখেছি যে পৃথিবি আছে।
: ঠিক তেমনি শুনে রাখ মায়ের পেটে থেকে দুনিয়া দেখা যেমন সম্ভব নয়, তেমনিভাবে দুনিয়ায় থেকে আল্লাহকে দেখা সম্ভব নয়। কিন্তু গর্ভজাত সন্তান যেমন মায়ের পেটে জগত থেকে বের হয়ে দুনিয়ায় এসে বাস্তবতা দেখতে পায়, তেমনি দুনিয়ার জগৎ থেকে পরিস্থান করেই জান্নাতে গিয়েই দেখতে পারে। হযরত আবু হুরায়রা রা. সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন,
قَالَ نَاسٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَنَرَى رَبَّنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ؟ قَالَ: هَلْ تُضَارُّونَ فِي رُؤْيَةِ الشَّمْسِ فِي الظَّهِيرَةِ لَيْسَتْ فِي سَحَابَةٍ؟ قَالُوا: لَا، قَالَ: هَلْ تُضَارُّونَ فِي رُؤْيَةِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ لَيْسَ فِي سَحَابَةٍ؟ قَالُوا: لَا، قَالَ: وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَا تُضَارُّونَ فِي رُؤْيَتِهِ إِلَّا كَمَا تُضَارُّونَ فِي رُؤْيَةِ أَحَدِهِمَا
এক ব্যক্তি বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি কিয়ামতের দিন আল্লাহকে দেখতে পাবো? তিনি বললেন, মেঘহীন দুপুরে তোমাদের কি সূর্য দেখতে কষ্ট হয়? সাহাবীগণ বললেন, না। তিনি আবার প্রশ্ন করলেন, মেঘহীন নির্মল আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ দেখতে কি তোমাদের কোনো অুসবিধা হয়? তারা বললেন, না। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ সেই, মহান সত্ত্বার কসম যাঁর হাতে আমার জীবন! তোমরা এর একটি (চাঁদ বা সূর্য) যেভাবে নির্বিঘ্নে দেখতে পাও সেভাবে তাঁকে তোমরা দেখবে। -সুনানে আবু দাউদ : হাদিস নং : ৪৭৩০

হযরত সুহাযিব রা. হতে বর্ণিত, নবিজি সাঃ বলেন,
إِذَا دَخَلَ أَهْلُ الْجَنَّةِ الْجَنَّةَ – قَالَ – يَقُولُ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى تُرِيدُونَ شَيْئًا أَزِيدُكُمْ فَيَقُولُونَ أَلَمْ تُبَيِّضْ وُجُوهَنَا أَلَمْ تُدْخِلْنَا الْجَنَّةَ وَتُنَجِّنَا مِنَ النَّارِ – قَالَ – فَيَكْشِفُ الْحِجَابَ فَمَا أُعْطُوا شَيْئًا أَحَبَّ إِلَيْهِمْ مِنَ النَّظَرِ إِلَى رَبِّهِمْ عَزَّ وَجَلَّ
জান্নাতীগণ যখন জান্নাতে প্রবেশ করবে তখন আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে বলবেন, তোমরা কি চাও, আমি আরো অনুগ্রহ বাড়িয়ে দেই? তারা বলবে, আপনি কি আমাদের চেহারাগুলো আলোকজ্জ্বল করে দেননি, আমাদের জান্নাতে দাখিল করেননি এবং জাহান্নাম থেকে নাযাত দেননি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এরপর আল্লাহ তা’আলা আবরণ তুলে নিবেন। আল্লাহর দর্শন লাভের চেয়ে অধিক পছন্দনীয় জিনিস আর কিছুই তাদের দেয়া হয়নি। -সহিহ মুসলিম : হাদিস নং : ১৮১

হযরত আবু সা’ঈদ রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবিজি সাঃ -কে বলতে শুনেছি,
يَكْشِفُ رَبُّنَا عَنْ سَاقِهِ فَيَسْجُدُ لَهُ كُلُّ مُؤْمِنٍ وَمُؤْمِنَةٍ فَيَبْقَى كُلُّ مَنْ كَانَ يَسْجُدُ فِي الدُّنْيَا رِيَاءً وَسُمْعَةً فَيَذْهَبُ لِيَسْجُدَ فَيَعُوْدُ ظَهْرُهُ طَبَقًا وَاحِدًا
আমাদের প্রতিপালক যখন তাঁর পায়ের গোড়ালির জ্যোতি বিকীর্ণ করবেন, তখন ঈমানদার নারী ও পুরুষ সবাই তাকে সাজ্দাহ করবে। কিন্তু যারা দুনিয়াতে লোক দেখানো ও প্রচারের জন্য সাজ্দাহ করত, তারা কেবল বাকী থাকবে। তারা সিজদা করতে ইচ্ছে করলে তাদের পিঠ একখন্ড কাঠের ন্যায় শক্ত হয়ে যাবে। -সহিহ বুখারী : হাদিস নং : ৪৯১৯

এ কথাই মহান রব বলেন,
وُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ نَّاضِرَةٌ إِلَى رَبِّهَا نَاظِرَةٌ
সেদিন অনেক মুখমন্ডল উজ্জ্বল হবে। তারা তার পালনকর্তার দিকে তাকিয়ে থাকবে। -সুরা কিয়ামাহ : ২২-২৩

Check Also

সাবলুকে নিয়ে একদিন সন্ধা রাতে হাটতে বের হলাম। ভাবলাম রাতের বালাগটা সেরে নিই। চলছি পথে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.