আনসার সাহাবায়ে কেরামের রা: মর্যাদা ইসলামে অপরিসীম। মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আনসার সাহাবাদের ব্যাপারে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। কিন্তু এতদ্বসত্বেও মিস্টার মওদুদী সাহেব আনসার সাহাবায়ে কেরামের রা. ব্যাপারেও সমালোচনা করতে দ্বীধা করেনি। চলুন মওদুদী সাহেব আনসার সাহাবাদের ব্যাপারে কি বলেছেন দেখি। তিনি লিখেছেন,
یہ یہودی اخلاق ہی کا اثر تھا کہ مدینہ میں بعض انصار اپنے مہاجربھائیوں کی خاطر اپنی بیویوں کو طلاق دیکر ان سے بیاہ دینے پر آمادہ ہو گئے تھے
মাদীনার কিছু আনসার সাহাবা তাদের স্ত্রীদের তালাক দিয়ে মুহাজির সাহাবাদের সাথে বিয়ে দিতে উদ্যোত হয়েছিলেন, এটা মূলত ইহুদীদের বৈশিষ্ট্যের প্রভাবেই হয়েছিল। -তাফহীমাত খ. ২ পৃ. ৪৭
প্রিয় পাঠক, মওদুদী সাহেব মুহাজির সাহাবায়ে কেরামের প্রতি আনসার সাহাবায়ে কেরামের ভালোবাসার নজরানা পেশ করাটা বরদাশত করতে পারেননি। অথচ আনসার সাহাবায়ে কেরাম তাদের সবচে প্রিয় বিষয় স্ত্রীকেও তালাক দিয়ে মুহাজিরদের প্রতি সহমর্মিতা পেশ করেছেন। ঘটনা কী ছিলো একটু দেখে নেওয়া যাক। হযরত আবু হুরাইরাহ রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
قَالَتْ الأَنْصَارُ اقْسِمْ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمْ النَّخْلَ قَالَ لَا قَالَ يَكْفُوْنَنَا الْمَئُوْنَةَ وَيُشْرِكُوْنَنَا فِي التَّمْرِ قَالُوْا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا
আনসারগণ বললেন, আমাদের খেজুরের বাগানগুলি আমাদের এবং তাদের (মুহাজিরদের) মাঝে বণ্টন করে দিন। তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, না। তখন আনসারগণ বললেন, আপনারা বাগানগুলির রক্ষণাবেক্ষণে আমাদের সাহায্য করুন এবং ফসলের অংশীদার হয়ে যান। মুহাজিরগণ বললেন, আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম। -সহিহ বুখারী : হাদিস নং : ৩৭৮২
হযরত আবদুর রহমান ইবনু আওফ রা. হতে বর্ণিত তিনি বলেন,
لَمَّا قَدِمُوْا الْمَدِيْنَةَ آخَى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ وَسَعْدِ بْنِ الرَّبِيْعِ قَالَ لِعَبْدِ الرَّحْمَنِ إِنِّيْ أَكْثَرُ الأَنْصَارِ مَالًا فَأَقْسِمُ مَالِيْ نِصْفَيْنِ وَلِيْ امْرَأَتَانِ فَانْظُرْ أَعْجَبَهُمَا إِلَيْكَ فَسَمِّهَا لِيْ أُطَلِّقْهَا فَإِذَا انْقَضَتْ عِدَّتُهَا فَتَزَوَّجْهَا قَالَ بَارَكَ اللهُ لَكَ فِيْ أَهْلِكَ وَمَالِكَ أَيْنَ سُوقُكُمْ فَدَلُّوْهُ عَلَى سُوقِ بَنِيْ قَيْنُقَاعَ فَمَا انْقَلَبَ إِلَّا وَمَعَهُ فَضْلٌ مِنْ أَقِطٍ وَسَمْنٍ ثُمَّ تَابَعَ الْغُدُوَّ ثُمَّ جَاءَ يَوْمًا وَبِهِ أَثَرُ صُفْرَةٍ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَهْيَمْ قَالَ تَزَوَّجْتُ قَالَ كَمْ سُقْتَ إِلَيْهَا قَالَ نَوَاةً مِنْ ذَهَبٍ أَوْ وَزْنَ نَوَاةٍ مِنْ ذَهَبٍ
যখন মুহাজিরগণ মদিনায় আগমন করলেন, তখন রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবদুর রাহমান ইবনু আউফ ও সা‘দ ইবনু রাবী রা. এর মধ্যে ভ্রাতৃত্ব বন্ধন স্থাপন করে দিলেন। তখন তিনি (সা‘দ রা.) আবদুর রাহমান রা. কে বললেন, আনসারদের মধ্যে আমিই সব থেকে বেশি সম্পদের অধিকারী। আপনি আমার সম্পদকে দু’ভাগ করে নিন। আমার দু’জন স্ত্রী রয়েছে, আপনার যাকে পছন্দ হয় বলুন, আমি তাকে তালাক দিয়ে দিব। ইদ্দত শেষে আপনি তাকে বিয়ে করে নিবেন। আবদুর রহমান রা. বললেন, আল্লাহ আপনার পরিবারে এবং সম্পদে বরকত দান করুন। আপনাদের বাজার কোথায়? তারা তাঁকে বনূ কায়নুকার বাজার দেখিয়ে দিলেন। যখন ঘরে ফিরলেন তখন কিছু পনির ও কিছু ঘি সাথে নিয়ে ফিরলেন। এরপর প্রতিদিন সকাল বেলা বাজার যেতে লাগলেন। একদিন নাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এমন অবস্থায় আসলেন যে, তাঁর শরীর ও কাপড়ে হলুদ রং এর চিহ্ন ছিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ব্যাপার কী! তিনি রা. বললেন, আমি বিয়ে করেছি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, তাকে কী পরিমাণ মাহর দিয়েছ? তিনি বললেন, খেজুরের এক আঁটির পরিমাণ অথবা খেজুরের এক আঁটির ওজন পরিমাণ স্বর্ণ দিয়েছি। -সহিহ বুখারী : হাদিস নং : ৩৭৮০
প্রিয় পাঠক, একবার ভেবে দেখুন তো, আনসার এ সাহাবীর ঘটনায় অর্থাৎ তাঁর স্ত্রীকে তালাক দিয়ে মুহাজির সাহাবির কাছে বিয়ে দেয়ার বিষয়টি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কতো খুশি হয়েছিলেন! অথচ মওদুদী সাহেব এ কাজটিকে ইহুদীদের বৈশিষ্ট্য বলে আনসার সাহাবাদের কটাক্ষ করার চেষ্টা করেছেন। মওদুদী সাহেবের মতো সারা দুনিয়ার সাহাবা বিদ্বেষীরাও যদি আনসার সাহাবাদের সমালোচনা করে তবুও আনসারদের বিন্দু পরিমান ক্ষতি হবে না। কারণ আনসারদের প্রশংসা স্বয়ং আল্লাহ তাআলা করেছেন।মহান আল্লাহ বলেন,
لَقَد تَّابَ الله عَلَى النَّبِيِّ وَالْمُهَاجِرِينَ وَالأَنصَارِ الَّذِينَ اتَّبَعُوهُ فِي سَاعَةِ الْعُسْرَةِ مِن بَعْدِ مَا كَادَ يَزِيغُ قُلُوبُ فَرِيقٍ مِّنْهُمْ ثُمَّ تَابَ عَلَيْهِمْ إِنَّهُ بِهِمْ رَؤُوفٌ رَّحِيمٌ
আল্লাহ দয়াশীল নবীর প্রতি এবং মুহাজির ও আনসারদের প্রতি, যারা কঠিন মহূর্তে নবীর সঙ্গে ছিল, যখন তাদের এক দলের অন্তর ফিরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। অতঃপর তিনি দয়াপরবশ হন তাদের প্রতি। নিঃসন্দেহে তিনি তাদের প্রতি দয়াশীল ও করুনাময়। -সুরা তওবা : ১১৭
وَالَّذِينَ تَبَوَّؤُوا الدَّارَ وَالْإِيمَانَ مِن قَبْلِهِمْ يُحِبُّونَ مَنْ هَاجَرَ إِلَيْهِمْ وَلَا يَجِدُونَ فِي صُدُورِهِمْ حَاجَةً مِّمَّا أُوتُوا وَيُؤْثِرُونَ عَلَى أَنفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ وَمَن يُوقَ شُحَّ نَفْسِهِ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
যারা মুহাজিরদের আগমনের পূর্বে মদীনায় বসবাস করেছিল এবং বিশ্বাস স্থাপন করেছিল, তারা মুহাজিরদের ভালবাসে, মুহাজিরদেরকে যা দেয়া হয়েছে, তজ্জন্যে তারা অন্তরে ঈর্ষাপোষণ করে না এবং নিজেরা অভাবগ্রস্ত হলেও তাদেরকে অগ্রাধিকার দান করে। যারা মনের কার্পণ্য থেকে মুক্ত, তারাই সফলকাম। -সুরা হাশর : ৯
পক্ষান্তরে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে সবচে প্রিয় ছিলেন আনসার সাহাবায়ে কেরাম রা.। হযরত আনাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
رَأَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم النِّسَاءَ وَالصِّبْيَانَ مُقْبِلِيْنَ قَالَ حَسِبْتُ أَنَّهُ قَالَ مِنْ عُرُسٍ فَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مُمْثِلًا فَقَالَ اللَّهُمَّ أَنْتُمْ مِنْ أَحَبِّ النَّاسِ إِلَيَّ قَالَهَا ثَلَاثَ مِرَارٍ
(আনসারের) কতিপয় বালক-বালিকা ও নারীকে রাবী (বর্ণনাকারী) বলেন, আমার মনে হয় তিনি বলেছিলেন, কোন বিবাহ অনুষ্ঠান শেষে ফিরে আসতে দেখে নাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদের উদ্দেশে দাঁড়িয়ে গেলেন। এরপর তিনি বললেন, আল্লাহ্ জানেন, তোমরাই আমার সবচেয়ে প্রিয়জন। কথাটি তিনি তিনবার বললেন। -সহিহ বুখারী : হাদিস : ৩৭৮৫
হযরত আনাস ইবনে মালিক রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
جَاءَتْ امْرَأَةٌ مِنْ الأَنْصَارِ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَمَعَهَا صَبِيٌّ لَهَا فَكَلَّمَهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ وَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ إِنَّكُمْ أَحَبُّ النَّاسِ إِلَيَّ مَرَّتَيْنِ
একজন আনসারী মহিলা তার শিশুসহ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট হাজির হলেন। রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সঙ্গে কথা বললেন এবং বললেন, ঐ আল্লাহর কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ, লোকদের মধ্যে তোমরাই আমার সবচেয়ে প্রিয়জন। কথাটি তিনি দু’বার বললেন। -সহিহ বুখারী : হাদিস নং : ৩৭৮৬
আনসারদের প্রতি বিদ্বেষ মুনাফিকদের আলামত: হযরত বারা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَوْ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الأَنْصَارُ لَا يُحِبُّهُمْ إِلَّا مُؤْمِنٌ وَلَا يُبْغِضُهُمْ إِلَّا مُنَافِقٌ فَمَنْ أَحَبَّهُمْ أَحَبَّهُ اللهُ وَمَنْ أَبْغَضَهُمْ أَبْغَضَهُ اللهُ
আমি নাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, মু’মিন ছাড়া আনসারদেরকে কেউ ভালবাসবে না এবং মুনাফিক ছাড়া কেউ তাঁদের প্রতি ঘৃণা পোষণ করে না। যে ব্যক্তি তাঁদেরকে ভালবাসবে আল্লাহ্ তা‘আলা তাকে ভালবাসবেন আর যে ব্যক্তি তাঁদের সাথে হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করবে আল্লাহ্ তাআলা তাকে ঘৃণা করবেন। -সহিহ বুখারী : হাদিস : ৩৭৮৩
হাদিস শরীফে আরও এসেছে,
আনাস ইবনু মালিক রা. হতে বর্ণিত, নাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
آيَةُ الْإِيْمَانِ حُبُّ الأَنْصَارِ وَآيَةُ النِّفَاقِ بُغْضُ الأَنْصَارِ
আনসারদের প্রতি ভালবাসা ঈমানেরই নিদর্শন এবং তাঁদের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ রাখা মুনাফিকীর নিদর্শন। -সহিহ বুখারী : হাদিস নং : ৩৭৮৪
প্রিয় পাঠক, পবিত্র কুরআন এবং হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে, আনসার সাহাবায়ে কেরাম মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে সবচে বেশি প্রিয় ছিলেন। তাঁদের প্রতি বিদ্বেষ নিয়ে সমালোচনা করা নেফাকীর পরিচয়, যা মওদুদী সাহেব দিয়েছেন।
একটি প্রশ্ন:
বর্তমানে কিছু নব্য মওদুদীবাদ এই বিষয়টিতে দাবি করে থাকে যে, এটা মওদুদী সাহেব আনসার সাহাবাদের সমালোচনা নয়, বরং তাঁদের ভালো দিক বলতে গিয়ে এমনটা বলেছেন। অর্থাৎ মওদুদী সাহেব বুঝাতে চেয়েছেন যে, ইহুদীদের মধ্যে থাকা এ মহৎ গুনটি আনসার সাহাবারা গ্রহণ করেছিলেন।
উত্তর:
প্রথমত: নব্য মওদুদীবাদ তাদের মওদুদী সাহেবকে বাঁচাতে এ কৌশলটি অবলম্বন করেছেন অর্থাৎ ‘মহৎ’ শব্দটি অতিরিক্ত লাগিয়ে দিয়েছেন। তবে এটা তারা করেছেন শুধুমাত্র মওদুদীকে বাঁচানোর জন্যই। এটা মওদুদীর কথার ওপর নিছক একটি নতুন সংযোজন। বাস্তবে ‘মহৎ’ শব্দটি মওদুদী সাহেবের লেখার মধ্যে নেই।
দ্বিতীয়ত: আনসার সাহাবায়ে কেরাম ঈমান আনার পর সকল বিষয়ে শিক্ষা লাভ করেছেন বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে। এমনকি মুহাজির সাহাবাদের প্রতি আনসার সাহাবাদের এ উদারতা তাঁরা ইহুদীদের থেকে শেখেননি বরং সাহাবাদের ভেতর নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দ্বীন প্রবেশের মাধ্যমেই তাঁরা এমনটি করতে পেরেছিলেন। কারণ ইসলাম গ্রহণের পর কোনো সাহাবী ইহুদীদের থেকে কোনো বিষয় গ্রহণ করেননি। কারণ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পক্ষ থেকে আহলে কিতাবদের থেকে কোনো বিষয়ের কোনো কিছু গ্রহণ করার অনুমতি ছিল না, বরং মুসলিমদেরকে ইহুদীদের বিরোধীতা করার কথা খোদ নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
خالِفوا اليهودَ والنَّصارى
তোমরা ইহুদী-খ্রিষ্টানদের বিপরীত করো। -সহিহ ইবনে হিব্বান : হাদিস নং : ২১৮৬
এমনকি ইহুদী-খ্রিষ্টানদের সাথে সামঞ্জস্যতা অবলম্বন করাও ইসলামে নিষেধ ছিল। হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ
যে ব্যক্তি যার সাদৃশ্য গ্রহণ করে, সে তাদেরই অন্তর্ভূক্ত। -সুনানে আবু দাউদ : হাদীস নং : ৪০৩১
সুতরাং কোনো সাহাবী ইহুদীদের থেকে কোনো কিছু শিখে সে অনুযায়ী আমল করেছেন বা ইহুদীদের কাজে উদ্ভুদ্ধ হয়ে করেছেন, এমন দাবি করা সাহাবাদের শানে ডাহা মিথ্যাচার এবং চরম বেয়াদবি।
তৃতীয়ত : উপরন্তু যদি ধরেও নিই যে, মওদুদী সাহেব সাহাবাদের মহৎ গুন উল্লেখ্য করার জন্য এমনটি বলেছেন, তাহলে আমার প্রশ্ন, সাহাবায়ে কেরামের যে অন্তরগুলো এতো উদার হলো নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সংস্পর্শে এসে, সে ক্রেডিটটা মওদুদী সাহেব নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে না দিয়ে ইহুদীদের কেন দিলেন? মওদুদী সাহেবের কি তাহলে ইহুদীদের সাথে গোপন কোনো হ্নদ্যতা ছিল? ভাবতে হবে।
অতএব, নব্য মওদুদীবাদকে বলছি, মওদুদী সাহেব এ বিষয়ে যে অপরাধী সেটা আপনারাও জানেন। তারপরও তার এ চরম অপরাধ ঢাকতে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা আপনার দায়িত্ব নয়। এটা মওদুদী সাহেবের ওপর ইনসাফ নয়, এটা খিয়ানত। আল্লাহ তাআলা সকলকে সহিহ বুঝ দান করেন। আমিন!