মওদুদী মরহুমের দাবি:
رسول خدا کے سوا کسی انسان کو معیار حق نہ بنائے کسی کو تنقید سے بالاتر نہ سمجھے
অর্থঃ রাসূলে খোদা ছাড়া অন্য কাউকে সত্যের মাপকাঠি বানাবে না এবং সমালোচনার ঊর্ধ্বে মনে করবে না।
সূত্রঃ দস্তুরে জামাতে ইসলামী পৃ: ৭
রাসুলুল্লাহ সা. এর দাবি
পবিত্র হাদিস শরীফে সাহাবায়ে কেরামের ব্যাপারে সমালোচনা না করার ব্যাপারে অসংখ্য হাদিস এসেছে। কয়েকটি এখানে তুলে ধরলাম।
এক.
عَنْ ثَوْبَانَ رضي الله عنه عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِذَا ذُكِرَ أَصْحَابِي فَأَمْسِكُوا
অর্থঃ হযরত সাওবান রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন। যখন আমার সাহাবীদের আলোচনা আসে, তখন (তাদের ব্যাপারে সমালোচনা করা থেকে) নিজেকে বিরত রাখো।
সূত্র: আল মু’জামুল কাবীর লিততাবরানী, হাদীস: ১৪২৭ । জামে সগীর হাদিস-৬১৩ । মাজমাউয যাওয়ায়েদ খ: ৭ পৃ:২০৫ ।
দুই.
ﻋﻦ عبد الله بن مغفل المزني قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم الله الله في أصحابي لا تتخذوهم غرضاً بعدي
অর্থঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মুগাফফাল রা: থেকে বর্ণিত, নবিজি স: বলেন, আমার সাহাবীদের ব্যাপারে তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, আল্লাহকে ভয় কর। আমার পরবর্তীকালে তোমরা তাঁদের সমালোচনার নিশানায় পরিণত করো না। কারণ, যে তাঁদের ভালোবাসবে সে আমার মুহাব্বতেই তাঁদের ভালোবাসবে। আর যে তাঁদের অপছন্দ করবে সে আমাকে অপছন্দ করার ফলেই তাঁদের অপছন্দ করবে। আর যে তাঁদের কষ্ট দেবে সে আমাকেই কষ্ট দেবে। আর যে আমাকে কষ্ট দেবে সে যেন আল্লাহকেই কষ্ট দিল। আর যে আল্লাহকে কষ্ট দেবে অচিরেই আল্লাহ তাকে পাকড়াও করবেন।
সূত্রঃ জামে সগীর হাদিস-১৪৩৬ সুনানে তিরমিযী: ৩৮৬২ আহমাদ-২০৫৪৯
তিন.
ﻋﻦ أبي سعيد الخدري رضي الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لا تسبوا أصحابي فوالذي نفسي بيده لو أن أحدكم أنفق مثل أحد ذهباً ما أدرك مد أحدهم ولا نصيفه
অর্থঃ হযরত আবু সাঈদ খুদরী রা: থেকে বর্ণিত নবিজি স: বলেন, তোমরা আমার কোন সাহাবীকে মন্দ বলোনা (সমালোচনা করো না)। তোমাদের কেউ যদি উহুদ পর্বততূল্য স্বর্ণও দান করে,তবুও তাঁদের সোয়া সের যব সদাকা করার সমানও হতে পারেনা বরং এর অর্ধেকেরও বরাবর হতে পারেনা ।
সূত্রঃ সহিহ বুখারী: ৩৬৭৩ মুসলিম: ২৫৪০ তিরমিযী: ৩১৬৮
চার.
عن ابنِ عمرَ رضي الله عنهما يقولُ لا تسبُّوا أصحابَ محمَّدٍ صلّى اللَّهُ عليهِ وسلَّمَ فلَمُقامُ أحدِهِم ساعةً خيرٌ مِن عمَلِ أحدِكُم عُمرَهُ
অর্থঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাঃ বলেন, তোমরা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবাগণের মন্দ বলো না, তাদের এক মুহুর্তের সৎকাজ তোমাদের সারা জীবনের সৎকাজের চেয়ে উত্তম।
সূত্রঃ সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং: ১৩৩ মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা: ৩৩০৮২
পাঁচ.
সাহাবাদের সমালোচনা করলে বেত্রাঘাতের নির্দেশ।
عن علي بن أبي طالب قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم مَن سَبَّ نبيًّا قُتِل ومَن سَبَّ أصحابَه جُلِد
অর্থঃ হযরত আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল স: ইরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি নবীকে সমালোচনা বা মন্দ বলে,তাকে হত্যা করা হবে। আর যে সাহাবীকে সমালোচনা বা মন্দ বলে তাকে প্রহার করা হবে।
সূত্রঃ মু’জামে সগীর (তবরানী) হাদিস: ৬৫৯ দায়লামী হাদীস নং- ৫৬৮৮ তারিখে দিমাশক: ৫৬৮৮
ছয়.
সাহাবায়ে কেরামের সাথে দুশমনি রাখলে আল্লাহর সাথে যু্দ্ধ ঘোষণা-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَال قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ اللَّهَ قَالَ مَنْ عَادَى لِي وَلِيًّا فَقَدْ آذَنْتُهُ بِالْحَرْب
অর্থঃ হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ বলেন, যে ব্যক্তি আমার কোনো ওলির সঙ্গে দুশমনি রাখবে, আমি তার সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করি।
সূত্রঃ সহিহ বুখারী হাদিস: ৬৫০২
সকল সাাহাবায়ে কেরাম উম্মতের মধ্যে সবচে বড় ওলী ছিলেন। কারন তারা সবাই জান্নাতী, তাদের সব গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। সুৎরাং তাদের সাথে দুশমনি রাখলে রবের তরফ থেকে সরাসরি যুদ্ধের ঘোষণা।
সাত.
সাহাবায়ে কেরামের সমালোচনা অভিসাপের কারণ।
عن عبدالله بن عباس قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من سبَّ أصحابِي فعليه لعنةُ اللهِ والملائكةِ والناسِ أجمعين
অর্থাৎ হযরত ইবনে আব্বাস রা: হতে বর্ণিত, রাসুলুলুল্লাহ ইরশাদ করেছেন, যারা আমার সাহাবীদেরকে মন্দ বলে, তাদের প্রতি আল্লাহর, ফেরেস্তাদের এবং জগতবাসীর অভিশাপ বর্ষিত হোক।
সূত্রঃ জামে সগীর হাদিস-৮৭১৫ তাবরানী ফিল কাবির: ১২৭০৯ মাজমাউয যাওয়ায়েদ খ: ১০ পৃ: ২৪
আট.
عن ابن عمر قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا رأيتم الذين يسبون أصحابي فقولوا لعنة الله على شركم
অর্থঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা: থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ স: বলেন, যখন তোমরা এ ধরনের লোক দেখবে, যারা আমার সাহাবীকে মন্দ বলে, তখন তাদের উদ্দেশে বলে দাও, তোমাদের অনিষ্টের উপর আল্লাহর অভিশাপ হোক”।
সূত্রঃ সুনানে তিরমিযি হাদিস: ৩৮৬৬ জামে সগীর: ৬৩৩
নয়.
সাহাবাদের ভালবাসা নবীজিকেই ভালবাসার নমুনা।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মুগাফফল রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন,
فمن أحبهم فبحبي أحبهم ومن أبغضهم فببغضي أبغضهم ومن آذاهم فقد آذاني ومن آذاني فقد آذى الله ومن آذى الله يوشك أن يأخذه
অর্থঃ যে তাঁদেরকে ভালবাসেন সে আমার প্রতি ভালবাসার কারণেই তাদেরকে ভালবাসেন এবং যে তাঁদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করল সে আমার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করার কারণেই তাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করল। যে তাদেরকে কষ্ট দিল সে আমাকেই কষ্ট দিল যে আমাকে কষ্ট দিল সে আল্লহ তা’য়ালাকে কষ্ট দিল আর যে আল্লাহকে কষ্ট দিল, আল্লাহ তায়ালা অচিরেই তাকে পাকড়াও করবেন।
সূত্রঃ সহিহ ইবনে হিব্বান হাদিস-৭২৫৬
প্রিয় পাঠক, এত স্পষ্ট হাদিস থাকা সত্বেও মওদুদী মরহুম কিভাবে সাহাবারা “সমালোচনার উর্ধ্বে নন” এমন জঘন্য দাবি করলেন! আল্লাহ তা’য়ালা আমাদেরকে শিয়াদের প্রভাব থেকে মুক্ত করুন। আমিন!