বছরের মধ্যে শ্রেষ্ঠ মাস হলো রমজান,
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِيَ أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ
অর্থ: রমযান মাসই হল সে মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন,
সুরা বাকারা আয়াতত: ১৮৫
রমজানের শ্রেষ্ঠ হলো শেষ দশক,
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُجَاوِرُ فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ، وَيَقُولُ “ تَحَرَّوْا لَيْلَةَ الْقَدْرِ فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ
অর্থ: হযরত আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন এবং বলতেনঃ তোমরা শেষ দশকে লাইলাতুল কদর তালাশ কর।
সূত্র: সহিহ বুখারী হাদিস: ২০২০
আর শেষ দশকের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো লাইলাতুল কদর।
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ
অর্থ: আমি একে নাযিল করেছি শবে-কদরে।
সুরা কদর আয়াত: ১
অর্থাৎ লাইলাতুল কদর কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার রাত,
قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ وَغَيْرُهُ: أَنْزَلَ اللَّهُ الْقُرْآنَ جُمْلَةً وَاحِدَةً مِنَ اللَّوْحِ الْمَحْفُوظِ إِلَى بَيْتِ العِزّة مِنَ السَّمَاءِ الدُّنْيَا، ثُمَّ نَزَلَ مُفَصَّلًا بِحَسْبِ الْوَقَائِعِ فِي ثَلَاثٍ وَعِشْرِينَ سَنَةً على رسول الله صلى الله عليه وسلم
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ননা তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা সম্পুর্ন কুরআন লাওহে মাহফুজ থেকে প্রথম আসমানের বাইতুল ইজ্জত নামক স্থানে অবতীর্ণ করেছেন, অতঃপর সেখান থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী তেইশ বছরে পুর্ন কুরআন নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর অবতীর্ণ করেছেন।
সূত্র: আল ইতক্বান (সুয়ুতী) খ. ১ পৃ. ১১৮
وَ مَاۤ اَدۡرٰىکَ مَا لَیۡلَۃُ الۡقَدۡرِ
তোমাকে কিসে জানাবে ‘লাইলাতুল ক্বাদর’ কী?
রমাযানে ৭০ গুন
ফরজ ৭০ গুন
ومن أدّى فيهِ فريضةً كانَ كمن أدّى سبعينَ فريضةً فيما سواهُ
সূত্র: সহিহ ইবনে খুযাইমা খ. ৩ পৃ. ৩৪১
এক বছরের মত আমল:
حَدَّثَنِي أَوْسُ بْنُ أَوْسٍ الثَّقَفِيُّ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ “ مَنْ غَسَّلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَاغْتَسَلَ وَبَكَّرَ وَابْتَكَرَ وَمَشَى وَلَمْ يَرْكَبْ وَدَنَا مِنَ الإِمَامِ فَاسْتَمَعَ وَلَمْ يَلْغُ – كَانَ لَهُ بِكُلِّ خَطْوَةٍ عَمَلُ سَنَةٍ أَجْرُ صِيَامِهَا وَقِيَامِهَا .
আওস বিন আওস আস-সাকাফী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি জুমাআহ্র দিন (স্ত্রী সহবাসজনিত) গোসল করলো এবং নিজে গোসল করলো এবং সকাল সকাল যানবাহন ছাড়া পদব্রজে মাসজিদে এসে ইমামের কাছিাকাছি বসলো, মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে খুতবাহ শুনলো এবং অনর্থক কিছু করলো না, তার জন্য প্রতি কদমে এক বছরের সওম রাখ ও তার রাত জেগে সালাত পড়ার সমান নেকী রয়েছে।
সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ১০৮৭
رِبَاطُ يَوْمٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ يَوْمٍ فِيمَا سِوَاهُ مِنَ الْمَنَازِلِ
অন্য (কোন কাজে) কোথাও এক হাজার দিন কাটানোর চাইতে এক দিন আল্লাহ্ তা’আলার পথে সীমান্ত পাহারা দেওয়া (বা শত্রুর অপেক্ষায় থাকা) বেশি কল্যাণকর।
সূত্র: জামে তিরমিযি হাদিস: ১৬৬৭
কদরের রাত হাজার মাসের থেকে উত্তম।
বনী ইসরায়েলের এক ব্যাক্তির ব্যাপারে আলোচনা,
عن مجاهد بن جبر المكي:] أنَّ النبيَّ صلّى اللهُ عليهِ وسلَّمَ ذكر رجلًا من بني إسرائيلَ لبس السلاحَ في سبيلِ اللهِ ألفَ شهرٍ، قال: فعجب المسلمونَ من ذلك، قال: فأنزل اللهُ عزَّ وجلَّ: إِنّا أَنْزَلْناهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ وَما أَدْراكَ ما لَيْلَةُ الْقَدْرِ لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ التي لبس فيها ذلك الرجلُ السلاحَ في سبيلِ اللهِ ألفَ شهرٍ
সূত্র: সুনানে কুবরা বাইহাকী খ. ৪ পৃ. ৩০৬
عَنْ عَلِيِّ بْنِ عُرْوَةَ قَالَ: ذَكَرَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ يَوْمًا أَرْبَعَةً مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ، عَبَدُوا اللَّهَ ثَمَانِينَ عَامًا، لَمْ يَعْصوه طَرْفَةَ عَيْنٍ: فَذَكَرَ أَيُّوبَ، وَزَكَرِيَّا، وحزْقيل بْنَ الْعَجُوزِ، وَيُوشَعَ بْنَ نُونٍ -قَالَ: فَعَجِبَ أَصْحَابُ رَسُولِ اللَّهِ ﷺ مِنْ ذَلِكَ، فَأَتَاهُ جِبْرِيلُ فَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ، عَجِبَتْ أُمَّتُكَ مِنْ عِبَادَةِ هَؤُلَاءِ النَّفَرِ ثَمَانِينَ سَنَةً، لَمْ يَعْصُوه طَرْفَةَ عَيْنٍ؛ فَقَدَ أَنْزَلَ اللَّهُ خَيْرًا مِنْ ذَلِكَ. فَقَرَأَ عَلَيْهِ: ﴿إِنَّا أَنزلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ وَمَا أَدْرَاكَ مَا لَيْلَةُ الْقَدْرِ لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ﴾ هَذَا أَفْضَلُ مِمَّا عَجِبْتَ أَنْتَ وَأُمَّتُكَ. قَالَ: فَسُرَّ بِذَلِكَ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ وَالنَّاسَ مَعَهُ
আলি ইবনে উরওয়াহ থেকে বর্ননা, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন বনী ইসরায়েলের চার ব্যাক্তির ব্যাপারে আলোচনা করলেন, যারা আশি বছর একাধারে আল্লাহর ইবাদত করেছেন, তারা হলেন যাকারিয়া, আইয়ুব, হিযকিল এবং ইউসা আলাইহিমুস সালাম। এতে সাহাবারা আশ্চর্য হলেন, তখন জীবরাঈল আমিন এসে বললেন হে আল্লাহর রাসূল!আপনার উম্মত এদের ব্যাপারে আশ্চর্য হলো! আপনার এর চেয়ে উত্তম সুরা নাযিল করেছেন। তিনি সুরা কদর শুনিয়ে দিদিলে।
সূত্র: দুুররে মানসুর খ. ৮ পৃ. ৫৬৯ তাফসীরে ইবনে কাসীর
وَقَالَ ابْنُ جَرِيرٍ: حَدَّثَنَا ابْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا حَكَّام بْنُ سَلْمٍ، عَنِ الْمُثَنَّى بْنِ الصَّبَاحِ، عَنْ مُجَاهِدٍ قَالَ: كَانَ فِي بَنِي إِسْرَائِيلَ رَجُلٌ يَقُومُ اللَّيْلَ حَتَّى يُصْبِحَ، ثُمَّ يُجَاهِدُ الْعَدُوَّ بِالنَّهَارِ حَتَّى يُمْسِيَ، فَفَعَلَ ذَلِكَ أَلْفَ شَهْرٍ، فَأَنْزَلَ اللَّهُ هَذِهِ الْآيَةَ: ﴿لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ﴾ قِيَامُ تِلْكَ اللَّيْلَةِ خَيْرٌ مِنْ عَمَلِ ذَلِكَ الرَّجُلِ
সূত্র: তাফসীরে তাবারী খ. ৩০ পৃ. ১৬৭
لَیۡلَۃُ الۡقَدۡرِ ۬ۙ خَیۡرٌ مِّنۡ اَلۡفِ شَہۡرٍ
‘লাইলাতুল কদর’ হাজার(যেই এক হাজার মাসে কদর নেই) মাস অপেক্ষা উত্তম।
এক হাজার মাস=৮৩ বছর ৪ মাস।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ قَالَ: “مَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّم مِنْ ذَنْبِهِ
٢- [عن أنس بن مالك:] دخل رمضانُ فقال رسولُ اللهِ ﷺ إنَّ هذا الشَّهرَ قد حضركم وفيه ليلةٌ خيرٌ من ألفِ شهرٍ من حُرِمها فقد حُرم الخيرَ كلَّه ولا يُحرمُ خيرَها إلّا محرومٌ
المنذري (ت ٦٥٦)، الترغيب والترهيب ٢/١١٨ • إسناده حسن • أخرجه ابن ماجه (١٦٤٤) واللفظ له، والقطيعي في «جزء الألف دينار» (٢٩٩)
ফিরিস্তাদের অবতরণ:
تَنَزَّلُ الۡمَلٰٓئِکَۃُ وَ الرُّوۡحُ فِیۡہَا بِاِذۡنِ رَبِّہِمۡ ۚ مِنۡ کُلِّ اَمۡرٍ
সে রাতে ফেরেশতারা ও রূহ (জিবরাইল) তাদের রবের অনুমতিক্রমে সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করে।
تَنزلُ الْمَلائِكَةُ وَالرُّوحُ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِمْ مِنْ كُلِّ أَمْرٍ﴾ أَيْ: يَكْثُرُ تَنزلُ الْمَلَائِكَةِ فِي هَذِهِ اللَّيْلَةِ لِكَثْرَةِ بَرَكَتِهَا، وَالْمَلَائِكَةُ يَتَنَزَّلُونَ مَعَ تَنَزُّلِ الْبَرَكَةِ وَالرَّحْمَةِ، كَمَا يَتَنَزَّلُونَ عِنْدَ تِلَاوَةِ الْقُرْآنِ وَيُحِيطُونَ بحِلَق الذِّكْرِ، وَيَضَعُونَ أَجْنِحَتَهُمْ لِطَالِبِ الْعِلْمِ بِصِدْقٍ تَعْظِيمًا لَهُ.
عن أبي هريرة:] ليلةُ القَدرِ ليلةُ السّابعةِ، أوِ التّاسعةِ وعِشرينَ، وإنَّ الملائِكَةَ تلكَ اللَّيلةَ أَكْثرُ في الأرضِ مِن عددِ الحصى
সূত্র: সহিহ ইবনে খুযাইমা খ. ৩ পৃ. ৫৮০
ফিরিস্তাদের আমল:
سَلٰمٌ ۟ۛ هي حَتّٰی مَطۡلَعِ الۡفَجۡرِ
শান্তিময় সেই রাত, ফজরের সূচনা পর্যন্ত।
عَنْ مُجَاهِدٍ فِي قَوْلِهِ: ﴿سَلامٌ هِيَ﴾ قَالَ: هِيَ سَالِمَةٌ، لَا يَسْتَطِيعُ الشَّيْطَانُ أَنْ يَعْمَلَ فِيهَا سُوءًا أَوْ يَعْمَلَ فِيهَا أَذًى
শয়তান কোনো অপকর্ম ও অনিষ্ট করতে পারেনা।
অর্থাৎ
لَا يَخْرُجُ شَيْطَانُهَا حَتَّى يُضِيءَ فَجْرُهَا
সূত্র: সহিহ ইবনে খুযাইমা হাদিস: ২১৯০
মুসল্লিদের থেকে বরকত নেয়।
عَنْ عليٍّ أَثَرًا غَرِيبًا فِي نُزُولِ الْمَلَائِكَةِ، وَمُرُورِهِمْ عَلَى الْمُصَلِّينَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ، وَحُصُولِ الْبَرَكَةِ لِلْمُصَلِّينَ.
حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي زِيَادٍ القَطواني، حَدَّثَنَا سَيَّارُ بْنُ حَاتِمٍ، حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ سَعِيدٍ -يَعْنِي الرَّاسِبِيَّ-عَنْ هِلَالٍ أَبِي جَبَلَةَ، عَنْ أَبِي عَبْدِ السَّلَامِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ كَعْبٍ أَنَّهُ قَالَ: ، فَهِيَ عَلَى حَدّ هَوَاءِ الدُّنْيَا وَهَوَاءِ الْآخِرَةِ،
إِنَّ سِدْرَةَ الْمُنْتَهَى عَلَى حَدِّ السَّمَاءِ السَّابِعَةِ، مِمَّا يَلِي الْجَنَّةَ
অর্থাৎ সিদরাতুল মুনতাহা (তথা শেষপ্রান্তের যে বরই গাছ) জান্নাত সংলগ্ন সপ্তম অাকাশের শেষ প্রান্তে অবস্থিত।
عُلوها فِي الْجَنَّةِ، وَعُرُوقُهَا وَأَغْصَانُهَا مِنْ تَحْتِ الْكُرْسِيِّ،
তার চূড়া জান্নাতে এবং গোড়ায় এবং ডালা কুরসির নিচ পর্যন্ত বিস্তৃত।
فِيهَا مَلَائِكَةٌ لَا يَعْلَمُ عِدَّتَهُمْ إِلَّا اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ يَعْبُدُونَ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ عَلَى أَغْصَانِهَا فِي كُلِّ مَوْضِعِ شَعْرَةٍ مِنْهَا مَلَكٌ
সেখানে এত সংখ্যক ফেরেশতা অবস্থান করেনন, যার সংখ্যা আল্লাহ ছাড়া কারো জানা নাই। তারা ডালে ডালে আল্লাহর ইবাদত করেন। চুল পরিমান এতটুকুও জায়গা খালি নেই, যেখানে কোনো না কোনো ফিরিস্তা অবস্থান করেন না।
وَمَقَامُ جِبْرِيلَ، عَلَيْهِ السَّلَامُ، فِي وَسَطِهَا، فَيُنَادِي اللَّهُ جِبْرِيلَ أَنْ يَنْزِلَ فِي كُلِّ لَيْلَةِ قَدْر مَعَ الْمَلَائِكَةِ الَّذِينَ يَسْكُنُونَ سِدْرَةَ الْمُنْتَهَى، وَلَيْسَ فِيهِمْ مَلَكٌ إِلَّا قَدْ أُعْطِيَ الرَّأْفَةَ وَالرَّحْمَةَ لِلْمُؤْمِنِينَ، فَيَنْزِلُونَ عَلَى(٨٢) جِبْرِيلَ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ، حِينَ تَغْرُبُ الشَّمْسُ، فَلَا تَبْقَى بُقْعَةٌ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ إِلَّا وَعَلَيْهَا مَلَكٌ،
তার মাঝখানে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম এর আসন। কদরের রাত্রিতে সেখানকার সকল ফেরেশতাদের সঙ্গে নিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করার জন্য আল্লাহ তা’আলা জিবরাঈল আ. কে নির্দেশ দান করেন। এদের প্রত্যেকের হ্নদয়ে ঈমানদারের প্রতি দয়া ও করুণা দান করেন। ফলে সুর্যাস্তের পর থেকে তারা জিব্রাঈল আ. এর সাথে অবতরণ করে পৃথিবীর এমন কোনো ভুখন্ড থাকে না, যেখানে ফিরিস্তারা না থাকেন
সালাম দেয়
عَنِ الشَّعْبِيِّ فِي قَوْلِهِ تَعَالَى: ﴿مِنْ كُلِّ أَمْرٍ سَلامٌ هِيَ حَتَّى مَطْلَعِ الْفَجْرِ﴾ قَالَ: تَسْلِيمُ الْمَلَائِكَةِ لَيْلَةَ الْقَدْرِ عَلَى أَهْلِ الْمَسَاجِدِ، حَتَّى يَطْلُعَ الْفَجْرُ.
إِمَّا سَاجِدٌ وَإِمَّا قَائِمٌ، يَدْعُو لِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ
فَلَا يَزَالُونَ لَيْلَتَهُمْ تِلْكَ يَدْعُونَ لِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ،
দন্ডায়মান ও সিজদারত অবস্থায় থাকা ঈমানদারের জন্য দুআ করতে থাকেন।
তবে
إِلَّا أَنْ تَكُونَ كَنِيسَةٌ أَوْ بَيْعَةٌ، أَوْ بَيْتُ نَارٍ أَوْ وَثَنٍ، أَوْ بَعْضُ أَمَاكِنِكُمُ الَّتِي تَطْرَحُونَ فِيهَا الخبَث، أَوْ بَيْتٌ فِيهِ سَكْرَانٌ، أَوْ بَيْتٌ فِيهِ مُسكر، أَوْ بَيْتٌ فِيهِ وَثَنٌ مَنْصُوبٌ، أَوْ بَيْتٌ فِيهِ جَرَسٌ مُعَلّق، أَوْ مَبْوَلَةٌ، أَوْ مَكَانٌ فِيهِ كَسَاحَةِ الْبَيْتِ،
গির্জা, মন্দির, অগ্নিপূজার ঘর, ডাষ্টবিন, মদের বার বা ঘর, মূর্তির ঘর বা ঘন্টি রাখার ঘর ইত্যাদীতে আসেন না।
…ঘরে ছবি লটকানো।
٧- [عن علي بن أبي طالب:] لا تَدخُلُ المَلائِكةُ بَيتًا فيه صُورةٌ ولا كَلبٌ ولا جُنُبٌ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ঘরে ছবি কুকুর ও অপবিত্র লোক থাকে- সেখানে রহমতের ফেরেশতাগগ (নতুন রহমতসহ) প্রবেশ করেন না।
সূত্র: সুনান আবু দাউদ হাদিস: ২২৭
لاَ تدخلُ الملائِكَةُ بيتًا فيهِ كَلبٌ
সূত্র: মুসনাদে আহমাদ হাদিস: ২২৯৮৭
মুসাফাহা করেন।
وَجِبْرِيلُ لَا يَدَعُ أَحَدًا مِنَ الْمُؤْمِنِينَ إِلَّا صَافَحَهُ، وَعَلَامَةُ ذَلِكَ مَن اقْشَعَرَّ جلدهُ وَرَقَّ قَلْبُهُ ودَمعَت عَيْنَاهُ، فَإِنَّ ذَلِكَ مِنْ مُصَافَحَةِ جِبْرِيلَ
হযরত জিব্রাঈল আ. সকল ঈমানদারের সাথে মুসাফাহা করেন। এর চিহ্ন হলো, শরীরের পশম খাড়া হওয়া, হ্নিদয় বিগলিত হওয়া, চক্ষু অশ্রুশিক্ত হওয়া। আর এটা জিব্রাঈল আ. মুসাফাহার কারণেই হয়ে থাকে।
মুসল্লিদের বরকত গ্রহণ করেন।
কা’ব রহ. বলেন
وَذَكَرَ كَعْبٌ أَنَّهُ مَنْ قَالَ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ: “لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ”، ثَلَاثَ مَرَّاتٍ، غَفَر اللَّهُ لَهُ بِوَاحِدَةٍ، وَنَجَا مِنَ النَّارِ بِوَاحِدَةٍ، وَأَدْخَلَهُ الْجَنَّةَ بِوَاحِدَةٍ
যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদরে তিনবার বলে, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ তাকে একবারে বিনিয়ম আল্লাহ তা’আলা ক্ষমা করে দেন, দ্বিতীয়বারের বিনিময় জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে দেন, তৃতীয়বারের বিনিময় জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ করে দেন।
ফেরার পালা
এবার সর্বপ্রথম হযরত জিব্রাঈল আ. উপরে উঠে নিজের ডানা ছেড়ে দেন।
وَلَهُ جَنَاحَانِ أَخْضَرَانِ، لَا يَنْشُرُهُمَا إِلَّا فِي تِلْكَ السَّاعَةِ-فَتَصِيرُ الشَّمْسُ لَا شُعَاعَ لَهَا، ثُمَّ يَدْعُو مَلَكًا فَيَصْعَدُ، فَيَجْتَمِعُ نُورُ الْمَلَائِكَةِ وَنُورُ جَنَاحَيْ جِبْرِيلَ، فَلَا تَزَالُ الشَّمْسُ يَوْمَهَا ذَلِكَ مُتَحَيِّرَةً، فَيُقِيمُ جِبْرِيلُ وَمَنْ مَعَهُ بَيْنَ الْأَرْضِ وَبَيْنَ السَّمَاءِ الدُّنْيَا يَوْمَهَمْ ذَلِكَ، فِي دُعَاءٍ وَرَحْمَةٍ وَاسْتِغْفَارٍ لِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ، وَلِمَنْ صَامَ رَمَضَانَ احْتِسَابًا، وَدُعَاءٍ لِمَنْ حَدث نَفْسَهُ إِنْ عَاشَ إِلَى قَابِلٍ صَامَ رَمَضَانَ لِلَّهِ.
জিব্রাঈল আ. এর সবুজ দুটি পাখা আছে যা শুধুমাত্র এ রাতেই ছেড়ে দেন, ফলে সূর্যের আলো বিলিন হয়ে যায়। অতপর একেক করে ফিরিস্তাদের ডাকেন। সবাই একত্রিত হলে সবার নূর ও জিব্রাঈল আ. এর নূর একত্রিত হলে সূর্যের আলোতে সেদিন তেজ থাকে না। অতপর আসমান ও যমীনের মাঝে তারা একদিন অবস্থান করে ঈমানদারদের জন্য রহমত ও মাফিরাতের দুআ করতে থাকেন। এবং তাদের জন্যও দুআ করেন যারা রোযা রেখেছে এবং আগামী বছর বেঁচে থাকলে রোযা রাখার নিয়ত পাকা করে রেখেছে।
فَإِذَا أَمْسَوْا دَخَلُوا السَّمَاءَ الدُّنْيَا، فَيَجْلِسُونَ حِلَقًا فَتَجْتَمِعُ إِلَيْهِمْ مَلَائِكَةُ سَمَاءِ الدُّنْيَا، فَيَسْأَلُونَهُمْ عَنْ رَجُلٍ رَجُلٍ، وَعَنِ امْرَأَةٍ امْرَأَةٍ
সন্ধার সময় প্রথম আসমানে প্রবেশ করে হালকা বানিয়ে বসেন, ফলে প্রথম আসমানের ফিরিস্তারা এসে মিলিত হন এবং প্রশ্ন করেন যে,
مَاذَا فَعَلَ فُلَانٌ؟ وَكَيْفَ وَجَدْتُمُوهُ العامَ؟ فَيَقُولُونَ: وَجَدْنَا فُلَانًا عَامَ أَوَّلَ فِي هَذِهِ اللَّيْلَةِ مُتَعَبِّدًا وَوَجَدْنَاهُ الْعَامَ مُبْتَدِعًا
وَوَجَدْنَا فُلَانًا مُبْتَدِعًا وَوَجَدْنَاهُ الْعَامَ عَابِدًا
অমুক অমুক কি তেতেছিলি? এ বছর তাকে কেমনে পেলেন? তারা জবাব দেন, আগের বছর পেয়েছিলাম ইবাদতে কিন্তু এ বছর দেখলাম বিদআত কাজ করছে।
গত বছর পেয়েছিলাম ইবাদতে কিন্তু এ বছর দেখলাম ইবাদতে।
فَيَكُفُّونَ عَنِ الِاسْتِغْفَارِ لِذَلِكَ، وَيَقْبَلُونَ عَلَى الِاسْتِغْفَارِ لِهَذَا، وَيَقُولُونَ:
وَجَدْنَا فُلَانًا وَفُلَانًا يَذْكُرَانِ اللَّهَ، وَوَجَدْنَا فُلَانًا رَاكِعًا، وَفُلَانًا سَاجِدًا، وَوَجَدْنَاهُ تَالِيًا لِكِتَابِ اللَّهِ. قَالَ: فَهُمْ كَذَلِكَ يَوْمَهُمْ وَلَيْلَتَهُمْ،
এভাবে সব আসমান পাড়ি দিয়ে সিদরাতুল মুনতাহায়
حَتَّى يَصْعَدُونَ إِلَى السَّمَاءِ الثَّانِيَةِ، فَفِي كُلِّ سَمَاءٍ يَوْمٌ وَلَيْلَةٌ، حَتَّى يَنْتَهُوا مَكَانَهُمْ مِنْ سِدْرَةِ الْمُنْتَهَى
সিদরাতুল মুনতাহা বলেন,
يَا سُكَّانِي، حَدِّثُونِي عَنِ النَّاسِ وَسَمُّوهُمْ لِي. فَإِنَّ لِي عَلَيْكُمْ حَقًّا، وَإِنِّي أحبُّ مَنْ أحبَّ اللَّهَ
أَنَّهُمْ يَعدُون لَهَا، وَيَحْكُونَ لَهَا الرَّجُلَ وَالْمَرْأَةَ بِأَسْمَائِهِمْ وَأَسْمَاءِ آبَائِهِمْ.
জান্নাত বলে
ثُمَّ تُقْبِلُ الجنة على السدرة فتقول: أخبرني بِمَا أَخْبَرَكِ سُكَّانُكِ مِنَ الْمَلَائِكَةِ. فَتُخْبِرُهَا، قَالَ: فَتَقُولُ الْجَنَّةُ: رَحْمَةُ اللَّهِ عَلَى فُلَانٍ، وَرَحْمَةُ اللَّهِ عَلَى فُلَانَةٍ، اللَّهُمَّ عجِّلهم إليَّ،
সর্বপ্রথম আসন গ্রহন করে জিব্রাঈল আ. বলেন,
وَجَدْتُ فُلَانًا سَاجِدًا فَاغْفِرْ لَهُ. فَيَغْفِرُ لَهُ،
আরশ বহনকারী ফিরিস্তারা বলেন,
فيسمعُ جبريلُ جميعَ حَمَلَةِ الْعَرْشِ فَيَقُولُونَ: رَحْمَةُ اللَّهِ عَلَى فُلَانٍ، وَرَحْمَةُ اللَّهِ عَلَى فُلَانَةٍ، وَمَغْفِرَتُهُ لِفُلَانٍ،
বিদআতী ও গুনাহগারদের ব্যাপারে জিব্রাঈল আ. আল্লাহকে বলেন,
وَيَقُولُ يَا رَبِّ، وَجَدْتُ عَبْدَكَ فُلَانًا الَّذِي وَجَدْتُهُ عَامَ أَوَّلَ عَلَى السُنَّة وَالْعِبَادَةِ، وَوَجَدْتُهُ الْعَامَ قَدْ أَحْدَثَ حَدَثًا وَتَوَلَّى عَمَّا أُمِرَ بِهِ.
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
فَيَقُولُ اللَّهُ: يَا جِبْرِيلُ، إِنْ تَابَ فَأَعْتَبَنِي قَبْلَ أَنْ يَمُوتَ بِثَلَاثِ سَاعَاتٍ غَفَرْتُ لَهُ
জিব্রাঈল আ. বলেন,
. فَيَقُولُ جِبْرِيلُ: لَكَ الْحَمْدُ إِلَهِي، أَنْتَ أَرْحَمُ مِنْ جَمِيعِ خَلْقِكَ، وَأَنْتَ أَرْحَمُ بِعِبَادِكَ مِنْ عِبَادِكَ بِأَنْفُسِهِمْ
সকল সৃষ্টি বলে ওঠে
قَالَ: فَيَرْتَجُّ الْعَرْشُ وما حوله، والحجب والسموات وَمِنْ فِيهِنَّ، تَقُولُ: الْحَمْدُ لِلَّهِ الرَّحِيمِ، الْحَمْدُ لِلَّهِ الرَّحِيمِ
হযরত কা’ব বলেন,
أَنَّهُ مَنْ صَامَ رَمَضَانَ وَهُوَ يُحَدِّثُ نَفْسَهُ إِذَا أَفْطَرَ بَعْدَ رَمَضَانَ أَلَّا يَعْصِيَ اللَّهَ، دَخَلَ الْجَنَّةَ بِغَيْرِ مَسْأَلَةٍ وَلَا حِسَابٍ