চামড়া কি করতে হবে?
কুরবানীর পশুর মাংস বা চামড়াসহ কোন অংশই বিক্রি করা যাবে না। বরং নিজের কাজে ব্যাবহার করতে হবে। কারণ হাদিসে এসেছে,
عن أبي هريرة قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ مَنْ بَاعَ جِلْدَ أُضْحِيّتِهِ فَلاَ أُضْحِيّةَ لَهُ
অর্থঃ হযরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে তার কুরবানীর চামড়া (নিজের জন্য) বিক্রি করবে, তার কুরবানী শুদ্ধ হবে না।
সূত্রঃ জামে সগীর হাদিস: ৮৫৩৫ মুসতাদরাকে হাকেম: ৩৪৬৮ বায়হাকী: ১৯৭০৮ (হাদিস সহিহ)
أن النبي صلى الله عليه وسلم قال وتَمَتَّعُوا بجلودِها ولا تَبِيعُوها
অর্থঃ রাসুলুল্লাহ স: বলেন, তোমরা কুরবানীর পশুর চামড়া দ্বারা উপকৃত হও, বিক্রি করে দিও না।
সূত্রঃ মাজমাউয যাওয়ায়েদ খ: ৪ পৃ: ২৯
চামড়া বিক্রি করলে টাকা কি করবে?
তবে যদি কুরবানীর গোশত বা চামড়া বিক্রি করে, তাহলে এর মূল্য নিজের কাজে ব্যবহার করা যাবে না। বরং এ টাকা সাদাকা করে দিতে হবে।
یکره له ان یبیع الجلد فان فعل ذلک تصدق بثمنه
অর্থাৎ কুরবানীর পশুর চামড়া বিক্রি করা মাকরুহ। তবে যদি বিক্রি করে তাহলে বিক্রিত মূল্য সাদাকা করে দিতে হবে।
সূত্রঃ আল মাবসুত খ: ১২ পৃ: ১৪ রদ্দুল মুহতার খ: ৯ পৃ: ৪৭৫ ফাতাওয়া হিন্দিয়া খ: ৫ পৃ: ৩০১ কাযীখান খ: ৩ পৃ: ৩৫৪
কারণ হাদিস শরীফে এসেছে,
عن عَلِيّ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَمَرَهُ أَنْ يَقُومَ عَلَى بُدْنِهِ وَأَنْ يَقْسِمَ بُدْنَهُ كُلَّهَا لُحُومَهَا وَجُلُودَهَا وَجِلاَلَهَا وَلاَ يُعْطِيَ فِي جِزَارَتِهَا شَيْئًا
অর্থঃ হযরত আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, তাঁকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নিজের কুরবানীর জানোয়ারের পাশে দাঁড়াতে আর এগুলোর সমুদয় গোশ্ত, চামড়া এবং পিঠের আবরণসমূহ বিতরণ করতে নির্দেশ দেন এবং তা হতে যেন কসাইকে পারিশ্রমিক হিসেবে কিছুই না দেয়া হয়।
সূত্রঃ সহিহ বুখারী হাদিস: ১৭১৭ মুসলিম: ১৩১৭
চামড়ার টাকা কোথায় দিতে হবে?
ইসলামে কুরবানির চামড়ার অর্থ যারা পাবেন। পবিত্র কুরআানে মহান আল্লাহ বলেন-
إِنَّمَا ٱلصَّدَقَـٰتُ لِلۡفُقَرَاۤءِ وَٱلۡمَسَـٰكِینِ وَٱلۡعَـٰمِلِینَ عَلَیۡهَا وَٱلۡمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمۡ وَفِی ٱلرِّقَابِ وَٱلۡغَـٰرِمِینَ وَفِی سَبِیلِ ٱللَّهِ وَٱبۡنِ ٱلسَّبِیلِۖ فَرِیضَةࣰ مِّنَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ عَلِیمٌ حَكِیمࣱ
অর্থঃ সদকা হল শুধু নিঃস্ব, অভাবগ্রস্ত, সাদাকা (যাকাত) আদায়কারী কর্মচারী ও যাদের মনোরঞ্জন উদ্দেশ্য তাদের জন্য তাদের জন্য এবং তা (সেই) ক্রীতদাস (যার) মুক্তির জন্যে (অর্থের প্রয়োজন) ঋণগ্রস্তদের জন্যে(যারা এমন গরিব যে ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না), আল্লাহর পথে জেহাদকারীদের জন্যে এবং মুসাফিরদের জন্যে। এ আল্লাহর বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।-সূরা তাওবা : ৬০
লেখক
মুফতী রিজওয়ান রফিকী
পরিচালক: মাদরাসা মারকাযুন নূর বোর্ড বাজার,গাজীপুর সদর।