Home > লালন মতবাদ > মুর্শিদ, রাসুল ও আল্লাহ একজনই?

মুর্শিদ, রাসুল ও আল্লাহ একজনই?

মুখোশের আড়ালে লালন মতবাদ। পর্ব-২
বিষয়: মুর্শিদ, রাসুল ও আল্লাহ একজনই?

আল্লাহ তাআলা এক ও অদ্বিতীয় সত্তা। যাঁর কোনো অংশীদার নেই। না তাঁর যাতে না তাঁর সিফাতে কারো শরীক হতে পারে। তিনি অতুলনীয়। অথচ লালন ফকিরের আক্বীদা বা বিশ্বাস হলো মুরশিদ, রাসুল ও আল্লাহ একজনই। নাউযুবিল্লাহ। দেখুন লালন ফকির কী লিখেছে-
‘যে মুর্শিদ সে রসুলুল্লাহ
সাবুদ কোরান কালুল্লাহ
আশেকে বলিলে আল্লাহ তাও হয় সে।’ -অখণ্ড লালনসঙ্গীত : পৃ. ২২

আবার অন্য গানে লালন লিখেছে-
‘যেহি মুরশিদ সেই তো রসুল,
ইহাতে নাই কোনো ভুল, খোদাও সে হয়।
এমন কথা লালন কয় না কোরানে কয়। -অখণ্ড লালনসঙ্গীত : পৃ. ৩৯

লালন ফকির লিখেছে,
‘নবি চেনা রসুল জানা ও দিনকানা তোর ভাগ্যে জোটে না
আল্লাহ, মোহাম্মদ, নবি তিনে হয় একজনা।’ -লালনভাষা অনুসন্থান খ. ২ পৃ. ১৮২

লালনভক্ত আবদেল মাননান লিখেছে,
‘মহানবির দেহত্যাগের পর নবির ঘোষিত ‘মাওলা’ আলীকে (আঃ) অগ্রাহ্য করার জন্যে আবু বকর মাওলাইয়াতকে পাশ কাটিয়ে ‘আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত’ নামক ফ্যাকড়া তৈরি করে ফতুয়া দিলো
‘আল্লাহ ও রসুলকে দুটি পৃথক সত্তা বলে । এ কথা সরাসরি কোরানবিরোধী । কারণ কোরান বলেন: যারা আল্লাহ ও রসুলের মধ্যে পার্থক্য করে তারা স্পষ্টত কাফের। আবু বকর, ওমর, ওসমান, আয়েশা, মাবিয়া, এজিদের সুন্নতি মুসলমানদের সাথে এক্ষেত্রে অহাবিদের মৌলিক দূরত্ব নেই।’ -লালনভাষা অনুসন্ধান খ. ২ পৃ. ১৮১-১৮২

লালনের এই শিরকি বক্তব্যের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে লালনভক্ত আবদেল মান্নান তার বইয়ে লিখেছে,
‘সাম্রাজ্যবাদী-রাজতান্ত্রিক কোরানে অদ্বৈতসত্তা আল্লাহ আর রসুলকে সম্পূর্ণ দুভাবে বিভক্ত করে পৃথক দুটি সত্তা হিসেবে দেখানে হয়। আবু বকর-ওমর গং এ চক্রান্ত কার্যকর করে নবিকে আল্লাহ্ থেকে আলাদা বানিয়ে সাধারণ মানুষের পর্যায়ে নামিয়ে এনেছিলো। আর অহাবি-অসুর কাঠমোল্লারা তো ‘মুরশিদ বা
গুরু’সত্তার কোনো স্বীকৃতিই দেয় না। আরবি কোরানই বলেন: ‘যারা আল্লাহ ও রসুলের মধ্যে পার্থক্য করে তারা কাফের’। শাঁইজি লালনের দিব্যদৃষ্টিতে মুরশিদ-রসুল-আল্লাহ্ একই সত্তা, অখণ্ড অহাদানিয়াত। সর্বেশ্বরবাদ বা একশ্বরবাদ মানেও তাই। আরব জাতীয় সাম্রাজ্যবাদ আল্লাহ-রসুলকে নিজেদের স্বার্থমতো দাঁড় করিয়েছে পৃথক পৃথক অস্তিত্ব বলে। আর শাঁইজি এই তিনকে গেঁথেছেন একসুতোয় । ‘লালন কয় না এমন কথা কোরানে কয়’- একথার সূক্ষ্ম তাৎপর্য হয়, লালন শাহর বাক্য সবই কোরানবাক্য। মনগড়া কোনো কথা
মোটেও নয়। -অখণ্ড লালনসঙ্গীত : পৃ. ৩৯

অর্থাৎ লালন ফকির বা বাউলদের মতবাদ হলো, আল্লাহ, রাসুল ও পীর-মুরশিদ একসত্তা। আলাদা কিছু নয়।

ইসলাম কী বলে?
আসতাগফিরুল্লাহ। কী গর্হিত ও ভয়াবহ উক্তি এটা! কল্পনা করা যায়? পীর ও রাসুল আলাইহিস সালাম-কে আল্লাহ এবং আল্লাহকে রাসুল ও পীর-মুরশিদ মনে করার এই জঘন্যতম আকীদা ইসলামের মূলে কুঠারাঘাত করারই অপচেষ্টা। লালন ফকিরের এ গানগুলো এমন ধরণের গান, যেখানে তওহিদ-রেসালাত, কুরআন-সুন্নাহ ও ইসলামের মূল আকীদা বিশ্বাস সবকিছুকে অস্বীকার করে এক জাতীয় কুহকভরা মরমিয়া নান্দনিকতার মোড়কে এমন সব কথা বলা হয়েছে, যা রীতিমত শিরক-কুফর নিফাক ও গোমরাহীর চুড়ান্তসীমা অতিক্রম করেছে। আফসোস! যেসব কুফর-শিরকি বিশ্বাস উৎখাত করার জন্যই এই ধরাপৃষ্ঠে ইসলামের আগমন হয়েছে, সেসব নিষিদ্ধ বিশ্বাস লালনের গানে বার বার বাঙ্ময় হয়ে ওঠে; এবং আরো আফসোস যে, সেই সকল দুর্বাক্যপূর্ণ গান সসম্মান প্রতিষ্ঠা ও পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করে।

প্রিয় পাঠক, একটু ভাবুন তো, আল্লাহ, রাসুল ও মুরশিদ যদি একজনই হয়ে থাকে, তাহলে তাওহীদ তথা একাত্ববাদের অর্থ বহুত্ববাদে পরিবর্তন করে কী আল্লাহকে একাধিক সত্তায় রুপান্তরিত করা হয়ে যায় না? অথচ মহান রব এক ও অদ্বিতীয়। যাঁর কোনো শরীক নেই, যাঁর কোনো আকার নেই, যাঁর কোনো তুলনা নেই। এ ব্যাপারে নিন্মে কয়েকটি আয়াত পেশ করা হলো। মহান আল্লাহ বলেন,
اِلٰـهُکُمۡ اِلٰهٌ وَّاحِدٌ ۚ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الرَّحۡمٰنُ الرَّحِیۡمُ
আর তোমাদের ইলাহ্ এক ইলাহ্, তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্ নেই। তিনি দয়াময়, পরম দয়ালু। -সুরা বাকারা : ১৬৩

لَقَدۡ کَفَرَ الَّذِیۡنَ قَالُوۡۤا اِنَّ اللّٰهَ ثَالِثُ ثَلٰثَۃٍ ۘ وَ مَا مِنۡ اِلٰهٍ اِلَّاۤ اِلٰهٌ وَّاحِدٌ ؕ وَ اِنۡ لَّمۡ یَنۡتَهُوۡا عَمَّا یَقُوۡلُوۡنَ لَیَمَسَّنَّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا مِنۡهُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ
এবং তারাও নিশ্চয় কাফির হয়ে গিয়েছে, যারা বলে, ‘আল্লাহ তিনজনের মধ্যে তৃতীয় জন।’ অথচ এক ইলাহ ব্যতীত কোনও ইলাহ নেই। তারা যদি তাদের এ কথা থেকে বিরত না হয়, তবে তাদের মধ্যে যারা কুফরীতে লিপ্ত হয়েছে, তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি স্পর্শ করবে। -সুরা মায়িদা : ৭৩

یٰۤاَہۡلَ الۡکِتٰبِ لَا تَغۡلُوۡا فِیۡ دِیۡنِکُمۡ وَلَا تَقُوۡلُوۡا عَلَی اللّٰہِ اِلَّا الۡحَقَّ ؕ اِنَّمَا الۡمَسِیۡحُ عِیۡسَی ابۡنُ مَرۡیَمَ رَسُوۡلُ اللّٰہِ وَکَلِمَتُہٗ ۚ اَلۡقٰہَاۤ اِلٰی مَرۡیَمَ وَرُوۡحٌ مِّنۡہُ ۫ فَاٰمِنُوۡا بِاللّٰہِ وَرُسُلِہٖ ۚ۟ وَلَا تَقُوۡلُوۡا ثَلٰثَۃٌ ؕ اِنۡتَہُوۡا خَیۡرًا لَّکُمۡ ؕ اِنَّمَا اللّٰہُ اِلٰہٌ وَّاحِدٌ
হে কিতাবীগণ! নিজেদের দীনে সীমালংঘন করো না এবং আল্লাহ সম্পর্কে সত্য ছাড়া অন্য কথা বলো না। মারয়ামের পুত্র ঈসা মাসীহ তো আল্লাহর রাসূল মাত্র এবং আল্লাহর এক কালিমা, যা তিনি মারয়ামের কাছে পাঠিয়েছিলেন। আর ছিলেন এক রূহ, যা তাঁরই পক্ষ হতে (সৃষ্টি হয়ে) ছিল। সুতরাং তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান আন এবং বলো না (আল্লাহ) ‘তিন’। এর থেকে নিবৃত্ত হও। এরই মধ্যে তোমাদের কল্যাণ। আল্লাহ তো একই মাবুদ। -সুরা নিসা : ১৭১

اَئِنَّکُمۡ لَتَشۡهَدُوۡنَ اَنَّ مَعَ اللّٰهِ اٰلِهَۃً اُخۡرٰی ؕ قُلۡ لَّاۤ اَشۡهَدُ ۚ قُلۡ اِنَّمَا هُوَ اِلٰهٌ وَّاحِدٌ وَّ اِنَّنِیۡ بَرِیۡٓءٌ مِّمَّا تُشۡرِکُوۡنَ
সত্যিই কি তোমরা এই সাক্ষ্য দিতে পার যে, আল্লাহর সাথে অন্যান্য মাবুদও আছে? বলে দাও, আমি তো (এরূপ) সাক্ষ্য দেব না। বলে দাও, তিনি তো একই মাবুদ। তোমরা যে সকল জিনিসকে তাঁর শরীক সাব্যস্ত কর, আমি তাদের থেকে বিমুখ। -সুরা আনআম : ১৯

اِتَّبِعۡ مَاۤ اُوۡحِیَ اِلَیۡکَ مِنۡ رَّبِّکَ ۚ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ ۚ وَ اَعۡرِضۡ عَنِ الۡمُشۡرِکِیۡنَ
(হে নবী!) তোমার প্রতিপালকের পক্ষ হতে তোমার প্রতি যে ওহী পাঠানো হয়েছে, তুমি তারই অনুসরণ কর। তিনি ছাড়া কোনও মাবুদ নেই। যারা (আল্লাহর সঙ্গে) শিরক করে, তাদের অগ্রাহ্য কর। -সুরা আনআম : ১০৬

اللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الۡحَـىُّ الۡقَيُّوۡمُ لَا تَاۡخُذُهٗ سِنَةٌ وَّلَا نَوۡمٌ‌ؕ لَهٗ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَمَا فِى الۡاَرۡضِ‌ؕ
আল্লাহ্, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ্ নেই। তিনি চিরঞ্জীব, সর্বসত্তার ধারক। তাঁকে তন্দ্রা বা নিদ্রা স্পর্শ করে না। আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্ত তাঁরই। -সুরা বাকারা : ২৫৫

شَهِدَ اللّٰهُ اَنَّهٗ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ ۙ وَ الۡمَلٰٓئِکَۃُ وَ اُولُوا الۡعِلۡمِ قَآئِمًۢا بِالۡقِسۡطِ ؕ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ
আল্লাহ স্বয়ং এ বিষয়ের সাক্ষ্য দেন এবং ফিরিশতাগণ ও জ্ঞানীগণও যে, তিনি ছাড়া কোন মাবুদ নেই, যিনি ইনসাফের সাথে (বিশ্ব জগতের) নিয়ম-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করছেন। তিনি ছাড়া অন্য কেউ ইবাদতের উপযুক্ত নয়। তাঁর ক্ষমতা পরিপূর্ণ এবং হিকমতও পরিপূর্ণ। -সুরা আলে ইমরান : ১৮

وَ مَا مِنۡ اِلٰهٍ اِلَّا اللّٰهُ
আল্লাহ ছাড়া কোনও মাবুদ নেই এবং নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়। -সুরা আলে ইমরান : ৬২

لَوۡ کَانَ فِیۡہِمَاۤ اٰلِہَۃٌ اِلَّا اللّٰہُ لَفَسَدَتَا ۚ فَسُبۡحٰنَ اللّٰہِ رَبِّ الۡعَرۡشِ عَمَّا یَصِفُوۡنَ
যদি আসমান ও যমীনে আল্লাহ ছাড়া অন্য মাবুদ থাকত, তবে উভয়ই ধ্বংস হয়ে যেত। ১১ সুতরাং তারা যা বলছে, আরশের মালিক আল্লাহ তা থেকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র। -সুরা আম্বিয়া : ২২

فَاطِرُ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِ ؕ جَعَلَ لَکُمۡ مِّنۡ اَنۡفُسِکُمۡ اَزۡوَاجًا وَّمِنَ الۡاَنۡعَامِ اَزۡوَاجًا ۚ یَذۡرَؤُکُمۡ فِیۡہِ ؕ لَیۡسَ کَمِثۡلِہٖ شَیۡءٌ ۚ وَہُوَ السَّمِیۡعُ الۡبَصِیۡرُ
তিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা। তিনি তোমাদেরই মধ্য হতে তোমাদের জন্য জোড়া সৃষ্টি করেছেন এবং চতুষ্পদ জন্তুদের মধ্যেও সৃষ্টি করেছেন জোড়া। এর মাধ্যমে তিনি তোমাদের বংশ বিস্তার করেন। কোনও জিনিস নয় তার অনুরূপ। তিনিই সব কথা শোনেন, সবকিছু দেখেন। -সূরা আশ্‌-শূরা : ১১

প্রিয় পাঠক, উপরিউক্ত আয়াতসমূহ দ্বারা এ কথা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, মহান আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর সাথে অন্য কাউকে শরীক স্থাপন করার প্রতিবাদ স্বয়ং আল্লাহ’ই করেছেন। উপরন্তু এ সকল আয়াত নাযিল হয়েছে নবি আলািহিস সালাম-এর ওপর। যদি আল্লাহ এবং রাসুল একই সত্তা হতেন, তাহলে এসকল আয়াত নবিজি আলাইহিস সালাম-এর ওপর নাযিল করার কোনো অর্থ থাকে? অথচ লালন লিখেছে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামই স্বয়ং আল্লাহ। দেখুন কী বলে-
আহাদে আহমদ এসে নবি নাম কে জানালে।
যে তনে করিল সৃষ্টি সে তন কোথায় রাখিলে।
আহাদ মানে পরওয়ার আহমদ নাম হলো যাঁর।
জন্মমৃত্যু হয় যদি তাঁর শরার আইন কই চলে।
নবি যাঁরে বলিতে হয় উচিত বটে তাই জেনে লয়।
নবি পুরুষ কি প্রকৃতি কায় সৃষ্টির সৃজনকালে।
আহাদ নামে কেন ভাই মানবলীলা করিলেন শাঁই।
লালন তবে কেন যায় অদেখা ভাবুক দলে।-অখণ্ড লালনসঙ্গীত : পৃ. ১২১

লালন আরও লিখেছে,
‘কীর্তিকর্মার খেলা কে বুঝতে পারে।
যে নিরঞ্জন সে-ই নূরনবি নামটি ধরে।
গঠিতে শাঁই সয়াল সংসার একদেহে দুইদেহ হয় তাঁর।
আহাদে আমদ নাম দেখো বিচারে।
চারিতে নাম আহমদ হয় মিম হরফ তাঁর নফি কেন কয়।
সে কথাটি জানাও আমায় নিশ্চিত করে।
এ মর্ম কাহারে শুধাই ফ্যাসাদ ঝগড়া বাঁধায় সবাই ।
লালন বলে স্থূল ভুলে যাই তার তোড়ে।’ -অখণ্ড লালনসঙ্গীত : পৃ. ১২৩

সুতরাং কুরআনের উপরিউক্ত আয়াত মোতাবেক লালনের এসকল গান কুরআন বিরুদ্ধ ও শিরকি। পক্ষান্তরে যেখানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই আল্লাহ নন, সেখানে কোনো পীরও কী আল্লাহ হতে পারেন? এটা কী চুড়ান্ত শিরক নয়? উপরন্তু যারা ত্রিত্ববাদ তথা তিন খোদায় বিশ্বাসী তাদের প্রতিবাদও আল্লাহ নিজে করলেন, সেখানে সকল নবি ও পীরকে আল্লাহ বলে ঘোষণা দেওয়া কী মহান রবের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করা নয়?

পবিত্র কুরআনে কী এমন কথা আছে?
মুর্শিদ, রাসুল ও খোদা যে একই জন এমন কথা পবিত্র কুরআনের কোথাও নেই। এটা একটা জলন্ত মিথ্যাচার। অথচ লালন তার নিজের বানানো এই কুফরি উক্তিটাকে কুরআনের বাণী বলে চালানোর অপচেষ্টা করেছে। এটা করে কী লালন গুরুতর অন্যায় করেনি? আল্লাহপাকের নামে অপবাদ দেয়নি? যারা রবের নামে মিথ্যা অপবাদ দেয়, তাদের ব্যাপারে স্বয়ং আল্লাহপাকই ঘোষণা দিয়েছেন,
وَمَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنِ افۡتَرٰی عَلَی اللّٰہِ کَذِبًا ؕ اُولٰٓئِکَ یُعۡرَضُوۡنَ عَلٰی رَبِّہِمۡ وَیَقُوۡلُ الۡاَشۡہَادُ ہٰۤؤُلَآءِ الَّذِیۡنَ کَذَبُوۡا عَلٰی رَبِّہِمۡ ۚ اَلَا لَعۡنَۃُ اللّٰہِ عَلَی الظّٰلِمِیۡنَ ۙ
সেই ব্যক্তি অপেক্ষা বড় জালেম আর কে হতে পারে, যে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা অপবাদ দেয়? এরূপ লোকদেরকে তাদের প্রতিপালকের সামনে উপস্থিত করা হবে এবং সাক্ষ্যদাতাগণ বলবে, এরাই তারা, যারা তাদের প্রতিপালকের প্রতি মিথ্যা আরোপ করত। ১৫ সকলে শুনে নিক, ওই জালেমদের উপর আল্লাহর লানত। -সুরা হুদ : ১৮

পরিশেষে বলতে চাই, লালন ফকির তার এই ‘মুরশিদ, রাসুল ও আল্লাহ একসত্তা’ বক্তব্য দিয়ে সরাসরি রবের সাথে শিরক করেছে এবং তার ভক্তকুলকেও শিরকের দরিয়ায় ডুবিয়ে মেরেছে। মহান রব আমাদেরকে লালন ও বাউলদের এসকল শিরকি আক্বীদা থেকে আমাদের ঈমানকে হিফাযত করেন। আমীন!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.