ইসলামের প্রকৃত আকীদা হলো, আল্লাহ তাা’য়ালার প্রেরিত সকল নবীগণ নিস্পাপ তথা সমস্ত গুনাহ থেকে পবিত্র। কিন্তু বাতিল সম্প্রদায় এই মহাসত্যকে বরাবরই অস্বীকার করে আসছে। এদেরই ধারাবাহিকতায় জামাআতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা মওদুদী মরহুম “নবীগণ নিস্পাপ নন” বলে দাবি করেছেন। চলুন তিনি কি লিখেছেন, আগে সেটা দেখে আসি।
মওদুদী মরহুমের দাবি:
عصمت دراصل انبیاء کے لوازمات ذات سےنہیں ہے، بلکہ اللہ تعالیٰ نے ان کو منصب نبوت کی ذمہ داریاں صحیح طور پر ادا کرنے کے لیے مصلحتاً خطاؤں اور لغزشوں سے محفوظ فرمایا ہے ورنہ اگر اللہ کی حفاظت تھوڑی دیر کے لیے بھی ان سے منفک ہوجائے جس طرح عام انسانوں سے بھول چوک اور غلطی ہوتی ہے اسی طرح انبیاء سے بھی ہوسکتی ہے، اور یہ ایک لطیف نکتہ ہے کہ اللہ تعالیٰ نے بالارادہ ہر نبی سے کسی نہ کسی وقت اپنی حفاظت اٹھا کر ایک دو لغزشیں سرزد ہوجانے دی ہیں، تاکہ لوگ انبیاء کو خدا نہ سمجھ لیں اور جان لیں کہ یہ بشر ہیں، خدا نہیں ہیں
অর্থঃ নিস্পাপ হওয়াটা আসলে নবীদের জম্মগত অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য নয়, বরং আল্লাহ তাদের নবুয়ত নামক সুমহান পদটির দায়িত্ব ও কর্তব্য সুষ্ঠভাবে পালন করার সুযোগ দানের জন্য একটা হিকমত ব্যবস্থা হিসাবে ভুল ভ্রান্তি থেকে রক্ষা করেছেন। নচেৎ আল্লাহ তায়ালা এই সংরক্ষমুলক ব্যবস্থা যদি ক্ষনিকের জন্যও তাদের ব্যাক্তিস্বত্তা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তাহলে সাধারন মানুষের যেমন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তেমনি নবীদের ও হতে পারে। এটা একটা বড়ই মজার কথাা যে, আল্লাহ কোন না কোন সময় তার নিজের সংরক্ষন ব্যাবস্থা উঠিয়ে দিয়ে দু-একটি ভুল-ত্রুটি ঘটে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন, যাতে মানুষ নবীদের কে সৃষ্টিকর্তা মনে না করে।”
সূত্রঃ তাহীমাত খ:২ পৃ:৫৬ নির্বাচিত রচনাবলী খন্ড: ২ পৃ:৭৩-৭৪
উপরন্তু মওদুদী মরহুম আরও লিখেছেন,
اور تو بسااوقات پیغمبروں تک کو اس نفس شریر کی رہزنی کے خطرے پیش آئے ہیں چناچہ حضرت داؤد علیہ السلام جیسے جلیل القدر پیغمبر کو ایک موقعہ پر تنبیہ کی گئی
অর্থঃ কিছু কিছু সময় পয়গম্বরগণও তাদের কুপ্রবৃত্তির মারাত্মক আক্রমণের শিকার হয়েছেন”। সুতরাং গুরুত্বপূর্ণ নবী হযরত দাউদ কে একটি বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল।
সূত্র: তাফহীমাত খ:১ পৃ: ১৯৫
পবিত্র কুরআন কি বলে?
পৃথিবীতে আল্লাহর পর সমস্ত সৃষ্টিজগতের ভেতর সবচে দামি এবং মর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তি হলেন নবীগণ তথা আম্বিয়ায়ে কেরাম আলাইহিমুস সালাম। যাদের নিস্পাপ হওয়ার ব্যাপারে অসংখ্য দলীল-প্রমাণ কুরআন-হাদিসে রয়েছে। চলুন কয়েকটি আয়াত দেখে নেয়া যাক।
দলীল-১
মহান আল্লাহ বলেন,
مَنْ يُّطِعِ الرَّسُوْلَ فَقَدْ أَطَاعَ اللَّهَ
অর্থ: যে লোক রসূলের হুকুম মান্য করবে সে আল্লাহরই হুকুম মান্য করল।
সুরা নিসা আয়াত: ৮০
নোট: আম্বিয়ায়ে কেরাম যদি ভুলত্রুটিযুক্ত বা
গুনাহগার হতেন, তাহলে তাঁদের অনুসরণ আল্লাহরই অনুসরণ এটা আল্লাহ বলতেন না। কারণ কোনো ভুলের দায় পবিত্র আল্লাহ কেন নেবেন?
দলীল-২
মহান আল্লাহ বলেন,
وَمَنْ يُّطِعِ اللَّهَ وَرَسُوْلَهُ فَقَدْ فَازَ فَوْزًا عَظِيْمًا
অর্থ: যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করে, সে অবশ্যই মহা সাফল্য অর্জন করবে।
সুরা আহযাব আয়াত: ৭১
নোট: যেহেতু সফলতার মানদণ্ড আল্লাহ তাঁর অনুসরণের পাশাপাশি রাসুলের অনুসরণের কথাও বলেছেন, সেহেতু একথাও স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে, আল্লাহ যেমন পবিত্র, তেমনি রাসুলও গুনাহ থেকে পবিত্র। যদি নবী-রাসুলগণ গুনাহগার হতেন, তাহলে তাঁদের অনুসরণে সফলতা রয়েছে, এটা আল্লাহ বলতেন না, কারণ এটা বাস্তবসম্মত কথা যে, গুনাহগারের অনুসরণ কখনও সফলতার মানদনণ্ড হতে পারে না।
দলীল-৩
মহান আল্লাহ বলেন,
وَأَطِيعُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ
অর্থ: আর আল্লাহ এবং তাঁর রসূলের হুকুম মান্য কর, যদি ঈমানদার হয়ে থাক।
সুরা আনফাল আয়াত: ১
নোট: অত্র আয়াতে ঈমানদার হওয়ার আলামত বলা হয়েছে রাসুলের অনুসরণকে। সুতরাং রাসুল যদি গুনাহগার হতেন, তাহলে আল্লাহ কোনো গুনাহগারের অনুসরণ ঈমানদারের আলামত বলতেন না। কারণ গুনাহ এবং ঈমান কখনও এক হতে পারে না।
দলীল-৪
মহান আল্লাহ বলেন,
وَإِنْ تُطِيعُوهُ تَهْتَدُوا
অর্থ: আর তোমরা যদি তাঁর আনুগত্য কর, তবে সৎ পথ পাবে।
সুরা নূর আয়াত: ৫৪
নোট: অত্র আয়াতে হেদায়েতের মানদনণ্ড বলা হয়েছে রাসুলের অনুসরণ। বুঝা গেল, রাসুল কখনও গুনাহগার হন না। কারণ রাসুল গুনাহগার হলে তাঁকে অনুসরণে কখনও হেদায়েত লাভ হতে না। কারণ হেদায়েত এবং গুনাহ স্ম্পূর্ণ বিপরীত বিষয়।
মওদুদী মরহুমের যুক্তি ও আমাদের জবাব।
মওদুদী মরহুম নবীদের উপর ভুলত্রুটির কাদা ছিটাতে বিভিন্ন যুক্তি পেশ করেছেন। তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য যুক্তি হলো,
اور یہ ایک لطیف نکتہ ہے کہ اللہ تعالیٰ نے بالارادہ ہر نبی سے کسی نہ کسی وقت اپنی حفاظت اٹھا کر ایک دو لغزشیں سرزد ہوجانے دی ہیں، تاکہ لوگ انبیاء کو خدا نہ سمجھ لیں اور جان لیں کہ یہ بشر ہیں، خدا نہیں ہیں
এটা একটা বড়ই মজার কথাা যে, আল্লাহ কোন না কোন সময় তার নিজের সংরক্ষন ব্যাবস্থা উঠিয়ে দিয়ে দু-একটি ভুল-ত্রুটি ঘটে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন, যাতে মানুষ নবীদের কে সৃষ্টিকর্তা মনে না করে।”
সূত্রঃ তাহীমাত খ:২ পৃ:৫৬ নির্বাচিত রচনাবলী খন্ড: ২ পৃ:৭৩-৭৪
আমাদের জবাব:
“কাউকে খোদা মনে না করতে ভুল করানো লাগে” এটা একটি অবান্তর যুক্তি। কারণ মওদুদী সাহেব নিজেও এ কথা স্বীকার করতে বাধ্য যে, ফিরিস্তারা নিস্পাপ, তাঁদের কোনো গুনাহ বা ভুল নেই। তাহলে কি মানুষ তাদেরকেও খোদা মনে করে? নিশ্চয় না। তাহলে এমন অহেতুক যুক্তি পেশ করে নিস্পাপ নবীদের প্রতি ভুলত্রুটির তীর নিক্ষেপ করার মানে কি?