Home > বই > নবীজি সা. এর যোগ্যতা

নবীজি সা. এর যোগ্যতা

অনেকে বলতে পারেন, শুধু চেহারা আর চরিত্র থাকলেই তাকে সবাই মানে না। যারা শিক্ষিত মহল, তারা যোগ্যতার বিষয়টি খেয়াল করে।সে হিসাবে অনেক শিক্ষিত ব্যক্তিরা বলে থাকেন, আপনার মুহাম্মাদকে আমরা মানি না। কারণ তিনি কোনো শিক্ষিত এবং যোগ্য মানুষ ছিলেন না। কারণ আপনারা মুহাম্মাদের অনুসারীরাই বলেন, নবি নাকি উম্মি! তো উম্মি মানে তো মুর্খ। অর্থাৎ

من لا لا يقدر علي القراءة والكتابة

অর্থাৎ যিনি লিখতেও পারতেন না এবং পড়তেও পারতেন না। তাহলে আমরা শিক্ষিত হয়ে মূর্খ নবিকে কেন মানবো?

জবাব:১

উম্মি মানে জাহেল নয়। যিনি লেখা পড়া না করেই শিক্ষক হিসাবে দুনিয়াতে এসেছেন।

انما انا بعثت معلما

আল্লাহই সাক্ষি।

هُوَ الَّذِي بَعَثَ فِي الْأُمِّيِّينَ رَسُولًا مِّنْهُمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِن كَانُوا مِن قَبْلُ لَفِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ

অর্থ: তিনিই নিরক্ষরদের মধ্য থেকে একজন রসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদের কাছে পাঠ করেন তার আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমত। ইতিপূর্বে তারা ছিল ঘোর পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত।
সুরাঃ জুমআ আয়াত: ২

বুঝলে বলুন তো, কেউ লেখাপড়া করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিচার, আরেকজন কারো কাছে না পড়েই যদি টিচার হয়, তাহলে সুনাম বেশি হয় কার? যদি তাই হয়, তাহলে বলবো, তিনি এমন শিক্ষিত ছিলেন যে, লেখাপড়া না করেই শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, পুরো পৃথিবীর মানব-দানব সবার শিক্ষক ছিলেন।

তিনি লেখাপড়া জানলে সমস্যা কোথায়?
১. বেঈমানরা বলতো, সে তো ভালো শিক্ষিত, আগের যুগের ধর্মগ্রন্থের কথা বলছে নিশ্চয় পড়ালেখা করে।

কারণ হুজুররা যা করে সেটাই তাদের নজরে ভুল হয়। ভালো কাপড় পরলে বলে, সামাজিকতা বোঝে না , আবার দামি কাপড় পরলে বলে, নিশ্চয় তাহেরীর মত মিলাদ পড়ে ধান্ধামী করছে।

বুড়ো মানুষের অবস্থা যেমন। ঘরে থাকলে জোয়ান পোলাপান বলে, এই বুড়া, সারাদিন ঘরে কি করো, দোকানপাটে যেতে পারে না? বেচারা যখন দোকানে যায়, তখন বলে, এই বুড়া বয়সে দোকানে কি করো, মসজিদে থাকতে পারো না? মসজিদে গেলে আবার বলে, সারাজিবন সুদঘুশ খেয়ে এখন হাসান বসরী সাজছো লজ্জা করে না?

ঠিক হুজুরদের অবস্থাও তাই, হুজুররা রাজনীতি না করলে বলে, আপনারা দুনিয়ার অবস্থা সম্পর্কে অনেক পিছিয়ে, রাজনিতি-টাজনিতি বোঝেন না, আবার যখন কিছু হুজুররা রাজনিতী করতে যায়, তখন বলে, হুজুররাও কেন রাজনীতি করবে?

আমার কথাও তো সেটা, হুজুররা কেন রাজনীতি করবে? রাজনীতি তো কোনো ভালো মানুষের কাজ না, ওগুলো করবে তারা যারা রিলিপের চাল, জনগনের টাকা চুরি করবে তাদের কাজ। এরাই বক্তব্য দেয়, হুজুররা কেন রাজনীতিতে আসবে? কারণ রাজনীতিতে হুজুররা আসলে তো ওদের বড় বড় বতল খেতে পারবে না, জনগণের টাকা আত্মস্যাৎ করে বড় বড় বিল্ডিং হাকাতে ডিস্টার্ব হয়, এজন্য হুজুরদের রাজনীতি ওদের সহ্য হয় না।

যাহোক বলছিলাম, নবীজি সা. যদি লেখাপড়া জানতেন, তাহলে
১. কাফেররা বলতো, মুহাম্মাদ তো পড়ালেখা করেই সব বলে, অতএব তাকে গুরুত্ব দেয়ার কিছু নেই। তাদের এই বলাটা বন্ধ করে দিয়েছিলেন আল্লাহ। অর্থাৎ হে বেঈমানরা দেখো, মুহাম্মাদ যদি নবী না হয়, তাহলে লেখাপড়া না জেনেও শিক্ষিত মানুষের মত এত কথা বলে কেমনে? নিশ্চয় ওহী আসে। এটা ছিল নবীজি সা. এর একটি মো’জেজা।

২. নবীজির জন্য নিশ্চয় একজন শিক্ষক লাগতো, সে শিক্ষকও তো তাঁকে নবি হিসাবে মানতে না। বলতো, তার কথা কি মানবো, সে তো আমার কাছেই পড়ালেখা করেছে। সে পথও আল্লাহ তা’য়ালা বন্ধ করে দিয়েছেন।

তাঁর পড়ালেখা না জানা কোনো দোষের নয়, কারণ যারা বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে জাতিকে যা উপহার দিয়েছে, নবীজি সা. পড়ালেখা না করেই বিশ্ববাসীকে শিক্ষিত হওয়ার সকল জ্ঞান উপহার দিয়ে গেছেন।

যেমন তিনি লেখাপড়া না জেনেই পৃথিবীর শ্রেষ্ট কিতাব উপহার দিয়েছেন। সেটা হলো আল কুরআন।

তারপরও যারা এ প্রশ্ন করে যে, মুহাম্মাদ তো মুর্খ তাকে কেন মানবো? তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, তাহলে তোমরা মানো কাকে? তারা বলবে, আমরা মানি হুমায়ুন আজাদ উরফে মুসলমানের ঘরে টাটকা বেজাত, এরপর শাহরীযার কবীর, জাফর ইকবাল প্রমুখকে। তাহলে চলুন দেখি তাদের শিক্ষা আর আমার নবীর শিক্ষায় পার্থক্য কেমন দেখি।

১. এদের শিক্ষকের বাড়ি বাংলাদেশে, যারা সৃষ্টি। আর আমার নবীর শিক্ষক দুনিয়ার কোনো সৃষ্টি নয়। খোদ নবীজি সা. বলেছেন,

وإنِّي واللهِ لا أعلَمُ إلا ما علَّمني اللهُ

“আল্লাহর কসম, আমি যা জানি সব আমার আল্লাহ আমাকে শিখিয়েছেন।
সূত্র: যাদুল মা’আদ পৃ: ৪৭৬

অর্থাৎ আমার শিক্ষক দুনিয়ার কোনো মানুষ নন, বরং আমার শিক্ষক এই সাত তবক যমীন-আসমানের শ্রষ্টা মহান আল্লাহ। বলুন ছাত্র হিসাবে কে দামী? এরা না নবী? নিশ্চয় নবী।

২. দুনিয়ার ছাত্ররা শিক্ষকের কাছে শিক্ষা অর্জন করে, কিন্তু অনেকে ভদ্রতা শিখায় না। ফলে এরাই টিএসসির মোড়ে ছাত্রীদের ওড়না ধরে টানাটানি করে, ধর্ষণ করে সেঞ্চুরি করে। আল্লাহ তা’য়ালা তাঁর হাবিবকে শুধু শিক্ষা দিয়ে ক্ষ্যান্ত হননি, বরং নবীজি বলেন,

أدَّبَني ربِّي فأحسنَ تأديبي

“আমার শিষ্টাচার বা ভদ্রতাও সুন্দরভাবে শিখিয়েছেন আমার রব আল্লাহ।
সূত্র: জামে সগীর হাদিস: ৩০৯

২. এরা যাদেরকে মানে সেসব শিক্ষিতরাা কেমন যোগ্য? এদের কেউ আর্টসের ছাত্র,কেউ সাইন্স নিয়ে পড়েছেন, কেউ বা ব্যবসায়, কেউ ডাক্তার কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ বাংলায় পিএসডি করে, কেউ ইংলিশে। যিনি যে বিষয়ে পিএসডি করেন, সে বিষয়ে পাকা হলেও অন্য বিষয়ে বেশ কাচা। যেমন যারা জেনারেল শিক্ষিত, তাদের সামনে বুখারী পড়াতে দিলে পায়জামা খুলে দৌড় দেবে। আমার এক মুসল্লিকে একদিন ইকামত দিতে বলেছিলাম। বেচারা ইকামাত দিচ্ছে এইভাবে,
আল্লাহুয়াকবার, আল্লাহুয়াকবার, লাইলাহা ইল্লাল্লাহ…. কাদকামাতারিস সালাহ, কাদকামাতারিস সালাহ।

আমাদের দেশের এক নেতা কিছুদিন আগে বলেছিলেন, “তোমরা হুজুর হইছো,তোমাদের শিক্ষকরা তোমাদের পিটায়া পিটায় আলেম বানাইছে, আর আমি ঘরে বসে বসে একাই শিখছি, আলিফ, বা, তা, ছা, জিম, হা, খা। উনি খা শিখছে।

বুঝাতে চাচ্ছি, যারা বাংলায় পন্ডিত তারা আরবীতে কাচা, আবার যারা ইনলিশে পিএসডি করা, তারা অনেকে বাংলায় এমনভাবে কথা বলে, বুঝার কায়দা থাকে না বাঙ্গালী নাকি রোহিঙ্গা। এক কথায় পৃথিবীর সব শিক্ষিত মানুষ কেউ সব বিষয়ে পারদর্শী নয়।

কিন্তু আপনার আমার মডেল মুহাম্মাদ সা. কেমন শিক্ষিত ছিলেন? নবীজি সা. বলেন, আল্লাহ তা’য়ালা আমাকে শুধু এক বিষয়ের জ্ঞান দান করেননি, বরং
হযরত আব্দুল্লাহ বিন সালাম রা. মুসলিম হওয়ার আগে অসংখ্য প্রশ্ন করে সব সত্য সত্য উত্তর পাওয়ার পর নবীজি সা. কে লক্ষ্য করে বলেছিলেন,

صدقت يا محمد لقد أوتيت علوم الأولين والآخرين

অর্থাৎ হে মুহাম্মাদ, তুমি সত্যই বলেছো। অবশ্যই তোমাকে আগের
সূত্র: খরিদাতুল আজাইব পৃ: ২৪৭

شرح صدره عليه السلام، حتى وسع علوم الأولين والآخرين
অর্থাৎ নবীজির বুকটা আল্লাহ তা’য়ালা এমন প্রশস্ত করে দিয়েছেন যে,তাঁর কাছে পূর্বকার এবং পরের সকলের জ্ঞান স্পষ্ট হয়ে গেছে।
সূত্র: আদওয়াউল বায়ান খ: ৯ পৃ: ১৪৫

৩. অজানা জ্ঞান দান।

এরা তো যে বিষয়ে লেখাপড়া করে, শুধু সে বিষয়ে পন্ডিত। কিন্তু নবীজি সা. এর ব্যাপারে আল্লাহ তা’য়ালা বলেন,

وَأَنزَلَ اللّهُ عَلَيْكَ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَعَلَّمَكَ مَا لَمْ تَكُنْ تَعْلَمُ وَكَانَ فَضْلُ اللّهِ عَلَيْكَ عَظِيمًا

অর্থ: আল্লাহ আপনার প্রতি ঐশী গ্রন্থ ও প্রজ্ঞা অবতীর্ণ করেছেন এবং আপনাকে এমন বিষয় শিক্ষা দিয়েছেন, যা আপনি জানতেন না। আপনার প্রতি আল্লাহর করুণা অসীম।
সূত্র: সুরা নিসা আয়াত: ১১৩

৪. তোমাদের শিক্ষকরা তোমাদের কি পড়ায়? এরা পড়ায় হাট্রিমা টিম টিম, তারা মাঠে পাড়ে ডিম, তাদের খাঁড়া দুটো শিং, তারা হাট্রিমা টিম টিম। ওরা বোঝে ঘোড়ার ডিম।

বলেন তো, যার মাথায় শিং আছে, তারা কি ডিম পাড়ে? নিশ্চয় না। তাহলে বোঝা গেল এ পড়াটা সত্য নয়। এক কথায় এদের শিক্ষকরা সত্যও পড়ায়, মিথ্যাও পড়ায়। কিন্তু নবীজির শিক্ষা কেমন? আল্লাহ তা’য়ালা বলেন,

وَمَا يَنطِقُ عَنِ الْهَوَى إِنْ هُوَ إِلَّا وَحْيٌ يُوحَى

অর্থ: এবং তিনি প্রবৃত্তির তাড়নায় কথা বলেন না। কোরআন ওহী, যা প্রত্যাদেশ হয়।
সুরাঃ নাজম আয়াত: ৩-৪

আল্লাহ তা’য়ালা বলেন,

ذَلِكَ الْكِتَابُ لاَ رَيْبَ فِيهِ هُدًى لِّلْمُتَّقِينَ

অর্থ: এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য।
সুরাঃ বাকারা আয়াত: ২

৫. অনেকে বলতে পারেন, তিনি কোন দেশে পিএসডি করতে গেছেন? এরা তো কেউ যায় জাপান, লন্ডন,চায়না, মাথা খারাপ ডোবাল ট্রাম্পের আমেরিকা আর গরুর মূত খাওয়া দেশ ইন্ডিয়ায়। তবে আমার মডেল মুহাম্মাদ সা. কে পড়ার জন্য আল্লাহ তা’য়ালা নিয়েছেন, আরশে।

سُبۡحٰنَ الَّذِیۡۤ اَسۡرٰی بِعَبۡدِهٖ لَیۡلًا مِّنَ الۡمَسۡجِدِ الۡحَرَامِ اِلَی الۡمَسۡجِدِ الۡاَقۡصَا الَّذِیۡ بٰرَکۡنَا حَوۡلَهٗ لِنُرِیَهٗ مِنۡ اٰیٰتِنَا ؕ اِنَّهٗ هُوَ السَّمِیۡعُ الۡبَصِیۡرُ

অর্থাৎ পবিত্র মহান সে সত্তা, যিনি তাঁর বান্দাকে রাতে নিয়ে গিয়েছেন আল মাসজিদুল হারাম থেকে আল মাসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যার আশপাশে আমি বরকত দিয়েছি, যেন আমি তাকে আমার কিছু নিদর্শন দেখাতে পারি। তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।
সুরাঃ বনী ইসরাঈল আয়াত: ১

অর্থাৎ তিনি আরশে আজীমে পিএসডি করে এসেছেন।

তিনি ছাত্রদের কাছে কেমন যোগ্য ছিলেন?

বর্তমানে যত বড়ই শিক্ষক হোক না কেন, কোনো ছাত্র বুকে হাত রেখে বলতে পারবে না যে, আমার শিক্ষক যোগ্যতায় এবং দায়িত্ব পরিপূর্ণতা অর্জন করতে পেরেছেন। যেমন রবী ঠাকুরের অনুসারীদের কাছে যদি জিজ্ঞাসা করেন, তিনি কি কবিতার জগতে পরিপূর্ণতা অর্জন করতে পেরেছেন? তারা বলবে, নিশ্চয় না। যদি পারতেন তাহলে এখন আর নতুন কবিতা লেখার দরকার ছিল না। হুমায়ুন আহমেদের ছাত্ররাও একই জবাব দেবে যে, বাংলা সাহিত্যে তার পূর্ণতা অর্জিত হয়নি, বরং আরও কিছুদিন বেঁচে থাকলে আরও কিছু দিতে পারতেন?

কিন্তু বিদায় হজ্বের ভাষণে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে রা. জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, আমি আমার দায়িত্ব কি পরিপূর্ণ ভাবে তোমাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি? প্রতিউত্তরে সাহাবায়ে কেরাম বললেন-

قالوا نشهدُ أنَّكَ قد بلَّغتَ وأدَّيتَ ونصحْتَ ثمَّ قالَ بأُصبعِهِ السَّبَّابةِ يرفعُها إلى السَّماءِ وينكبُها إلى النَّاسِ اللَّهمَّ اشهدْ اللَّهمَّ اشهدْ اللَّهمَّ اشهدْ

অর্থাৎ সাহাবায়ে কেরাম বললেন অামরা সাক্ষী দিচ্ছি অাপনি অবশ্যই আপনার দায়িত্ব পরিপূর্ণভাবে পৌঁছে দিয়েছেন এবং আদায় করেছেন এবং উপদেশ দিয়েছেন। এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম তার শাহাদাত আঙ্গুল উঁচিয়ে আসমানের দিকে ইশারা করে বললেন যে, হে আল্লাহ! তুমি সাক্ষী থাকো। তুমি সাক্ষী থাকো। তুমি সাক্ষী থাকো।
সূত্রঃ সহিহ মুসলিম হাদিস-১২১৮ আবু দাউদ হাদিস-১৯০৫ ইবনে মাযাহ হাদিস-৩০৭৪ নাসাঈ হাদিস-৬৫৬

নবীজির সা. হাতে গড়া ছাত্ররা কেমন ছিলেন?

একটি উদহরণ:

সাধারণত ছাত্ররা শিক্ষকের আদর্শে উজ্জিবিত থাকে। শিক্ষক যেমন হয়, ছাত্ররা তেমন হয়। যেমন, কোনো এক স্কুল প্রদর্শনে আসলেন টিএনও সাহেব। ক্লাস ফাইভে এসে ছাত্রদের নাম জিজ্ঞাসা করা শুরু করলেন, তোমার নাম কি? বলে, আরকাশ। টিএসও মনে মনে ভাবলেন, হয়তো তার জিহ্বায় সমস্যা। আরেকজনকে প্রশ্ন করলেন, তোমার নাম কি? বলল, বারতাশ। অবাক হলেন, সবাই কী এমন? প্রধান শিক্ষককে গিয়ে প্রশ্ন করলেন, এরা সবাই “র” উচ্চারণ করে কেন? তিনি জবাব দিলেন, এটা ওদের অর্ভাস! তখন টিএনও বুঝে ফেললেন, মূল সমস্যা কোথায়। তখন তিনি বললেন, বুঝেছি, সার্বাস সার্বাস।

আসলে ছাচ যেমন হয়, প্রোডাক্ট তেমন হয়। ঠিক তেমনি শিক্ষক যেমন হয়, স্টুডেন্ট তেমন হয়।

দৈনিক পত্রিকা খুললে শত শত প্রমাণ পাওয়া যাবে, বর্তমানে স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের নৈতিক অবক্ষয়ের কথা। ঠিক তেমনি এদের ছাত্ররাও অধিকাংশ অপকর্মে জড়িত, আবাসিক হোটেলে এদের ছাত্রীদেরই সার্ভিস বেশি। আবার অনেক সময় আমরা খবর পাই, এদের ছাত্ররাই এদেরকে আহত করে, গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয়। ত্রাসের রাজনীতি শিক্ষাঙ্গনে তৈরি করে। অথচ এরাই আবার আমাদের পরামর্শ দিতে আসে।

ভার্সিটির ষ্টুডেন্ট পিস্তল হাতে, শিক্ষাঙ্গনে করে মারামারি,
তারাই যদি হয় সোনার ছেলে, মাদরাসার ভদ্র ছেলে কেন জঙ্গী?
আসলে ওরা মুসলিম নামে নামে, জন্মে ওদের ভেজালে ভরা।

চুরি,ডাকাতি, মাদকাসক্তি, দুর্নীতি ও নারী কেলেঙ্কারি এদের নামে ভুরি ভুরি প্রমাণ রয়েছে।

ওমর রা. ও এক মেয়ে

سمع عمر ليلة عجوزاً تقول لبنيتها: امزجي اللبن بالماء، فقالت البنية: أما علمت يا أماه! أن أمير المؤمنين عمر نهى عن مزج اللبن بالماء؟ فقالت العجوز في لحظة غفلة: وأين عمر حتى يرانا؟ فقالت المؤمنة الصغيرة الصادقة الموقنة بنظر الله: إن كان عمر لا يرانا فرب عمر يرانا! إنها قصة يعرفها الصغار والكبار، ولكن أين أثرها في حياتنا، وفي معاملاتنا؟ وفي ليلة أخرى خرج عمر يتجول، فإذا بامرأة في ظلام الليل تردد هذه الأبيات: تطاول هذا الليل واسود جانبه وأرقني أن لا خليل ألاعبه فوالله! لولا الله لا شيء غيره لحرك من هذا السرير جوانبه ولكن تقوى الله عن ذاك صدني وحفظاً لبعلي أن تنال مراكبه لقد عظموا الله فراقبوه، واستحيوا من الله فهابوه، وأحبوا الله فأطاعوه، وكما قيل: إذا عظم الآمر عظمت الأوامر.

সূত্র: আল-খুতাবুল মিম্বারিয়্যাহ খ. ২ পৃ. ২২৫

وهذا خبر آخر وهو: أن ابن عمر مر على رويعي غنم في الصحراء، فقال له امتحاناً: بعنا من هذه الشياه، فقال: أنا مملوك ومؤتمن عليها، ولا يحق لي التصرف فيها، فقال ابن عمر ممتحناً أمانته: قل للمالك: أكلها الذئب، فقال رويعي الغنم بكل صدق وإيمان: وماذا أقول لله؟! أي: إن كنت قلت للمالك: أكلها الذئب، فماذا سأقول لله؟ ماذا سأقول إذا استنطق الله الجوارح والأركان، كما قال عز وجل: {الْيَوْمَ نَخْتِمُ عَلَى أَفْوَاهِهِمْ وَتُكَلِّمُنَا أَيْدِيهِمْ وَتَشْهَدُ أَرْجُلُهُمْ بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ} [يس:65]؟ فبكى ابن عمر وأرسل إليه من يعتقه.

وقال له: كلمة أعتقتك في الدنيا أسأل الله أن تعتقك يوم أن تلقاه.

فهذه أخبار كلنا نعرفها وسمعنا بها مرات ومرات، لكن أيها الغالي! أين أثر هذا في حياتنا؟! عباد الله! إن هذه بعضاً من أسمائه وصفاته، فأين أثرها في حياتنا؟ وأين أثر الإيمان بها؟ وأين مرتبة الإحسان في حياتنا؟ إذا أردت أن تعرف مدى إيمانك فراقب نفسك في الخلوات، فإن الإيمان لا يظهر في صلاة ركعتين أو صيام نهار، بل يظهر في مجاهدة النفس والهوى، والله! ما صعد يوسف عليه السلام ولا سعد إلا في مثل ذلك المقام، قال عز وجل: {وَأَمَّا مَنْ خَافَ مَقَامَ رَبِّهِ وَنَهَى النَّفْسَ عَنِ الْهَوَى * فَإِنَّ الْجَنَّةَ هِيَ الْمَأْوَى} [النازعات:40 – 41]، وقال النبي صلى الله عليه وسلم مبيناً أن من السبعة الذين يظلهم الله في ظله يوم لا ظل إلا ظله: (رجل دعته امرأة ذات منصب وجمال فقال: إني أخاف الله).

أتدري من الرجل؟ الرجل والله! من إذا خلا بما يحب من المحارم وقدر عليها تذكر وتفكر، وقال: الله يراني في كل مكان، فترك المعصية خوفاً وحياءً من الله تبارك وتعالى، إذاً كيف يعصيه وهو يراه؟! والله! لن تنال ولاية الله حتى تكون معاملتك له خالصة، حتى تترك شهواتك، وتصبر على مكروهاتك، وتبذل نفسك في مرضاته.

نفعني الله وإياكم بالقرآن العظيم، وبما فيه من الآيات والذكر الحكيم، أقول ما تسمعون، وأستغفر الله العظيم لي ولكم من كل ذنب فاستغفروه؛ إنه هو الغفور الرحيم.

গরু কুরবানী

জনৈক নায়িকা এফডিসিতে ৬ টি গরু কুরবানী দিলেন। এতটুকুতেই ইলেকট্রিক মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া, অনলাইন,অফলাইনে ভূয়সী প্রশংসায় ভাসতে লাগলেন। অথচ এখন জানতে পারলাম, এ সব টাকা তার রাতের অবৈধ উপার্জনের টাকা।

অথচ নবীজি সা. ১০০ উট কুরবানী করেছেন।

عن جابر بن عبدالله رضي الله عنه قال أنَّ النَّبيَّ ﷺ ساق معه مئةَ بدَنةٍ فلمّا انصرَف إلى المنحَرِ نحَر ثلاثًا وستِّينَ بيدِه ثمَّ أعطى عليًّا فنحَر ما غبَر منها
সূত্র: সহিহ ইবনে হিব্বান হাদিস: ৪০১৮

ثُمَّ انْصَرَفَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى الْمَنْحَرِ فَنَحَرَ بِيَدِهِ ثَلَاثًا وَسِتِّينَ، وَأَمَرَ عَلِيًّا فَنَحَرَ مَا غَبَرَ

অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পশু কুরবানীর স্থানে উপস্থিত হলেন এবং নিজ হাতে তেষট্টিটি উট কুরবানী করলেন। অতঃপর ‘আলী (রাযি.)-কে নির্দেশ দিলে তিনি অবশিষ্টগুলো যাবাহ করলেন।
সূত্র: সুনান আবু দাউদ হাদিস: ১৯০৫

সবচে বড় ফেমাস

আপনাদের মডেল নাম ফুটানোর জন্য কত কাহিনী করে। কেউ বা টিকটক করে, কেউ বা নতুন নতুন জয়যাত্রা টেলিভিশন খোলে, কেউ বা সিনেমায় অভিনয় করে। তোমাদের মডেলদের পরিচয় হয় ইলেক্ট্রিক মিডিয়ার সাহায্যে। এরপরও তাদের পরিচিতি শুধু নির্দিষ্ট কিছু এলাকা বা দেশে। কিন্তু আমার মডেল মুহাম্মাদ সা. কোনো ইলেক্ট্রিক মিডিয়ার সাহায্য ছাড়াই পুরো বিশ্বব্যাপী সবচে বড় ফেমাস ব্যক্তি হলেন, আমার মডেল মুহাম্মাদ সা.।

ফেমাস ও ব্লাকলিষ্ট

উপরন্তু তোমরা যাদেরকে মডেল মানো, তারা ফেমাস হলেও তাদের নাম বোর্ট ক্লাবে, মদের বারে।

পুঁটি মাছ সব পরছে ধরা
বোয়াল মাছের খবর নাই
দিনের বেলায় বাহাদুরী
রাতের বেলায় ঘর জামাই।

ক্যাসিনোতে, দূর্নীতির ব্লাকলিষ্টে। আর যদি ভালো হয়, ক’দিন পর দেখা যায় রাস্তায় ভিক্ষা করে বা বস্তিতে বসবাস, একান্ত এগুলো না হলেও ভালো পজিশনে থাকলেও তাদের নাম এ দুনিয়ার এক টাকা দামের সাদা খাকায় লিপিবদ্ধ থাকে।

অথচ আমার মডেল মুহাম্মাদ সা. এর নাম

وَرَفَعْنَا لَكَ ذِكْرَكَ

অর্থ: আমি আপনার আলোচনাকে সমুচ্চ করেছি।
সুরাঃ ইনশিরাহ, আয়াত: ৪

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ أَنَّهُ سَأَلَ جِبْرِيلَ عَلَيْهِ السَّلَامُ عَنْ هَذِهِ الْآيَةِ وَرَفَعْنَا لَكَ ذِكْرَكَ قَالَ قَالَ اللَّهُ تَعَالَى إِذَا ذُكِرْتُ ذُكِرْتَ مَعِي
সূত্র: সহিহ ইবনে হিব্বান হাদিস: ১৭৭২

عَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ: “لَمَّا فَرَغْتُ مِمَّا أَمَرَنِي اللَّهُ بِهِ مِنْ أَمْرِ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضِ قُلْتُ: يَا رَبِّ، إِنَّهُ لَمْ يَكُنْ نَبِيٌّ قَبْلِي إِلَّا وَقَدْ كَرَّمْتَهُ، جَعَلْتَ إِبْرَاهِيمَ خَلِيلًا وَمُوسَى كَلِيمًا، وَسَخَّرْتَ لِدَاوُدَ الْجِبَالَ، وَلِسُلَيْمَانَ الرِّيحَ وَالشَّيَاطِينَ، وَأَحْيَيْتَ لِعِيسَى الْمَوْتَى، فَمَا جَعَلْتَ لِي؟ قال: أو ليس قَدْ أَعْطَيْتُكَ أَفْضَلَ مِنْ ذَلِكَ كُلِّهِ، أَنِّي لَا أُذْكَرُ إِلَّا ذُكِرْتَ مَعِي، وَجَعَلْتُ صُدُورَ أُمَّتِكَ أَنَاجِيلَ يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ ظَاهِرًا، وَلَمْ أُعْطِهَا أُمَّةً، وَأَعْطَيْتُكَ كَنْزًا مِنْ كُنُوزِ عَرْشِي: لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ الْعَلِيِّ الْعَظِيمِ”(١١) .
সূত্র: তাফসীরে ইবনে কাসীর খ. ৮ পৃ. ৪১৬

কালেমায়

يقول: ورفعنا لك ذكرك، فلا أُذْكَرُ إلا ذُكِرْتَ معي، وذلك قول: لا إله إلا الله، محمد رسول الله.
সূত্র: তাফসীরে ইবনে কাসীর খ. ৮ পৃ. ৪২৯

সবখানে নবীজির সা. নাম।

وَرُوِيَ عَنِ الضَّحَّاكِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: يَقُولُ لَهُ لَا ذُكِرْتُ إِلَّا ذُكِرْتَ مَعِي فِي الْأَذَانِ، وَالْإِقَامَةِ وَالتَّشَهُّدِ، وَيَوْمَ الْجُمْعَةَ عَلَى الْمَنَابِرِ، وَيَوْمَ الفطر، ويوم الأضحى: وأيام التشريق، وَيَوْمَ عَرَفَةَ، وَعِنْدَ الْجِمَارِ، وَعَلَى الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ، وَفِي خُطْبَةِ النِّكَاحِ، وَفِي مَشَارِقِ الْأَرْضِ وَمَغَارِبِهَا. وَلَوْ أَنَّ رَجُلًا عَبَدَ اللَّهَ جَلَّ ثَنَاؤُهُ، وصدق بالجنة والنار وكل شي، وَلَمْ يَشْهَدْ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولَ اللَّهِ، لَمْ يَنْتَفِعْ بِشَيْءٍ وَكَانَ كَافِرًا. وَقِيلَ: أَيْ أَعْلَيْنَا ذِكْرَكَ، فَذَكَرْنَاكَ فِي الْكُتُبِ الْمُنَزَّلَةِ عَلَى الْأَنْبِيَاءِ قَبْلَكَ، وَأَمَرْنَاهُمْ بِالْبِشَارَةِ بِكَ، وَلَا دِينَ إِلَّا وَدِينُكَ يَظْهَرُ عَلَيْهِ. وَقِيلَ: رَفَعْنَا ذِكْرَكَ عِنْدَ الْمَلَائِكَةِ فِي السَّمَاءِ، وَفِي الْأَرْضِ عِنْدَ الْمُؤْمِنِينَ، وَنَرْفَعُ فِي الْآخِرَةِ ذِكْرَكَ بِمَا نُعْطِيكَ مِنَ المقام المحمود، وكرائم الدرجات
সূত্র: তাফসীরে কুরতুবী খ. ১০ পৃ. ৭২

সমস্ত আসমানী কিতাবে নবীজির সা. নাম

وذَكَرَهُ سُبْحانَهُ في كُتُبِ الأوَّلِينَ، وأخَذَ عَلى الأنْبِياءِ عَلَيْهِمُ السَّلامُ وأُمَمِهِمْ أنْ يُؤْمِنُوا بِهِ صَلّى اللَّهُ تَعالى عَلَيْهِ وسَلَّمَ
সূত্র: রুহুল মা’আনী খ. ৩০ পৃ. ১৬৯

জন্মের সময়

[لفظه نفس لفظ الحديث ٦ مع اختلاف في الحركات أو علامات الترقيم] ٧- [عن أبي رافع مولى رسول الله صلى الله عليه وسلم:] رأيتُ رسولَ اللهِ ﷺ أذَّنَ في أُذُنِ الحَسَنِ بنِ عليٍّ، – حِينَ ولَدْتُه فاطِمةُ – بِالصَّلاةِ.
الترمذي (ت ٢٧٩)، سنن الترمذي ١٥١٤ • حسن صحيح

কবরে নবীজির সা. নাম।

١- [عن البراء بن عازب:] ويَأْتِيِه مَلَكانِ فيُجلِسانِه فيقولانِ له مَنْ ربُّك فيقولُ ربِّي اللهُ فيقولانِ له ما دِينُك فيقولُ دِينِيَ الإسلامُ فيقولانِ لهُ ما هذا الرجلُ الذي بُعِثَ فِيكم فيقولُ هو رسولُ اللهِ فيقولانِ لهُ وما يُدْرِيكَ فيقولُ قرأتُ كِتابَ اللهِ آمنْتُ وصدَّقْتُ
الألباني (ت ١٤٢٠)، صحيح الترغيب ٣٥٥٨ • صحيح • أخرجه أبو داود (٤٧٥٣)، وأحمد (١٨٥٣٤) مطولاً

হাশরে

সকল নবী উম্মতের ফিরিয়ে দেবেন ঈসা আ. বলবেন আমাদের সবার সমস্যা আছে, তবে একজন আছে তাঁর জিবনে কোনো খুঁত নেই। তিনি মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।

١- [عن سلمان الفارسي:] يأتونَ النَّبيَّ ﷺ: فيقولونَ: يا نَبيَّ اللهِ، أنتَ الذي فَتَحَ اللهُ بكَ، وخَتَمَ بكَ، وغَفَرَ لكَ ما تَقدَّمَ مِن ذَنبِكَ وما تأخَّرَ، قُمْ فاشفَعْ لنا إلى رَبِّكَ. فيقولُ: نعَمْ، أنا صاحِبُكم. فيَخرُجُ يَحوشُ النارَ، حتى يَنتَهيَ إلى بابِ الجنَّةِ، فيأخُذُ بحَلْقةٍ في البابِ مِن ذَهَبٍ، فيَقرَعُ البابَ، فيُقالُ: مَن هذا؟ فيُقالُ: محمَّدٌ. قال: فيُفتَحُ له، قال: فيَجيءُ حتى يَقومَ بينَ يَدَيِ اللهِ، فيَستَأذِنُ في السُّجودِ، فيُؤذَنُ له. قال: فيَفتَحُ اللهُ له مِن الثَّناءِ والتَّحميدِ، والتَّمجيدِ ما لم يَفتَحْه لأحَدٍ مِن الخَلائقِ، فيُنادى: يا محمَّدُ، ارفَعْ رأْسَكَ، وسَلْ تُعطَهْ، ادْعُ تُجَبْ. قال: فيَرفَعُ رأْسَه، فيقولُ: رَبِّ، أُمَّتي أُمَّتي. ثمَّ يَستأْذِنُ في السُّجودِ، فيُؤذَنُ له، فيُفتَحُ له مِن الثَّناءِ والتَّحميدِ والتَّمجيدِ ما لم يُفتَحْ لأحَدٍ … المزيد
ابن خزيمة (ت ٣١١)، التوحيد ٧٠٧‏/٢ • [أشار في المقدمة أنه صح وثبت بالإسناد الثابت الصحيح]

জান্নাতের দরজার দু’পাশে।

عن انس بن مالك قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: دَخَلْتُ الجَنَّةَ فَرَأيْتُ فِي عارِضَتِي الجَنَّةِ مَكْتُوباً ثلاثة أسطر بالذهب: السطر الأول لا إله إِلَّا الله محمَّدٌ رَسوُلُ الله والسَّطرُ الثَّانِي ما قدمنا وَجَدْنا وَمَا أكَلْنا رَبِحْنا وَمَا خَلَّفْنا خَسِرْنا والسَّطْرُ الثَّالِثُ أُمَّةٌ مُذْنِبَةٌ وَرَبٌّ غَفُورٌ

অর্থ: হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, মিরাজকালে আমি বেহেশতে প্রবেশের সময় এর দু’পাশে দেখি তিনটি লাইনে স্বর্ণাক্ষরে লেখা :
এক. লা ইলাহা ইল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ।
দুই. আমরা যে ভালো কর্ম পেশ করেছি, তা পেয়েছি। যা খেয়েছি তা থেকে উপকৃত হয়েছি। যা ছেড়ে এসেছি, তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।
তিন. উম্মত হলো গোনাহগার, আর রব হলো ক্ষমাশীল।
সূত্র: কাশফুল খাফা হাদিস: ৫৯৩ ফায়জুল কাদির হাদিস: ৪১৭৬ জামে সগীর হাদীস: ৪১৮৬

আরশের খুটিগুলোর উপরে

أنَّ رسولَ اللهِ ﷺ قال: لمّا اقترَفَ آدمُ الخطيئةَ قال: يا ربِّ، أسألُك بحقِّ محمَّدٍ لَما غفَرتَ لي، قال اللهُ تعالى: يا آدمُ، وكيف عرَفتَ محمَّدًا ولم أخلُقْه؟ قال: يا ربِّ، إنَّك لمّا خلَقتَني بيدِك ونفَختَ فيَّ مِن رُوحِك، رفَعتُ رأسي فرأيتُ قوائمَ العرشِ مكتوبًا عليها: لا إلهَ إلّا اللهُ محمَّدٌ رسولُ اللهِ، فعرَفتُ أنَّك لا تُضيفُ إلى اسمِك إلّا أحَبَّ الخلْقِ إليك، فقال اللهُ تعالى: صدَقتَ يا آدمُ، إنَّه لَأَحَبُّ الخلقِ إليَّ، وإذ سألتَني بحقِّه فقد غفَرتُ لك، ولولا محمَّدٌ ما خلَقتُك

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুল সা. বলেছেন, যখন আদম আলাইহিস সালামের নিকট তাঁর নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফল ভক্ষণের বিষয়টি ধরা পড়ল, তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহ, আমি মুহাম্মাদের সা. ওয়াসীলা নিয়ে তোমার দরবারে ফরিয়াদ করছি, আমাকে ক্ষমা করে দাও। অতঃপর আল্লাহ বললেন, হে আদম, তুমি মুহাম্মাদকে কীভাবে চিনলে, এখনো যাকে সৃষ্টি করিনি।

তিনি বললেন, হে আল্লাহ, তুমি যখন আমাকে সৃষ্টি করেছিলে, আমি তখন আমার মাথা উঠিয়েছিলাম। তখন দেখতে পেয়েছিলাম, আরশের খুটিগুলোর উপর লেখা, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ। তখন আমি বুঝতে পেরেছিলাম, সমগ্র সৃষ্টির মধ্য সবচেয়ে প্রিয় না হলে তুমি তাঁর নাম তোমার নামের সাথে মিলাতে না।

অতঃপর আল্লাহ বললেন, হে আদম তুমি ঠিকই বলেছ। নিশ্চয়ই সমগ্র সৃষ্টির মধ্যে সে আমার সবচেয়ে প্রিয়, আর যেহেতু তুমি তাঁর ওয়াসীলা নিয়ে আমার নিকট দোয়া করেছ, তাই তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম। আর(জেনে রাখ) মুহাম্মাদকে সৃষ্টি না করলে আমি তোমাকে সৃষ্টি করতাম না।
সূত্র: আল-মাওয়াহেবুল লাদুনিয়্যাহ খ. ৩ পৃ. ৬০৫

শ্রেষ্ট আসন

তোমাদের মডেলরা চলচিত্রে জাতীয় পুরস্কার পেয়ে সম্মানের একটা আসন পায়। যা দেশেই সীমাবদ্ধ থাকে। অর্থাৎ বাংলাদেশে যত অভিনেতা রয়েছে, তাদের মধ্যে শ্রেষ্ট অভিনেতা হিসাবে সর্বোচ্চ সম্মান পায়।

নবীজি সা.

আমার মডেল মুহাম্মাদ সা. কোনো অভিনয়ের কারণে নয়, বাস্তব জিবনে এমন চরিত্র আর ইতিহাস রচনা করেছেন যে,

وَ مِنَ الَّیۡلِ فَتَهَجَّدۡ بِهٖ نَافِلَۃً لَّکَ ٭ۖ عَسٰۤی اَنۡ یَّبۡعَثَکَ رَبُّکَ مَقَامًا مَّحۡمُوۡدًا

আর রাত্রির কিছু অংশে তাহাজ্জুদ পড়, ওটা তোমার জন্য নফল, শীঘ্রই তোমার প্রতিপালক তোমাকে প্রশংসিত স্থানে উন্নীত করবেন।
সুরাঃ ইসরা, আয়াত: ৭৯

নেতা হিসাবে নবীজি সা.।

নবীজির সা. শ্রেষ্টত্ব

আল্লাহ তা’আলা সাত তবক আসমান-যমীন বানিয়েছেন,

قسمَ اللَّهُ الأرضَ نِصفينِ فجعلَني في خيرِهما

অতপর যমীনকে ২ ভাগে বিভক্ত করেছেন, আমাকে উত্তম ভাগে বানিয়েছেন। উত্তম ভাগকে আবার তিন ভাগে বিভক্ত করেছেন, উত্তম ভাগে যত জায়গা আছে এর ভেতর আরবকে সিলেক্ট করেছেন, এই আরবের মধ্যে যত সৃষ্টি রয়েছে তার মধ্যে বনী আদমকে শ্রেষ্ট করে পাঠিয়েছেন।বনী আদমের মধ্যে শ্রেষ্ট করেছেন বনী মুযারকে, বনী মুযারের ভেতর শ্রেষ্ট গোত্র বানিয়েছেন কুরাইশকে,

ثمَّ اختارَ من قُرَيْشٍ بَنيِ هاشمٍ

কুরাইশের মধ্যে শ্রেষ্ট করেছেন বনী হাশেমকে, বনী হাশেমের মধ্যে শ্রেষ্ট ব্যক্তি হলেন আব্দুল মুত্তালিব, আব্দুল মুত্তালিবের সন্তানদের মধ্যে শ্রেষ্ট সন্তান আব্দুল্লাহ,

ثمَّ اختارني من بني عبدِ المطَّلبِ

সেই আব্দুল্লাহর ঘরে মুহাম্মাদুর রাসুলুলুল্লাহ সা.।
সূত্র: তারিখুল ইসলাম (যাহাবী) খ. ১ পৃ. ৪৩

فأَنا خيارٌ مِن خيارٍ
সূত্র: আল-আমালী আল-মুতলাক্বাহ পৃ. ৬৮

আল্লাহর নিকটবর্তী

কর্মীরা নেতার সাথে দেখা করতে গেলে দূরত্বে বসতে হয়, তবে আমার নবী আল্লাহর সাথে দেখা করতে গেছেন একদম কাছে।

ثُمَّ دَنَا فَتَدَلَّى فَكَانَ قَابَ قَوْسَيْنِ أَوْ أَدْنَى

অর্থ: অতঃপর নিকটবর্তী হল ও ঝুলে গেল (অতি নিকটে গেল)। তখন দুই ধনুকের ব্যবধান ছিল অথবা আরও কম।
সুরাঃ নাজম, আয়াত: ৮-৯

আবু রযীন রহ. বলেন,

ليست بهذه القوس ولكن قدر الذراعين أو أدنى
সূত্র: তাফসীরে তাবারী খ. ২২ পৃ. ৫০৩

সালাম পাওয়া

[لفظه نفس لفظ الحديث ٤٨ مع اختلاف في الحركات أو علامات الترقيم] ٤٩- [عن عبدالله بن عباس:] قالتْ قُرَيشٌ للنَّبيِّ صلّى اللهُ عليه وسلَّم: ادْعُ لنا ربَّكَ يَجعَلْ لنا الصَّفا ذهبًا، فإنْ أَصبَحَ ذهبًا اتَّبَعْناكَ. فدعا ربَّهُ، فأَتاهُ جِبريلُ عليه السَّلامُ، فقال: إنَّ ربَّكَ يُقْرِئُكَ السَّلامَ، ويَقولُ لكَ: إنْ شِئْتَ أَصبَح لهُمُ الصَّفا ذهبًا؛ فمَن كَفَر منهُم عذَّبْتُه عذابًا لا أُعَذِّبُه أحدًا مِنَ العالَمينَ، وإنْ شِئْتَ فتَحْتُ لهُم بابَ التَّوبةِ والرَّحمةِ. قال: بل بابَ التَّوبةِ والرَّحمةِ.
الألباني (ت ١٤٢٠)، صحيح الترغيب ٣١٤٢ • صحيح • شرح الحديث

সালাম দেওয়া

٩- [عن أنس بن مالك:] أنَّهُ مَرَّ على صِبْيانٍ فَسَلَّمَ عليهم وقالَ: كانَ النبيُّ ﷺ يَفْعَلُهُ.
البخاري (ت ٢٥٦)، صحيح البخاري ٦٢٤٧ • [صحيح] • شرح الحديث

বিচার ব্যবস্থা

٢- [عن عائشة أم المؤمنين:] يا أُسامةُ، أتشفَعُ في حَدٍّ مِن حدودِ اللهِ؟ ثمَّ قام فاختطَب، فقال: إنَّما هلَك الَّذين مِن قبْلِكم أنَّهم كانوا إذا سرَق فيهم الشَّريفُ ترَكوه، وإذا سرَق فيهم الضَّعيفُ أقاموا عليه الحَدَّ، وايمُ اللهِ، لو أنَّ فاطمةَ بنتَ مُحمَّدٍ سرَقَتْ، لقطَعْتُ يدَها.
أبو داود (ت ٢٧٥)، سنن أبي داود ٤٣٧٣ • سكت عنه [وقد قال في رسالته لأهل مكة كل ما سكت عنه فهو صالح] • أخرجه البخاري (٣٤٧٥)، ومسلم (١٦٨٨)، وأبو داود (٤٣٧٣) واللفظ له، والترمذي (١٤٣٠)، والنسائي (٤٨٩٩)، وابن ماجه (٢٥٤٧) • شرح رواية أخرى

সকল নবীদের ইমামতি:

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لَقَدْ رَأَيْتُنِي فِي الْحِجْرِ وَقُرَيْشٌ تَسْأَلُنِي عَنْ مَسْرَاىَ فَسَأَلَتْنِي عَنْ أَشْيَاءَ مِنْ بَيْتِ الْمَقْدِسِ لَمْ أُثْبِتْهَا ‏.‏ فَكُرِبْتُ كُرْبَةً مَا كُرِبْتُ مِثْلَهُ قَطُّ قَالَ فَرَفَعَهُ اللَّهُ لِي أَنْظُرُ إِلَيْهِ مَا يَسْأَلُونِي عَنْ شَىْءٍ إِلاَّ أَنْبَأْتُهُمْ بِهِ وَقَدْ رَأَيْتُنِي فِي جَمَاعَةٍ مِنَ الأَنْبِيَاءِ فَإِذَا مُوسَى قَائِمٌ يُصَلِّي فَإِذَا رَجُلٌ ضَرْبٌ جَعْدٌ كَأَنَّهُ مِنْ رِجَالِ شَنُوءَةَ وَإِذَا عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ – عَلَيْهِ السَّلاَمُ – قَائِمٌ يُصَلِّي أَقْرَبُ النَّاسِ بِهِ شَبَهًا عُرْوَةُ بْنُ مَسْعُودٍ الثَّقَفِيُّ وَإِذَا إِبْرَاهِيمُ – عَلَيْهِ السَّلاَمُ – قَائِمٌ يُصَلِّي أَشْبَهُ النَّاسِ بِهِ صَاحِبُكُمْ – يَعْنِي نَفْسَهُ – فَحَانَتِ الصَّلاَةُ فَأَمَمْتُهُمْ فَلَمَّا فَرَغْتُ مِنَ الصَّلاَةِ قَالَ قَائِلٌ يَا مُحَمَّدُ هَذَا مَالِكٌ صَاحِبُ النَّارِ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ ‏.‏ فَالْتَفَتُّ إِلَيْهِ فَبَدَأَنِي بِالسَّلاَمِ

আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি হাজরে আসওয়াদের নিকট ছিলাম। এ সময় কুরায়শরা আমাকে আমার মি’রাজ সম্পর্কে প্রশ্ন করতে শুরু করে। তারা আমাকে বাইতুল মাকদাসের এমন সব বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে লাগল যা আমি ভালভাবে দেখিনি। ফলে আমি খুবই চিন্তিত হয়ে পড়লাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তারপর আল্লাহ তা’আলা আমার সামনে বাইতুল মাকদাসকে উদ্ভাসিত করে দিলেন এবং আমি তা দেখছিলাম। তারা আমাকে যে প্রশ্ন করছিল তার জবাব দিতে লাগলাম। এরপর নবীদের এক জামা’আতেও আমি নিজেকে উদ্ভাসিত দেখলাম। মূসা (আঃ) কে সালাতে দণ্ডায়মান দেখলাম। তিনি শানুয়াহ গোত্রের লোকদের ন্যায় মধ্যমাকৃতি। তার চুল ছিল কোকড়ানো। ঈসা (আঃ) কেও সালাতে দাঁড়ানো দেখলাম। তিনি তোমাদের এ সাখীর মতোই দেখতে অর্থাৎ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মতো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তারপর সালাতের সময় হল, আমি তাদের ইমামাত করলাম। সালাত শেষে এক ব্যক্তি আমাকে বললেন, হে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ইনি জাহান্নামের তত্ত্বাবধায়ক মালিক ওকে সালাম করুন। আমি তার দিকে তাকালাম। তিনি আমাকে আগেই সালাম করলেন।
সূত্র: সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৭২

ইবনে কাসীর রহ. বলেন,

ثم أُظْهِرَ شرفُه وفضله عليهم بتقديمه في الإمامة، وذلك عن إشارة جبريل عليه السلام له
সূত্র: তাফসীরে ইবনে কাসীর খ. ৮ পৃ. ৪৩১

নবীজির পাতাকার নিচে সকল নবীগণ

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ أَنَا سَيِّدُ وَلَدِ آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلاَ فَخْرَ وَبِيَدِي لِوَاءُ الْحَمْدِ وَلاَ فَخْرَ وَمَا مِنْ نَبِيٍّ يَوْمَئِذٍ آدَمُ فَمَنْ سِوَاهُ إِلاَّ تَحْتَ لِوَائِي وَأَنَا أَوَّلُ مَنْ تَنْشَقُّ عَنْهُ الأَرْضُ وَلاَ فَخْرَ ‏”‏

আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন আদম সন্তানদের ইমাম (নেতা) হব, এতে অহংকার নেই। হামদের (আল্লাহ তা’আলার প্রসংসার) পতাকা আমার হাতেই থাকবে, এতেও গর্ব নেই। সে দিন আল্লাহ তা’আলার নবী আদম (আঃ) এবং নবীগণের সকলেই আমার পতাকার নীচে থাকবেন। সর্বপ্রথম আমার জন্যই মাটিকে বিদীর্ণ করা হবে, এতে কোন অহংকার নেই।
সূত্র: জামে তিরমিযি হাদিস: ৩৬১৫

لعمر بن الخطاب ـ رضي الله عنه ـ: ( لقد جئتكم بها بيضاء نقية، ولو كان موسى حيّا ما وسعه إلّا اتّباعي
والبيهقي في «شعب الإيمان» (١٧٧)، والبغوي في «شرح السنة» (١٢٦) واللفظ

হেলিকপ্টারে চড়ে

تضع حافرها في منتهى طرفها
সূ্ত্র: আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ খ. ৪ পৃ. ২৬৯

অভ্যার্থণা

فانطلق بي جبريل حتى أتى السماء الدنيا فاستفتح فقيل من هذا قال جبريل قيل ومن معك قال محمد قيل وقد أرسل إليه قال نعم قيل مرحبا به فنعم المجيء جاء ففتح فلما خلصت فإذا فيها آدم فقال هذا أبوك آدم فسلم عليه فسلمت عليه فرد السلام ثم قال مرحبا بالابن الصالح والنبي الصالح ثم صعد بي حتى أتى السماء الثانية فاستفتح قيل من هذا قال جبريل قيل ومن معك قال محمد قيل وقد أرسل إليه قال نعم قيل مرحبا به فنعم المجيء جاء ففتح فلما خلصت إذا يحيى وعيسى وهما ابنا الخالة قال هذا يحيى وعيسى فسلم عليهما فسلمت فردا ثم قالا مرحبا بالأخ الصالح والنبي الصالح ثم صعد بي إلى السماء الثالثة فاستفتح قيل من هذا قال جبريل قيل ومن معك قال محمد قيل وقد أرسل إليه قال نعم قيل مرحبا به فنعم المجيء جاء ففتح فلما خلصت إذا يوسف قال هذا يوسف فسلم عليه فسلمت عليه فرد ثم قال مرحبا بالأخ الصالح والنبي الصالح ثم صعد بي حتى أتى السماء الرابعة فاستفتح قيل من هذا قال جبريل قيل ومن معك قال محمد قيل أوقد أرسل إليه قال نعم قيل مرحبا به فنعم المجيء جاء ففتح فلما خلصت إلى إدريس قال هذا إدريس فسلم عليه فسلمت عليه فرد ثم قال مرحبا بالأخ الصالح والنبي الصالح ثم صعد بي حتى أتى السماء الخامسة فاستفتح قيل من هذا قال جبريل قيل ومن معك قال محمد قيل وقد أرسل إليه قال نعم قيل مرحبا به فنعم المجيء جاء فلما خلصت فإذا هارون قال هذا هارون فسلم عليه فسلمت عليه فرد ثم قال مرحبا بالأخ الصالح والنبي الصالح ثم صعد بي حتى أتى السماء السادسة فاستفتح قيل من هذا قال جبريل قيل من معك قال محمد قيل وقد أرسل إليه قال نعم قال مرحبا به فنعم المجيء جاء فلما خلصت فإذا موسى قال هذا موسى فسلم عليه فسلمت عليه فرد ثم قال مرحبا بالأخ الصالح والنبي الصالح فلما تجاوزت بكى قيل له ما يبكيك قال أبكي لأن غلاما بعث بعدي يدخل الجنة من أمته أكثر ممن يدخلها من أمتي ثم صعد بي إلى السماء السابعة فاستفتح جبريل قيل من هذا قال جبريل قيل ومن معك قال محمد قيل وقد بعث إليه قال نعم قال مرحبا به فنعم المجيء جاء فلما خلصت فإذا إبراهيم قال هذا أبوك فسلم عليه قال فسلمت عليه فرد السلام قال مرحبا بالابن الصالح والنبي الصالح ثم رفعت إلي سدرة المنتهى

বিরোধী দলকে মাফ করা

١٣- ولجأتْ صناديدُ قريشٍ وعظماؤُها إلى الكعبةِ يعني دخلوا فيها قال فجاءَ رسولُ اللَّهِ ﷺ حتّى طافَ بالبيتِ فجعلَ يمرُّ بتلكَ الأصنامِ ويطعنُها بسِيةِ القوسِ ويقولُ {جاءَ الْحَقُّ وَزَهَقَ الْباطِلُ إِنَّ الْباطِلَ كانَ زَهوقًا} حتّى إذا فرغَ وصلّى جاءَ فأخذَ بعُضادَتيِ البابِ ثمَّ قال يا معشرَ قريشٍ ما تقولونَ قالوا نقولُ ابنُ أخٍ وابنُ عمٍّ رحيمٌ كريمٌ ثمَّ أعادَ عليهمُ القولَ ما تقولونَ قالوا مثلَ ذلِك قال فإنِّي أقولُ كما قال أخي يوسفُ {لا تَثْرِيبَ عَلَيْكُمُ الْيَوْمَ يَغْفِرُ اللَّهُ لَكُمْ وَهُوَ أَرْحَمُ الرّاحِمِينَ} فخرجوا فبايعوهُ على الإسلامِ
عبد الحق الإشبيلي (ت ٥٨١)، الأحكام الصغرى ٥٥٨ • [أشار في المقدمة أنه صحيح الإسناد]

বললেন, আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। আল্লাহ তোমাদের কে ক্ষমা করুন। তিনি সব মেহেরবানদের চাইতে অধিক মেহেরবান।
সুরাঃ ইউসুফ, আয়াত: ৯২

বোঝা মাথায় নেওয়া

সুইচ ব্যাংকে টাকা নবীজির ঘরে চুলা না জ্বলা

নবীজির সা. পিঠে চাটাইয়ের দাগ।

ওমর রা. বলেন, একবার আমি নবীজি সা. এর কাছে গেলাম।

وَإِنَّهُ لَعَلَى حَصِيْرٍ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ شَيْءٌ وَتَحْتَ رَأْسِهِ وِسَادَةٌ مِنْ أَدَمٍ حَشْوُهَا لِيْفٌ وَإِنَّ عِنْدَ رِجْلَيْهِ قَرَظًا مَصْبُوْبًا وَعِنْدَ رَأْسِهِ أَهَبٌ مُعَلَّقَةٌ فَرَأَيْتُ أَثَرَ الْحَصِيْرِ فِيْ جَنْبِهِ فَبَكَيْتُ فَقَالَ مَا يُبْكِيْكَ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ كِسْرَى وَقَيْصَرَ فِيْمَا هُمَا فِيْهِ وَأَنْتَ رَسُوْلُ اللهِ فَقَالَ أَمَا تَرْضَى أَنْ تَكُوْنَ لَهُمْ الدُّنْيَا وَلَنَا الآخِرَةُ.

অর্থাৎ এ সময় তিনি একটা চাটাইয়ের উপর শুয়ে ছিলেন। চাটাই এবং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মাঝে আর কিছুই ছিল না। তাঁর মাথার নিচে ছিল খেজুরের ছালভর্তি চামড়ার একটি বালিশ এবং পায়ের কাছে ছিল সল্ম বৃক্ষের পাতার একটি স্তূপ ও মাথার উপর লটকানো ছিল চামড়ার একটি মশক। আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এক পার্শ্বে চাটাইয়ের দাগ দেখে কেঁদে ফেললে তিনি বললেন, তুমি কেন কাঁদছ? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! কিসরা ও কায়সার পার্থিব ভোগ-বিলাসের মধ্যে ডুবে আছে, অথচ আপনি আল্লাহর রাসূল। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি এতে সন্তুষ্ট নও যে, তারা দুনিয়া লাভ করুক, আর আমরা আখিরাত লাভ করি।
সূত্র: সহিহ বুখারী হাদিস: ৪৯১৩

২. নবীজির সা. ঘরে রান্না।

عَنْ عَائِشَةَ أَنَّهَا قَالَتْ لِعُرْوَةَ ابْنَ أُخْتِي إِنْ كُنَّا لَنَنْظُرُ إِلَى الْهِلاَلِ ثَلاَثَةَ أَهِلَّةٍ فِي شَهْرَيْنِ وَمَا أُوقِدَتْ فِي أَبْيَاتِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَارٌ فَقُلْتُ مَا كَانَ يُعِيشُكُمْ قَالَتْ الأَسْوَدَانِ التَّمْرُ وَالْمَاءُ إِلاَّ أَنَّهُ قَدْ كَانَ لِرَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم جِيرَانٌ مِنْ الأَنْصَارِ كَانَ لَهُمْ مَنَائِحُ وَكَانُوا يَمْنَحُونَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم مِنْ أَبْيَاتِهِمْ فَيَسْقِينَاهُ.

অর্থাৎ হযরত আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি একবার ‘উরওয়াহ (রাঃ)-কে বললেন, বোন পুত্র! আমরা দু’মাসে তিনটি নতুন চাঁদ দেখতাম। কিন্তু (এর মধ্যে) আল্লাহর রাসূলের ঘরগুলোতে আগুন জ্বলত না। আমি বললাম, আপনারা কিভাবে দিনাতিপাত করতেন? তিনি বললেন, কালো দু’টি বস্ত্ত। খেজুর আর পানি। অবশ্য রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কিছু আনসার প্রতিবেশীর কতকগুলো দুধেল প্রাণী ছিল। তারা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তা দিত। আর আমরা তাই পান করতাম।
সূত্র: সহিহ বুখারী হাদিস: ৬৪৫৯

৩. ক্ষুধার যন্ত্রনায় পেট বাঁধা।

হযরত আনাস ইবনে মালেক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

جِئْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمًا فَوَجَدْتُهُ جَالِسًا مَعَ أَصْحَابِهِ يُحَدِّثُهُمْ وَقَدْ عَصَّبَ بَطْنَهُ بِعِصَابَةٍ – قَالَ أُسَامَةُ وَأَنَا أَشُكُّ – عَلَى حَجَرٍ فَقُلْتُ لِبَعْضِ أَصْحَابِهِ لِمَ عَصَّبَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَطْنَهُ فَقَالُوا مِنَ الْجُوعِ

আমি একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে তাকে দেখলাম, তিনি সাহাবীদের সাথে বসে আলোচনায় রত আছেন এবং তিনি তার পেট একটি কাপড়ের টুকরো দিয়ে বেঁধে রেখেছেন। বর্ণনাকার উসামাহ্ বলেন, পাথরসহ ছিল কি-না, এতে আমার মনে সন্দেহের উদ্রেক হয়েছে। আমি তার কোন এক সাহাবীকে প্রশ্ন করলাম, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার পেট কেন বেঁধে রেখেছেন? তারা বললেন, ক্ষুধার তাড়নায়।
সূত্র: সহিহ মুসলিম হাদিস: ২০৪০

আত্তাহিয়্যাতু ইতিহাস:

আল্লামা সুহাইলী রহ. বলেছেন,

মি’রাজের রাতে যখন রাসুলুল্লাহ সা. আল্লাহর কাছাকাছি হলেন, তখন নবীজি সা. বললেন,

التحيات لله والصلوات الطيبات

ফিরিস্তারা বললেন,

السلام عليك أيها النبي ورحمة الله وبركاته

নবীজি সা. বললেন,

السلام علينا وعلى عباد الله الصالحين

ফিরিস্তারা তখন বললেন,

أشهد أن لا إله إلا الله ، وأشهد أن محمَّداً رسول الله
সূত্র: রউযুল উনফ পৃ. ৩৫৮

নামাজ কমিয়েছেন

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ فَفَرَضَ اللَّهُ عَلَى أُمَّتِي خَمْسِينَ صَلاَةً – قَالَ – فَرَجَعْتُ بِذَلِكَ حَتَّى أَمُرَّ بِمُوسَى فَقَالَ مُوسَى عَلَيْهِ السَّلاَمُ مَاذَا فَرَضَ رَبُّكَ عَلَى أُمَّتِكَ – قَالَ – قُلْتُ فَرَضَ عَلَيْهِمْ خَمْسِينَ صَلاَةً ‏.‏ قَالَ لِي مُوسَى عَلَيْهِ السَّلاَمُ فَرَاجِعْ رَبَّكَ فَإِنَّ أُمَّتَكَ لاَ تُطِيقُ ذَلِكَ – قَالَ – فَرَاجَعْتُ رَبِّي فَوَضَعَ شَطْرَهَا – قَالَ – فَرَجَعْتُ إِلَى مُوسَى – عَلَيْهِ السَّلاَمُ – فَأَخْبَرْتُهُ قَالَ رَاجِعْ رَبَّكَ فَإِنَّ أُمَّتَكَ لاَ تُطِيقُ ذَلِكَ – قَالَ – فَرَاجَعْتُ رَبِّي فَقَالَ هِيَ خَمْسٌ وَهْىَ خَمْسُونَ لاَ يُبَدَّلُ الْقَوْلُ لَدَىَّ – قَالَ – فَرَجَعْتُ إِلَى مُوسَى فَقَالَ رَاجِعْ رَبَّكَ ‏.‏ فَقُلْتُ قَدِ اسْتَحْيَيْتُ مِنْ رَبِّي – قَالَ – ثُمَّ انْطَلَقَ بِي جِبْرِيلُ حَتَّى نَأْتِيَ سِدْرَةَ الْمُنْتَهَى فَغَشِيَهَا أَلْوَانٌ لاَ أَدْرِي مَا هِيَ – قَالَ – ثُمَّ أُدْخِلْتُ الْجَنَّةَ فَإِذَا فِيهَا جَنَابِذُ اللُّؤْلُؤِ وَإِذَا تُرَابُهَا الْمِسْكُ

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তখন আল্লাহ তা’আলা আমার উপর পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত ফরয করেন। আমি এ নিয়ে ফেরার পথে মূসা (আঃ) এর সাথে দেখা হয়। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনার প্রতিপালক আপনার উম্মতের উপর কি ফরয করেছেন? আমি উত্তরে বললাম, তাদের উপর পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত ফরয করা হয়েছে।

মূসা (আঃ) আমাকে বললেন, আপনি আপনার প্রতিপালকের নিকট ফিরে যান; কেননা, আপনার উম্মত এতে সক্ষম হবে না। তাই আমি আল্লাহর দরবারে ফিরে গেলাম। তখন আল্লাহ এর অর্ধেক কমিয়ে দিলেন। আমি আবার ফিরে এসে মূসা (আঃ)-কে জানালে তিনি বললেন, না। আপনি পুনরায় ফিরে যান; কেননা আপনার উম্মত এতেও সক্ষম হবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তারপর আমি আল্লাহর দরবারে ফিরে গেলে তিনি বললেন, এ নির্দেশ পাঁচ, আর পাঁচই পঞ্চাশের সমান করে দিলাম, আমার কথার কোন রদবদল নেই।

এরপর আমি মূসা (আঃ)-এর নিকট ফিরে আসি। তিনি তখনো বললেন, আপনি ফিরে যান আল্লাহর দরবারে। আমি বললামঃ আমার লজ্জা লাগছে। তারপর জিবরীল (আঃ) আমাকে সিদরাতুল মুনতাহা নিয়ে চললেন, আমরা পৌঁছলাম। তা এত বিচিত্র রঙে আবৃত যে, আমি বুঝতে পারছি না যে, আসলে তা কী? তারপর আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হল। তথায় ছিল মুক্তার গম্বুজ আর তার মাটি ছিল মিশকের।
সূ্ত্র: সহিহ মুসলিম হাদিস: ১৬৩

দরদী নবী

নবীজির কান্নার কারণ:

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم تَلاَ قَوْلَ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ فِي إِبْرَاهِيمَ ‏(‏ رَبِّ إِنَّهُنَّ أَضْلَلْنَ كَثِيرًا مِنَ النَّاسِ فَمَنْ تَبِعَنِي فَإِنَّهُ مِنِّي‏)‏ الآيَةَ ‏.‏ وَقَالَ عِيسَى عَلَيْهِ السَّلاَمُ ‏(‏ إِنْ تُعَذِّبْهُمْ فَإِنَّهُمْ عِبَادُكَ وَإِنْ تَغْفِرْ لَهُمْ فَإِنَّكَ أَنْتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ‏)‏ فَرَفَعَ يَدَيْهِ وَقَالَ ‏”‏ اللَّهُمَّ أُمَّتِي أُمَّتِي ‏”‏ ‏.‏ وَبَكَى فَقَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ يَا جِبْرِيلُ اذْهَبْ إِلَى مُحَمَّدٍ وَرَبُّكَ أَعْلَمُ فَسَلْهُ مَا يُبْكِيكَ فَأَتَاهُ جِبْرِيلُ – عَلَيْهِ الصَّلاَةُ وَالسَّلاَمُ – فَسَأَلَهُ فَأَخْبَرَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِمَا قَالَ ‏.‏ وَهُوَ أَعْلَمُ ‏.‏ فَقَالَ اللَّهُ يَا جِبْرِيلُ اذْهَبْ إِلَى مُحَمَّدٍ فَقُلْ إِنَّا سَنُرْضِيكَ فِي أُمَّتِكَ وَلاَ نَسُوءُكَ ‏.‏

আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআনে ইবরাহীম (আঃ) এর দু’আ সম্বলিত আয়াতঃ “হে আমার প্রতিপালক। এ সকল প্রতিমা বহু মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। সুতরাং যে আমার অনুসরণ করবে সে আমার দলভুক্ত। আর যে আমার অবাধ্য হবে তুমি তো ক্ষমাশীল পরম দয়ালু”— (সূরাহ ইবরাহীম ১৪ঃ ৩৬) তিলাওয়াত করেন। আর “ঈসা (আঃ) বলেছেনঃ “তুমি যদি তাদেরকে শাস্তি দাও তবে তারা তো তোমারই বান্দা, আর যদি তাদেরকে ক্ষমা কর, তবে তুমি তো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়”- (সূরাহ আল মায়িদাহ ৫ঃ ১১৮)। তারপর তিনি তার উভয় হাত উঠালেন এবং বললেন, হে আল্লাহ! আমার উম্মত, আমার উম্মত! আর কেঁদে ফেললেন।

তখন মহান আল্লাহ বললেন, হে জিবরীল! মুহাম্মাদের নিকট যাও, তোমার রব তো সবই জানেন তাকে জিজ্ঞেস কর, তিনি কাঁদছেন কেন? জিবরীল (আঃ) এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছিলেন, তা তাকে অবহিত করলেন। আর আল্লাহ তো সর্বজ্ঞ। তখন আল্লাহ তা’আলা বললেন, হে জিবরীল! তুমি মুহাম্মাদ এর কাছে যাও এবং তাকে বল, “নিশ্চয়ই আমি (আল্লাহ) আপনার উম্মতের ব্যাপারে আপনাকে সন্তুষ্ট করে দিব, আপনাকে অসন্তুষ্ট করব না”।
সূত্র: সহিহ মুসলিম হাদিস: ২০২

নবীজির সা. মেহনতের সার্টিফিকেট

لَقَدْ جَاءكُمْ رَسُولٌ مِّنْ أَنفُسِكُمْ عَزِيزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيصٌ عَلَيْكُم بِالْمُؤْمِنِينَ رَؤُوفٌ رَّحِيمٌ

তোমাদের কাছে এসেছে তোমাদের মধ্য থেকেই একজন রসূল। তোমাদের দুঃখ-কষ্ট তার পক্ষে দুঃসহ। তিনি তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি স্নেহশীল, দয়াময়।
সুরাঃ তাওবা, আয়াত: ১২৮

মাকবুল দু’আ উম্মতের জন্য

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لِكُلِّ نَبِيٍّ دَعْوَةٌ مُسْتَجَابَةٌ فَتَعَجَّلَ كُلُّ نَبِيٍّ دَعْوَتَهُ وَإِنِّي اخْتَبَأْتُ دَعْوَتِي شَفَاعَةً لأُمَّتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَهِيَ نَائِلَةٌ إِنْ شَاءَ اللَّهُ مَنْ مَاتَ مِنْ أُمَّتِي لاَ يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا

আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক নবীর জন্য একটি বিশেষ দু’আ আছে যা কবুল হবে। তন্মধ্যে সকলেই তাদের দু’আ পৃথিবীতেই করে নিয়েছে। আর আমার দু’আটি কিয়ামত দিবসে আমার উম্মতের জন্য গোপন রেখে দিয়েছি। আমার উম্মতের যে ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেছে অথচ কোন প্রকার শিরক করেনি সে ইনশাআল্লাহ আমার এ দু’আ পাবে।
সূত্র: সহিহ মুসলিম হাদিস: ১৯৯

৫ ওয়াক্ত নামাজের পর উম্মতের জন্য দু’আ

عن أم المؤمنين عائشة رضي الله عنها قالت لَمَّا رَأَيْتُ مِنَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ طِيبَ نَفْسٍ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ ادْعُ اللهَ لِي فَقَالَ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِعَائِشَةَ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهَا وَمَا تَأَخَّرَ مَا أَسَرَّتْ وَمَا أَعْلَنَتْ فَضَحِكَتْ عَائِشَةُ حَتَّى سَقَطَ رَأْسُهَا فِي حَجْرِهَا مِنَ الضَّحِكِ قَالَ لَهَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَيَسُرُّكِ دُعَائِي فَقَالَتْ وَمَا لِي لَا يَسُرُّنِي دُعَاؤُكَ فَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاللهِ إِنَّهَا لَدُعَائِي لِأُمَّتِي فِي كُلِّ صَلَاةٍ

অর্থ: হযরত উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, যখন আমি দেখলাম নবীজির খোশমেজাজে আছেন, তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল, আপনি আমার জন্য দোয়া করুন। তখন নবীজী সা. দু’আ করলেন, হে আল্লাহ, আয়েশাকে তার ইতিপূর্বের এবং পরবর্তীর এবং প্রকাশ্য-গোপনের সকল গুনাহ মাফ করে দাও । অতঃপর আয়েশা রা. হাসলেন, এমনকি তাঁর মাথা তাঁর কোলের মধ্যে ঢলে পড়ল, নবীজি সা. বললেন, তুমি কি আমার দু’আয় খুশি হয়েছো? তখন আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা বললেন, আপনার দু’আয় কেন আমাতে খুশি করবে না? নবী সা. বললেন, আল্লাহর কসম! আমি এই দোয়া আমার উম্মতের জন্য প্রত্যেক নামাজের পরেই করি।
সূত্র: সহিহ ইবনে হিব্বান হাদিস: ৭১১১

দাগি আসামীদের পাশে নবীজি সা.

বিপদে পড়লে এক ঘন্টা লাইভ করেও সাহায্য পায় না। দাগি আসামীদের সাথে পরিচয় আছে এটাও স্বীকার করতে চায় না।

١عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: شَفَاعَتِي لِأَهْلِ الْكَبَائِرِ مِنْ أُمَّتِي
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমার উম্মাতের কাবীরাহ গুনাহগারদের জন্য আমার শাফা‘আত।
সূত্র: সুনান আবু দাউদ, হাদিস: ৪৭৩৯ তিরমিযি: ২৪৩৫ আহমাদ: ১৩২২২

কোমর ধরে টানা

هُرَيْرَةَ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَقُولُ إِنَّمَا مَثَلِي وَمَثَلُ النَّاسِ كَمَثَلِ رَجُلٍ اسْتَوْقَدَ نَارًا فَلَمَّا أَضَاءَتْ مَا حَوْلَهُ جَعَلَ الْفَرَاشُ وَهَذِهِ الدَّوَابُّ الَّتِي تَقَعُ فِي النَّارِ يَقَعْنَ فِيهَا فَجَعَلَ يَنْزِعُهُنَّ وَيَغْلِبْنَهُ فَيَقْتَحِمْنَ فِيهَا فَأَنَا آخُذُ بِحُجَزِكُمْ عَنْ النَّارِ وَهُمْ يَقْتَحِمُونَ فِيهَا.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন যে, আমার ও লোকদের উদাহরণ এমন লোকের মত, যে আগুন জ্বালালো আর যখন তার চারদিক আলোকিত হয়ে গেল, তখন পতঙ্গ ও ঐ সমস্ত প্রাণী যেগুলো আগুনে পুড়ে, তারা তাতে পুড়তে লাগলো। তখন সে সেগুলোকে আগুন থেকে ফিরানোর চেষ্টা করল। কিন্তু সেগুলো আগুনে তাকে পরাজয় করল এবং আগুনে পতিত হল। (তদ্রূপ) আমিও তোমাদের কোমর ধরে আগুন থেকে বাঁচাবার চেষ্টা করছি। কিন্তু তোমরা তাতেই পতিত হচ্ছ।
সূত্র: সহিহ বুখারী হাদিস: ৬৪৮৩

কিয়ামতে দরদী নবী

عن معْبَدُ بْنُ هِلاَلٍ الْعَنَزِيُّ قَالَ اجْتَمَعْنَا نَاسٌ مِن أهْلِ البَصْرَةِ فَذَهَبْنَا إلى أنَسِ بنِ مَالِكٍ وذَهَبْنَا معنَا بثَابِتٍ البُنَانِيِّ إلَيْهِ يَسْأَلُهُ لَنَا عن حَديثِ الشَّفَاعَةِ فَإِذَا هو في قَصْرِهِ فَوَافَقْنَاهُ يُصَلِّي الضُّحَى فَاسْتَأْذَنَّا فأذِنَ لَنَا وهو قَاعِدٌ علَى فِرَاشِهِ، فَقُلْنَا لِثَابِتٍ لا تَسْأَلْهُ عن شيءٍ أوَّلَ مِن حَديثِ الشَّفَاعَةِ، فَقالَ يا أبَا حَمْزَةَ هَؤُلَاءِ إخْوَانُكَ مِن أهْلِ البَصْرَةِ جَاؤُوكَ يَسْأَلُونَكَ عن حَديثِ الشَّفَاعَةِ فَقالَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عليه وسلَّمَ قالَ إذَا كانَ يَوْمُ القِيَامَةِ مَاجَ النَّاسُ بَعْضُهُمْ في بَعْضٍ فَيَأْتُونَ آدَمَ فيَقولونَ اشْفَعْ لَنَا إلى رَبِّكَ فيَقولُ لَسْتُ لَهَا ولَكِنْ علَيْكُم بإبْرَاهِيمَ فإنَّه خَلِيلُ الرَّحْمَنِ।فَيَأْتُونَ إبْرَاهِيمَ فيَقولُ لَسْتُ لَهَا ولَكِنْ علَيْكُم بمُوسَى فإنَّه كَلِيمُ اللَّهِ فَيَأْتُونَ مُوسَى فيَقولُ لَسْتُ لَهَا ولَكِنْ علَيْكُم بعِيسَى فإنَّه رُوحُ اللَّهِ وكَلِمَتُهُ فَيَأْتُونَ عِيسَى فيَقولُ لَسْتُ لَهَا ولَكِنْ علَيْكُم بمُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عليه وسلَّمَ، فَيَأْتُونِي فأقُولُ أنَا لَهَا فأسْتَأْذِنُ علَى رَبِّي فيُؤْذَنُ لِي ويُلْهِمُنِي مَحَامِدَ أحْمَدُهُ بهَا لا تَحْضُرُنِي الآنَ فأحْمَدُهُ بتِلْكَ المَحَامِدِ وأَخِرُّ له سَاجِدًا فيَقولُ يا مُحَمَّدُ ارْفَعْ رَأْسَكَ وقُلْ يُسْمَعْ لَكَ وسَلْ تُعْطَ واشْفَعْ تُشَفَّعْ فأقُولُ يا رَبِّ أُمَّتي أُمَّتِي فيَقولُ انْطَلِقْ فأخْرِجْ منها مَن كانَ في قَلْبِهِ مِثْقَالُ شَعِيرَةٍ مِن إيمَانٍ فأنْطَلِقُ فأفْعَلُ ثُمَّ أعُودُ فأحْمَدُهُ بتِلْكَ المَحَامِدِ ثُمَّ أخِرُّ له سَاجِدًا فيُقَالُ يا مُحَمَّدُ ارْفَعْ رَأْسَكَ وقُلْ يُسْمَعْ لَكَ وسَلْ تُعْطَ واشْفَعْ تُشَفَّعْ فأقُولُ يا رَبِّ أُمَّتي أُمَّتِي فيَقولُ انْطَلِقْ فأخْرِجْ منها مَن كانَ في قَلْبِهِ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ أوْ خَرْدَلَةٍ مِن إيمَانٍ فأخْرِجْهُ فأنْطَلِقُ فأفْعَلُ ثُمَّ أعُودُ فأحْمَدُهُ بتِلْكَ المَحَامِدِ ثُمَّ أخِرُّ له سَاجِدًا فيَقولُ يا مُحَمَّدُ ارْفَعْ رَأْسَكَ وقُلْ يُسْمَعْ لَكَ وسَلْ تُعْطَ واشْفَعْ تُشَفَّعْ فأقُولُ يا رَبِّ أُمَّتي أُمَّتِي فيَقولُ انْطَلِقْ فأخْرِجْ مَن كانَ في قَلْبِهِ أدْنَى أدْنَى أدْنَى مِثْقَالِ حَبَّةِ خَرْدَلٍ مِن إيمَانٍ فأخْرِجْهُ مِنَ النَّارِ فأنْطَلِقُ فأفْعَلُ فَلَمَّا خَرَجْنَا مِن عِندِ أنَسٍ قُلتُ لِبَعْضِ أصْحَابِنَا لو مَرَرْنَا بالحَسَنِ وهو مُتَوَارٍ في مَنْزِلِ أبِي خَلِيفَةَ فَحَدَّثْنَاهُ بما حَدَّثَنَا أنَسُ بنُ مَالِكٍ فأتَيْنَاهُ فَسَلَّمْنَا عليه فأذِنَ لَنَا فَقُلْنَا له يا أبَا سَعِيدٍ جِئْنَاكَ مِن عِندِ أخِيكَ أنَسِ بنِ مَالِكٍ فَلَمْ نَرَ مِثْلَ ما حَدَّثَنَا في الشَّفَاعَةِ فَقالَ هِيهْ فَحَدَّثْنَاهُ بالحَديثِ فَانْتَهَى إلى هذا المَوْضِعِ فَقالَ هِيهْ فَقُلْنَا لَمْ يَزِدْ لَنَا علَى هذا فَقالَ لقَدْ حدَّثَني وهو جَمِيعٌ مُنْذُ عِشْرِينَ سَنَةً فلا أدْرِي أنَسِيَ أمْ كَرِهَ أنْ تَتَّكِلُوا قُلْنَا يا أبَا سَعِيدٍ فَحَدِّثْنَا فَضَحِكَ وقالَ خُلِقَ الإنْسَانُ عَجُولًا ما ذَكَرْتُهُ إلَّا وأَنَا أُرِيدُ أنْ أُحَدِّثَكُمْ حدَّثَني كما حَدَّثَكُمْ به قالَ ثُمَّ أعُودُ الرَّابِعَةَ فأحْمَدُهُ بتِلْكَ المَحَامِدِ ثُمَّ أخِرُّ له سَاجِدًا فيُقَالُ يا مُحَمَّدُ ارْفَعْ رَأْسَكَ وقُلْ يُسْمَعْ وسَلْ تُعْطَهْ واشْفَعْ تُشَفَّعْ فأقُولُ يا رَبِّ ائْذَنْ لي فِيمَن قالَ لا إلَهَ إلَّا اللَّهُ فيَقولُ وعِزَّتي وجَلَالِي وكِبْرِيَائِي وعَظَمَتي لَأُخْرِجَنَّ منها مَن قالَ لا إلَهَ إلَّا اللَّهُ

অর্থাৎ মা’বাদ ইবন হিলাল আল আনাযী র. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা বসরাবাসী কিছু লোক একত্রিত হয়ে আনাস ইবনু মালিক রা.এর কাছে গেলাম। আমাদের সঙ্গে সাবিত রা.কে নিলাম, যাতে তিনি আমাদের কাছে আনাস রা. হতে বর্ণিত শাফাআত সম্পর্কিত হাদীস জিজ্ঞেস করেন। আমরা তাঁকে তাঁর মহলেই চাশতের সালাতরত পেলাম। তাঁর কাছে প্রবেশের অনুমতি চাইলে তিনি আমাদেরকে অনুমতি দিলেন। তখন তিনি তাঁর বিছানায় উপবিষ্ট অবস্থায় আছেন।

অতঃপর আমরা সাবিত রা. কে অনুরোধ করলাম, তিনি যেন শাফাআতের হাদীসটি জিজ্ঞেস করার পূর্বে অন্য কিছু জিজ্ঞেস না করেন। তখন সাবিত রা. বললেন, হে আবূ হামযাহ! এরা বসরাবাসী আপনার ভাই, তারা শাফাআতের হাদীস সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে এসেছে। অতঃপর আনাস রা.বললেন, আমাদের নিকট মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, ক্বিয়ামাতের দিন মানুষ সমুদ্রের ঢেউয়ের মত ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়বে। তাই তারা আদাম আঃ এর কাছে এসে বলবে, আমাদের জন্য আপনার রবেবর নিকট সুপারিশ করুন।

তিনি বলবেনঃ এ কাজের জন্য আমি নই। বরং তোমরা ইব্রাহীম আঃ এর কাছে যাও। কারণ, তিনি হলেন আল্লাহর খলীল। তখন তারা ইব্রাহীম আঃ এর কাছে আসবে। তিনি বলবেনঃ আমি এ কাজের জন্য নই। তবে তোমরা মূসা আঃ এর কাছে যাও। কারণ তিনি আল্লাহর সঙ্গে কথা বলেছেন। তখন তারা মূসা আঃ এর কাছে আসবে। তিনি বলবেনঃ আমি তো এ কাজের জন্য নই। তোমরা ‘ঈসা আঃ এর কাছে যাও। কারণ তিনিই আল্লাহর রূহ ও বাণী। তারা তখন ‘ঈসা আঃ এর কাছে আসবে। তিনি বলবেন: আমি তো এ কাজের জন্য নই। তোমরা বরং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে যাও। এরপর তারা আমার কাছে আসবে। আমি বলব, আমিই এ কাজের জন্য। আমি তখন আমার রবেবর নিকট অনুমতি চাইব। আমাকে অনুমতি দেয়া হবে। আমাকে প্রশংসাসূচক বাক্য ইলহাম করা হবে যা দিয়ে আমি আল্লাহর প্রশংসা করব, যেগুলো এখন আমার জানা নেই। আমি সেসব প্রশংসা বাক্য দিয়ে প্রশংসা করব এবং সাজদাহ্য় পড়ে যাব। তখন আমাকে বলা হবে, ইয়া মুহাম্মাদ! মাথা উঠাও। তুমি বল, তোমার কথা শোনা হবে। চাও, দেয়া হবে। সুপারিশ কর, গ্রহণ করা হবে। তখন আমি বলবো, হে আমার প্রতিপালক! আমার উম্মাত! আমার উম্মাত! বলা হবে, যাও, যাদের হৃদয়ে যবের দানা পরিমাণ ঈমান আছে, তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে দাও। আমি গিয়ে এমনই করব। তারপর আমি ফিরে আসব এবং পুনরায় সেসব প্রশংসা বাক্য দ্বারা আল্লাহর প্রশংসা করবো এবং সাজদাহ্য় পড়ে যাবো।

তখন বলা হবে, হে মুহাম্মাদ! মাথা উঠাও। তোমার কথা শোনা হবে। চাও, দেয়া হবে। সুপারিশ কর, গ্রহণ করা হবে। তখনো আমি বলব, হে আমার রবব! আমার উম্মাত! আমার উম্মাত! তখন বলা হবে, যাও, যাদের এক অণু কিংবা সরিষা পরিমাণ ঈমান আছে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের কর। আমি গিয়ে তাই করব। আমি আবার ফিরে আসব এবং সেসব প্রশংসা বাক্য দিয়ে আল্লাহর প্রশংসা করবো। আর সাজদাহ্য় পড়ে যাবো। আমাকে বলা হবে, হে মুহাম্মাদ! মাথা উঠাও। বল, তোমার কথা শোনা হবে। চাও, দেয়া হবে। সুপারিশ কর, গ্রহণ করা হবে। আমি তখন বলবো, হে আমার রবব, আমার উম্মাত! আমার উম্মাত! এরপর আল্লাহ্ বলবেন, যাও, যাদের অন্তরে সরিষার দানার চেয়েও অতি ক্ষুদ্র পরিমাণও ঈমান আছে, তাদেরকেও জাহান্নাম থেকে বের করে আন। আমি যাবো এবং তাই করবো।

আমরা যখন আনাস রা. এর নিকট থেকে বের হয়ে আসছিলাম, তখন আমি আমার সঙ্গীদের কোন একজনকে বললাম, আমরা যদি আবূ খলীফার বাড়িতে নিজেকে গোপনে রাখা হাসান বসরীর কাছে গিয়ে আনাস ইবনু মালিক রা. এর বর্ণিত হাদীসটি তাঁর কাছে বর্ণনা করতাম। এরপর আমরা হাসান বসরীর কাছে এসে তাঁর কাছে অনুমতি চাওয়ার সালাম দিলাম। তিনি আমাদেরকে প্রবেশের অনুমতি দিলেন।

আমরা তাঁকে বললাম, হে আবূ সা‘ঈদ! আমরা আপনারই ভাই আনাস ইবনু মালিক রা. এর নিকট হতে আপনার কাছে আসলাম। শাফাআত বিষয়ে তিনি যেমন বর্ণনা দিয়েছেন, তেমন বর্ণনা করতে আমরা আর কাউকে দেখিনি। তিনি বললেন, আমার কাছে সেটি বর্ণনা কর। আমরা তাঁকে হাদীসটি বর্ণনা করে শোনালাম। এরপর আমরা শেষখানে এসে বর্ণনা শেষ করলাম। তিনি বললেন, আরো বর্ণনা কর। আমরা বললাম, তিনি তো এর অধিক আমাদের কাছে বর্ণনা দেননি। তিনি বললেন, জানি না, তিনি কি ভুলেই গেলেন, না তোমরা নির্ভরশীল হয়ে পড়বে বলে বাকীটুকু বর্ণনা করতে অপছন্দ করলেন।

বিশ বছর আগে যখন তিনি শক্তি সামর্থ্যে ও স্মরণশক্তিতে দৃঢ় ছিলেন, তখন আমার কাছেও হাদীসটি বর্ণনা করেছিলেন। আমরা বললাম, হে আবূ সা‘ঈদ! আমাদের কাছে হাদীসটি বর্ণনা করুন। তিনি হাসলেন এবং বললেন, মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে, খুব বেশি সত্বরতা প্রিয় করে। আমি তো বর্ণনার উদ্দেশেই তোমাদের কাছে বিষয়টি উল্লেখ করলাম। তিনি তোমাদের কাছে যা বর্ণনা করেছেন, আমার কাছেও তা বর্ণনা করেছেন, তবে পরে এটুকুও বলেছিলেন, আমি চতুর্থবার ফিরে আসবো এবং সেসব প্রশংসা বাক্য দিয়ে আল্লাহর প্রশংসা করব এবং সাজদাহয় পড়ে যাবো।

তখন বলা হবে, হে মুহাম্মাদ! মাথা উঠাও। বল, তোমার কথা শোনা হবে। চাও, দেয়া হবে। শাফাআত কর, গ্রহণ করা হবে। আমি বলব, হে আমার প্রতিপালক! আমাকে তাদের সম্পর্কে শাফাআত করার অনুমতি দান কর, যারা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ বলেছে। তখন আল্লাহ্ বলবেন, আমার ইয্যত, আমার পরাক্রম, আমার বড়ত্ব ও আমার মহত্ত্বের শপথ! যারা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ বলেছে, আমি অবশ্য অবশ্যই তাদের সবাইকে জাহান্নাম থেকে বের করব।
সূত্রঃ বুখারী হাদিস-৭৫১০ মুসলিম-১৯৩ সুনানে কুবরা (বায়হাকী)-১১১৩১ আত তামহীদ খঃ১৯ পৃঃ৬৬

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ أُتِيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِلَحْمٍ، فَرُفِعَ إِلَيْهِ الذِّرَاعُ، وَكَانَتْ تُعْجِبُهُ، فَنَهَسَ مِنْهَا نَهْسَةً ثُمَّ قَالَ ‏ “‏ أَنَا سَيِّدُ النَّاسِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَهَلْ تَدْرُونَ مِمَّ ذَلِكَ يُجْمَعُ النَّاسُ الأَوَّلِينَ وَالآخِرِينَ فِي صَعِيدٍ وَاحِدٍ، يُسْمِعُهُمُ الدَّاعِي، وَيَنْفُذُهُمُ الْبَصَرُ، وَتَدْنُو الشَّمْسُ، فَيَبْلُغُ النَّاسَ مِنَ الْغَمِّ وَالْكَرْبِ مَا لاَ يُطِيقُونَ وَلاَ يَحْتَمِلُونَ فَيَقُولُ النَّاسُ أَلاَ تَرَوْنَ مَا قَدْ بَلَغَكُمْ أَلاَ تَنْظُرُونَ مَنْ يَشْفَعُ لَكُمْ إِلَى رَبِّكُمْ فَيَقُولُ بَعْضُ النَّاسِ لِبَعْضٍ عَلَيْكُمْ بِآدَمَ فَيَأْتُونَ آدَمَ عليه السلام فَيَقُولُونَ لَهُ أَنْتَ أَبُو الْبَشَرِ خَلَقَكَ اللَّهُ بِيَدِهِ‏.‏ وَنَفَخَ فِيكَ مِنْ رُوحِهِ، وَأَمَرَ الْمَلاَئِكَةَ فَسَجَدُوا لَكَ، اشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ، أَلاَ تَرَى إِلَى مَا نَحْنُ فِيهِ أَلاَ تَرَى إِلَى مَا قَدْ بَلَغَنَا فَيَقُولُ آدَمُ إِنَّ رَبِّي قَدْ غَضِبَ الْيَوْمَ غَضَبًا لَمْ يَغْضَبْ قَبْلَهُ مِثْلَهُ وَلَنْ يَغْضَبَ بَعْدَهُ مِثْلَهُ، وَإِنَّهُ نَهَانِي عَنِ الشَّجَرَةِ فَعَصَيْتُهُ، نَفْسِي نَفْسِي نَفْسِي، اذْهَبُوا إِلَى غَيْرِي، اذْهَبُوا إِلَى نُوحٍ، فَيَأْتُونَ نُوحًا فَيَقُولُونَ يَا نُوحُ إِنَّكَ أَنْتَ أَوَّلُ الرُّسُلِ إِلَى أَهْلِ الأَرْضِ، وَقَدْ سَمَّاكَ اللَّهُ عَبْدًا شَكُورًا اشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ، أَلاَ تَرَى إِلَى مَا نَحْنُ فِيهِ فَيَقُولُ إِنَّ رَبِّي عَزَّ وَجَلَّ قَدْ غَضِبَ الْيَوْمَ غَضَبًا لَمْ يَغْضَبْ قَبْلَهُ مِثْلَهُ، وَلَنْ يَغْضَبَ بَعْدَهُ مِثْلَهُ، وَإِنَّهُ قَدْ كَانَتْ لِي دَعْوَةٌ دَعَوْتُهَا عَلَى قَوْمِي نَفْسِي نَفْسِي نَفْسِي اذْهَبُوا إِلَى غَيْرِي، اذْهَبُوا إِلَى إِبْرَاهِيمَ، فَيَأْتُونَ إِبْرَاهِيمَ، فَيَقُولُونَ يَا إِبْرَاهِيمُ، أَنْتَ نَبِيُّ اللَّهِ وَخَلِيلُهُ مِنْ أَهْلِ الأَرْضِ اشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ أَلاَ تَرَى إِلَى مَا نَحْنُ فِيهِ فَيَقُولُ لَهُمْ إِنَّ رَبِّي قَدْ غَضِبَ الْيَوْمَ غَضَبًا لَمْ يَغْضَبْ قَبْلَهُ مِثْلَهُ وَلَنْ يَغْضَبَ بَعْدَهُ مِثْلَهُ، وَإِنِّي قَدْ كُنْتُ كَذَبْتُ ثَلاَثَ كَذَبَاتٍ ـ فَذَكَرَهُنَّ أَبُو حَيَّانَ فِي الْحَدِيثِ ـ نَفْسِي نَفْسِي نَفْسِي، اذْهَبُوا إِلَى غَيْرِي اذْهَبُوا إِلَى مُوسَى، فَيَأْتُونَ مُوسَى، فَيَقُولُونَ يَا مُوسَى أَنْتَ رَسُولُ اللَّهِ، فَضَّلَكَ اللَّهُ بِرِسَالَتِهِ وَبِكَلاَمِهِ عَلَى النَّاسِ، اشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ أَلاَ تَرَى إِلَى مَا نَحْنُ فِيهِ فَيَقُولُ إِنَّ رَبِّي قَدْ غَضِبَ الْيَوْمَ غَضَبًا لَمْ يَغْضَبْ قَبْلَهُ مِثْلَهُ، وَلَنْ يَغْضَبَ بَعْدَهُ مِثْلَهُ، وَإِنِّي قَدْ قَتَلْتُ نَفْسًا لَمْ أُومَرْ بِقَتْلِهَا، نَفْسِي نَفْسِي نَفْسِي، اذْهَبُوا إِلَى غَيْرِي، اذْهَبُوا إِلَى عِيسَى، فَيَأْتُونَ عِيسَى فَيَقُولُونَ يَا عِيسَى أَنْتَ رَسُولُ اللَّهِ وَكَلِمَتُهُ أَلْقَاهَا إِلَى مَرْيَمَ وَرُوحٌ مِنْهُ، وَكَلَّمْتَ النَّاسَ فِي الْمَهْدِ صَبِيًّا اشْفَعْ لَنَا أَلاَ تَرَى إِلَى مَا نَحْنُ فِيهِ فَيَقُولُ عِيسَى إِنَّ رَبِّي قَدْ غَضِبَ الْيَوْمَ غَضَبًا لَمْ يَغْضَبْ قَبْلَهُ مِثْلَهُ، وَلَنْ يَغْضَبَ بَعْدَهُ مِثْلَهُ ـ وَلَمْ يَذْكُرْ ذَنْبًا ـ نَفْسِي نَفْسِي نَفْسِي، اذْهَبُوا إِلَى غَيْرِي اذْهَبُوا إِلَى مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم فَيَأْتُونَ مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم فَيَقُولُونَ يَا مُحَمَّدُ أَنْتَ رَسُولُ اللَّهِ وَخَاتَمُ الأَنْبِيَاءِ، وَقَدْ غَفَرَ اللَّهُ لَكَ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِكَ وَمَا تَأَخَّرَ، اشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ أَلاَ تَرَى إِلَى مَا نَحْنُ فِيهِ فَأَنْطَلِقُ فَآتِي تَحْتَ الْعَرْشِ، فَأَقَعُ سَاجِدًا لِرَبِّي عَزَّ وَجَلَّ ثُمَّ يَفْتَحُ اللَّهُ عَلَىَّ مِنْ مَحَامِدِهِ وَحُسْنِ الثَّنَاءِ عَلَيْهِ شَيْئًا لَمْ يَفْتَحْهُ عَلَى أَحَدٍ قَبْلِي ثُمَّ يُقَالُ يَا مُحَمَّدُ ارْفَعْ رَأْسَكَ، سَلْ تُعْطَهْ، وَاشْفَعْ تُشَفَّعْ، فَأَرْفَعُ رَأْسِي، فَأَقُولُ أُمَّتِي يَا رَبِّ، أُمَّتِي يَا رَبِّ فَيُقَالُ يَا مُحَمَّدُ أَدْخِلْ مِنْ أُمَّتِكَ مَنْ لاَ حِسَابَ عَلَيْهِمْ مِنَ الْبَابِ الأَيْمَنِ مِنْ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ وَهُمْ شُرَكَاءُ النَّاسِ فِيمَا سِوَى ذَلِكَ مِنَ الأَبْوَابِ، ثُمَّ قَالَ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنَّ مَا بَيْنَ الْمِصْرَاعَيْنِ مِنْ مَصَارِيعِ الْجَنَّةِ كَمَا بَيْنَ مَكَّةَ وَحِمْيَرَ، أَوْ كَمَا بَيْنَ مَكَّةَ وَبُصْرَى

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে গোশত আনা হল এবং তাকে সামনের রান পরিবেশন করা হল। তিনি এটা পছন্দ করতেন। তিনি তার থেকে কামড় দিয়ে খেলেন। এরপর বললেন, আমি হব কিয়ামতের দিন মানবকুলের সরদার। তোমাদের কি জানা আছে তা কেন? কিয়ামতের দিন পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকল মানুষ এমন এক ময়দানে সমবেত হবে, যেখানে একজন আহ্বানকারীর আহবান সকলে শুনতে পাবে। এবং সকলেই একসঙ্গে দৃষ্টিগোচর হবে। সূর্য নিকটে এসে যাবে। মানুষ এমনি কষ্ট ক্লেশের সম্মুখিন হবে যা অসহনীয় ও অসহ্যকর হয়ে পড়বে। তখন লোকেরা বলবে, তোমরা কি বিপদের সম্মুখীন হয়েছ তা কি দেখতে পাচ্ছনা? তোমরা কি এমন কাউকে খুঁজে বের করবেনা যিনি তোমাদের রবের কাছে তোমাদের জন্য সুপারিশকারি হবেন?

কেউ কেউ অন্যদের বলবে যে, আদমের কাছে চল। তখন সকলে তার কাছে এসে তাকে বলবে, আপনি আবূল বাশার। আল্লাহ তা’আলা আপনাকে স্বীয় হাত দ্বারা সৃষ্টি করেছেন এবং তার রুহ আপনার মধ্যে ফুঁকে দিয়েছেন, এবং ফেরেশতাদের নির্দেশ দিলে তারা আপনাকে সিজদা করেন। আপনি আপনার রবের কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। আপনি কি দেখছেন না যে, আমরা কিসের মধ্যে আছি? আপনি কি দেখছেন না যে আমরা কি অবস্থায় পৌঁছেছি? তখন আদম (আলাইহিস সালাম) বলবেন, আজ আমার রব এত রাগান্বিত হয়েছেন যার আগে কোনদিন এরূপ রাগান্বিত হননি আর পরেও এরুপ রাগান্বিত হবেন না। তিনি আমাকে একটি বৃক্ষের কাছে যেতে নিষেধ করেছিলেন, কিন্তু আমি অমান্য করেছি। নফসি, নফসি, নফসি (আমি নিজেই সুপারিশ প্রার্থী ), তোমরা অন্যের কাছে যাও। তোমরা নূহ (আলাইহিস সালাম) এর কাছে যাও।

তখন সকলে নূহ (আলাইহিস সালাম) এর কাছে এসে বলবে, হে নূহ (আলাইহিস সালাম)! নিশ্চয়ই আপনি পৃথিবীর মানুষের প্রতি প্রথম রাসুল। আর আল্লাহ তা’আলা আপনাকে পরম কৃতজ্ঞ বান্দা হিসেবে অভিহিত করেছেন। সুতরাং আপনি আপনার রবের কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। আপনি কি দেখছেন না যে আমরা কিসের মধ্যে আছি? তিনি বলবেন, আজ আমার রব এত রাগান্বিত হয়েছেন যার আগে কোনদিন এরূপ রাগান্বিত হন নি আর পরেও এরূপ রাগান্বিত হবেন না। আমার একটি গ্রহণীয় দোয়া ছিল যা আমি আমার কওমের ব্যপারে করে ফেলেছি। (এখন) নফসি, নফসি, নফসি। তোমরা অন্যের কাছে যাও। যাও তোমরা ইব্রাহিম (আলাইহিস সালাম) এর কাছে।

তখন তারা ইব্রাহিম (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কাছে এসে বলবে, হে ইব্রাহিম (আলাইহিস সালাম)! আপনি আল্লাহর নবী এবং পৃথিবীর মানুষের মধ্যে আপনি আল্লাহর বন্ধু। আপনি আপনার রবের কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। আপনি কি দেখছেন না যে আমরা কিসের মধ্যে আছি? তিনি বলবেন, আজ আমার রব এত রাগান্বিত হয়েছেন যার আগে কোনদিন এরূপ রাগান্বিত হন নি আর পরেও এরূপ রাগান্বিত হবেন না। আর আমিতো তিনটি মিথ্যা বলে ফেলেছিলাম। রাবি আবূ হাইয়ান তার বর্ণনায় এগুলোর উল্লেখ করেছেন। (এখন) নফসি, নফসি, নফসি। তোমরা অন্যের কাছে যাও। যাও তোমরা মূসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে।

তারা মূসা’র কাছে এসে বলবে, হে মূসা (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! আপনি আল্লাহর রাসুল। আল্লাহ আপনাকে রিসালাত এর সম্মান দান করেন এবং আপনার সাথে কথা বলে সমগ্র মানব জাতির উপর মর্যাদা দান করেছেন। আপনি আপনার রবের কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। আপনি কি দেখছেন না যে আমরা কিসের মধ্যে আছি? তিনি বলবেন, আজ আমার রব এত রাগান্বিত হয়েছেন যার আগে কোনদিন এরূপ রাগান্বিত হন নি আর পরেও এরূপ রাগান্বিত হবেন না। আর আমিতো এক ব্যাক্তিকে হত্যা করে ফেলেছিলাম। যাকে হত্যা করার জন্য আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়নি। (এখন) নফসি, নফসি, নফসি। তোমরা অন্যের কাছে যাও। যাও তোমরা ঈসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে।

তারা ঈসার কাছে এসে বলবে, হে ঈসা (আলাইহিস সালাম)! আপনি আল্লাহর রাসুল এবং কালেমা যা তিনি মরিয়ম (আলাইহিস সালাম) এর উপর ঢেলে দিয়েছিলেন। আপনি রূহ আপনি দোলনায় থেকে মানুষের সাথে কথা বলেছেন। আজ আপনি আপনার রবের কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। আপনি কি দেখছেন না যে আমরা কিসের মধ্যে আছি? তিনি বলবেন, আজ আমার রব এত রাগান্বিত হয়েছেন যার আগে কোনদিন এরূপ রাগান্বিত হন নি আর পরেও এরুপ রাগান্বিত হবেন না। তিনি নিজের কোন গুনাহের কথা বলবেন না। নফসি, নফসি, নফসি। তোমরা অন্যের কাছে যাও। যাও তোমরা মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কাছে। তারা মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কাছে এসে বলবে, হে মুহাম্মদ! আপনি আল্লাহর রাসুল শেষ নবী। আল্লাহ তা’আলা আপনার আগের, পরের সব গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন। আপনি আমাদের জন্য আপনার রবের কাছে সুপারিশ করুন। আপনি কি দেখছেন না আমরা কিসের মধ্যে আছি?

তখন আমি আরশের নীচে এসে আমার রবের সামনে সিজদা দিয়ে পড়ব। তারপর আল্লাহ তা’আলা তার প্রশংসা এবং গুণগানের এমন সুন্দর পদ্ধতি আমার সামনে খুলে দিবেন যা এর আগে অন্য কারও জন্য খুলেন নি। এরপর বলা হবে, হে মুহাম্মদ! তোমার মাথা উঠাও। তুমি যা চাও তোমাকে দেওয়া হবে। তুমি সুপারিশ কর, তোমার সুপারিশ কবুল করা হবে। এরপর আমি মাথা উঠিয়ে বলব, “হে আমার রব! আমার উম্মত! হে আমার রব! আমার উম্মত! হে আমার রব! আমার উম্মত! তখন বলা হবে, হে মুহাম্মদ! আপনার উম্মতের মধ্যে যাদের কোন হিসাব নিকাশ হবে না, তাদেরকে জান্নাতের দরজাসমূহের ডান পাশের দরজা দিয়ে প্রবেশ করিয়ে দিন। এ দরজা ছাড়া অন্যদের সাথে অন্য দরজায় ও তাদের প্রবেশের অধিকার থাকবে। তারপর তিনি বলবেন, যার হাতে আমার প্রান সে সত্তার শপথ! বেহেশতের এক দরজার দুই পাশের মধ্যবর্তী প্রশস্ততা যেমন মক্কা ও হামিরের মধ্যবর্তী দূরত্ব, অথবা মক্কা ও বসরার মাঝখানের দূরত্ব।
সূত্র: সহিহ বুখারী হাদিস: ৪৭১২

নবীজির সা. কর্মী

নবীজির কর্মীরা

মালেক ইবনে সিনান রা.

أصيب وجه رسول الله صلى الله عليه وسلم يوم أحد ، فاستقبله مالك بن سنان فمص جُرح رسول الله صلى الله عليه وسلم : ” من أحب أن ينظر إلى من خالط دمي دمه فلينظر إلى مالك بن سنان
সূত্র: মু’জামে কাবীর (তবরানী) হাদিস: ৫৪৩০

তালহা রা. পিঠ বিছানো,

عَنِ الزُّبَيْرِ قَالَ كَانَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ أُحُدٍ دِرْعَانِ فَنَهَضَ إِلَى صَخْرَةٍ فَلَمْ يَسْتَطِعْ فَأَقْعَدَ تَحْتَهُ طَلْحَةَ فَصَعِدَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم حَتَّى اسْتَوَى عَلَى الصَّخْرَةِ فَقَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ أَوْجَبَ طَلْحَةُ

যুবাইর ইবনুল আওওয়াম (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- উহুদের যুদ্ধের দিন দুটি লৌহবর্ম পরা ছিলেন। (যুদ্ধে আহত হওয়ার পর) তিনি একটি পাথরের উপর উঠতে চেষ্টা করেন, কিন্তু তিনি (উঠতে) পারলেন না।
সূত্র: জামে তিরমিযি হাদিস: ৩৭৩৮

فبرَك طَلحةُ بنُ عُبيدِ اللهِ تحتَه فصعِد رسولُ اللهِ ﷺ على ظَهرِه حتّى جلَس على الصَّخرةِ قال الزُّبيرُ فسمِعْتُ رسولَ اللهِ ﷺ يقولُ أوجَب طَلحةُ

অর্থাৎ অতপর তালহা রা. নবীজির নীচে নিজেকে বিছিয়ে দিলে তাঁর পিঠে চড়ে পাথরের উপর উঠে অবস্থান করেন। যুবাইর রা. বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমি বলতে শুনেছিঃ তালহা (তাঁর জন্য জান্নাত) অনিবার্য করে নিয়েছে।
সূত্র: সহিহ ইবনে হিব্বান হাদিস: ৬৯৭৯

قال أبو بكرٍ رضِي اللهُ عنه: لَمّا صُرِف النّاسُ يومَ أُحُدٍ عن رسولِ اللهِ ﷺ كُنْتُ أوَّلَ مَن جاء النَّبيَّ ﷺ قال: فجعَلْتُ أنظُرُ إلى رجُلٍ بَيْنَ يدَيْهِ يُقاتِلُ عنه ويحميه فجعَلْتُ أقولُ: كُنْ طَلحةَ فِداكَ أبي وأمِّي مرَّتَيْنِ قال: ثمَّ نظَرْتُ إلى رجُلٍ خَلْفي كأنَّه طائرٌ فلَمْ أنشَبْ أنْ أدرَكني فإذا أبو عُبَيدةَ بنُ الجرّاحِ فدفَعْنا إلى النَّبيِّ ﷺ وإذا طَلحةُ بَيْنَ يدَيْهِ صريعٌ فقال ﷺ: (دونَكم أخوكم فقد أوجَب) قال: وقد رُمِي في جبهتِه ووجنتِه فأهوَيْتُ إلى السَّهمِ الَّذي في جبهتِه لِأنزِعَه فقال لي أبو عُبَيدةَ: نشَدْتُكَ باللهِ يا أبا بكرٍ إلّا ترَكْتَني قال: فترَكْتُه فأخَذ أبو عُبَيدةَ السَّهمَ بفيه فجعَل يُنَضنِضُه ويكرَهُ أنْ يُؤذيَ النَّبيَّ ﷺ ثمَّ استلَّه بفِيهِ ثمَّ أهوَيْتُ إلى السَّهمِ الَّذي في وَجْنَتِه لِأنزِعَه فقال أبو عُبَيدةَ: نشَدْتُك باللهِ يا أبا بكرٍ إلّا ترَكْتَني فأخَذ السَّهمَ بفِيهِ وجعَل يُنَضنِضُه ويكرَهُ أنْ يؤذيَ النَّبيَّ ﷺ ثمَّ استلَّه وكان طَلحةُ أشدَّ نَهكةً مِن رسولِ اللهِ ﷺ وكان نبيُّ اللهِ ﷺ أشَدَّ منه وكان قد أصاب طَلحةَ بِضعةٌ وثلاثونَ بَيْنَ طَعنةٍ وضَربَةٍ ورَمْيَةٍ
ابن حبان (ت ٣٥٤)، صحيح ابن حبان ٦٩٨٠ • أخرجه في صحيحه

হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমি বলতে শুনেছিঃ

مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى شَهِيدٍ يَمْشِي عَلَى وَجْهِ الأَرْضِ فَلْيَنْظُرْ إِلَى طَلْحَةَ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ

অর্থ: যদি কেউ পৃথিবীর বুকে চলাচলরত কোন শহীদ লোককে দেখে খুশী হতে চায়, তবে সে যেন তালহা ইবনু উবাইদুল্লাহর প্রতি দৃষ্টি দেয়।
সূত্র: জামে তিরমিযি হাদিস: ৩৭৩৯

তালহা ইবনে বারা রা.

ولما قدم رَسُول اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى المدينة لقيه طلحة وجعل يلصق برسول اللَّه صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ويقبل قدمه وهو غلام حدث، وقال: يا رَسُول اللَّهِ، مرني بما شئت لا أعصى لك أمرًا، فضحك رَسُول اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وقال: ” اذهب فاقتل أباك “، فخرج موليًا ليفعل،
সূত্র: আসাদুল গায়াহ খ. ৩ পৃ. ৮১

فقال له النبي صلى الله عليه وسلم يا طلحة إنه ليس في ديننا قطيعة الرحم ولكن أحببت أن لا يكون في دينك ريبة فأسلم فحسن إسلامه
সূত্র: তাবরানী হাদিস: ৮১৬৩

أَنَّ طَلْحَةَ بْنَ الْبَرَاءِ مَرِضَ، فَعَادَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمَّا انْصَرَفَ قَالَ لأَهْلِه: ” إِنِّي أَرَى طَلْحَةَ قَدْ حَدَثَ فِيهِ الْمَوْتُ، فَإِذَا مَاتَ فَآذِنُونِي حَتَّى أُصَلِّيَ عَلَيْهِ، وَعَجِّلُوا، فَإِنَّهُ لا يَنْبَغِي لِجَيْفَةِ مُسْلِمٍ أَنْ تُحْبَسَ بَيْنَ ظَهْرَانَيْ أَهْلِهِ
সূত্র: আসাদুল গায়াহ খ. ৩ পৃ. ৮১

فأفاق طلحة في جوف الليل ، فقال : ما عادني رسول الله – صلى الله عليه وسلم – ؟ قالوا : بلى . فأخبروه بما قال ، فقال : لا ترسلوا إليه في هذه الساعة فتلسعه دابة ، أو يصيبه شيء ،
সূত্র: তাবরানী হাদিস: ৮১৬৩

قال طلحةُ ادفِنوني وألحِقوني بربِّي تبارك وتعالى ولا تَدْعوا رسولَ اللهِ ﷺ فإنِّي أخافُ عليه اليهودَ ولا يصابَ في سَبَبي
সূত্র: মাজমাউয যাওয়ায়েদ খ. ৯ পৃ. ৩৬৮

ولكن إذا أصبحتم فأقرئوه مني السلام ، وقولوا له فليستغفر لي ، ثم قبض ، فلما صلى النبي – صلى الله عليه وسلم – الصبح سأل عنه فأخبروه بموته وما قال ،
সূত্র: তাবরানী হাদিস: ৮১৬৩

فجاء حتى وقف على قبرِه، وصف الناسَ معه،
সূত্র: মাজমাউয যাওয়ায়েদ খ. ৩ পৃ ৪০

فرفع رسول الله – صلى الله عليه وسلم – يده
সূত্র: তাবরানী হাদিস: ৮১৬৩

فقال اللهمَّ، القَ طلحةَ تَضحَكُ إليه ويضحَكُ إليك
সূত্র: মাজমাউয যাওয়ায়েদ খ. ৩ পৃ ৪০

Check Also

অল্পবয়সী আয়েশা রা. ও নবীজির সা. বিবাহ পর্যালোচনা।

অল্পবয়সী আয়েশা রা. ও নবীজির সা. বিবাহ পর্যালোচনা। প্রিয় পাঠক, নাস্তিক্যবাদীরা রাসুলুল্লাহকে সা. সবচে চারিত্রিক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.