সমাজে প্রচলিত ওকটি কুসংস্কার হলো, সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণের সময় গর্ভবতী নারী তরিতরকারি, মাছ বা কোনো কিছু কাটলে গর্ভস্থ সন্তান বিকলাঙ্গ হয়। এসব জাহিলী যুগের কুসংস্কার। কুরআন-হাদিসে এমন কোনো কথা বর্ণিত নেই। সুংরাং এগুলোর উপর বিশ্বাস করা মুসলিমদের কাজ নয়।
জাহেলী যুগের মানুষের ধারণা ছিল, পৃথিবীতে বড় কোনো পরিবর্তনের কারণে সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণ হয়ে থাকে; যেমন কারো জন্মগ্রহণ করা বা কারো মৃত্যু হওয়া অথবা কোনো দুর্ভিক্ষের আগমন ইত্যাদি। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের এ অমূলক ধারণা বা বিশ্বাস উঠিয়ে দিয়েছিলেন।
عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّهُ كَانَ يُخْبِرُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ لاَ يَخْسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلاَ لِحَيَاتِهِ وَلَكِنَّهُمَا آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللهِ فَإِذَا رَأَيْتُمُوهَا فَصَلُّوا.
অর্থ: হযরত ইবনর ওমর রা. হতে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন যে, সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে হয় না। তবে তা আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্যে দু’টি নিদর্শন।
সূত্র: সহীহ বুখারী হাদীস ১০৪২ সহীহ মুসলিম: ৯১৪
সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণের সময় করণীয় আমল:
সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণের সময় বেশী বেশী
১. দু’আ করা
২. নামাজ পড়া
৩. দান-সাদাকা করা
৪. যিকির করা।
হাদিস শরীফে এসেছে, নবীজি সা. বলেন,
فَإِذَا رَأَيْتُمْ ذَلِكَ فَادْعُوا اللَّهَ وَكَبِّرُوا وَصَلُّوا وَتَصَدَّقُوا
অর্থ: কাজেই যখন তোমরা তা দেখবে তখন তোমরা আল্লাহর নিকট দু‘আ করবে। তাঁর মহত্ব ঘোষণা করবে এবং সালাত আদায় করবে ও সদাক্বাহ প্রদান করবে।
সূত্র: সহীহ বুখারী, হাদীস: ১০৪৪
অন্য আরেকটি হাদিসে এসেছে, নবীজি সা. বলেছেন,
فَإِذَا رَأَيْتُمْ كُسُوفًا فَاذْكُرُوا اللَّهَ حَتَّى يَنْجَلِيَا
যখন সূর্যগ্রহণ দেখবে তখন তা দূরিভূত হওয়া পর্যন্ত বেশি বেশি আল্লাহর যিকির করবে।
সূত্র: সহীহ মুসলিম হাদীস: ৯০১
মোটকথা, এসময় সূর্যগ্রহণ শেষ হওয়া পর্যন্ত নামায, যিকির-তাসবীহ, তিলাওয়াত ইত্যাদি আমলের মাঝে থাকা; গাফেল না থাকা। কিন্তু “গর্ভবতী নারী বা অন্য কেউ এসময় কিছু খেতে পারবে না বা কাটতে পারবে না” এগুলো অমূলক ধারণা বা কুসংস্কার।