প্রিয় পাঠক, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আগমনের পর পৃথিবীতে প্রচলিত সকল ধর্ম রহিত হয়ে গেছে। সুতরাং বর্তমানে ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্মকে সত্য হিশাবে গ্রহণ করে পালন করার কোনো সুযোগ নেই। অথচ মাইজভাণ্ডারী তথাকথিত পীরের আক্বীদা বা বিশ্বাস হলো তাওহীদে আদইয়্যান তথা সকল ধর্মকে এক মনে করা এবং অভিন্ন মনে না করা। দেখুন তারা লিখেছে,
বেলায়তে মোতলাকা কোনো প্রকার ধর্মীয় বিরোধকে সমর্থন করে না। বরং ইহা রোষ বিবর্জিত এবং গন্তব্য পথের মূল উদ্দেশ্য অনুসারেই বিচার করিয়া থাকে। -বেলায়েতে মোতলাকা পৃ. ৫৯-৬০
আর এজন্য তারা অমুসলিমদের মুসলমার বানানো অপ্রয়োজনীয় বিষয় হিশাবে গণ্য করে। শুধু তা নয়, বরং ‘মাইজভান্ডারীর জীবনী ও কেরামত’ গ্রন্থে ‘হযরতের ধর্মনিরপেক্ষতা’ পর্বে ‘বৌদ্ধ ধননজয়কে স্ব-ধর্মে রাখিয়া দীক্ষা’ শিরোনামে একটি ঘটনলেখা হয়েছে,
একদিন সকালে নাস্তার সময় নিশ্চিন্তাপুর নিবাসী বৌদ্ধ ধননজয় নামক একব্যক্তি আসিয়া হযরতের নিকট ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হইবার জন্য বারবার অনুরোধ করতে লাগিলেন। তিনি হযরতের একজন পরম ভক্ত ছিলেন। হযরত তাহাকে সম্মতি না দেওয়ায় তাহার মনস্কাম পূনরার্থে আমাকে তাহার জন্য হযরতের নিকট সুপারিশ করিতে অনুরোধ জানান। আমি হযরতের নিকট তাহার আর্জি ও বাসনা পেশ করি। ইহাতে হযরত ধননজয়কে তালাশ করিলেন। ধননজয়, “হযরত হুজুর দাস হাজির আছি” বলিয়া হযরতের সামনে করজোড় বসিয়া পড়িলেন। তখন হযরত তাহাকে বলিলেন, মিঞা! তুমি তোমার ধর্মে থাক; আমি তোমাকে মুসলমান করিলাম। ইহার পরও তিনি বসিয়া রহিলেন। হযরতের খাদেম মৌলভী আহমদ ছফা কাঞ্চন নগরী সাহেব তাহাকে পিছন হইতে ইসারা করিয়া ডাকিয়া নিলেন এবং বুঝাইয়া দিলেন যে, তাহাকে হাকিকত্বে মুসলমান করা হইয়াছে। -মাইজভান্ডারীর জীবনী ও কেরামত : পৃ. ১৩৬-১৩৭
শুধু তাই নয়, বরং এ পৃষ্ঠা পরেই জনৈক হিন্দু মুন্সেফ অভয়চরণকে স্বধর্মে রেখে দীক্ষা ও উপদেশ দানের কথা বর্ণিত হয়েছে। বুঝা গেলো, মাইজভাণ্ডারীদের কাছে ইসলাম গ্রহণ করা জরুরী নয়, বরং স্বধর্মে অটল থাকলেও চলবে। কারণ মাইজভাণ্ডারীদের কাছে সকল ধর্ম এক ও অভিন্ন। এক কথায় বলতে গেলে মাইজভাণ্ডারী দরবারের বিশ্বাস হলো কুফরী মতবাদ ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাস। যা তারা উক্ত বইয়ে শিরোনামই দিয়েছে ‘হযরতের ধর্মনিরপেক্ষতা’। আর তারা এই ধর্ম নিরপেক্ষতার আর এক নাম দিয়েছে ‘তাওহীদে আদইয়ান’ তথা সর্ব ধর্মের ঐক্য। তারা লিখেছে,
ধর্মসাম্য বা তৌহিদে আদয়্যানের নিকট সর্বধর্মের নৈতিক লক্ষ্যবস্তু এক এবং কোন ধর্ম ইহার নিকট হেয় নহে। -বেলায়েতে মোতলাকা পৃ. ৫৫-৬২
তারপর এই কথিত তাওহীদে আদইয়ান বা ধর্ম ঐক্যের প্রমাণস্বরূপ পবিত্র কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াত পেশ করতে গিয়ে তারা লিখেছে,
এই বেলায়েতে মোতলাকা যে তৌহিদে আদয়্যানের বা ধর্ম ঐক্যের সমর্থক তাহার প্রমাণস্বরূপ পবিত্র কুরআন পাকের আয়াতসমূহ নিন্মে উদ্ধৃত করা হইল। যারা মুমিন, যারা ইয়াহুদি এবং খ্রিষ্টান ও সাবিঈন (এদের মধ্যে) যারাই আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস রাখে ও সৎকাজ করে তাদের জন্য তাদের প্রতিপালকের নিকট পুরস্কার রয়েছে। তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না। [সূরা বাকারা, আয়াত : ৬২]। -বেলায়েতে মোতলাকা পৃ. ৫৫-৬২
উপরিউক্ত বক্তব্যসমূহ থেকে বুঝতে পারলাম, মাইজভাণ্ডারীদের বিশ্বাস হলো ‘তাওহীদে আদইয়ান’ তথা সকল ধর্মকে এক ও অভিন্ন মনে করা। যাকে তারা ‘সনাতন ইসলাম’ বলে বিশ্বাস করে থাকে। অর্থাৎ সব ধর্ম ইসলামের মতোই সত্য। যেহেতু মাইজভাণ্ডারীদের নিকট সর্বধর্ম মানা যাবে, সেহেতু ইসলাম ছাড়াও সকল ধর্ম মানার প্রতি তাকিদ দিয়ে লিখেছে,
প্রত্যেক ধর্ম বা সম্প্রদায় নিজ নিজ ধর্মাচরণে নিষ্ঠাবান থাকা দরকার। -বেলায়েতে মোতলাকা : পৃ. ১৩৫
এক কথায় মাইজভাণ্ডারী বিশ্বাস হলো, পৃথিবীর সকল ধর্ম সত্য এবং সর্বধর্ম পালন করা যাবে।
ইসলাম কী বলে?
আখেরী নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক আনীত শেষ ধর্মের নাম ইসলাম। তিনি যেমন শেষ নবী, তাঁর আনীত ধর্মও শেষ ধর্ম। এই ইসলাম ছাড়া বর্তমানে আর কোনো ধর্ম মানার সুযোগ নেই। আর এই ইসলামকেই মহান রব নিজের মনোনীত ধর্ম হিশাবে আখ্যায়িত করে পবিত্র কুরআনে ঘোষণা দিয়েছেন,
الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِينًا
আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্নাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম। -সুরা মায়িদা : ৩
উক্ত আয়াত থেকে প্রমাণিত হলো, আল্লাহপাকের কাছে ইসলামই একমাত্র মনোনীত দ্বীন। সেজন্য ইসলাম ধর্ম ব্যাতিত অন্য ধর্ম পালন করলে কি হবে সেটাও মহান আল্লাহ খুব স্পষ্ট করে জানিয়ে বলেন,
وَمَنْ يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآَخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ
কেউ ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দ্বীন গ্রহণ করতে চাইলে তা কখনো কবুল করা হবে না, এবং সে হবে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত। -সুরা আলে ইমরান : ৮৫
যেহেতু একমাত্র ইসলামই পালন করা ফরজ সেজন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে মহান আল্লাহ অন্য সকল দ্বীনের উপর ইসলামকে বিজয়ী করার জন্য দায়িত্ব ঘোষণা করে বলেন,
هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَى وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُشْرِكُونَ
তিনিই প্রেরণ করেছেন আপন রসূলকে হেদায়েত ও সত্য ধর্ম সহকারে, যেন এ দ্বীনকে অপরাপর ধর্মের উপর জয়যুক্ত করেন, যদিও মুশরিকরা তা অপ্রীতিকর মনে করে। -সুরা তাওবা : ৩৩
এতো এতো সুস্পষ্ট আয়াত থাকতেও কিভাবে এমন দাবি করা যায় যে, ইসলাম গ্রহণ করা জরুরী নয়? এটা কী সুস্পষ্ট কুফরী মতবাদ নয়? বরং অন্যান্য ধর্ম তো দূরের কথা ইতিপূর্বের সকল ধর্মের অনুসারীদেরকে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আনীত ধর্ম পালন করার জন্য মহান রব ঘোষণা দিয়ে বলেন,
یٰۤاَهْلَ الْكِتٰبِ قَدْ جَآءَكُمْ رَسُوْلُنَا یُبَیِّنُ لَكُمْ كَثِیْرًا مِّمَّا كُنْتُمْ تُخْفُوْنَ مِنَ الْكِتٰبِ وَ یَعْفُوْا عَنْ كَثِیْرٍ قَدْ جَآءَكُمْ مِّنَ اللهِ نُوْرٌ وَّ كِتٰبٌ مُّبِیْنٌ یَّهْدِیْ بِهِ اللهُ مَنِ اتَّبَعَ رِضْوَانَهٗ سُبُلَ السَّلٰمِ وَ یُخْرِجُهُمْ مِّنَ الظُّلُمٰتِ اِلَی النُّوْرِ بِاِذْنِهٖ وَ یَهْدِیْهِمْ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسْتَقِیْمٍ
হে আহলে কিতবাগণ! তোমাদের কাছে আল্লাহর নিকট থেকে এসেছে এক জ্যোতি ও স্পষ্ট কিতাব। যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি পেতে চায় এ দ্বারা তিনি তাদের শান্তির পথে পরিচালিত করেন এবং অন্ধকারসমূহ থেকে আলোর দিকে বের করে আনেন নিজ ইচ্ছায়। আর তাদের পথ দেখান সরল পথ। -সূরা মায়েদা : ১৫-১৬
উক্ত আয়াতে একমাত্র রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আনীত বিধান পালন করাকেই হিদায়াতের রাস্তা বলা হয়েছে। অথচ মাইজভাণ্ডারীরা সকল ধর্মকে ইসলামের সাথে মিশ্রিত করে এক ফেলেছে। অথচ মহান রব বলেন,
وَلَا تَلۡبِسُوا۟ ٱلۡحَقَّ بِٱلۡبَـٰطِلِ
তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করে দিও না। -সুরা বাকার : ৪২
উল্লেখিত আয়াতের ব্যাপারে বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত কাতাদাহ রহি. বলেন-
وَلا تَلْبِسُوا الْحَقَّ بِالْبَاطِل وَلَا تَلْبِسُوا الْيَهُودِيَّةَ وَالنَّصْرَانِيَّةَ بِالْإِسْلَامِ إِنَّ دِينَ اللَّهِ الْإِسْلَامُ وَالْيَهُودِيَّةَ وَالنَّصْرَانِيَّةَ بِدْعَةٌ لَيْسَتْ مِنَ اللَّهِ
ইয়াহুদী,খ্রীষ্টানদের সাথে ইসলামকে মিশ্রিত করো না। নিশ্চয় আল্লাহর ধর্ম হলো ইসলাম। (কারণ বর্তমানের) ইয়াহুদী, খ্রীষ্টান ধর্ম আল্লাহর দ্বীন নয়, বরং মানবরচিত নব্য আবিস্কৃত ধর্ম। -তাফসীরে ইবসে কাসীর : খ. ১ পৃ. ৩৭৯
এর সুস্পষ্ট প্রমাণ নিন্মোক্ত আয়াত। মহান রব তাঁর রাসুল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কেই কত শক্ত ভাষায় জানিয়ে দিলেন,
وَلَئِنْ أَتَيْتَ الَّذِينَ أُوْتُواْ الْكِتَابَ بِكُلِّ آيَةٍ مَّا تَبِعُواْ قِبْلَتَكَ وَمَا أَنتَ بِتَابِعٍ قِبْلَتَهُمْ وَمَا بَعْضُهُم بِتَابِعٍ قِبْلَةَ بَعْضٍ وَلَئِنِ اتَّبَعْتَ أَهْوَاءهُم مِّن بَعْدِ مَا جَاءكَ مِنَ الْعِلْمِ إِنَّكَ إِذَاً لَّمِنَ الظَّالِمِينَ
যদি আপনি আহলে কিতাবদের কাছে সমুদয় নিদর্শন উপস্থাপন করেন, তবুও তারা আপনার কেবলা মেনে নেবে না এবং আপনিও তাদের কেবলা মানেন না। তারাও একে অন্যের কেবলা মানে না। যদি আপনি তাদের বাসনার অনুসরণ করেন, সে জ্ঞানলাভের পর, যা আপনার কাছে পৌঁছেছে, তবে নিশ্চয় আপনি অবিচারকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবেন। -সুরা বাকারা : ১৪৫
প্রিয় পাঠক, একটু ভেবে দেখুন, মাত্র একটা ব্যাপার কিবলা, সেটাই ইহুদী-খ্রিস্টানদের মনমত গ্রহণ করাকেও আল্লাহ সহ্য করেননি, তাঁর প্রিয় বান্দাকেও শক্ত ভাষায় নিষেধ করেছেন, সেখানে তাদের পুরো ধর্মকে কিভাবে মানা যায়? সুতরাং বুঝা গেলো, ইসলাম ব্যতিত অন্য কোনো ধর্ম পালন করা যাবে না। এজন্য মহান আল্লাহ পৃথিবীর সকল ঈমানদারকে লক্ষ্য করে নির্দেশ জারি করে বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ ادْخُلُواْ فِي السِّلْمِ كَآفَّةً وَلاَ تَتَّبِعُواْ خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ
হে ঈমানদার গন! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ কর না। নিশ্চিত রূপে সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। -সুরা বাকারা : ২০৮
উক্ত আয়াতে মহান রব শুধু মুসলমান হতে বলেননি, বরং ইসলামে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। শুধু কী তাই? বরং ইসলাম ধর্ম ব্যাতিত অন্য ধর্ম পালন করলে কি হবে সেটা মহান আল্লাহ খুব স্পষ্ট করে জানিয়ে ধমক সুরে আল্লাহ তাআলা বলেন,
أَفَغَيْرَ دِينِ اللّهِ يَبْغُونَ وَلَهُ أَسْلَمَ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ طَوْعًا وَكَرْهًا وَإِلَيْهِ يُرْجَعُونَ
তারা কি আল্লাহর দ্বীনের পরিবর্তে অন্য দ্বীন তালাশ করছে? আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে স্বেচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক, তাঁরই অনুগত হবে এবং তাঁর দিকেই ফিরে যাবে। -সুরা আলে ইমরান : ৮৩
উক্ত আয়াতে সুস্পষ্টভাবে ইসলাম না মানার পরিনতি সম্পর্কে বলা হয়েছে, তারা জাহান্নামী। শুধু তাই নয়, বরং হযরত মুহাম্মাদ সা. কেও অনুসরণ করতে হবে, শুধু বিশ্বাস করাই যথেষ্ট নয়। হযরত মুহাম্মাদ সাঃ কেও মানার নির্দেশ প্রদান করে বিশ্ববাসীকে আল্লাহ তাআলা বলেন,
قُلْ أَطِيعُوا اللهَ وَأَطِيْعُوْا الرَّسُوْلَ فَإِنْ تَوَلَّوْا فَإِنَّمَا عَلَيْهِ مَا حُمِّلَ وَعَلَيْكُمْ مَا حُمِّلْتُمْ وَإِنْ تُطِيعُوْهُ تَهْتَدُوْا وَمَا عَلَى الرَّسُولِ إِلَّا الْبَلَاغُ الْمُبِيْنُ
বলো, তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর ও রাসূলের আনুগত্য কর। অতঃপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তাহ’লে তার দায়িত্বের জন্য তিনি দায়ী এবং তোমাদের দায়িত্বের জন্য তোমরা দায়ী। আর যদি তোমরা তার আনুগত্য কর তাহ’লে তোমরা সুপথ প্রাপ্ত হবে। বস্ত্ততঃ রাসূলের উপর দায়িত্ব হ’ল কেবল সুস্পষ্টভাবে (আল্লাহর বাণী) পৌঁছে দেওয়া। -সুরা নূর : ৫৪
উক্ত আয়াতে মহান রব রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আনীত সকল বিধিনিষেধ মানতে আদেশ করেছেন। অতএব ইসলাম ধর্ম কবুল করা ও মান্য করা ও নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে মান্য করা সকল মুমিনের জন্য ফরজ। পাশাপাশি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকেও সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, হযরত আব্দু্ল্লাহ বিন সাবিত রা. বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
والذي نفسُ محمدٍ بيدِه لو أصبح فيكم موسى ثم اتبعتموه وتركتموني لضلَلتم
সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! যদি মুসাও আ. জীবিত হয়ে এসে যান, আর তোমরা আমাকে ছেড়ে তাঁর অনুসারী হয়ে যাও এবং আমাকে বর্জন কর,তাহলে অবশ্যই তোমরা ভ্রষ্ট হয়ে যাবে। -মাজমাউয যাওয়ায়েদ, খ. ১ পৃ. ১৭৮
সুতরাং বুঝা গেলো, বর্তমান যুগে ইসলাম ধর্ম বাদ দিয়ে অন্য কোনো ধর্ম পালন করা জায়েয নেই। যারা এটাকে জায়েয মনে করে, তাদেরকেও মুসলিম মনে করার কোনো সুযোগ নেই।