প্রত্যেকটি জিনিষের মূল হলো তার আত্মা। এই আত্মা হারিয়ে গেলে সেটা মূল্যহীন হয়ে যায়। যেমন মানুষের আত্মা চলে গেলে সে লাশ হয়ে যায়। তখন তা দিয়ে আর উপকৃত হওয়া সম্ভব হয় না।
হেযবুত তওহীদ কী বলে?
দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, পবিত্র কুরআনের ব্যাপারে জঘন্য কথার আবিস্কারক এই হেযবুত তওহীদ। তাদের দাবি হলো, ‘কুরআনের আত্মা হারিয়ে গেছে’। তারা লিখেছে,
কোর’আনের শিক্ষা নেই কোথাও। কোর’আনের আত্মা আজ হারিয়ে গেছে, তা কেবল অক্ষরই রয়ে গেছে। -সূত্রাপুরে এমামের ভাষণ, পৃ. ১৬
ভারত অঞ্চলে আল্লাহ জীবন-বিধান দিয়ে যে সকল নবী রসুল (আঃ) পাঠিয়েছেন, আমরা বিশ্বাস কোরি সেগুলি আল্লাহর পক্ষ থেকেই এসেছে, কিন্তু কাল পরিক্রমায় সেগুলোর ব্যবহার ও বইগুলি বিকৃত কোরে ফেলা হোয়েছে। একই কাজ অন্যান্য ধর্মগ্রন্থের বেলাতেও করা হোয়েছে। এজন্য সকল প্রাচীন, আঞ্চলিক দীনগুলিকে অনুপযুক্ত ঘোষণা দিয়ে আল্লাহ ১৪০০ বছর আগে শেষ দীন এসলামের মহাগ্রন্থ আল কোর’আন নাযেল কোরলেন এবং এটা যেন কেউ বিকৃত না কোরতে পারে তার দায়িত্ব স্রষ্টা নিজেই নিলেন (সূরা/ হেজর ৯)। সেই মহাগ্রন্থ আজও অবিকৃত অবস্থায় আমাদের মধ্যে রোয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক সত্য হোল, সেই কোর’আনের প্রয়োগ বা ব্যবহারিক দিকগুলি আগের ধর্মগুলির মতই বিকৃত কোরে ফেলা হোয়েছে। -এ জাতির পায়ে লুটিয়ে পড়বে বিশ্ব : পৃ. ৫৬
অর্থাৎ তারা কুরআনের চলমান মৌলিক শিক্ষা থেকে জাতিকে দূরে সরাতেই এমনটা লিখেছে। এর দ্বারা তারা বুঝাতে চায়, বর্তমানে কুরআনের যে শিক্ষাটা আছে, সেটা আসল শিক্ষা নয়, বরং এর আত্মা নষ্ট হয়ে গেছে এবং এর ব্যবহারিক দিক ও প্রয়োগ ব্যবস্থা বিকৃত হয়ে গেছে।
ইসলাম কী বলে?
পবিত্র কুরআন এমন একটা জিবন্ত গ্রন্থ যার চুল পরিমান ক্ষতি করার সাধ্য পৃথিবীর কারও নেই। কারণ এ পবিত্র কুরআনের ব্যাপারে খোদ মহান আল্লাহ বলেন,
إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُونَ
বস্তুত এ উপদেশ বাণী (কুরআন) আমিই অবতীর্ণ করেছি এবং আমিই এর রক্ষাকর্তা। -সুরা হিজর : ৯
উপরন্তু মহান রব আরও বলেন,
وَإِنَّهُ لَكِتَابٌ عَزِيزٌ لَا يَأْتِيهِ الْبَاطِلُ مِن بَيْنِ يَدَيْهِ وَلَا مِنْ خَلْفِهِ تَنزِيلٌ مِّنْ حَكِيمٍ حَمِيدٍ
অথচ এটি অতি মর্যাদাপূর্ণ কিতাব। কোনো মিথ্যা এর পর্যন্ত পৌঁছতে পারে না, না এর সম্মুখ দিক থেকে এবং না এর পেছন থেকে। এটা প্রজ্ঞাময়, প্রশংসার্হ (আল্লাহ)-এর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ। -সুরা হা-মীম : ৪১-৪২
মহান রব আরও বড় ঘোষণা করে বলেন,
يُرِيدُونَ لِيُطْفِؤُوا نُورَ اللَّهِ بِأَفْوَاهِهِمْ وَاللَّهُ مُتِمُّ نُورِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ
তারা তাদের মুখ দিয়ে আল্লাহর নূর নিভিয়ে দিতে চায়, কিন্তু আল্লাহ তার নূরকে অবশ্যই পরিপূর্ণ করবেন, তা কাফেরদের জন্য যতই অপ্রীতিকর হোক। -সুরা সফ : ৮
উপরিউক্ত তিনটি আয়াত থেকে এ কথা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, পবিত্র কুরআনের সংরক্ষণ বা হেফাযতের মূল দায়িত্ব মহান আল্লাহ-র কুদরতি হাতে। হাজারও চেষ্টা করেও এ কুরআনের বিন্দু পরিমান ক্ষতি করা সম্ভব না। এটা শুধু আমাদের কথা নয়, খোদ হেযবুত তওহীদের বইয়েও এ কথার প্রমাণ রয়েছে। তারা লিখেছেন,
ভারত অঞ্চলে আল্লাহ জীবন-বিধান দিয়ে যে সকল নবী রসুল (আঃ) পাঠিয়েছেন, আমরা বিশ্বাস কোরি সেগুলি আল্লাহর পক্ষ থেকেই এসেছে, কিন্তু কাল পরিক্রমায় সেগুলোর ব্যবহার ও বইগুলি বিকৃত কোরে ফেলা হোয়েছে। একই কাজ অন্যান্য ধর্মগ্রন্থের বেলাতেও করা হোয়েছে। এজন্য সকল প্রাচীন, আঞ্চলিক দীনগুলিকে অনুপযুক্ত ঘোষণা দিয়ে আল্লাহ ১৪০০ বছর আগে শেষ দীন এসলামের মহাগ্রন্থ আল কোর’আন নাযেল কোরলেন এবং এটা যেন কেউ বিকৃত না কোরতে পারে তার দায়িত্ব স্রষ্টা নিজেই নিলেন (সূরা/ হেজর ৯)। সেই মহাগ্রন্থ আজও অবিকৃত অবস্থায় আমাদের মধ্যে রোয়েছে। -এ জাতির পায়ে লুটিয়ে পড়বে বিশ্ব : পৃ. ৫৬
বর্তমানে আমরা এসলাম নামক যে ধর্মটি দেখছি সেটি কিন্তু আল্লাহর দেওয়া প্রকৃত এসলাম নয়। অতীতের সবগুলি ধর্মই যেমন কাল পরিক্রমায় বিকৃত হোয়ে গেছে, এসলামও ১৩০০ বছরে বিকৃত হোতে হোতে একেবারে বিপরীতমুখী হোয়ে গেছে, শুধুমাত্র পবিত্র কোর’আনকে বিকৃত কোরতে পারেনি। -এ জাতির পায়ে লুটিয়ে পড়বে বিশ্ব : পৃ. ৫৩
সুতরাং প্রমাণ হলো, পবিত্র কুরআন, যাঁর দায়িত্ব খোদ মহান রবের কাছে। তাঁর বিকৃতি কেউ ঘটাতে পারেনি, পারবে না। অথচ হেযবুত তওহীদ পবিত্র কুরআনের মূল আত্মা নষ্ট হয়ে গেছে দাবি করে, এটাই প্রমাণ করলো যে, মহান আল্লাহ তার দায়িত্বে ব্যর্থ হয়েছেন? নাউযুবিল্লাহ।