জান্নাতে যাওয়ার একমাত্র পথ হলো, পরিপূর্ণভাবে ইসলাম ধর্ম পালন করা। যারা ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম পালন করবে, তারা কাফের এবং জাহান্নামী। অমুসলিমরা জান্নাতে যাওয়া তো দূরের কথা জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না। এটা কুরআন ও হাদীসে সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু হেযবুত তওহীদ বলছে ভিন্ন কথা। চলুন দেখে নেয়া যাক তাদের দাবিগুলো।
হেযবুত তওহীদের দাবি:
হেযবুত তওহীদ তাদের বইগুলোতে লিখেছে,
“ধর্মব্যবসায়ীরা ধর্মকেই বিভেদের প্রাচীর বানিয়ে রেখেছে। তারা অন্য ধর্মগুলোকে মিথ্যা এবং সেই ধর্মের অনুসারীদেরকে জাহান্নামী, কাফের বলে গালিগালাজ করে। অথচ সকল ধর্মই আল্লাহর প্রেরিত ধর্মপ্রবর্তকগণও তাই।”
সূত্র: মহাসত্যের আহ্বান পৃষ্ঠা-৮৩
সূত্রাপুরে এক ভাষণে সমস্ত ধর্মের লোকদের দিকে উদ্দেশ্য করে হেযবুত তওহীদের বর্তমান এমাম হুসাইন সেলিম বলেন,
”হে ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা! হে হিন্দু ধর্মের অনুসারীরা! হে খৃষ্টান ধর্মের অনুসারীরা! হে বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীরা! আজ সারা দুনিয়াময় মানবতা বিপর্যস্ত। এই মানুষকে রক্ষার জন্য আপনারা এগিয়ে আসুন।তাহলে আপনারা হবেন ধার্মিক, আপনার হবেন মো’মেন। আপনারা হবেন আল্লাহর প্রিয় বান্দা, আপনাদের জন্য জান্নাত -স্বর্গ রয়েছে।
সূত্র: সূত্রাপুরে এমামের ভাষণ পৃ:২১
তারা আরও লিখেছেন,
“কাজেই এই আদর্শের লড়াইয়ে বা আদর্শের সৈনিকদের কেউ এগিয়ে আসতে হবে আমরা বলছি না যে আপনাকে বিশেষ কোন ধর্মে বিশ্বাসী হতে হবে সেটা আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার।মানুষকে বাঁচানোর জন্য জঙ্গিবাদ ধর্মব্যবসা স্বার্থের রাজনীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করা দরকার মোটিভেশন করা দরকার সেটা ত্যাগী মানুষদেরকে দিয়েই। আমাদের ইহকালের সমস্যা তাই সমাধানটাও ইহকালের হিসেবেই করতে চাই।পবিত্র কোর’আনে আছে যার ইহকাল ভালো তার পরকালও ভালো।”
সূত্র: আদর্শিক লড়াই পৃষ্ঠা-১৪
এমন কি হেযবুত তওহীদের মুখপাত্র ’দৈনিক বজ্রশক্তি’ পত্রিকায় “মানবসমাজে ধর্ম-অধর্ম ও শান্তি-অশান্তির চিরন্তন দ্বন্দ্ব” শিরোনামে একটি একটি লম্বা লেখার শেষ দিকে গিয়ে তারা লিখেছেন,
“মানবসমাজে একটি ধারণা ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে যে, ‘পৃথিবীতে এতগুলো ধর্মের মধ্যে মাত্র একটি ধর্ম সত্য হতে পারে (!) অন্য সকল ধর্ম মিথ্যা এবং ঐ সত্য ধর্মই কেবল মানুষকে মুক্তি দিতে সক্ষম।’ এ ধারণা প্রচলিত থাকায় সকল ধর্মের অনুসারীরাই দাবি করে যে, কেবল তাদের ধর্মই সত্যধর্ম। এটা ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম মেনে চলে স্বর্গে যাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো- স্রষ্টা প্রদত্ত সকল ধর্মই সত্যধর্ম। এগুলোর মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। এর যে কোনোটি মানুষ মেনে চলতে পারে। তবে মানতে হবে পূর্ণাঙ্গভাবে।”
সূত্র: দৈনিক বজ্রশক্তি ২ ফেব্রুয়ারী ২০১৬ ঈসায়ী।
উক্ত কথাগুলো থেকে স্পষ্ট হলো যে,
১. অমুসলিমদের কাফের ও জাহান্নামী বলা যাবে না।
২. যেকোনো ধর্ম পালন করেও জান্নাতে যাওয়া যাবে।
ইসলাম কি বলে?
ক. অমুসলিমরা কি কাফের?
১. আল্লাহ তা’য়ালার প্রেরিত নবী-রাসুলগণ তথা হযরত আদম আ. থেকে মুহাম্মাদ সা. পর্যন্ত সকল নবীর উপর বিশ্বাস আনা ঈমানের অন্তুর্ভূক্ত। যদি তাঁদের ভেতর কাউকে অস্বীকার করা হয়, তাহলে সে নির্ঘাৎ কাফের। মহান আল্লাহ বলেন,
إِنَّ الَّذِينَ يَكْفُرُونَ بِاللَّهِ وَرُسُلِهِ وَيُرِيدُونَ أَنْ يُفَرِّقُوا بَيْنَ اللَّهِ وَرُسُلِهِ وَيَقُولُونَ نُؤْمِنُ بِبَعْضٍ وَنَكْفُرُ بِبَعْضٍ وَيُرِيدُونَ أَنْ يَتَّخِذُوا بَيْنَ ذَلِكَ سَبِيلًا أُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ حَقًّا وَأَعْتَدْنَا لِلْكَافِرِينَ عَذَابًا مُهِينًا
অর্থ: যারা আল্লাহ ও তার রসূলদের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছে এবং তদুপরি আল্লাহ ও রসূলের প্রতি বিশ্বাসে তারতম্য করতে চায়, আর বলে যে, আমরা কতককে বিশ্বাস করি, আর কতককে প্রত্যাখ্যান করি এবং এরই মধ্যবর্তী কোন পথ অবলম্বন করতে চায়, প্রকৃতপক্ষে এরাই সত্যিকারের কাফের। আর যারা সত্য প্রত্যাখ্যানকারী তাদের জন্য তৈরী করে রেখেছি অপমানজনক আযাব।
সুরাঃ নিসা আয়াত: ১৫০-১৫২
সুতরাং বর্তমান সময়ে হিন্দু,বৈদ্ধ, ইহুদী,খ্রীস্টানসহ সকল অমুসলিমগণ মুহাম্মাদ সা. এর অনুসরণ করে না, এমনকি তাঁকে নবী বলে স্বীকারই করে না। এ আয়াত অনুসারে তারা সবাই কাফের।
২. যারা আল্লাহ ও রাসুলুল্লাহ সা. কে মানবে না এবং বিমুখতা অবলম্বন করবে, তাদের ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন,
قُلْ أَطِيعُواْ اللّهَ وَالرَّسُولَ فإِن تَوَلَّوْاْ فَإِنَّ اللّهَ لاَ يُحِبُّ الْكَافِرِينَ
অর্থ: বলুন, আল্লাহ ও রসূলের (মুহাম্মাদের স:) আনুগত্য প্রকাশ কর। বস্তুতঃ যদি তারা বিমুখতা অবলম্বন করে, তাহলে আল্লাহ কাফেরদিগকে ভালবাসেন না।
সুরা নিসা আয়াত-৩২
উক্ত আয়াতে যারা রসূল (মুহাম্মাদের স:) এর আনুগত্য প্রকাশ না করে বিমুখতা অবলম্বন করবে, তাদেরকে কাফের বলা হয়েছে।
৩. মহান আল্লাহ আরও বলেছেন,
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَى عَلَى اللَّهِ الْكَذِبَ وَهُوَ يُدْعَى إِلَى الْإِسْلَامِ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ يُرِيدُونَ لِيُطْفِؤُوا نُورَ اللَّهِ بِأَفْوَاهِهِمْ وَاللَّهُ مُتِمُّ نُورِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ
অর্থাৎ যে ব্যক্তি ইসলামের দিকে আহুত হয়েও আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা বলে; তার চাইতে অধিক যালেম আর কে? আল্লাহ যালেম সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না। তারা মুখের ফুঁৎকারে আল্লাহর আলো (ইসলাম) নিভিয়ে দিতে চায়। আল্লাহ তাঁর আলোকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবেন যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে।
সুরাল আছ-ছফ আয়াত: ৭-৮
উক্ত আয়াতগুলোতে ইসলাম বিদ্বেষীদের স্পষ্টরুপে কাফের বলা হয়েছে। কিন্তু হেযবুত তওহীদের বক্তব্য হলো, অমুসলিমদের যারা কাফের বলে, তারা ধর্মব্যবসায়ী।
অমুসলিমদের কাফের বলা যাবে কি?
অমুসলিমদের কাফের বলা কোনো দোষের কিছু নয়। কারণ মহান আল্লাহ তা’আলা তাঁর রাসুল মুহাম্মাদ সা. কে নিজে শিখিয়েছেন, তিনি যেন কাফেরদের কাফের বলে সম্বোধন করেন। মহান রব বলেন,
قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ لَا أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ
অর্থ: বলুন, হে কাফেরগণ, আমি এবাদত করিনা, তোমরা যার এবাদত কর।
সুরাঃ কাফিরুন আয়াত: ১-২
সুতরাং কাফেরদের কাফের বলে যদি ধর্মব্যবসায়ীদের কাজ হয়, তাহলে নাউযুবিল্লাহ আল্লাহও কি ধর্মব্যবসায়ী? কি চরম মূর্খতা!
খ. অন্য ধর্মাবলম্বীরা কি জান্নাতে যেতে পারবে?
১. ইসলামী শরীয়ত চালু হওয়ার পর যেসকল লোক পৃথিবীতে এসেছে, এদের ভেতর শুধুমাত্র মুহাম্মাদ সা. এর অনুসারীরা কিয়ামতে ক্ষমা পাবেনন।। মহান আল্লাহ তা’য়ালা খুব স্পষ্ট করে বলেছেন,
الَّذِينَ كَفَرُوا وَصَدُّوا عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ أَضَلَّ أَعْمَالَهُمْ وَالَّذِينَ آَمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَآَمَنُوا بِمَا نُزِّلَ عَلَى مُحَمَّدٍ وَهُوَ الْحَقُّ مِنْ رَبِّهِمْ كَفَّرَ عَنْهُمْ سَيِّئَاتِهِمْ وَأَصْلَحَ بَالَهُمْ ذَلِكَ بِأَنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا اتَّبَعُوا الْبَاطِلَ وَأَنَّ الَّذِينَ آَمَنُوا اتَّبَعُوا الْحَقَّ مِنْ رَبِّهِمْ كَذَلِكَ يَضْرِبُ اللَّهُ لِلنَّاسِ أَمْثَالَهُمْ
অর্থ: আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে, সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে মুহাম্মদের প্রতি অবতীর্ণ সত্যে বিশ্বাস করে, আল্লাহ তাদের মন্দ কর্মসমূহ মার্জনা করেন এবং তাদের অবস্থা ভাল করে দেন। যারা কুফরী করে এবং আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করে, আল্লাহ তাদের সকল কর্ম ব্যর্থ করে দেন। এটা এ কারণে যে, যারা কাফের, তারা বাতিলের অনুসরণ করে এবং যারা বিশ্বাসী, তারা তাদের পালনকর্তার নিকট থেকে আগত সত্যের অনুসরণ করে। এমনিভাবে আল্লাহ মানুষের জন্যে তাদের দৃষ্টান্তসমূহ বর্ণনা করেন
সুরা মুহাম্মাদ আয়াত-১-৩
উক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ তা’য়ালা যাঁরা মুহাম্মাদ সা. এর উপর অবতীর্ণ বিধানের উপর ঈমান এনে সেগুলো পালন করবে, তাঁদের জন্য হাশরের ময়দানে ক্ষমার সু-সংবাদ প্রদান করেছেন, পক্ষান্তরে যারা অন্য কিছু মানবে তাদের আমল বিনষ্টের কথা বলেছেন, অর্থাৎ তারা জাহান্নামী।
২. আল্লাহ তা’য়ালা আরও বলেন,
وَمَن يُشَاقِقِ الرَّسُولَ مِن بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدَى وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ الْمُؤْمِنِينَ نُوَلِّهِ مَا تَوَلَّى وَنُصْلِهِ جَهَنَّمَ وَسَاءتْ مَصِيرًا
অর্থ: যে কেউ রসূলের (মুহাম্মাদ সা.) বিরুদ্ধাচারণ করে, তার কাছে সরল পথ প্রকাশিত হওয়ার পর এবং সব মুসলমানের অনুসৃত পথের বিরুদ্ধে চলে, আমি তাকে ঐ দিকেই ফেরাব যে দিক সে অবলম্বন করেছে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব। আর তা নিকৃষ্টতর গন্তব্যস্থান
সুরা নিসা আয়াত-১১৫
উক্ত আয়াতে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, যাঁরা রাসুল মুহাম্মাদ সা. এর বিরুদ্ধাচার করবে এবং মুহাম্মাদ সা. এর অনুসারী মুমিনদের পথ ছেড়ে ভিন্নপথ অবলম্বন করবে, তাদের ঠিকানা জাহান্নাম।
৩.আরও সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, যারা ইসলাম ধর্ম ব্যাতিত অন্য ধর্ম পালন করবে, তাদের ঠিকানা কোথায় মহান আল্লাহ খুব স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন,
وَمَنْ يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآَخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ
অর্থ: কেউ ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দ্বীন গ্রহণ করতে চাইলে তা কখনো কবুল করা হবে না, এবং সে হবে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।(অর্থাৎ তারা জাহান্নামী হয়ে যাবে।)
সুরা আলে ইমরান আয়াত-৮৫
৩.হাদিস শরীফে এ ব্যপারে আল্লাহর রসুল সা. খুব স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন।
عن أبي هريرة والذي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بيَدِهِ لا يَسْمَعُ بي أحَدٌ مِن هذِه الأُمَّةِ يَهُودِيٌّ ولا نَصْرانِيٌّ ثُمَّ يَمُوتُ ولَمْ يُؤْمِنْ بالَّذِي أُرْسِلْتُ به إلّا كانَ مِن أصْحابِ النّارِ
অর্থ: হযরত আবূ হুরাইরাহ রা. থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ আছে, সেই সত্তার কসম! এই উম্মতের যে কেউ—ইয়াহুদী হোক বা খ্রীস্টান আমার (আগমনের) কথা শুনবে,অতঃপর যা দিয়ে আমি প্রেরিত হয়েছি,তার প্রতি ঈমান আনবে না, সেই জাহান্নামবাসীদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
সূত্র: সহিহ মুসলিম শরীফ- ১৫৩
উক্ত আয়াতসমূহ এবং পবিত্র হাদিস থেকে এ কথা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, বর্তমানে একমাত্র ইসলাম ধর্মের অনুসারী মুসলমান ব্যতিত কেউ জান্নাতে যেতে পারবে না।
একটি প্রশ্ন
কুরআনে কারীমে তো আল্লাহ তা’য়ালা ইহুদী-খ্রীস্টানদের ভেতর যারা নেক আমল করবে, তাদের জন্য আখেরাতের সু-সংবাদ দিয়েছেন। যেমন আল্লাহ তা’য়ালা বলেছেন,
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُواْ وَالَّذِينَ هَادُواْ وَالنَّصَارَى وَالصَّابِئِينَ مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَعَمِلَ صَالِحاً فَلَهُمْ أَجْرُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ وَلاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ
অর্থ: নিঃসন্দেহে যারা মুসলমান হয়েছে এবং যারা ইহুদী, নাসারা ও সাবেঈন, (তাদের মধ্য থেকে) যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও কিয়ামত দিবসের প্রতি এবং সৎকাজ করেছে, তাদের জন্য রয়েছে তার সওয়াব তাদের পালনকর্তার কাছে। আর তাদের কোনই ভয়-ভীতি নেই, তারা দুঃখিতও হবে না।
সুরাঃ বাকারা আয়াত: ৬২
তাহলে জান্নাতে যেতে শুধু ইসলাম মানতে হবে এটা কি বিভ্রান্তি নয়?
জবাব:
১. কুরআনে কারীমে অসংখ্য আয়াত রয়েছে, যার হুকুম রহিত হয়ে গেছে। সে রহিত হুকুমের মধ্যে এটাও একটি। অর্থাৎ এ আয়াতটির অর্থ বর্তমানের জন্য বলবৎ নয়। কারণ কুরআন শরীফের শ্রেষ্ট মুফাসসির সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেছেন,
فأنزل الله عز وجل بعد هذا ومن يبتغ غير الإسلام دينًا فلن يقبل منه
অর্থাৎ উল্লেখিত সুরা বাকারার ৬২ নং আয়াতের পর আল্লাহ তা’য়ালা এ আয়াতটি নাযিল করেছেন,
وَمَنْ يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآَخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ
অর্থ: কেউ ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দ্বীন গ্রহণ করতে চাইলে তা কখনো কবুল করা হবে না, এবং সে হবে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।
সুরা আলে ইমরান আয়াত-৮৫
সূত্র: তাফসীরে তাবারী খ: ১ পৃ: ৩৬৫
সুতরাং বুঝা গেল, সুরা বাকারার ৬২ নং আয়াতের বিধান রহিত হয়ে গেছে। অতএব এ ক্ষেত্রে বিধান রহিত তথা মানসুখ আয়াত দিয়ে প্রমাণ পেশ করা ভুল এবং মুর্খতার পরিচয়।
২. এরপরও যদি ধরে নিই যে, আয়াতের হুকুম রহিত হয়নি, তবুও আগের যুগের ধর্মগুলো মেনে জান্নাতে যাওয়া যাবে না, কারণ আল্লাহ তা’য়ালা আয়াতটিতে যে আহলে কিতাবদের ব্যাপারে বলেছেন, সে আহলে কিতাবের অস্তিত্ব এখন আর নেই। কারণ তারা তাদের কিতাবই তো বিকৃত করে ফেলেছে। পূর্বের পর্বে এসম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। অর্থাৎ হেযবুত তওহীদরাই তাদের বইতে লিখে রেখেছে যে,
“সকল প্রাচীন আঞ্চলিক দীনগুলিকে অনুপযুক্ত ঘোষণা দিয়ে মহান আল্লাহ ১৪০০ বছর আগে শেষ দীন এসলামের মহাগ্রন্থ আল-কোর’আন নাযেল করেছেন।”
সূত্র: এ জাতির পায়ে লুটিয়ে পড়বে বিশ্ব পৃষ্ঠা-৫৬
সুতরাং কিতাব যেহেতু বিকৃত, সেহেতু সে বিকৃত কিতাবের অনুসারীরা সঠিক মতবাদের উপরে আছে এবং তারাও জান্নাতে যেতে পারবে এমন কথা বলা নিশ্চিত চরম মুর্খতা।
প্রিয় পাঠক, হেযবুত তওহীদ বর্তমানের সমস্ত মুসলমানদেরকে জাহান্নামী বলে ঘোষণা দিয়েছে তাদের বইগুলোতে। কেন জাহান্নামী? এর কারণ হিসাবে তারা উল্লেখ্য করেছে,
”এই দুনিয়াতে তিনি যেমন মাফ করছেন না,অন্যান্য জাতিগুলো দিয়ে নিষ্পেষিত করে কঠিন শাস্তি দিচ্ছেন,ঐ দুনিয়াতে এই জাতিকে এর চেয়ে কঠিন শাস্তি দেবেন।’
সূত্র: ইসলামের প্রকৃত সালাহ-৪২
অর্থাৎ যেহেতু বর্তমানে মুসলমানেরা কাফেরদের হাতে নির্যাতিত হচ্ছে, এই দুনিয়ার নির্যাতনই প্রমাণ হলো, আখেরাতেও মুসলমানরা জাহান্নামে যাবে। কারণ তাদের লজিক হলো,
“যার ইহকাল ভালো তার পরকালও ভালো।”
সূত্র: আদর্শিক লড়াই পৃষ্ঠা-১৪
যদি তাদের এ লজিকের আলোকে সমস্ত মুসলমানকে জাহান্নামী বলা যুক্তিসংগত হয়, তাহলে তাদের লজিকের আলোকেই অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদেরও জাহান্নামী বলতে হবে। কারণ হেযবুত তওহীদই লিখেছে,
“ধর্মব্যবসায়ীদের কবলে পড়ে ধর্মের প্রকৃত রূপ হারিয়ে যাওয়ায় বিকৃত ধর্মগুলো মানুষের জন্য শান্তিদায়ক নয়।
সূত্র: ধর্ম বিশ্বাস পৃষ্ঠা-৪
সুতরাং যে ধর্মগুলো বিকৃতির কারণে প্রকৃত রুপ হারিয়ে যাওয়ার ফলে এ দুনিয়াতে শান্তি দিতে পারবে না, সে ধর্মগুলোর অনুসারীরা কিয়ামতে কিভাবে শান্তির জান্নাতে যাবে?
৪. প্রিয় পাঠক, অমুসলিমরা কাফের ও জাহান্নামী হওয়ার ব্যাপারে কুরআন এবং হাদিসে এতগুলো আয়াত ও হাদিসের পাশাপাশি অসংখ্য আয়াত-হাদিস রয়েছে। এতদ্বসত্ত্বেও হেযবুত তওহীদের কর্মীরা যদি তাদের এমামের মতবাদই সত্য বলে বিশ্বাস করতে চান, তাহলে তাদের জন্য তাদের বই থেকেই প্রমাণ দিলে আশা করি অস্বীকারের সুর পাল্টে যাবে। চলুন তারা কি লিখেছেন দেখি,
“আল্লাহ কোরআনে বারবার বলেছেন জান্নাত কেবল মোমেনের জন্য, সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করবেন মোমেনের।”
সূত্র: প্রিয় দেশবাসী পৃষ্ঠা-১৮
এই মোমেন কারা? এই মো’মেন হলো একমাত্র ইসলাম ধর্মের অনুসারী মুসলমানেরা। যা উপরে উল্লেখ্য করা হয়েছে। সুতরাং আল্লাহ এবং তাঁর রাসুল সা. এর কথার বিরুদ্ধে গিয়ে যারা বিধর্মী ও কাফেরদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে “ভিন্নধর্ম পুর্ণরুপে পালন করলে জান্নাতে যাওয়া যাবে” দাবি করেন, সে হেযবুত তওহীদদের সদস্যদেরকে কি কোনভাবেই মুসলিম বলার সুযোগ আছে? উত্তর পাঠকই দেবেন আশা করি।
Hi there! This post could not be written any better! Reading this post
reminds me of my good old room mate! He always kept chatting about this.
I will forward this write-up to him. Fairly certain he will
have a good read. Many thanks for sharing! asmr 0mniartist
Good day! I know this is kinda off topic but I’d figured I’d ask.
Would you be interested in exchanging links or maybe guest writing a blog post
or vice-versa? My website addresses a lot of the same subjects as yours and I feel we could
greatly benefit from each other. If you’re interested feel
free to send me an e-mail. I look forward to hearing from you!
Fantastic blog by the way! 0mniartist asmr
Hi there! I just wanted to ask if you ever have any issues with hackers?
My last blog (wordpress) was hacked and I ended up losing several
weeks of hard work due to no data backup. Do you have any solutions to
protect against hackers? 0mniartist asmr
I don’t know whether it’s just me or if everybody else encountering issues with your blog.
It looks like some of the written text on your content are running
off the screen. Can somebody else please provide feedback and let me know if this is happening to them
as well? This could be a issue with my internet browser because I’ve had this happen before.
Many thanks asmr 0mniartist
Hi everyone, it’s my first go to see at this web page, and paragraph is genuinely fruitful in support of me, keep
up posting these types of content. 0mniartist asmr
mature dating
free dating
tinder sign up , tindr
http://tinderentrar.com/
scoliosis
It’s impressive that you are getting thoughts from this article as well as from our dialogue made here.
scoliosis
scoliosis
I believe that is one of the so much important information for me.
And i’m glad studying your article. But wanna commentary
on few normal issues, The site style is perfect, the articles is
really excellent : D. Just right process, cheers scoliosis