Home > কুরবানীর মাসআলা > কুরবানীর গোশত বন্টন করা কি জরুরী?

কুরবানীর গোশত বন্টন করা কি জরুরী?

 

কুরবানীর গোস্ত তিন ভাগ করে এক ভাগ নিজের জন্য রাখা, এক ভাগ আত্মীয়-স্বজন বা প্রতিবেশীর জন্য রাখা এবং এক ভাগ গরীবকে দেয়া বাধ্যতামূলক নয়, বরং মুস্তাহাব।

ফাতাওয়ায়ে শামীতে এসেছে,

وَالْأَفْضَلُ أَنْ يَتَصَدَّقَ بِالثُّلُثِ وَيَتَّخِذَ الثُّلُثَ ضِيَافَةً لِأَقْرِبَائِهِ وَأَصْدِقَائِهِ وَيَدَّخِرَ الثُّلُثَ؛ وَيُسْتَحَبُّ أَنْ يَأْكُلَ مِنْهَا، وَلَوْ حَبَسَ الْكُلَّ لِنَفْسِهِ جَازَ لِأَنَّ الْقُرْبَةَ فِي الْإِرَاقَةِ وَالتَّصَدُّقِ بِاللَّحْمِ تَطَوُّعٌ

অর্থাৎ উত্তম হলো, এক তৃতীয়াংশ গরীব-মিসকিনকে সাদাকা করে দেবে, আর এক অংশ আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধুবান্ধবের জন্য রাখবো আর এক অংশ নিজেদের রাখবে, আর মুস্তাহাব হলো, সেখান থেকেই খাবে। তবে যদি পুরো কুরবানীর অংশ নিজের জন্য রেখে দেয় তবুও জায়েয আছে। কারণ কুরবানীর ভেতর মূল হলো, প্রাণীর রক্ত প্রবাহিত করে রবের নৈকট্য অর্জন করা আর গোশত সাদাকা করা হলো, নফল ইবাদত।
সূত্র: রদ্দুল মুহতার খ. ৯ পৃ. ৪৭৪ ফাতাওয়া আলমগিরি খ. ৫ পৃ. ৩৭০-৩৭১ বাদায়েউস সানায়ে খ. ৪ পৃ. ২২৪ ই’লাউস সুনান খ. ১৭ পৃ. ২৬২

প্রমাণ:

এক. ইব্রাহীম নাখয়ী রহ. বলেন,

كَانَ الْمُشْرِكُونَ لَا يَأْكُلُونَ مِنْ ذَبَائِحِهِمْ فَرُخِّصَ لِلْمُسْلِمِينَ، فَمَنْ شَاءَ أَكَلَ، وَمَنْ شَاءَ لَمْ يَأْكُلْ. وَرُوِيَ عَنْ مُجَاهِدٍ، وَعَطَاءٍ نَحْوُ ذَلِكَ.

সূত্র: (জাহিলী যুগের) মুশরিকরা কুরবানীর যবাহকৃত পশু খেতো না। পরে মুসলমানদের জন্য সেটার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সুতরাং যার মনে চায় সে খাবে, আর যার মনে না চায়, সে খাবে না। (বিশিষ্ট তাবেয়ী) মুজাহিদ এবং আত্বা রহ. থেকে এমনটি বর্ণিত আছে।
সূত্র: শরহুল বুখারী (ইবনে বাত্তাল) খ. ৬ পৃ. ৩৩

দুই. ইবরে জুরাইজ রহ. বলেন,

عَنْ عَطَاءٍ قَوْلُهُ : ( فَكُلُوا مِنْهَا وَأَطْعِمُوا الْبَائِسَ الْفَقِيرَ ) قَالَ : كَانَ لَا يَرَى الْأَكْلَ مِنْهَا وَاجِبًا

আল্লাহ তা’আলার আয়াত

فَكُلُوا مِنْهَا وَأَطْعِمُوا الْبَائِسَ الْفَقِيرَ

অর্থ: অতঃপর তোমরা তা থেকে আহার কর এবং দুঃস্থ-অভাবগ্রস্থকে আহার করাও। সুরা: হজ্ব আয়াত: ২৮

উক্ত আয়াতে আল্লাহ তা’আলা যে ” তোমরা খাও” বলেছেন, এটাকে (বিশিষ্ট তাবেয়ী) আতা রহ. ওয়াজীব মনে করতেন না।
সূত্র: তাফসীরে তাবারী খ. ১৮ পৃ. ৬০৬

সুতরাং অত্র আয়াতে নিজেরা খাও এবং অভাবীদের খাওয়াতে বলা হয়েছে, সুতরাং নিজেরা খাওয়া যদি ওয়াজীব না হয়, তাহলে একই আয়াতের দ্বিতীয়াংশ তথা “গরীবকে খাওয়াও” এটাও ওয়াজীব নয়, বরং মুস্তাহাব আমল।

আরও দেখুন:

قال سفيان لا بأس الا يأكل منها ويطعمها كلها
সূত্র: শরহুল বুখারী (ইবনে বাত্তাল) খ. ৬ পৃ. ৩৩

وَهَذَا الْأَمْرُ مِنَ اللَّهِ جَلَّ ثَنَاؤُهُ أَمْرُ إِبَاحَةٍ لَا أَمْرُ إِيجَابٍ ، وَذَلِكَ أَنَّهُ لَا خِلَافَ بَيْنِ جَمِيعِ الْحُجَّةِ أَنَّ ذَابِحَ هَدْيَهُ أَوْ بَدَنَتَهُ هُنَالِكَ إِنْ لَمْ يَأْكُلْ مِنْ هَدْيِهِ أَوْ بَدَنَتِهِ أَنَّهُ لَمْ يُضَيِّعْ لَهُ فَرْضًا كَانَ وَاجِبًا عَلَيْهِ ، فَكَانَ مَعْلُومًا بِذَلِكَ أَنَّهُ غَيْرُ وَاجِبٍ
সূত্র: তাফসীরে তাবারী খ. ১৮ পৃ. ৬০৬

سئل مجاهد و عطاء عن الذي لا يأكل من اضحيته قال ان شاء لم يأكل منها
শরহুল বুখারী (ইবনে বাত্তাল) খ. ৬ পৃ. ৩৩

 

Check Also

মহিলারা কুরবানীর পশু যবাহ করতে পারবে?

  মুসলিম মহিলারা কুরবানীর পশু যবাহ করতে পারবে। যদি তারা যবাহের নিয়ম ভালোভাবে জানে। তবে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.