মাওলানা মওদূদী যেভাবে বুখারী মুসলিমের হাদীস অস্বিকার করার ধৃষ্টতা দেখালেন!
মাওলানা মওদূদী সাহেব তার বিতর্কিত তাফসীর গ্রন্থ ‘তাফহীমুল কুরআন’ এ লিখেনঃ
তৃতীয় দলটি বলেন , একদিন হযরত সুলাইমান কসম খান , আজ রাতে আমি সত্তরজন স্ত্রীর কাছে যাবো এবং প্রত্যেক গর্ভে একজন করে আল্লাহর পথের মুজাহিদ জন্ম দেব। কিন্তু একথা বলতে গিয়ে তিনি ইনশাআল্লাহ বলেননি। এর ফলে মাত্র একজন স্ত্রী গর্ভবতী হয় এবং তাঁর গর্ভেও একটি অসমাপ্ত ও অপরিপক্ক শিশুর জন্ম হয়। দাই শিশুটিকে এনে হযরত সুলাইমানের আসনের ওপর ফেলে দেয়। এ হাদীসটি হযরত আবু হুরাইরা (রা ) নবী সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। বুখারী , মুসলিম ও অন্যান্য মুহাদ্দিসগণ বিভিন্ন রাবীর মাধ্যমে এটি উদ্ধৃত করেছেন। বুখারী শরীফেই এ হাদীসটি যেসব রাবীর মাধ্যমে বর্ণিত হয়েছে তার কোনটিতে স্ত্রীদের সংখ্যা বলা হয়েছে ৬০, কোনটিতে ৭০, কোনটিতে ৯০, কোনটিতে ৯৯, আবার কোনটিতে ১০০ও বলা হয়েছে। সনদের দিক দিয়ে এর মধ্য থেকে অধিকাংশই শক্তিশালী এবং রেওয়ায়াত হিসেবে এগুলোর নির্ভুলতা সম্পর্কে কোন প্রশ্ন করা যেতে পারে না। কিন্তু এ হাদীসের বিষয়বস্তু সুম্পষ্টভাবে সাধারণ বিবেক – বুদ্ধির বিরোধী। এর ভাষা বলছে , একথা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো এভাবে বলেননি যেভাবে উদ্ধৃত করা হয়েছে। বরং তিনি সম্ভবত ইহুদীদের মিথ্যা ও অপবাদমূলক কিচ্ছা – কাহিনীর কথা উল্লেখ করতে গিয়ে কোন পর্যায়ে একে এভাবে উদাহরণ স্বরূপ বর্ণনা করে থাকবেন এবং শ্রোতার মনে ভুল ধারণার সৃষ্টি হয়ে থাকবে যে , নবী করীম (সা ) নিজেই এ ঘটনা বর্ণনা করছেন। এ ধরনের রেওয়ায়াতকে নিছক জোরে লোকদের হজম করাবার চেষ্টা করানো দীনকে হাস্যাস্পদ করা ছাড়া আর কিছুই নয়। [তাফহীমুল কুরআন বাংলা, সূরা সা’দ, টিকা নং ৩৬, খণ্ড-১৩, পৃষ্ঠা-১০৯, আধুনিক প্রকাশনী]
মাওলানা মওদূদী সাহেব প্রথমে বললেনঃ-
১
হাদীসটি বুখারী মুসলিমের একাধিক স্থানে আসছে।
২
হাদীসটি সনদের বিচারে বিশুদ্ধ হবার ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।
তারপর বুখারী মুসলিম বর্ণিত এ সহীহ হাদীসটিকে অস্বিকার করে মন্তব্য করলেনঃ-
১
হাদীসটি বিবেক বুদ্ধির বিরোধী।
২
হাদীসটি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবে বলেননি। সাহাবী আবূ হুরায়রা রাঃ ভুলে এমনটি বলেছেন। নাউজুবিল্লাহ।
৩
হাদীসটির বক্তব্য মূলত ইহুদীদের মিথ্যা ও অপবাদমূলক কিচ্ছা কাহিনী। নবীজীর হাদীস নয়।
৪
এমন হাদীস বিশ্বাস করা দ্বীনকে হাস্যাস্পদ করা ছাড়া আর কিছুই নয়।
বুখারী মুসলিমে বর্ণিত বিশুদ্ধ হাদীসকে অস্বিকার করার জন্য এমন ভয়ংকর ৪টি মন্তব্য করেছেন মওদূদী সাহেব।
তাহলে তিনি আসলেই আহলে সুন্নাতের অনুসারী নাকি ‘মুনকিরীনে হাদীস’ তথা হাদীস অস্বিকারকারী দলেরই একজন একনিষ্ট কর্মী? জাতির কাছে এ প্রশ্ন রইল।