মুরগী কুরবানী করা জায়েয নয়। কিন্তু আহলে হাদিস উলামাদের মতবাদ হলো, মুরগী কুরবানী করা জায়েয আছে। তারা তাদের ফাতাওয়ার গ্রন্থে লিখেছেন,
مفلس نادار راغبِ طلبِ ثواب کیلٸے مرغ کی قربانی جاٸز جانتے ہیں
অর্থাৎ অসহায় হতদরিদ্রদের জন্য আমরা মুরগির কুরবানী বৈধ মনে করি ৷
সুত্র: ফাতাওয়ায়ে ওলামায়ে হাদিস খ: ৩ পৃ: ৫৬ ফাতাওয়ায়ে সত্তারীয়্যাহ খ: ২ পৃ: ৭২
জবাব:
মুরগী দ্বারা কুরবানী করা বৈধ নয়। কারণ আল্লাহ তা’আলা বলেছেন,
وَلِكُلِّ أُمَّةٍ جَعَلْنَا مَنسَكًا لِيَذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ عَلَى مَا رَزَقَهُم مِّن بَهِيمَةِ الْأَنْعَامِ
অর্থ: আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্যে কোরবানী নির্ধারণ করেছি, যাতে তারা আল্লাহর দেয়া চতুস্পদ জন্তু যবেহ কারার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে।
সুরাঃ হজ্ব আয়াত: ৩৪
ক. উক্ত আয়াতে চতুষ্পদ প্রাণীর কথা বলা হয়েছে। আর মুরগী চতুষ্পদ প্রাণী নয়।
খ. উক্ত আয়াতে بَهِيمَةُ الْأَنْعَامِ তথা চতুস্পদ জন্তু দ্বারা উদ্দেশ্য কি সে সম্পর্কে হযরত হাসান বসরী রহ. বলেন,
بَهِيمَةُ الْأَنْعَامِ هِيَ الْإِبِلُ وَالْبَقَرُ وَالْغَنَمُ
অর্থাৎ بَهِيمَةِ الْأَنْعَامِ হলো, উট,গরু এবং ছাগল (বা ছাগলের প্রকার, যেমন ভেড়া বা দুম্বা)।
সূত্র: তাফসীরে তাবারী খ: ৯ পৃ: ৪৫৬
উক্ত বিষয়টি হাদিসে সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে,
عَنْ جَابِرٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لاَ تَذْبَحُوا إِلاَّ مُسِنَّةً إِلاَّ أَنْ يَعْسُرَ عَلَيْكُمْ فَتَذْبَحُوا جَذَعَةً مِنَ الضَّأْنِ
অর্থ: হযরত জাবির রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা কুরবানীতে ‘মুছিন্না’ ছাড়া যবেহ করবে না। তবে সংকটের অবস্থায় ছ’মাস বয়সী ভেড়া-দুম্বা যবেহ করতে পারবে। (মুছিন্না হল, ৫ বছর বয়সী উট, ২ বছরের গরু, মহিষ এবং ১ বছর বয়সী ছাগল, ভেড়া বা দুম্বা -শরহুন নববী)।
সূত্র: সহিহ মুসলিম হাদীস: ১৯৬৩ সুনানে আবু দাউদ: ২৭৯৭; সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩১৭৯ ফাতাওয়া কাযীখান খ: ৩ পৃ: ৩৪৮; বাদায়েউস সানায়ে খ: ৪ পৃ: ২০৫-২০৬
ইমাম নববী রহ. বলেছেন,
وَلَمْ يُنْقَلْ عَنْهُ صلى الله عليه وسلم وَلا عَنْ أحد من أَصْحَابِهِ التَّضْحِيَةُ بِغَيْرِهَا
উপরোল্লিখিত প্রাণীগুলো ব্যতিত অন্য পশু দ্বারা কুরবানী করা নবীজি সা. এবং তাঁর কোনো সাহাবী থেকে বর্ণিত হয়নি।
সূত্র: রওযাতুত তালিবীন খ: ২ পৃ: ৪৬২