বেদ হলো হিন্দুদের একটি ধর্মগ্রন্থ। যেটা মানবরচিত হওয়ার ব্যাপারে খোদ হিন্দুরাই স্বীকারোক্তি দিয়ে থাকে।
হেযবুত তওহীদ কী বলে?
তাদের দাবি হলো, বেদ যাদের উপর নাযিল হয়েছিলো, তাদের মধ্যে অন্যতম হলে আমাদের নবী মুহাম্মাদ সা.। তারা লিখেছে,
বিভিন্ন বেদ যাদের ওপর অবতীর্ণ হোয়েছিলো, মুসা (আঃ) ও মোহাম্মদ (দঃ)। -এ ইসলাম ইসলামই নয়, পৃ. ১৩৯-১৪০
অনেক গবেষক মনে করেন বৈবস্বতঃ মনুই হচ্ছেন বৈদিক ধর্মের মূল প্রবর্তক, যাঁকে কোর’আনে ও বাইবেলে বলা হয়েছে নূহ (আ.), ভবিষ্যপুরাণে বলা হয়েছে রাজা ন্যূহ। তাঁর উপরেই নাজিল হয় বেদের মূল অংশ। -সবার উর্ধ্বে মানবতা : পৃ. ৪
ইসলাম কী বলে?
এ ব্যাপারে কারও দ্বিমত নেই যে মুসা আ.-এর উপর আল্লাহ-র নাযিলকৃত গ্রন্থের নাম তাওরাত। আর আমাদের নবি হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর অবতীর্ণ কিতাবের নাম পবিত্র কুরআন। মহান রব বলেন,
وَلَقَدْ آتَيْنَاكَ سَبْعًا مِّنَ الْمَثَانِي وَالْقُرْآنَ الْعَظِيمَ
আমি তোমাকে এমন সাতটি আয়াত দিয়েছি, যা বারবার পড়া হয় এবং দিয়েছি মর্যাদাপূর্ণ কুরআন। -সুরা হিজর : ৮৭
পবিত্র কুরআনে আরও এসেছে, আল্লাহ পাক তাঁর রাসুল মুহাম্মাদ সা. কে বলতে আদেশ করেছেন, বলুন-
وَأُوحِيَ إِلَيَّ هَذَا الْقُرْآنُ لأُنذِرَكُم بِهِ
আমার প্রতি ওহিরূপে এই কুরআন নাযিল করা হয়েছে, যাতে এর মাধ্যমে আমি তোমাদেরকেও সতর্ক করি। -সুরা আনআম : ১৯
সুতরাং প্রমাণ হলো, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর অবতীর্ণ কিতাবের নাম পবিত্র কুরআন, বেদ নয়। আর তাছাড়া বেদ কোনক্রমেই খোদা প্রদত্ত হতে পারে না। কারণ হিন্দু ধর্ম আসমানী দ্বীন হওয়ার স্বপক্ষে কোন প্রমাণ কুরআন-হাদিসে নেই। তাছাড়া হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ বেদ সম্পর্কে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক-২০১৩ (৮ম শ্রেণী) এর হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বইয়ের ১০নং পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, ‘বেদ আমাদের আদি ও প্রধান ধর্ম গ্রন্থ। বেদ চিরন্তন ও শাশ্বত। বেদ মানে জ্ঞান। প্রাচীন ঋষিদের ধ্যানে পাওয়া পবিত্র জ্ঞান’। ৮ম শ্রেণীর বইয়ে বলা হয়েছ, ‘বেদ ঋষিদের ধ্যানলব্ধ পবিত্র জ্ঞান। ধ্যানের মাধ্যমে ঋষিগণ সেই সত্য দর্শন করে তাকে ভাবের আবেগে প্রকাশ করেছেন। এজন্যই বলা হয় বেদ সৃষ্ট নয়, দৃষ্ট । বেদ কেউ সৃষ্টি করেননি, উপলব্ধি করেছেন মাত্র’। -হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা : পৃ. ১০
বেদ সম্পর্কে আরও বলা আছে,
বেদ ব্রহ্মার নিশ্বাস হতে নিসৃত। -পৌরাণিক অভিধান : পৃ. ৩৬৯
বেদ যাদের ধর্মীয়গ্রন্থ তারা নিজেরাই যেটাকে আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ বলে দাবি করেনি, সেখানে জনাব পন্নী এগুলোকে আল্লাহর নাযিলকৃত বলে আখ্যায়িত করেছে। এমনকি ‘বেদ’-এর কিছু অংশ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও মুসা আ.-এর এর উপর নাযিল করা হয়েছে বলেও মিথ্যাচার। এরচে বড় মিথ্যাচার আর কী হতে পারে? এরপরও কী হেযবুত তওহীদকে মুসলমান হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া যায়?