Home > কুরবানীর মাসআলা > √পশু কেনার পর দোষ দেখা দিলে কী করবে?

√পশু কেনার পর দোষ দেখা দিলে কী করবে?

সাহেবে নেসাব কোন ব্যক্তি কুরবানীর নিয়তে ভালো পশু কেনার পর যদি তাতে এমন কোনো দোষ দেখা দেয় যে কারণে কুরবানী জায়েয হয় না তাহলে ওই পশুর কুরবানী সহীহ হবে না। এর স্থলে আরেকটি পশু কুরবানী করতে হবে। হানাফী মাযহাবের বিখ্যাতগ্রন্থ ‘ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী’ তে এসেছে,
كل عيب يمنع الاضحية ففي حق الموسر يستوي ان يشتريها كذلك او يشتريها وهي سليمة فصارت معيبة يذلك العيب لا تجوز علي كل حال
প্রতিটি ত্রুটি যা কোরবানি দেওয়ার জন্য বাধা দেয়, এমন পশু কেনার সময় হতে ত্রুটিপূর্ণ হোক অথবা সুস্থ কেনার পর ত্রুটিপূর্ণ হোক, কোনো অবস্থায় সেটা ধনী ব্যক্তির জন্য কোনও অবস্থাতেই কুরবনী দেওয়া জায়েজ হবে না।-ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী. ৫ পৃ. ৩৬৯

প্রমাণ স্বরুপ নিন্মের হাদিসটি দেখুন,
عَنْ عَلِيٍّ قَالَ أَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ نَسْتَشْرِفَ الْعَيْنَ وَالْأُذُنَيْنِ وَلَا نُضَحِّي بِعَوْرَاءَ وَلَا مُقَابَلَةٍ وَلَا مُدَابَرَةٍ وَلَا خَرْقَاءَ وَلَا شَرْقَاءَ
হযরত আলী রা. সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে আদেশ করেছেন ‘আমরা যেন কুরবানীর প্রাণীর চোখ-কান ভালভাবে দেখে নেই। ‘আমরা যেন এমন পশু কুরবানী না করি যা কানা বা অন্ধ, কানের অগ্র বা শেষভাগে অংশ কাটা; যার কানের পাশের দিক ফাঁড়া বা গোলাকার ছিদ্র রয়েছে। -সুনান আবু দাউদ হাদিস: ২৮০৪ মুসনাদে আহমদ: ৬০৯

হযরত আলী রা. বলেন,
نَهَى رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ أَنْ يُضَحَّي بِأَعْضَبِ القَرْنِ وَالأُذُنِ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে শিং ভাঙ্গা এবং কান কাটা পশু দ্বারা কুরবানী করতে নিষেধ করেছেন। -জামে তিরমিযী, হাদীস: ১৫০৪

হযরত বারা’আ ইবনে আযিব রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
لاَ يُضَحَّى بِالْعَرْجَاءِ بَيِّنٌ ظَلَعُهَا وَلاَ بِالْعَوْرَاءِ بَيِّنٌ عَوَرُهَا وَلاَ بِالْمَرِيضَةِ بَيِّنٌ مَرَضُهَا وَلاَ بِالْعَجْفَاءِ الَّتِي لاَ تُنْقِي
খোড়া জন্তু যার খোড়ামী স্পষ্টভাবে প্রকাশিত; অন্ধ পশু যার অন্ধত্ব সম্পূর্ণভাবে প্রকাশিত; রুগ্ন পশু যার রোগ দৃশ্যমান এবং ক্ষীণকায় পশু যার হাড়ের মজ্জা পর্যন্ত শুকিয়ে গেছে- তা দ্বারা কুরবানী করা যাবে না। -জামে তিরমিযি, হাদিস: ১৪৯৭

তবে দরিদ্র ব্যক্তির জন্য তা সর্বাবস্থাতেই কুরবানী করা জায়েজ। অর্থাৎ যার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়, এমন কোনো ব্যক্তি যদি ত্রুটিপূর্ণ পশু কেনে অথবা কেনার পর ত্রুটিপূর্ণ হয়, তার জন্য সেই পশুই কুরবানী করতে হবে। ফাতাওয়ায়ে আলমগীরিতে এসেছ,
و في حق المعسر تجوز علي كل حال
তবে দরিদ্র ব্যক্তির জন্য তা সর্বাবস্থাতেই কুরবানী করা জায়েজ।-ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী. ৫ পৃ. ৩৬৯

হাদিস শরীফে এসেছে,
عن أبي سعيد الخدري قال اشتَرَيتُ أُضحيَّةً، فجاءَ الذِّئبُ فأَكَلَ من ذَنَبِها أو أَكَلَ ذَنَبَها فسَأَلتُ رسولَ اللهِ ﷺ فقال ضَحِّ بها
আমি একটি কুরবানীর পশু ক্রয় করলাম, পরে একটি নেকড়ে এসে তার কান খেয়ে ফেলল। আমি নবীজি সা. কে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বললেন, ওটাই কুরবানী করো। -মুসনাদে আহমাদ হাদিস: ১১৭৪৩

Check Also

সামর্থ্যবান ব্যক্তি কুরবানী করতে না পারলে ক্বাযা করবে কিভাবে?

  যে ব্যক্তি কুরবানী করতে পারেনি। কিন্তু তার উপর কুরবানী করা আবশ্যক ছিল। তাহলে পরবর্তিতে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.