রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে মহান আল্লাহ প্রেরণ করেছেন সমস্ত বিশ্বসমূহের জন্য রহমত করে। আর তাঁর আনীত দীন একদিন পুরো বিশ্বের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে বলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসেই বলে দিয়েছেন।
হেযবুত তওহীদ কী বলে?
কুফরী সংগঠণ হেযবুত তওহীদের প্রতিষ্ঠাতা বায়াজীদ খান পন্নী দাবি করে বসলো এক ভয়ঙ্কর কথা। দেখুন তারা কী বলে-
নবী প্রেরিত হোয়েছেন সমস্ত দুনিয়ার জন্য। কিন্তু ভবিষ্যৎবাণী যখন করলেন তখন তিনি দুনিয়া বোললেন না যে তোমাদের দিয়ে সারা দুনিয়া বিজয় হবে, বললেন তোমাদের দিয়ে এই দুইটি সাম্রাজ্য বিজয় হবে। সীমিত কোরে দিলেন। বাস্তবেও তাই হোল। আর সেদিন (০২/০২/০৮) আল্লাহ নিজে যে মোজেজা কোরলেন, সেদিন আমাকে দিয়ে বলালেন ‘দুনিয়া’, এবং ‘তোমাদের দিয়ে’ না বলিয়ে বলালেন হেযবুত তওহীদ দিয়ে। পার্থক্যটা বুঝে নিও। রসূল বোললেন, ‘তোমাদের দিয়ে’ আর ‘পুরো পৃথিবী’ বোললেন না, সীমিত রাখলেন, আর আল্লাহ আমাকে দিয়ে ‘তোমাদেরকে দিয়ে বলালেন না’, বলালেন হেযবুত তাদওহীদ দিয়ে’, কিন্তু কোন সীমানা রাখলেন না বোললেন ‘সারা পৃথিবী’। -আল্লাহর মোজেজা হেযবুত তওহীদের বিজয় ঘোষণা : পৃ. ৫৮
সারা দুনিয়ায় সত্যদীন প্রতিষ্ঠা হওয়ার পূর্বশর্তই হচ্ছে দাজ্জালের ধ্বংস। যেহেতু মোজেজা সংগঠন করে আল্লাহ জানিয়ে দিলেন যে হেযবুত তওহীদ কে আল্লাহ সারা দুনিয়ায় সত্যদীন প্রতিষ্ঠার জন্য মনোনীত করেছেন। সুতরাং হেজবুত তাওহীদের মাধ্যমেই যে দাজ্জাল অর্থাৎ ইহুদী-খ্রিস্টান ‘সভ্যতা’র পতন হবে সেটাও সুস্পষ্ট হয়ে যায়। -মহাসত্যের আহ্বান : পৃ. ২৪
অচিরেই আল্লাহর সত্যদীন এই হেযবুত তওহীদের মাধ্যমে সমগ্র পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত হবে এনশা’আল্লাহ। সুতরাং আজ যে অশান্তিময় পরিবেশে আমরা বসবাস কোরছি তার সমাপ্তি ঘোটতে যাচ্ছে। এবার আল্লাহর রসুলের প্রকৃত উম্মতে মোহাম্মদী আবার জেগে উঠবে, এই জাতির কালঘুম টুটবে। মানবজাতির সামনে আবার নতুন কোরে উদ্ভাসিত হবে নবসভ্যতার সূর্য। আল্লাহর রসুলের নাম ‘রহমাতাল্লেল আলামীন’ বাস্তবে স্বার্থকতা লাভ কোরবে। -শোষণের হাতিয়ার : পৃ. ৬১
অর্থাৎ পন্নী সাহেবের দাবি হলো, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর এরিয়া সীমিত আর হেযবুত তওহীদের এরিয়া পুরো পৃথিবিময় এবং পৃথিবির সর্বত্র ইসলাম বিজয় হবে হেযবুত তওহীদের মাধ্যমেই। নাউযুবিল্লাহ। কতবড় স্পর্ধা! ভাবা যায়?
ইসলাম কী বলে?
উদ্ভট এক মিথ্যা মু’জিজা সাজিয়ে খোদ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চেয়ে বড় দায়িত্ব প্রাপ্তীর দাবি কী কোনো মুসলমানের সন্তান করতে পারে? জনাব পন্নী দাবি করেছে, রাসুলুল্লাহ সা. নাকি পুরো বিশ্বে তাঁর দ্বীন পৌঁছাবে এমন কোনো কথা বলে যান নি। কতবড় মূর্খতা! কতবড় ধৃষ্টতা! অথচ রাসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
لَا يَبْقَى عَلَى ظَهْرِ الْأَرْضِ بَيْتُ مَدَرٍ وَلَا وَبَرٍ إِلَّا أَدْخَلَهُ اللَّهُ كلمة الاسلام بعز عَزِيز أَو ذل ذليل إِمَّا يعزهم الله عز وَجل فَيَجْعَلُهُمْ مِنْ أَهْلِهَا أَوْ يُذِلُّهُمْ فَيَدِينُونَ لَهَا
এ জমিনের উপর এমন কোন মাটির অথবা পশমের ঘর (তাঁবু) বাকী থাকবে না, যে ঘরে আল্লাহ রব্বুল ’আলামীন ইসলামের বাণী পৌঁছিয়ে দিবেন না। সম্মানীর ঘরে সম্মানের সাথে আর লাঞ্ছিতের ঘরে লাঞ্ছনার সাথে তা পৌঁছাবেন। আল্লাহ তা’আলা যাদেরকে সম্মানিত করবেন তাদেরকে স্বেচ্ছায় ইসলাম কবূলের উপযুক্ত করে মর্যাদাবান ও গৌরবময় করে দিবেন। পক্ষান্তরে যারা ইসলাম গ্রহণ করবে না, তাদের আল্লাহ তা’আলা লাঞ্ছিত করবেন এবং তারা এ কালিমার প্রতি অনুগত হবার জন্য বাধ্য হবে। আমি (মিক্বদাদ) বললাম, তখন তো সমগ্র বিশ্বে আল্লাহরই দীন (প্রতিষ্ঠিত) হয়ে যাবে। (অর্থাৎ- সকল দীনের উপরই ইসলাম বিজয়ী হবে)। -মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং : ২৩৮১৪
উক্ত হাদিস থেকে জানা গেলো, রাসুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আনীত ইসলামকে মহান রব সারা দুনিয়ার প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবেন। কিন্তু পন্নী সাহেব দাবি করলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নাকি পুরো দুনিয়ার কথা না বলে সীমিত করে বলেছিলেন। নিজের দল নিয়ে খোদ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর এতবড় ডাহা মিথ্যাচার কল্পনা করা যায়? এমন মিথ্যাবাদীদের মাধ্যমে সত্যের মূর্তপ্রতিক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপাধী ‘রহমাতুল্লিল আলামিন’ পূর্ণতা পাবে এমন দাবি নিতান্তই হাস্যকর।