প্রিয় পাঠক! রাসুলুল্লাহ সঃ ইন্তেকালের পর ইসলাম বিদ্বেষীরা বিভিন্নভাবে ইসলামকে সমাজ থেকে আলাদা করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল, আছে এবং থাকবে। কেউ সরাসরি ইসলামকে অস্বীকার করেছে। আবার কেউ কৌশলে “ইসলাম বিকৃত” বলে দাবি করে ইসলামের নামে নিজস্ব মতবাদ সমাজে প্রচলন করতে চেয়ছে। আর এ কাজটির ধারাবাহিকতা রক্ষা করে আজও ইসলামকে বিকৃত বলে নতুন ধর্ম প্রচলন করার মিশনে নেমেছে অসংখ্য সংগঠণ। তার মধ্যে অন্যতম হলো, হেযবুত তওহীদ। তারা ইসলামকে বিভিন্ন বক্তব্যের মাধ্যমে আঘাত করে বায়াজীদ খান পন্নীর ধর্ম চালাতে বদ্ধপরিকর। চলুন তাদের বই থেকে দেখা যাক তারা কি বলতে চায়।
হেযবুত তওহীদের দাবি:
”আসুন, আমরা সবাই মিলে এই নারকীয় সিস্টেমটাকে পাল্টাই। হেযবুত তওহীদ এর প্রতিষ্ঠাতা এমাম এমামুযযামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী আল্লাহ-রসুলের হারিয়ে যাওয়া যে প্রকৃত, সত্য জীবনব্যবস্থা মানবজাতির সামনে তুলে ধোরেছেন তা গ্রহণ কোরি।”
আসুন সিস্টেমটাকেই পাল্টাই-২০
“মনে রাখতে হবে, বর্তমানে মাদ্রাসা, মক্তব, মসজিদ, খানকায়, স্কুলে-কলেজে যে ইসলামটা চলছে আমরা সে ইসলামের কথা বলছি না।”
সূত্র: চলমান সংকট নিরসনে হেযবুত তওহীদের প্রস্তাবনা পৃষ্ঠা-৮
“মনে রাখতে হবে যে বর্তমানে তওহীদ ও জেহাদ বিহীন শুধুই ব্যক্তিগত কিছু আমলসর্বস্ব বিকৃত বিপরীতমুখী যে এসলামটা দুনিয়াতে চালু আছে, আমরা সেই এসলামের কথা বোলছি না।”
সূত্র: আসুন সিস্টেমটাকে পাল্টাই পৃ:৫
”আমরা আহবান করছি- বর্তমানের চালু এই ইসলামটা আসলে আল্লাহ রসুলের ইসলামই নয়, খ্রিস্টান ইসলাম, এই খ্রিস্টান ইসলাম পরিত্যাগ করে প্রত্যাখ্যান করে আবার আল্লাহ রসুলের প্রকৃত ইসলামে প্রবেশ করতে।”
এসলামের প্রকৃত রুপরেখা-২২
“কিন্তু সেই হারিয়ে যাওয়া প্রকৃত ইসলাম মহান আল্লাহ আবার দয়া করে টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী পন্নী পরিবারের সন্তান যামানার এমাম এমামুযযামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী কে বুঝিয়ে দিয়েছেন।”
সূত্র: জঙ্গিবাদ সংকট সমাধানের উপায় পৃষ্ঠা-৫০।
“প্রচলিত বিকৃত ইসলাম দিয়ে অপরাধহীন, অবিচারহীন পবিত্র সমাজ গঠন করার চিন্তাও হাস্যকর। সেটা সম্ভব শুধু আল্লাহর প্রেরিত অবিমিশ্র সত ধর্মাদর্শ দিয়ে; যা অনাবিল, অবিকৃত, স্বচ্ছ,হৃদয়গ্রাহী, প্রাকৃতিক, সকলের বোধগম্য;যা আলো-বাতাসের ন্যায় ধর্ম-বর্ণ- দেশ ও জাতি নির্বিশেষে সকল মানুষের জন্য অবারিত, উপযোগী, সহজ ও সরল; যা কোনো বিশেষ শ্রেণীর কুক্ষিগত নয়। আল্লাহর দয়ায় সেই প্রকৃত ধর্মাদর্শ আমাদের কাছে আছে যা পুনঃপুনঃ উল্লেখ ইতঃপূর্বে করা হয়েছে।”
সূত্রঃ জঙ্গিবাদ সংকট পৃষ্ঠা-৪৯
“আল্লাহ অতি দয়া করে তাঁর প্রকৃত ইসলাম যামানার এমাম জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীকে বুঝিয়েছেন। হেযবুত তাওহীদ সেই প্রকৃত ইসলামের ধারক।”
সূত্র: আদর্শিক লড়াই পৃষ্ঠা-১৫
“তিনি (পন্নী) এসলামের যে রূপ মানুষের সামনে তুলে ধোরেছেন সেটাই যে আল্লাহ রসুলের প্রকৃত এসলাম তা আল্লাহ একটি বিরাট মো’জেজা বা অলৌকিক ঘটনার মাধ্যমে সত্যায়ন কোরেছেন। এমামুযুযযামানের একটি ভাষণের মাধ্যমে মো’জেজাটি আল্লাহ ঘটিয়েছেন… তা হোল: হেযবুত তাওহীদ হক-সত্য, এর এমাম আল্লাহর মনোনীত এবং এই হেযবুত তাওহীদের মাধ্যমে সারা পৃথিবীতে আল্লাহ তাঁর সত্যদীন প্রতিষ্ঠা কোরবেন এনশাআল্লাহ।”
সূত্র: মহাসত্যের আহ্বান (ছোট) পৃষ্ঠা-১৪
“যারা ইসলামের অনুসারী হবে তারা শান্তিতে থাকবে। কিন্তু বাস্তব অবস্থা ঠিক এর বিপরীত। এই অবস্থা থেকে মানবজাতিকে উদ্ধার করার জন্য আল্লাহর দেওয়া সঠিক ও অবিকৃত এসলামের দিকে ফিরে যেতে হবে। যামানার এমাম জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী সেই প্রকৃত ইসলামের রুপরেখা মানবজাতির সামনে তুলে ধরেছেন।”
সূত্র: শিক্ষাব্যবস্থা পৃষ্ঠা-৮১
পন্নীর ইসলাম গ্রহণ করা ছাড়া কোন পথ নেই:
“এখনই জাতির সামনে একটি মাত্র পথ খোলা আছে, তা হোল এ যামানার এমাম জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীর এই ডাক গ্রহণ কোরে বর্তমানের প্রচলিত বিকৃত ও বিপরীতমুখী এসলাম ত্যাগ কোরে প্রকৃত এসলাম গ্রহণ কোরতে হবে।”
সূত্র: মহাসত্যের আহ্বান (ছোট) পৃষ্ঠা:৮
মানবজাতির এই অবস্থা থেকে উদ্ধার করার সমাধান আল্লাহ হেযবুত তওহীদের কাছেই দিয়েছেন, তাই এই মহাসত্যকে যারা গ্রহন করবে না তাদের মুক্তির উপায় নাই।
সূত্র: মহাসত্যের আহ্বান পৃষ্ঠা-২৮
ইসলাম কি বলে?
এক.
প্রিয় পাঠক! ইতিপূর্বে আপনারা দেখেছেন, ইসলাম সম্পর্কে বায়াজীদ খান পন্নী ও হেযবুত তওহীদ কত মারাত্মকভাবে আক্রমণ করেছে। ইসলাম সম্পর্কে এত এত জঘন্যতম কটুক্তি আমার জানামতে নাস্তিকরাও হয়তো করেনি। এর পেছনে তাদের মূল মূল টার্গেট হলো, উম্মতকে নবিজি মুহাম্মাদ স:এর ধর্ম থেকে বিরত রেখে পন্নীর ধর্মের দিকে আহ্বান করা।
দুই.
আল্লাহ তা‘আলা মানব জাতিকে সৃষ্টি করে তাদের জন্য ইসলামকেই একমাত্র দ্বীন হিসাবে মনোনীত করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন,
إِنَّ الدِّيْنَ عِنْدَ اللهِ الْإِسْلاَمُ
অর্থ: নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকটে একমাত্র মনোনীত দ্বীন হল ইসলাম।
সুরা আলে ইমরান আয়াত-১৯
তিন.
উপরন্তু আল্লাহ তা’য়ালা তাঁর বান্দা যেন অন্য কারো থোকায় বা খপ্পরে পড়ে না যায়, সেজন্য তিনি নিজেই সতর্ক করে পবিত্র কুরআনে ঘোষণা দিয়ে বলেন,
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا ادْخُلُوْا فِی السِّلْمِ كَآفَّةً وَّ لَا تَتَّبِعُوْا خُطُوٰتِ الشَّیْطٰنِ اِنَّهٗ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِیْنٌ
অর্থ: হে মুমিনগণ! তোমরা সর্বাত্মকভাবে ইসলামে প্রবেশ কর এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ করো না। নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
সূরা বাকারা আয়াত-২০৮
চার.
মহান রব আরো বলেন,
وَهَـذَا صِرَاطُ رَبِّكَ مُسْتَقِيمًا قَدْ فَصَّلْنَا الآيَاتِ لِقَوْمٍ يَذَّكَّرُونَ
অর্থ: আর এটাই আপনার পালনকর্তার সরল পথ। আমি উপদেশ গ্রহণকারীদের জন্যে আয়াতসমূহ পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ননা করেছি।
সুরা আন’য়াম আয়াত- ১২৬
পাঁচ.
মনে রাখতে হবে, হেযবুত তওহীদ অত্যান্ত কৌশলে এবং ভুলভাল কথা বলে ঈমানদারদেকে ধোকা দিয়ে নবিজি স: এর ইসলাম থেকে বের করে হোমিও চিকিৎসক বায়াজীদ খান পন্নী সাহেবের আবিস্কৃত নব্য ধর্মে ঢুকিয়ে মুরতাদ বানাতে চায়। আর মুরতাদদের ব্যাপারে ইসলামে কড়া আদেশ রয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন,
وَمَن یَرۡتَدِدۡ مِنكُمۡ عَن دِینِهِۦ فَیَمُتۡ وَهُوَ كَافِرࣱ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ حَبِطَتۡ أَعۡمَـٰلُهُمۡ فِی ٱلدُّنۡیَا وَٱلۡـَٔاخِرَةِۖ وَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ أَصۡحَـٰبُ ٱلنَّارِۖ هُمۡ فِیهَا خَـٰلِدُون
অর্থ: তোমাদের মধ্যে যারা নিজের দ্বীন (ইসলাম) থেকে ফিরে দাঁড়াবে এবং কাফের অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে, দুনিয়া ও আখেরাতে তাদের যাবতীয় আমল বিনষ্ট হয়ে যাবে। আর তারাই হলো দোযখবাসী। তাতে তারা চিরকাল বাস করবে।
সুরা বাকারা-২১৭
ছয়.
উপরন্তু মুরতাদদের ব্যাপারে হাদিসে এসেছে, হযরত উসমান ইবনে আফফান (রাঃ) (ছাদের) উপর থেকে বিদ্রোহীদের প্রতি তাকালেন। হত্যার ব্যাপারে আলোচনা করতে শুনে তিনি বললেনঃ তারা আমাকে হত্যার সংকল্প করছে। কেন তারা আমাকে হত্যা করবে? আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি,
لا يَحِلُّ دمُ امرئٍ مسلمٍ إلّا بإحدى ثلاثٍ رجُلٌ كفَرَ بعدَ إسلامِه أو زَنى بعدَ إحصانِه أو قتَلَ نفْسًا فيُقتَلُ بها
অর্থ: তিনটি কারণের কোন একটি বিদ্যমান না থাকলে কোন মুসলমানকে হত্যা করা বৈধ নয়। বিবাহিত ব্যক্তি যেনা করলে, তাকে রজম (প্রস্তরাঘাতে হত্যা) করা অথবা যে ব্যক্তি কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে অথবা যে ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণের পর মুরতাদ হয়ে যায়।
সূত্র: আবু দাউদ হাদিস-৪৫০২ তিরমিযি-২১৫৮ নাসাঈ-৪০১৯ ইবনে মাজা-২৫৩৩ আহমাদ-৫০৯
সাত.
পরিশেষে সকল পাঠকবৃন্দকে নবিজি স: এর একটি হাদিস দেখাতে চাই। নবিজি স: বলেন,
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَكُونُ فِي آخِرِ الزَّمَانِ دَجَّالُونَ كَذَّابُونَ يَأْتُونَكُمْ مِنَ الأَحَادِيثِ بِمَا لَمْ تَسْمَعُوا أَنْتُمْ وَلاَ آبَاؤُكُمْ فَإِيَّاكُمْ وَإِيَّاهُمْ لاَ يُضِلُّونَكُمْ وَلاَ يَفْتِنُونَكُمْ
অর্থঃ শেষ যামানায় ইসলামের বেশধারী এমন কিছু মিথ্যাবাদী প্রতারক বের হবে। যারা তোমাদের নিকট (ধর্মীয় বিষয়ে) এমন কিছু কথা বলবে, যা তোমরা তো শোনোই নাই এবং তোমাদের বাপ দাদারাও শোনে নাই। সুতরাং সাবধান! তোমরা তাদের নিকট থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকবে এবং তাদের ফিতনায় জড়িত হবে না।”
সূত্রঃ সহীহ মুসলিম হাদিস-৭ মুসনাদে আহমাদ হাদিস-৮২৬৭ ত্বহাবী হাদিস-২৯৫৪ আবু দাউদ হাদিস-৪৩৩৩ তিরমিযি হাদিস-২২১৮
সুতরাং হেযবুত তওহীদের অনুসারীদের কাছে বিনীত অনুরোধ। ফিরে আসুন। গোপনভাবে আপনার ঈমানকে নষ্ট করে মুরতাদ বানানো হচ্ছে। একটু চোখ খুলুন ভাই! প্লিজ!