শরীরে গ্লুকোজ চেকআপ: আপনার শরীরে প্রবহমান রক্তে গ্লুকোজ বা চিনির মাত্রা বেড়ে গেছে বলে ডাক্তার আপনাকে জানিয়ে দিলেন এবং পরামর্শ দিলেন, আপনাকে নিয়মিত দুই মাইল হাটতে হবে; খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে ইত্যাদি। আপনি সে অনুযায়ী আমল করছেন। অথচ আপনি কিন্তু আপনার রক্তের মধ্যে কোনো চিনি দেখেন নি। প্রশ্ন হলো কেন দেখতে পেলেন না?
: দেখতে চেয়েছিলাম।
: তারপর?
: ডাক্তার বলেছে, এটা বুঝতে যে যোগ্যতা থাকা দরকার তা আপনার মাঝে নেই।
: ঠিক একইভাবে মহান রব বলেন,
لَّا تُدۡرِكُهُ ٱلۡأَبۡصَـٰرُ وَهُوَ یُدۡرِكُ ٱلۡأَبۡصَـٰرَۖ وَهُوَ ٱللَّطِیفُ ٱلۡخَبِیرُ
সুরা আনআম : ১০৩
: হয়তো প্রশ্ন করবেন, আমি দেখি নি তো কী হয়েছে? ডাক্তার তো দেখেছেন।
: কীভাবে?
: চেকআপ করে।
: শরীরের ওপর থেকে না ভেতর থেকে?
: চেকআপ মেশিনের মাধ্যমে ভেতর থেকে।
: কেন? ডাক্তার কী নিজের চেখো দেখতে পারেন না?
: কীভাবে সম্ভব? সেটা তো শরীরে থাকা চামড়া ও রগের আবরণে থাকে।
: ভাই, যদি সামান্য শরীরের আবরণে থাকা জিনিষ দেখা না যায়, তাহলে আল্লাহপাককে কেমনে তেখতে চান? অথচ জিবরাঈল আ. বলেন,
يَا مُحَمَّدُ إِنِّي دَنَوْتُ مِنَ اللَّهِ دُنُوًّا مَا دَنَوْتُ مِنْهُ قطّ. قَالَ: وَكَيف كَانَ ياجبريل؟ قَالَ: كَانَ بَيْنِي وَبَيْنَهُ سَبْعُونَ أَلْفَ حِجَابٍ مِنْ نُورٍ.
হে মুহাম্মাদ! আমি আল্লাহর এত নিকটে গিয়েছিলাম যা কোন দিন আর যাই নি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, কিভাবে হে জিবরীল? তিনি বললেন, তখন আমার ও তাঁর মধ্যে মাত্র সত্তর হাজার নূরের পর্দা ছিল। -মিশকাত : হাদিস নং : ৭৪১
: আমার গ্লুকোজ তো ডাক্তার অন্তত দেখেছে?
: কীভাবে?
: মেশিনের সাহায্যে।
: তাহলে কোনো মাধ্যমে কেউ কোন জিনিষ দেখতে পাওয়া সেই জিনিষটাকে বিশ্বাস করার জন্য যথেষ্ট তাই বলতে চাচ্ছেন নাকি?
: অবশ্যই।
: তাহলে শুনুন, রোগীর শরীরের গ্লুকোজ যদি আপনি না দেখেও অভিজ্ঞ ডাক্তারের মেশিন সাহায্যে দেখাটা বিশ্বাস করার জন্য যথেষ্ট হয়, তাহলে আল্লাহপাক আছেন এটাও আপনাকে বিশ্বাস করা যৌক্তিক বিষয়।
: কেন?
: কারণ মানবসৃষ্টির সবচে অভিজ্ঞ পার্সন রাসুলুল্লাহ সাঃ তাঁর অন্তরের সাহায্যে মিরাজে মহান রবকে দেখেছিলেন। এটা হাদিস শরীফে সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। হযরত ইবনে আব্বাস রা. বলেন,
رَآهُ بِفُؤَادِهِ مَرَّتَيْنِ
রাসুলুল্লাহ সাঃ স্বীয় অন্তর্দৃষ্টিতে আল্লাহপাককে দু’বার দেখেছিলেন। -সহিহ মুসলিম : হাদিস নং : ১৭৬
সুতরাং যারা বুদ্ধিমান তারা ডাক্তারের কথা মেনে যদি সে অনুযায়ী চলে, তবে আশা করা যায় সে নিস্তার পাবে। আর যদি নিজেকে বড় পন্ডিত ভেবে অবিশ্বাস করে বসে থাকে, তো একদিন সে রোগে মরবে। ঠিক তেমনি নবিজি সাঃ-এর কথা অমান্য করে যারা ত্যাড়ামি করবি, তোরাও মরবি, ঠিকানা জাহান্নাম।
….বিজ্ঞানীকে না দেখে বিশ্বাস করা যুক্তিসঙ্গত
হলে মুহাম্মাদ সা. কে মানা দরকার