Home > হিজবুত তাওহীদ > নবী-রাসুলগণ কি ব্যর্থ ছিলেন?

নবী-রাসুলগণ কি ব্যর্থ ছিলেন?

সকল নবীগণ আল্লাহর দেওয়া দায়িত্ব স্বীয় স্থানে পূর্ণভাবে পালন করেছেন। কেউ তাঁদের দায়িত্বে কোনো ত্রুটি রাখেননি। কোনো নবীই ব্যর্থ হননি। এটাই মুসলিমদের আক্বীদা। নবীদের শানে কোনো ধরণের প্রশ্ন তোলা ঈমান নষ্ট হওয়ার একটি কারণ। উপরন্তু যে যত বড় নেককার উম্মত হোক না কেন, কোনো নবীর সমমূল্য হতে পারেন না। সম্ভবও নয়। কারণ নবীরা খোদ আল্লাহ কর্তৃক নির্বাচিত। কিন্তু হেযবুত তওহীদের প্রতিষ্ঠাতা পন্নী সাহেব বলছেন, এক জঘণ্যতম কথা।

হেযবুত তওহীদের দাবি:

পন্নী সাহেব তার বইয়ে লিখেছেন,

‘একদম মহাসত্য পেয়েও যেখানে নবী রসুলদের মধ্যে অনেকে ব্যর্থ হোয়েছেন,পারেন নি,সেখানে আমি কে।আমি তো কেউ না,কিছুই না।কি হবে,কি হবে না-এই সংশয় আমার ছিল ২০০৮ সনের ফেব্রুয়ারীর দুই তারিখ পর্যন্ত,পূর্ণভাবে ছিল।যদিও সেটা আমাকে দমাতে পারে নি,এজন্য যে আমি চেষ্টা কোরে যাবো,নবী রসুলরা পারেন নি আর আমি কে? আমি চেষ্টা কোরে যাবো।মো’জেজার দিনটায় আল্লাহ আমার সব সংশয় অবসান কোরেছেন,জানিয়ে দিলেন নিজে যে, (‘করো।’ এটা তার ভিডিওতে রয়েছে। কিন্তু হেযবুত তওহীদরা বইতে লেখার সময় অংশটি কেটে দিয়েছে।) হবে,উনি কোরবেন,আমি না।
সূত্র: আল্লাহর মো’জেজা হেযবুত তওহীদের বিজয় ঘোষণা, পৃ. ৬৮

ভিডিও লিংক: https://youtu.be/Z2gSXhmYWsg

উক্ত বক্তব্য দিয়ে পন্নী সাহেব দুটি কথা বলতে চেয়েছেন।
১. সকল নবীরা ব্যর্থ ছিলেন।
২. নবীরা যা পারেননি, পন্নীকে দিয়ে আল্লাহ সেটা করাবেন।

ইসলাম কি বলে?

নবীরা কি ব্যর্থ ছিলেন?

এ ব্যাপারে বুঝতে হলে, আগে নবীদের উপর অর্পিত দায়িত্ব কি ছিলো, সেটা জানতে হবে। চলুন এ ব্যাপারে পবিত্র কুরআন থেকেই জানা যাক।

নবীদের দায়িত্ব:

পবিত্র কুরআন মাজীদে আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন,

فَهَلْ عَلَى الرُّسُلِ إِلاَّ الْبَلاغُ الْمُبِينُ

অর্থ: রাসূলদের দায়িত্ব তো শুধুমাত্র সুস্পষ্ট বাণী পৌছিয়ে দেয়া।
সূরা নাহল, আয়াত: ৩৫

অপর আয়াতে আল্লাহ তা’আলা তাঁর প্রিয় হাবিব মুহাম্মাদ সা. কে জানিয়ে দিয়েছেন,

وَمَا أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ مِن رَّسُولٍ إِلَّا نُوحِي إِلَيْهِ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنَا فَاعْبُدُونِ

অর্থ: আপনার পূর্বে আমি যে রাসূলই প্রেরণ করেছি, তাকে এ আদেশই প্রেরণ করেছি যে, আমি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই। সুতরাং আমারই এবাদত করো।
সূরা আম্বিয়া, আয়াত: ২৫

সুতরাং বুঝা গেলো, নবীদের দায়িত্ব ছিলো, শুধুমাত্র দ্বীনের বাণী, তাওহীদের বাণী পৌঁছে দেওয়া। আর এ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক নবীদেরকে চুড়ান্ত বিপদে পড়তে হয়েছে। কাউকে করাত দিয়ে দ্বিখন্ডিত করা হয়েছে, কাউকে আগুনে ফেলা হয়েছে, কাউকে দেশান্তরিত করা হয়েছে, কাউকে ফাঁসি দেওয়ার অপচেষ্টা করা হয়েছে। আর আমাদের রাসুল সা. এর নির্যাতন তো লিখে বুঝানো সম্ভব নয়। সুতরাং বুঝা গেলো, আম্বিয়ায়ে কেরাম তাঁদের দায়িত্ব পালনে কোনো ত্রুটি রাখেননি। সুতরাং পন্নী সাহেবের এমন গর্হিত বক্তব্য নবী-রাসূলগণের আ. রিসালাতের উপর মারাত্মক অপবাদ ছাড়া আর কিছুই নয়।

দুই.
নবীরা যা পারেননি, পন্নীকে দিয়ে আল্লাহ সেটা করাবেন?

পন্নী সাহেবের আরেকটা দাবি ছিলো, নবীরা যা পারেননি, পন্নীকে দিয়ে আল্লাহ সেটা করাবেন। এটা একটা ডাহা মিথ্যাচার। যার বাস্তব প্রমাণ হলো, পন্নী সাহেব ২০১২ সালে মারা গিয়েছেন। কিন্তু তার মাধ্যমে পুরো বিশ্বে সে দ্বীন পৌঁছায়নি। বরং বাংলাদেশেও মুষ্টিময় লোক ছাড়া কেউ তার মতবাদ গ্রহণ করেনি। তাহলে এটা কি সত্য নয় যে, পন্নী আল্লাহর নামে মিথ্যাচার করে মারা গেছেন? সুতরাং যে লোকটি আল্লাহর নামে এমন জঘন্য মিথ্যাচার করতে পারে, এমন মহামিথ্যুক কিভাবে যামানার এমাম হয়? এবং এমন মিথ্যুকের মতবাদ কিভাবে সুস্থ মানুষ গ্রহণ করে, আমাদের বোধগম্য নয়। এমন মিথ্যুকদের ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলা বলেন,

وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَى عَلَى اللّهِ كَذِبًا أَوْ كَذَّبَ بِآيَاتِهِ إِنَّهُ لاَ يُفْلِحُ الظَّالِمُونَ

অর্থ: আর যে, আল্লাহর প্রতি অপবাদ আরোপ করে অথবা তাঁর নিদর্শনাবলীকে মিথ্যা বলে, তার চাইতে বড় জালেম কে? নিশ্চয় জালেমরা সফলকাম হবে না।
সূরা আন’আম, আয়াত: ২১

Check Also

সংস্কৃতি ও ইসলাম এবং হেযবুত তওহীদের ভ্রান্তি:

ইসলাম একটা পূর্ণাঙ্গভাবে জিবন ব্যবস্থা। প্রত্যেকটি বিষয়ের বিধি-বিধান ইসলাম জানিয়ে দিয়েছে। ছবি অঙ্কন, মুর্তি-ভাষ্কর্য নির্মান …

২ comments

  1. আমরা মুসলিম হিসেবে তাদেরকে বয়কট করা একান্ত জরুরি

  2. হিজবুত তাওহিদ কি কাফের। যদি কাফের হয়ে থাকে তা হলে কাদিয়ানী দের জন্য যে ভাবে আনদোলন করা হচ্ছে সে ভাবে হিজবুত তাওহীদের বেপারে করা হোক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.