Home > মওদুদী ফিৎনা > খোচাখোচা দাড়ি ও মওদুদী :

খোচাখোচা দাড়ি ও মওদুদী :

দাড়ি না রাখা , মুন্ডিয়ে ফেলা বা এক মুষ্ঠির কম রাখা হারাম ও কবীরা গুনাহ। যে দাড়ি মুন্ডায় বা এক মুঠের চেয়েও ছোট করে ফেলে, তার আমল নামায় পুনরায় দাড়ি এক মুঠ পরিমাণ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত কবীরা গুনাহ লেখা হতে থাকে। কেননা শরীয়তের হুকুম হল, দাড়ি কমপক্ষে এক মুঠ পরিমাণ রাখা। তাই এর চেয়ে দাড়ি ছোট করে ফেললে বা মুন্ডিয়ে ফেললে যতক্ষন পর্যন্ত সে দাড়ি এক মুঠ পরিমাণ না হবে, ততক্ষন পর্যন্ত সে শরীয়তের হুকুম অমান্যকারী সাব্যস্ত হবে এবং তার নামে গুনাহ লেখা হতে থাকবে । অন্যান্য গুনাহ সাময়িক ও অস্থায়ী, কিন্তু দাড়ি মুন্ডানো এমন কবীরা গুনাহ যা ছোট করা বা মুন্ডানোর ফলে গুনাহ চলমান থাকে। সুতরাং যে ব্যক্তি দাড়ি মুন্ডায় বা এক মুঠের চেয়ে ছোট করে, সে ফাসিক।

মওদুদী সাহেব কী বলেন?
কিন্তু জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা মওদুদী সাহেব দাড়ি সম্পর্কে তার দৃষ্টিভঙ্গি তার লেখনীতে স্পষ্ট করেছেন। তার বক্তব্যমতে বুঝা যায়-
১. দাড়ি একটা অনর্থক বিষয়।
২. দাড়ির কোনো সীমারেখা নির্ধারণ করা দ্বীনের বিকৃতি ও বিদআত।
চলুন আগে মওদুদী সাহেবের বক্তব্যগুলো দেখে নেওয়া যাক। মওদুদী সাহেবের বক্তব্যগুলো হুবহু তার বই থেকে এবং বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর করা বঙ্গানুবাদ হুবহু তুলে ধরা হলো। মওদুদী সাহেব বলেন,
داڑھی کے متعلق نبی صلی اللہ علیہ وسلم نے کوئی مقدار مقرر نہیں کی ہے صرف یہ ہدایت فرمائی ہے کہ رکھی جائے آپ اگر داڑھی رکھنے میں فاسقین کی وضعوں سے پرہیز کریں اتنی داڑھی رکھ لیں جس پر عرف عام میں داڑھی رکھنے کا اطلاق ہوتا ہو جسے دیکھ کر کوئی شخص اس شبہ میں مبتلا نہ ہو کہ شاید چند روز سے آپ نے داڑھی نہیں مونڈی ہے تو شارع کا منشا پورا ہو جاتا ہے،خواہ اہل فقہ کی استنباطی شرائط پر وہ پوری اترے یا نہ اترے
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাড়ির কোনো পরিমাণ নির্ধারণ করে যাননি। তিনি কেবলমাত্র দাড়ি রাখার নির্দেশ দিয়ে গেছেন। দাড়ি রাখার ব্যাপারে আপনি যদি ফাসিকদের অনুকরণ না করেন এবং এতটা পরিমাণ দাড়ি রেখে দেন যা দেখে সাধারণভাবে লোকেরা বুঝতে পারবে যে, আপনি দাঁড়ি রেখেছেন, তবে শরীয়ত প্রণেতার উদ্দেশ্য পূর্ণ হয়ে যাবে। এতে ফকিহদের গবেষণা শর্তাবলী পূরণ হোক বা না হোক তাতে কিছু যায় আসেনা। -রসায়েল ও মাসায়েল (উর্দূ) খ. ১ পৃ. ১১৪ রসায়েল ও মাসায়েল (বাংলা) খ. ১ পৃ. ১১৩

মওদুদী সাহেব দাড়ি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন,
آپ کا یہ خیال کہ نبی صلی اللہ علیہ وسلم جتنی بڑی داڑھی رکھتے تھے اتنی ہی بڑی داڑھی رکھنا سنت رسول یا اسوہ رسول ہے، یہ معنی رکھتا ہے کہ آپ عادات رسول کو بعینہ وہ سنت سمجھتے ہیں جس کے جاری اور قائم کرنے کے لئے نبی صلی اللہ علیہ وسلم اور دوسرے انبیاء علیہم السلام مبعوث کیے جاتے رہے ہیں۔مگر میرے نزدیک صرف یہی نہیں کہ یہ سنت کی صحیح تعریف نہیں ہے،بلکہ میں یہ عقیدہ رکھتا ہوں کہ اس قسم کی چیزوں کو سنت قرار دینا اور پھر ان کے اتباع پر اصرار کرنا ایک سخت قسم کی بدعت اور ایک خطرناک تحریف دین ہے جس سے نہایت برے نتائج پہلے بھی ظاہر ہوتے رہے ہیں اور آئندہ بھی ظاہر ہونے کا خطرہ ہے۔
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যতো লম্বা দাড়ি রেখেছেন ততো লম্বা দাড়ি রাখাই হলো সুন্নাতে রাসূল বা উসওয়ায়ে রাসূল’, আপনার এ ধারণার অর্থ এই দাঁড়ায় যে আপনি রসূলের অভ্যাসকে হুবহু রসুলের সেই সুন্নাতের সমমর্যাদা সম্পন্ন মনে করছেন, যা জারি ও প্রতিষ্ঠা করার জন্যে নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং অন্যান্য আম্বিয়ায়ে কেরাম প্রেরিত হয়েছিলেন। আমার মতে এটা যে সুন্নাতের সঠিক সংজ্ঞা নয় শুধু তাই নয় বরঞ্চ এর সম্পর্কে আমার আকিদাই হলো, এ ধরনের জিনিসকে সুন্নাত বলে আখ্যায়িত করা এবং তার অনুসরণের জন্য বাড়াবাড়ি করা এটা মারাত্মক ধরনের বিদআত এবং এটা দ্বীনের একটা বিপজ্জনক বিকৃতি যার মন্দ পরিনতি পূর্বেও প্রকাশিত হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও প্রকাশ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। -রসায়েল ও মাসায়েল (উর্দূ) খ. ১ পৃ. ১৯৪-১৯৫; রসায়েল ও মাসায়েল (বাংলা) খ. ১ পৃ. ১৮৩

মওদুদী সাহেব উক্ত বক্তব্যে বুঝাতে চেয়েছেন, দাড়ি নবিজি সা.-এর ব্যক্তিগত অভ্যাস, যাকে সুন্নাত মনে করা চরম পর্যায়ের বিদআত ও বিকৃতি। তিনি আরও বলেন,
داڑھی کے متعلق شارع نے نے کوئی حد مقرر نہیں کی ہے علماء نے جو حد مقرر کرنے کی کوشش کی ہے وہ بہرحال ایک استنباطی چیز ہے اور کوئی استنباط کیا ہوا حکم وہ حیثیت حاصل نہیں کر سکتا جو نص کی ہوتی ہے
শরীয়ত প্রণেতা দাড়ির ব্যাপারে কোন সীমারেখা নির্ধারণ করে দেননি। আলিমগণ যে সীমা নির্ধারণের চেষ্টা করেছেন, তা একটি গবেষণালব্ধ জিনিস মাত্র আর কোনো গবেষণালব্ধ বিধান কখনো এমন মর্যাদা লাভ করে না, যে মর্যাদা রয়েছে কুরআন হাদীস প্রদত্ত বিধানের। -রসায়েল ও মাসায়েল (উর্দূ) খ. ১ পৃ. ১১৭ ; রসায়েল ও মাসায়েল (বাংলা) খ. ১ পৃ. ১১৬

آپ کا قلب جس چیز پر گواہی دے آپ کو خود اس پر عمل کرنا چاہیے میرے نزدیک کسی کی ڈاڑھی کے چھوٹے یا بڑے ہونے سے کوئی خاص فرق واقع نہیں ہوتا اصل چیز جو آدمی کے ایمان کمی اور بیشتی پر دلالت کرتی ہے وہ تو اور ہی یے
আপনার মন যে বিষয়ে সাক্ষ্য প্রদান করে, সেটাই আপনার নিজের জন্য করা উচিৎ। আমার মতে কারো দাড়ি ছোট কিংবা বড় হবার মধ্যে কোনো বিষেশ পার্থক্য হয় না।এটা এমন কোন মূল বিষয় নয়, যা মানুষের ঈমান কম বা বেশি হবার প্রমাণবহ। মূল বিষয় হলো, (মানুষের ঈমান কম বা বেশি হবার প্রমাণ) সেটা তো ভিন্ন জিনিষ। -রসায়েল ও মাসায়েল (উর্দূ) খ. ১ পৃ. ১১৮ ; রসায়েল ও মাসায়েল (বাংলা) খ. ১ পৃ. ১১৭

اگر کسی کی حقیقی جاں نثاری و وفاداری اللہ تعالٰی کی راہ میں طویل ہو تو کوئی بڑا نقصان نہ ہو جائےگا اگر اس کی ڈاڑھی قصیر ہو لیکن اگر جاں نثاری و وفاداری قصیر ہو تو یقین رکھے کہ ڈاڑھی کا طویل کچھ بھی فائدہ نہ دیگا بلکہ بعید نہیں کہ خدا کے ہاں اس پر فریب کاری اور مکاری کا مقدمہ چل جائے
কোনো ব্যক্তির আনুগত্যতা ও প্রাণান্তকর সংগ্রাম যদি আল্লাহর পথে হয় ‘দীর্ঘ’ তবে তেমন কোনো ক্ষতি হয়ে যাবে না, যদি তার দাড়ি হয় হ্রস্ব।কিন্তু যদি তার আনুগত্য প্রাণান্তকর সংগ্রামই হয় হ্রস্ব, তবে দৃঢ় বিস্বাস রাখুন যে, দীর্ঘ দাড়ি তার কোনো কল্যাণেই আসবে না। বরঞ্চ এটাও অসম্ভব নয় যে, খোদার দরবারে তার বিরুদ্ধে ধোঁকাবাজীর মোকদ্দমা দায়ের হয়ে যাবে। -রসায়েল মাসায়েল (উর্দূ) খ. ১ পৃ. ১১৮-১১৯ ; রসায়েল মাসায়েল (উর্দূ) খ. ১ পৃ. ১১৭

اسماء الرجال اور سیرت کی کتابوں میں تلاش کرنے سے مجھے بجز دو تین صحابیوں کے کسی کی ڈاڑھی کی مقدار معلوم نہیں ہو سکی ہے۔صحابہ کے حالات پر صفحے کے صفحے لکھے گئے ہیں مگر ان کے متعلق یہ نہیں لکھا گیا کہ ان کی داڑھی کتنی تھی۔اس سے اندازہ لگایا جا سکتا ہے کہ سلف میں یہ مقدار کا مسئلہ کتنا غیر اہم اور ناقابل توجہ تھا، حالاں کہ متاخرین میں جس شدت سے اس پر زور دیا جاتا ہے،اس سے ایسا معلوم ہوتا ہے کہ شاید مومن کی سیرت و کردار میں پہلی چیز جس کی جستجو ہونی چاہیے وہ یہی ہے کہ اس کی داڑھی کا طول کتنا ہو
আসমাউর রিজাল’ এবং জীবন চরিত (সিয়ার) গ্রন্থাবলী অনুসন্ধানের পর দু’তিনজন বাদে অন্য সাহাবীদের দাড়ির পরিমাণ জানা সম্ভব হয়নি। সাহাবায়ে কিরামের জীবন চরিত সম্পর্কে অসংখ্য পৃষ্টা রচনা করা হয়েছে। কিন্তু তাঁদের দাড়ি কতটা লম্বা ছিল সে সম্পর্কে কিছুই লেখা হয়নি। এ থেকে অনুমান করা যেতে পারে যে, সালফে সালেহীনের মধ্যে দাড়ির পরিমাণ সংক্রান্ত মাসআলা কতটা গুরুত্বতীন ও নগণ্য ছিলো। অথচ পরবর্তীকালে লোকদের মধ্যে যতটা কড়াকড়িভাবে এ বিষয়ের প্রতি জোর দেওয়া হয়ে আসছে তাতে মনে হচ্ছে যে মুমিনের চরিত্র বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সর্বপ্রথম যে জিনিসটি অনুসন্ধান করতে হবে, তা হচ্ছে; তার দাড়ি কতটা লম্বা। -রসায়েল ও মাসায়েল (উর্দূ) খ. ১ পৃ. ১১৮ ; রসায়েল ও মাসায়েল (বাংলা) খ. ১ পৃ. ১১৬-১১৭

اسی طرح داڑھی کے معاملے میں جو شخص حکم کا یہ منشا سمجھتا ہو کہ اسے بلا نہایت بڑھنے دیا جائے،وہ اپنی اس رائے پر عمل کرے،اور جو شخص کم سے کم مشت کو حکم کا منشا پورا کرنے کے لئے ضروری سمجھتا ہو وہ اپنی رائے پر عمل کرے اور جو شخص مطلقا داڑھی رکھنے والے کو(بلا قید مقدار) حکم کا منشا پورا کرنے کے لئے کافی سمجھتا ہو،وہ اپنی رائے پر عمل کرے،ان تینوں گروہوں میں سے کسی کو بھی یہ کہنے کا حق نہیں ہے کہ استنباط و اجتہاد سے جو رائے اس نے قائم کی ہے،وہی شریعت ہے اور اس کی پیروی سب لوگوں پر لازم ہے۔ایسا کہنا اس چیز کو سنت قرار دینا ہے جس کے سنت ہونے کا کوئی ثبوت نہیں ہے اور یہی وہ بات ہے جس کو میں بدعت کہتا ہوں
তেমনি করে দাড়ি সম্পর্কেও একই কথা। কোন ব্যক্তি ইচ্ছা করলে দাড়ি লম্বা করে নিচের দিকে ছেড়ে দিতে পারে এবং সে নিজের মতের উপর নিজে আমল করে যেতে পারে। আবার অন্য ব্যক্তি অন্তত এক মুষ্টি লম্বা করাকে শরীয়তের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য জরুরী মনে করতে পারে এবং সে নিজের মতের উপর আমল করতে পারে। আবার কোনো ব্যক্তি পরিমাণ নির্ধারণ না করে কেবল দাড়ি রাখাকে শরীয়তের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য যথেষ্ট মনে করে তার উপর আমল করতে পারে। এই তিন প্রকার লোকের কারোই এ কথা বলার অধিকার নেই যে, গবেষণা ইজতেহাদ দ্বারা আমি যে মত কায়েম করেছি সেটাই শরীয়ত এবং সকলের জন্য সে মতের অনুসরণ করা জরুরি। এমনটি করার অর্থ হলো, সেই জিনিসকে সুন্নাত বলে আখ্যায়িত করা। যা সুন্নত হবার ব্যাপারে কোনো প্রমাণ নেই। এ জিনিষকেই বলা হয় বিদ’আত। -রসায়েল ও মাসায়েল (উর্দূ) খ. ১ পৃ. ২০০ ; রসায়েল ও মাসায়েল (বাংলা) খ. ১ পৃ. ১৮৮

প্রিয় পাঠক, উপরোক্ত বক্তব্যগুলো থেকে মওদুদী সাহেবের কয়েকটি দাবি প্রমাণ হয়। ১. দাড়ি ইসলামে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। ২. দাড়ি নবিজির সা. একান্তই ব্যক্তিগত অভ্যাস যা সুন্নাত মনে করা বিদআত ও দ্বীনের বিকৃতি। ৩. দাড়ি লম্বা হোক বা খাটো হোক কোনো সমস্যা নেই। ৪. এক মুষ্ঠি সীমা নির্ধারণ করা দ্বীনের বিকৃতি। নাউযুবিল্লাহ। তাহলে চলুন দেখা যাক দাঁড়ি সম্পর্কে ইসলামের কনসেপ্ট কী সেটা দেখা যাক।

ইসলাম কী বলে?
দাড়ি মুসলিমদের ধর্মীয় সংস্কৃতি। যা মুসলিম হিসাবে কাউকে চেনার প্রাথমিক একটি চিহ্ন। পুরুষের মুখে দাড়ি ইসলামের এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু এ বিষয়কে নিয়ে সমাজে বিভিন্ন ধরণের মন্তব্য শোনা যায়। কেউ বাড়াবাড়ি করে এক মুষ্ঠির বেশি অংশ কাটাকে ফাসেকী কাজ বলে তাবেয়ীনে কেরাম, সাহাবায়ে কেরাম এমনকি নবিজি সা. কেও ফাসেক বানাতে হাত কাঁপে না। আবার এক গ্রুপ দাড়ি কেটে-ছেটে পশ্চিমাদের মত ছাটাকেও ইসলাম বলে প্রচার করতে চায়। কিন্তু উপমহাদেশের আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাতের অনুসারী দেওবন্দী মাসলাকের মতবাদ হলো, এক মুষ্ঠির থেকে ছোট করা হারাম, আর এক মুষ্ঠির থেকে অতিরিক্ত অংশ কাটা বা ছাটা জায়েয। এই দাঁড়িকে নিয়ে বাতিলদের ভেতর অনেক বাড়াবাড়ি এবং ছাড়াছাড়ি দেখা যায়। এ সম্পর্কে এ পর্বে আলোচনা করবো। ইনশাআল্লাহ। এর আগে দাড়ি কাকে বলে এ বিষয়ে জানা দরকার।

দাড়ির সংজ্ঞা
ইবনে আবেদীন শামী রহ. বলেছেন, পরিভাষায় দাড়ি বলা হয়
الشعر النابت على الخدين من عذار وعارض والذقن
যা উভয় গাল, কানপট্টির উপর,গালের সামনের অংশ,এবং থুতনি সবকিছুকেই মূলত দাড়ি বলা হয়ে থাকে। -রদ্দুল মুহতার খ. ১ পৃ. ২১৫

দাড়ি সম্পর্কে পবিত্র কুরআন ও হাদিসে নববীতে অসংখ্য বর্ণনা রয়েছে। কয়েকটি দলীল নিচে পেশ করা হলো-

কুরআন শরীফের আয়াত থেকে দলীল
এক. দাড়ি কামানো আল্লাহর সৃষ্টিতে পরিবর্তন করার নামান্তর:
অথচ শরীরে এমন কোনো কাজ করা জায়েয নেই, যা আল্লাহর সৃষ্টিতে পরিবর্তন বয়ে আনে। যেমন ভ্রুপ্লাক করা ইত্যাদী। তবে যেসকল বিষয়ে আয়াত-হাদিসের মাধ্যমে অঙ্গের কোনো অংশ কাটার কথা এসেছে সেগুলো জায়েয। যেমন, নক কাটা, চুল কাটা ইত্যাদী। বাকি সকল ক্ষেত্রে মানুষকে আল্লাহ তা’আলা যেভাবে সৃষ্টি করেছেন, ঠিক সেভাবে থাকা হলো, আল্লাহর চাওয়া। কারণ বিতাড়িত শয়তান আল্লাহর সাথে চ্যালেঞ্জ করার সময় বলেছিলো,
وَلآمُرَنَّهُمْ فَلَيُغَيِّرُنَّ خَلْقَ اللّهِ وَمَن يَتَّخِذِ الشَّيْطَانَ وَلِيًّا مِّن دُونِ اللّهِ فَقَدْ خَسِرَ خُسْرَانًا مُّبِينًا
এবং তাদেরকে আল্লাহর সৃষ্ট আকৃতি পরিবর্তন করতে আদেশ দেব। যে কেউ আল্লাহকে ছেড়ে শয়তানকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, সে প্রকাশ্য ক্ষতিতে পতিত হয়। সুরা আলে ইমরান : ১১৯

উক্ত আয়াত দ্বারা আমরা বুঝতে পারলাম যে, শয়তানের বড় টার্গেট হলো, আল্লাহর সৃষ্টির নমুনা যেন মানুষ পাল্টে ফেলে সেটাই শয়তানের চ্যালেঞ্জে সফলতার জন্য বড় পাওয়া। একারনেই ভ্রুপ্লাক করা, উল্কি অঙ্কণ করা ইত্যাদীর মাধ্যমে আল্লাহর সৃষ্টির নমুনা পরিবর্তন করা ইসলামে হারাম করা হয়েছে। এজন্য উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা কুরতুবী রহ. বলেন,
وَكَذَا لَا يَجُوزُ لَهَا حَلْقُ لِحْيَةٍ أَوْ شَارِبٍ أَوْ عَنْفَقَةٍ إِنْ نَبَتَتْ لَهَا لِأَنَّ كُلَّ ذَلِكَ تَغْيِيرُ خَلْقِ اللَّهِ
দাড়ি, মোচ এবং ঠোটের নিচের পশম গজালে তা মুণ্ডন করা জায়েয হবে না। কারণ এটা আল্লাহর সৃষ্টির পরিবর্তনের অন্তুর্ভূক্ত। -তাফসীরে কুরতুবী খ. ৩ পৃ. ২৫২

দুই. দাড়ি কামানো অঙ্গহানীর নামান্তর:
উপরন্তু শরীরের যেকোনো অঙ্গহানি করা ইসলামে পপরিস্কার হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন,
لَا تَبْدِيلَ لِخَلْقِ اللَّهِ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ
আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই। এটাই সরল ধর্ম। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না। -সুরা রুম : ৩০

উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনে কাসীর রহ. বলেন,
قَالَ بَعْضُهُمْ مَعْنَاهُ لَا تُبَدِّلُوا خَلْقَ اللَّهِ
কেউ কেউ বলেন, এ আয়াতের অর্থ হলো, তোমরা আল্লাহর সৃষ্টি পরিবর্তন করো না। -তাফসীরে ইবনে কাসীর খ. ১১ পৃ. ২৬

অর্থাৎ আয়াতটি থেকে আমরা বুঝতে পারলাম, ‘আল্লাহর কোনো সৃষ্টি পরিবর্তন করা তথা অঙ্গহানি করা জায়েয নয়’। এজন্য হাদিসের মধ্যে এসেছে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ইয়াযীদ আনসারী রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন
نَهَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ النُّهْبَى وَالْمُثْلَةِ
নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লুটতরাজ করতে এবং জীবকে বিকলাঙ্গ বা অঙ্গহানি করতে নিষেধ করেছেন। -সহিহ বুখারী : হাদিস নং : ২৪৭৪

আরও স্পষ্টরুপে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত নবিজি সা. বলেছেন,
مَن مثَّل بالشِّعرِ فليس له عندَ اللهِ خَلاقٌ
যে ব্যক্তি চুল মারফত অঙ্গহানি করবে, তার জন্য আল্লাহর কাছে কোনো প্রতিদান থাকবে না। -মাজমাউয যাওয়ায়েদ খ. ৮ পৃ. ১২৪

দাড়ি মুণ্ডানো কি অঙ্গহানি?
এ সম্পর্কে আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুর রহমান আল-মাগরিবী রহ. বলেন,
حلق اللحية لا يجوز وكذلك الشارب وهو مثلة وبدعة
দাড়ি মুণ্ডানো জায়েয নয়, এমনিভাবে মোচ মুণ্ডানো। কারণ এটা অঙ্গহানি এবং বিদ’আত। -মাওয়াহেবুল জলিল খ. ১ পৃ. ৩১৩

সুতরাং বুঝা গেল, দাড়ি মুণ্ডানো যেহেতু অঙ্গহানি বা বিকলাঙ্গের মধ্যে অন্তুর্ভূক্ত, সেহেতু উক্ত আয়াতদ্বয়ের কারণে দাঁড়ি মুণ্ডানোর সুযোগ নেই।

হাদিস থেকে দলীল:
দাড়ি রাখার ব্যাপারে সহিহ হাদিসে সুস্পষ্টভাবে আদেশ করা হয়েছে। সুতরাং উক্ত আয়াত থেকে বুঝা গেলো, দাড়ি মুন্ডানো মানেই শয়তানের চ্যালেঞ্জে সাহায্য করা। যা সুস্পষ্ট গুনাহ।

এক. হাদিস শরীফে এসেছে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,
عَنِ النبيِّ ﷺ أنّه أمَرَ بإحْفاءِ الشَّوارِبِ، وإعْفاءِ اللِّحْيَةِ
রাসুলুল্লাহ সা. আমাদেরকে গোঁফ খাটো করতে এবং দাড়ি লম্বা করতে আদেশ করেছেন। -সহিহ মুসলিম : হাদিস নং : ২৫৯

দুই. হযরত আবু হুরায়রা রা. হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সা. বলেছেন,
قُصُّوا الشَّوَارِبَ وَأَعْفُوا اللِّحَى
তোমরা গোঁফ অধিক ছোট করবে এবং দাড়ি ছেড়ে দিবে। -মুসনাদে আহমাদ : হাদিস নং : ৭১৩২

তিন. দাড়ি মুণ্ডন করা অমুসলিমদের কালচার:
হযরত আবু উমামা বাহিলী রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমরা সাহাবায়ে কেরাম রা. একদা রাসুল সা. কে বললাম,
يا رسولَ اللهِ إنّ أهلَ الكِتابِ يَقُصُّونَ عَثانينَهم ويُوَفِّرونَ سِبالَهم قال فقال النَّبيُّ ﷺ قُصُّوا سِبالَكم ووَفِّروا عَثانينَكم وخالِفوا أهلَ الكتابِ
হে আল্লাহর রাসূল সা. আহলে কিতাব তথা ইহুদী ও খৃষ্টানরা দাড়ি মুন্ডন করে এবং গোঁফ লম্বা করে। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, তোমরা গোঁফসমূহ খাটো করে ফেল এবং দাড়িগুলো ছেড়ে দাও। আর (এভাবেও) আহলে কিতাবদের বিরোধিতা কর। -মুসনাদে আহমাদ : হাদিস নং : ২২২৮৩

উক্ত হাদিসে অমুসলিমদের বিরোধীতা করার জন্য দাড়ি লম্বা করার কথা খোদ নবিজি সা. বলেছেন।

চার. দীর্ঘ এক হাদিসে বর্ণিত আছে,
ودخلا على رسول الله صلى الله عليه وسلم وَقَدْ حَلَقَا لِحَاهُمَا وَأَعْفَيَا شَوَارِبَهُمَا فَكَرِهَ النَّظَرَ إليهما ثم أَقْبَلَ عَلَيْهِمَا فَقَالَ وَيْلَكُمَا مَنْ أَمَرَكُمَا بِهَذَا قَالا أَمَرَنَا بِهَذَا رَبُّنَا يَعْنِيَانِ كِسْرَى فَقَالَ رسول الله لَكِنَّ رَبِّي قَدْ أَمَرَنِي بِإِعْفَاءِ لِحْيَتِي وَقَصِّ شَارِبِي
রাসুলুল্লাহ সা. এর কাছে দু’জন (মুশরিক) আগমন করলেন, যাদের মোচ লম্বা এবং দাড়ি মুণ্ডানো ছিলো। নবিজি সা. তাদের দিকে তাকাতে অনীহা পেশ করে বললেন, ‘তোমরা ধ্বংশ হও! কে তোমাদেরকে এমনটা করতে বলেছে? তারা দু’জন বললেন, আমাদের প্রভূত কেসরার বাদশা। অতপর রাসুলুল্লাহ সা. বললেন, কিন্তু আমার রব আমাকে দাড়ি লম্বা এবং মোচ ছোট করার আদেশ দিয়েছেন। -তারীখে তাবারী খ. ২ পৃ. ১৪৩

পাঁচ. ইবনু উমার রা. সূত্রে নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন,
عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏خَالِفُوا الْمُشْرِكِينَ وَفِّرُوا اللِّحَى وَأَحْفُوا الشَّوَارِبَ
তোমরা মুশরিকদের উল্টো করবে, দাড়ি লম্বা রাখবে, গোঁফ ছোট করবে। -সহিহ বুখারী : হাদিস নং : ৫৮৯২

প্রিয় পাঠক, দাড়ি লম্বা রাখার নির্দেশ সংক্রান্ত অনেক সহিহ হাদিস বিভিন্ন শব্দে বর্ণিত হয়েছে। যেমন-
এক. إعفاء اللحى (ইফা) সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-১২২১
দুই. أعفوا اللحى (আ’ফু) সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৮৯৩
তিন. أَرْخُوا اللِّحَى (আরখু) সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬০
চার. أَوْفُوا اللِّحَى (আওফু) সহীহ মুসলিম হাদীস নং-২৫৯
পাঁচ. وَفِّرُوا اللِّحَى (ওয়াফ্ফিরু) সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৮৯২
ছয়. أوفِروا اللِّحى (আওফিরু) জামে সগীর, হাদিস নং- ৩৮৭৮

এ সকল হাদিসে দাড়ি লম্বা করার আদেশ করা হয়েছে। মূণ্ডানোর নির্দেশ তো দূরের কথা অনুমতি সংক্রান্ত কোন জাল হাদীসও নেই। আরও দেখতে চাইলে দেখুন। সহিহ মুসলিম হাদিস নং- ২৫৯ আল মু’জামুল আওসাত (তাবরানী) খ. ৯ পৃ. ১৬২ বায়হাকী, হাদিস নং- ২৮৬৪ মাজমাউয যাওয়ায়েদ খ. ৮ পৃ. ৪১ মুসনাদে আহমাদ,হাদিস নং- ৪৬৫৪  ডাড়হী আওর ইসলাম (বাবুনগরী) পৃ. ২৮

প্রিয় পাঠক, উপরোক্ত কুরআনের আয়াত ও হাদিসসমূহ থেকে এ কথা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, দাড়ি মুণ্ডানো ইসলামের কোনভাবেই বৈধ নয়।

মাযহাবের অভিমত:
হানাফী : দাড়ি মুণ্ডানোর ব্যাপারে হানাফী মাযহাবের সুস্পষ্ট বক্তব্য কী এ ব্যাপারে হানাফী মাযহাবের অন্যতম ব্যক্তিত্ব ইমাম শামী রহি. বলেন-
ويحرم على الرجل قطع لحيته
পুরুষের জন্য দাড়ি মুণ্ডানো হারাম। -রদ্দুল মুহতার : খ. ৯ পৃ. ৫৮৩

মালেকী
মালেকী মাযহাবের শায়েখ আদ্দুসুকী রহি. বলেন,
يحرم على الرجل حلق لحيته
পুরুষের জন্য দাড়ি মুণ্ডানো হারাম। -হাশিয়াতুদ দুসুকী খ. ১ পৃ. ১৫০

হাম্বলী:
হাম্বলী মাযহাবের প্রশিদ্ধ ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহি. বলেন,
ويحرم حلق اللحية
দাড়ি মুণ্ডানো হারাম। -আল ফাতাওয়া আল কুবরা, খ. ৫ পৃ. ৩০২

শাফেয়ী:
এ ব্যাপারে শাফেয়ী মাযহাবের ফাতাওয়া খোদ ইমাম শাফেয়ী রহি. বলেন,
وهو وإن كان في اللحية لا يجوز
মুণ্ডানোর বিষয়টি যদি দাড়ির ক্ষেত্রে হয়ে থাকে, তাহলে সেটা তো জায়েযই নেই। -কিতাবুল উম্ম খ. ৭ পৃ. ২০৩

সালাফী:
সালাফী মাযহাবের অন্যতম মূখপাত্র বিন বায রহি. বলেন,
وليس لأحد من الناس الأخذ منها ولا حلقها ولا تقصيرها، بل يجب إعفاؤها وتوفيرها وإرخاؤها، عملاً بقول النبي
নবিজি সা. এর নির্দেশ মোতাবেক কোনো পুরুষের জন্য দাড়ি মুণ্ডানো, কাটা বা ছাটা জায়েয নেই বরং লম্বা করা ওয়াজিব। -নূরুন আলাদ্দারব খ. ১ পৃ. ৫৮৭

জাহেরী মাযহাব:
ইমাম দাউদ জাহিরি রহি. বলেন,
والمذهب الظاهري قال حلق اللحية حرام
জাহেরী মাযহাব হলো, দাড়ি মুণ্ডন করা হারাম। -আল-বুরহানুল মুবিন খ. ১ পৃ. ৪৬৫

ইজমায়ে উম্মাত:
শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহি. বলেন,
ويُحرم حلق اللحية للأحاديث الصحيحة ولم يُبحه أحد
দাড়ি রাখার ব্যাপারে বিশুদ্ধ হাদীছ বর্ণিত হওয়ায় তা মুন্ডন করা হারাম। আর এটিকে কেউ বৈধ বলেননি। -আল-বুরহানুল মুবিন খ. ১ পৃ. ৪৬৫

প্রিয় পাঠক, উপরোক্ত আলোচনা থেকে এ কথা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, দাড়ি মুণ্ডন করা ইসলামে পরিস্কার হারাম। কিন্তু এক মুষ্ঠির অতিরিক্ত অংশ কাটা বা ছাটা বৈধ। নিন্মে এ সম্পর্কে আলোচনা তুলে ধরা হলো।

এক মুষ্ঠির দলীল :
এক মুষ্ঠি দাড়ির অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলা নবীজি সা. সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীনদের আমল থেকে প্রমাণিত থাকায় এক মুষ্ঠির অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলার অনুমতি দিয়েছেন ফুকাহায়ে কেরাম। কারণ এক মুষ্ঠির অতিরিক্ত অংশ যদি কেটে ফেলা বৈধ না হতো, তাহলে খোদ নবিজি সা. সাহাবায়ে কেরাম ও তাকেয়ীনরা তা করতেন না। চলুন নিচে প্রমাণগুলো দেখা যাক।

নবিজি সা. এর আমল:
আমর ইবনু শুআইব রহ, হতে পর্যায়ক্রমে তাঁর পিতা ও দাদার সূত্রে বর্ণনা করেন,
عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَأْخُذُ مِنْ لِحْيَتِهِ مِنْ عَرْضِهَا وَطُولِهَا
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দৈঘ্যে-প্রস্থে দু দিকে তার দাড়ি মুঠ করে ছাটতেন। -জামে তিরমিযি হাদিস: ২৭৬২

হাদিসটির মান:
ইবনে হাজার আসকালানী রহ. হাদিসটি হাসান বলেছেন। -তাখরীজ মিশকাতুল মাসাবিহ খ. ৪ পৃ. ২৩৫

সুতরাং প্রমাণ হলো, নবিজি সা. নিজেও দাড়ির এক মুষ্ঠির অতিরিক্ত অংশ কেটে-ছেটে ফেলতেন।

সাহাবাদের রা. আমল:
ক. ইবনে উমর রা. এর আমল:
সহিহ বুখারীতে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা. এর আমল বর্ণিত হয়েছে,
وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ إِذَا حَجَّ أَوِ اعْتَمَرَ قَبَضَ عَلَى لِحْيَتِهِ فَمَا فَضَلَ أَخَذَهُ‏
হযরত ইবনে উমার রা. যখন হজ্ব বা ‘উমরাহ করতেন, তখন তিনি তাঁর দাড়ি মুষ্টি করে ধরতেন এবং মুষ্টির বাইরে যতটুকু বেশি থাকত, তা কেটে ফেলতেন। -সহিহ বুখারী, হাদিস: ৫৮৯২

দুই. হযরত জাবের রা. এর আমল:
হযরত কাতাদাহ রহ. বলেন,
قَالَ جَابِرٌ لَا نَأْخُذُ مِنْ طُولِهَا إلَّا فِي حَجٍّ أَوْ عُمْرَةٍ
হযরত জাবের রা. বলেছেন, (দাড়ির এক মুষ্টির পর) লম্বা অংশ হজ্ব এবং উমরার সময় ব্যতিত কাটতাম না। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা বর্ণনা: ২৫৪৭৮

অভিযোগ:
দাড়ি এক মুষ্ঠির অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলার বৈধতা প্রসংগে উক্ত বর্ণনা দু’টি পেশ করলে অনেকে বলেন, বর্ণনা দু’টো থেকে তো শুধু হজ্ব ও উমরার সময় দাড়ি কাটা জায়েয প্রমাণ হয়। অন্য সময় তো বৈধ হতে পারে না।

জবাব:
ক. তাদের জবাবে ইবনে আব্দুল বার রহি. বলেন,
وفي أخذِ ابنِ عمَرَ مِن آخِرِ لحيتِه في الحَجِّ دليلٌ على جوازِ الأخذ من اللحيةِ في غير الحَجِّ لأنَّه لو كان غيرَ جائزٍ ما جاز في الحَجِّ
ইবনে উমার রা. এর হজ্বের সময় এক মুষ্টির অতিরিক্ত দাড়ি কর্তন করা হজ্ব ব্যতিত অন্য সময়ও কাটা জায়েয হওয়ার দলীল। কারণ যদি একমুষ্টির অতিরিক্ত দাড়ি কাটা (মৌলিকভাবে) জায়েয না হতো, তাহলে হজ্বের সময়ও জায়েয হতো না। -আল-ইস্তেযকার খ. ১৩ পৃ. ১১৬

খ. ইবনে উমার রা. এর আমল:
হজ্ব ও ওমরার উল্লেখ্য ছাড়াও বর্ণিত আছে, ইবনে ওমর রা. এর গোলাম নাফে রহি বলেন,
أَنَّهُ كَانَ يَأْخُذُ مَا فَوْقَ الْقَبْضَةِ
হযরত ইবনে উমার রা. তাঁর দাড়ি এক মুষ্টির বাইরে যতটুকু বেশি থাকত, তা কেটে ফেলতেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা : বর্ণনা নং : ২৫৪৭৭

গ. আবু হুরায়রা রা. এর আমল :
আবু যুর’আহ রহি. বলেন,
كَانَ أَبُو هُرَيْرَةَ يَقْبِضُ عَلَى لِحْيَتِهِ ثُمَّ يَأْخُذُ مَا فَضَلَ عَنْ الْقَبْضَةِ
হযরত আবু হুরায়রা রা. তাঁর দাড়ি মুষ্টি করে ধরতেন এবং মুষ্টির বাইরে যতটুকু বেশি থাকত, তা কেটে ফেলতেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা : বর্ণনা নং : ২৫৪৭২ আল-ইস্তেযকার খ. ১৩ পৃ. ১১

আবু যুরাআহ রহ. বলেন,
 عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّهُ كَانَ يَأْخُذُ مِنْ لِحْيَتِهِ مَا جَاوَزَ الْقَبْضَةَ
হযরত আবু হুরায়রা রা. তাঁর দাড়ি মুষ্টি করে ধরতেন এবং মুষ্টির বাইরে যতটুকু বেশি থাকত, তা কেটে ফেলতেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা বর্ণনা: ২৫৪৭৯

ورُوي عن عبد الله بن عمر وأبي هريرة رضي الله عنهم أنَّهما كانا يأخذانِ مِن اللِّحيةِ ما فضَل عن القبضةِ
হযরত ইবনে উমার ও আবু হুরায়রা রা. তাঁরা তাঁদেে দাড়ি মুষ্টি করে ধরতেন এবং মুষ্টির বাইরে যতটুকু বেশি থাকত, তা কেটে ফেলতেন। -তানবীরুল হাওয়ালেক (সুয়ূতী রহ.) পৃ. ৬৮২

ঘ. হযরত আলী রা. এর আমল:
সিমাক বিন ইয়াযীদ হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন,
كَانَ عَلِيٌّ يَأْخُذُ مِنْ لِحْيَتِهِ مِمَّا يَلِي وَجْهَهُ
আলী রা. মুখের আশ-পাশের দাড়ি ছাঁটতেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা বর্ণনা: ২৫৪৭১ ; আল-ইস্তেযকার খ. ১৩ পৃ. ১১৬

সকল সাহাবাদের রা. আমল:
বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত ইবরাহীম নাখয়ী রহি. বলেন,
كانوا يأخذون من عوارض لحاهم
সাহাবায়ে কেরাম রা. এক মুষ্টির অতিরিক্ত দাড়ি কেটে ফেলতেন। -আল-ইস্তেযকার খ. ১৩ পৃ. ১১৬ মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা বর্ণনা: ২৫৪৮১

সকল সাহাবাদের রা. সম্মতি:
এ ব্যাপারে সাহাবাদের আমলের পাশাপাশি তাঁদের সম্মতিও পাওয়া যায়। বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত হাসান বসরী রহি. বলেন,
كَانُوا يُرَخِّصُونَ فِيمَا زَادَ عَلَى الْقَبْضَةِ مِنْ اللِّحْيَةِ أَنْ يُؤْخَذَ مِنْهَا
তাঁরা (সাহাবাগণ) মুষ্ঠির অতিরিক্ত দাড়ি কাটার অবকাশ দিতেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা বর্ণনা- ২৫৪৭৫

সুতরাং প্রমাণ হলো- সকল সাহাবায়ে কেরাম রা. এর মৌনসম্মতি ও আমল দ্বারা প্রমাণ হলো যে, দাড়ি এক মুষ্ঠির অতিরিক্ত অংশ কাটা বা ছাটা বৈধ।

তাবেয়ীদের আমল:
এক. আতা রহ. এর আমল:
وقال عطاء لا بأس ان ياخذ من لحيته الشيئ القليل من طولها وعرضها اذا كبرت
হযরত আতা রহ. বলেন, দাড়ি বড় হলে দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ থেকে কিছু অংশ কাটলে কোনো অসুবিধা নেই। -উমদাতুল কারী খ. ২২ পৃ. ৭২

দুই. ইবরাহীম নাখয়ী রহ. অভিমত:
হযরত ইবরাহীম নাখায়ী রহি. বলেন,
عجبت لرجل عاقل طويل اللحية كيف لا يأخذ من لحيته ويجعلها بين لحيتين فان التوسط في كل شيئ حسن
আমি দীর্ঘ দাড়িওয়ালা জ্ঞানী ব্যক্তিকে দেখে বিস্মিত হই যে, কেন সে তার লম্বা দাড়িকে মধ্যম বানায় না। কারণ সবকিছুতে মধ্যপন্থা ভালো। -ইহইয়াউ উলুমিদ্দিন খ. ১ পৃ. ২০৩ মিরকাত খ. ৮ পৃ. ২৮৫

হযরত আতা ইবনে আবী রবাহ্ রহি. বলেন,
كَانَ إبْرَاهِيمُ يَأْخُذُ مِنْ عَارِضِ لِحْيَتِهِ
ইবরাহীম নাখয়ী রহ. দাড়ির অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলতেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা বর্ণনা: ২৫৪৭৩ আল-ইস্তেযকার খ. ১৩ পৃ. ১১৭

তিন. হাসান বসরী রহি. ও ইবনে সিরিন রহি. এর আমল:
আবু হিলাল থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
سَأَلْت الْحَسَنَ وَابْنَ سِيرِينَ فَقَالَا لَا بَأْسَ بِهِ أَنْ تَأْخُذَ مِنْ طُولِ لِحْيَتِك
আমি হাসান বসরী ও ইবনে সিরিন রহ. কে প্রশ্ন করলাম, অত:পর তাঁরা উত্তর দিলেন, তুমি তোমার দাড়ির (একমুষ্টির অতিরিক্ত) লম্বা অংশ কাটলে কোনো অসুবিধা নেই। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা বর্ণনা: ২৫৪৮০ আল-ইস্তেযকার খ. ১৩ পৃ. ১১৭

চার. কাসেম ইবনে মুহাম্মাদ রহ. এর আমল:
হযরত আফলাহ্ রহি. বলের,
عَنْ أَفْلَحَ قَالَ كَانَ الْقَاسِمُ إذَا حَلَقَ رَأْسَهُ أَخَذَ مِنْ لِحْيَتِهِ وَشَارِبِهِ
হযরত কাসেম যখন মাথা মুণ্ডন করতেন, তখন দাড়ির (এক মুষ্টির অতিরিক্ত) অংশ এবং মোচ কাটতেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা বর্ণনা: ২৫৪৭৬

সুতরাং প্রমাণ হলো, নবিজি সা. সাহাবায়ে কেরাম রা. এর মত তাবেয়ীনদের আমল ও মতবাদও ছিলো এক মুষ্ঠির অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলার বৈধতার পক্ষে।

সকল মাযহাবের অভিমত:
পৃথিবীতে যুগ যুগ ধরে চলে আসা কোনো মাযহাবে দাড়ি এক মুষ্ঠির থেকে ছোট করার ব্যাপারে কেউ বৈধ বলেছেন এমন মত আছে বলে আমার জানা নেই। চলুন নিন্মে প্রশিদ্ধ ৪ মাযহাবসহ কয়েকটি মত তুলে ধরা যাক।

হানাফী মাযহাব:
হানাফী মাযহাবের প্রশিদ্ধ কিতাব ফাতাওয়া শামীতে এসেছে,
لا بأسَ بأخذِ أطرافِ اللِّحيةِ إذا طالت
লম্বা হলে দাড়ির পাশ ছাটতে কোনো অসুবিধা নেই। -রদ্দুল মুহতার খ. ৩ পৃ. ৩৯৭

ফাতাওয়া হিন্দিয়াতে এসেছে,
ولا بأس أن يقبض على لحيته فإن زاد على قبضته منها شيء جزه

অর্থাৎ দাড়ির একমুষ্টির অতিরিক্ত অংশ কাটলে কোনো অসুবিধা নেই। -ফাতাওয়া হিন্দিয়া খ.৫ পৃ. ৪৩৮

হাম্বলী মাযহাব:
হাম্বলী মাযহাবের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব ইমাম ইবনে হানি রহি. বলেন,
سألتُ أبا عبد الله عن الرجُلِ يأخذ من عارِضَيه قال يأخذُ مِن اللِّحيةِ ما فضلَ عن القبضة
আমি ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল রহি. কে সেই ব্যক্তি সম্পর্কে জানতে চাইলাম যে দাড়ির পাশ ছেটে ফেলে। তিনি বললেন, এক মুষ্ঠির অতিরিক্ত অংশ ছেটে ফেলবে। -মাসায়েলে ইবনে হানি খ. ২ পৃ. ১৫১-১৫২ ; বাদায়েউল ফাওয়ায়েদ খ. ৪ পৃ. ১৪৩০-১৪৩১

মালেকী মাযহাব:
ইবনে কাসিম রহি. বর্ণনা করেন যে, ইমাম মালেক রহি. বলেন,
لا بأسَ أن يؤخَذَ ما تطايرَ من اللِّحيةِ وشَذَّ
দাড়ির অতিরিক্ত অংশ কাটতে অসুবিধা নেই। -আল-ইস্তেযকার খ. ২৭ পৃ. ৬৪-৬৫ বর্ণনা: ৪০২২২

কাযী আয়ায মালেকী রহ. বলেন,
وأمَّا الأخذُ مِن طولِها وعَرضِها فحسَنٌ
দাড়ির দৈর্ঘ ও প্রস্থ থেকে কিছু কাটা ভাল। -ইকমালুল মু’লিম খ. ২ পৃ. ৬৪

ইবনে আব্দুল বার রহি. বলেন,
وفي أخذِ ابنِ عمَرَ مِن آخِرِ لحيتِه في الحَجِّ دليلٌ على جوازِ الأخذ من اللحيةِ في غير الحَجِّ لأنَّه لو كان غيرَ جائزٍ ما جاز في الحَجِّ
ইবনে উমার রা. এর হজ্বের সময় এক মুষ্টির অতিরিক্ত দাঁড়ি কর্তন করা হজ্ব ব্যতিত অন্য সময়ও কাটা জায়েয হওয়ার দলীল। কারণ যদি একমুষ্টির অতিরিক্ত দাড়ি কাটা (মৌলিকভাবে) জায়েয না হতো, তাহলে হজ্বের সময়ও জায়েয হতো না। -আল-ইস্তেযকার খ. ১৩ পৃ. ১১৬

শাফেয়ী মাযহাব:
ইমাম গাজালী শাফেয়ী রহি. বলেন,
وقد اختلفوا فيما طال منها فقيل إنْ قبَضَ الرجلُ على لحيتِه وأخذَ ما فضَلَ عن القبضةِ فلا بأس فقد فعَلَه ابن عمر وجماعةٌ من التابعين واستحسَنه الشَّعبي وابن سيرين
অবশ্য দাঁড়ি লম্বা হওয়ার বিষয়ে ফুকাহায়ে কেরাম মতানৈক্য করেছেন, কেউ কেউ বলেন, যদি দাড়ির এক মুষ্টির অতিরিক্ত অংশ কাটে তাহলে কোনো অসুবিধা নেই। কারণ এমনটা ইবনে উমার রা. এবং তাবেয়ীদের একটি জামাআত করেছেন এবং শা’বী এবং ইবনে সিরিন রহ. ভাল মনে করেন। -ইহইয়াউ উলুমিদ্দিন খ. ১ পৃ. ২০৩

ইবনে তাইমিয়া রহ. এর অভিমত:
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহি. বলেন-
ولو أخذَ ما زاد على القبضةِ لم يُكرَهْ نصَّ عليه كما تقدَّمَ عن ابن عمر
ইবনে উমার রা. এর বর্ণিত হাদিসের আলোকে যদি কেউ এক মুষ্টির বাহিরে অতিরিক্ত টুকু কাটে তাহলে মাকরুহ হবে না। -শরহুল উমদাহ খ. ১ পৃ. ২২৩

ইজমায়ে উম্মত:
এ ব্যাপারে উম্মতের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত হলো-
وأما الأخذ منها وهي دون ذلك كما يفعله بعض المغاربة مُخَنَّثة الرجال فلم يبحه أحد
পশ্চিমা সভ্যতা ও হিজড়াদের মত এক মুষ্ঠি থেকে দাড়ি ছেটে ফেলাকে কেউ বৈধতা দেননি। -রদ্দুল মুহতার, খ. ৩ পৃ. ৩৯৮ বাহরুর রায়েক খ. ২ পৃ. ৪৯০ তাবয়ীনুল হাকায়েক খ. ২ পৃ. ১৮৭

ইবনে কাসীর রহি. বলেন,
وذلك محرم بالاجماع
এ (দাড়ি কাটা বা সেভ করা) সর্বোসম্মতক্রমে হারাম। -আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ খ. ১৪ পৃ. ২৭৪

প্রিয় পাঠক, উপরোক্ত আলোচনা থেকে এ কথা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, দাড়ি এক মুষ্ঠি থেকে ছোট করা বা মুণ্ডন করা ইসলামে পরিস্কার হারাম। যা ফিকহের বিভিন্ন কিতাবে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ্য করা হয়েছে। কিন্তু অত্যান্ত দুঃখজনক বিষয় হলো, পৃথিবীর কোনো ইমাম, মুহাদ্দিস, ফকীহ, তাবেয়ী, সাহাবী এমনকি খোদ নবীজি সা. এর এ সিদ্ধান্ততকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা মওদুদী সাহেব যে ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন, তা কোনো মুসলিমের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।

Check Also

অশ্লীল এলাকায়ে যিনার শাস্তি রজমকে জুলুম বলা:

যিনার শাস্তি জুলুম: جہاں معیار اخلاق بھی اتنا پست ہو کہ ناجائز تعلقات کو کچھ …

৩ comments

  1. তাইতো বলি যে জামায়াতে ইসলামির দাড়ি কোথায়? এতো দিনে বুঝলাম এর মর্মবানী। সবই মওদুদির অনুস্মরণ।

  2. জামাত সর্বক্ষেত্রেই মওদুদীকে মান্য করে, যদিও মুখে বলে মানি না, কিন্তু বাম্তবতা হলো মওদুদী সাহেবের লিখনী দিয়ে তারা ইসলাম জানে, সুতরাং তারা মওদুদী মতাবদই জানতে পারে, ইসলাম নয়

  3. জামাত সর্বক্ষেত্রেই মওদুদীকে মান্য করে, যদিও মুখে বলে মানি না, কিন্তু বাস্তবতা হলো মওদুদী সাহেবের লিখনী দিয়ে তারা ইসলাম জানে, সুতরাং তারা মওদুদী মতাবদই জানতে পারে, ইসলাম নয়। তাপদের দাড়ি রাখার ক্ষেত্রেও মওদুদী সাহেবকে ফলো করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.