Home > Uncategorized > কিতাবুল ইলম

কিতাবুল ইলম

https:///bn/article/2707/

وحي ایمان علم
এর মুনাসাবাত:

ওহী বা ঈমান দিয়ে শুরু করার কারণ:

১. প্রথম ওয়াজীব। اول واجب
২. افضل الامور
৩. علم و عمل এর خير ও كمال এর মূল ভিত্তি।
৪. আমল কবুল হওয়ার ভিত্তি।

তাবেঈ উমর ইবনে আব্দুল আযীয রাহ. বলেন-
من عمل على غير علم كان ما يفسد أكثر مما يصلح.

অর্থাৎ যে ব্যক্তি ইলম ছাড়া আমল করবে সে  সঠিকভাবে যতটুকু করবে না করবে, বরবাদ করবে তার চেয়ে বেশি। -তারীখে তাবারী ৬/৫৭২

ইলক এর পরিচয়:

المعرفة او ضد الجهل..لغة

اصطلاحا
ادراك الشيئ علي حقيقته …
هو صفة يتجلي بها المذكور لمن قامت هي به

মোল্লা আলী কারী রহ. বলেন,

ইলম হলো, এমন এক নুর যা নবুওয়াতের আলো তথা মুহাম্মাদী কর্ম, কথন এবং অবস্থা বেষ্টিত। যা আল্লাহ তা’আলা শুধু মাত্র ঈমানদারদেরকে দান করেন। যার ফলে তার কাছে গোপন বিষয়ও স্পষ্ট হয়ে যায় এবং হিদায়াতের রাস্তা খুলে যায়।

প্রকারভেদ

মোল্লা আলী কারী রহ. বলেন, ইলম দুই প্রকার:
১. وهبي এবং كسبي

وهبي
বলা হয়, যা কোনো মধস্ততা ছাড়াই অর্জিত হয়। তাকে ইলমে লাদুনিও বলে।

كسبي
যা কোনো মধ্যস্ততার মাধ্যমে অর্জিত হয়।

وهبي
তিন প্রকারঃ
১. وحي ৩. الهامي ২. فراست

وحي ১
আবিধানিক:
পারিভাষিক: ঐ তালেবকে বলা হয় যা, আল্লাহর পক্ষ থেতে নবী-রাসুলগণের উপর নাযিল হয়।

২. ইলহাম ঐ ইলমকে বলা হয় যা, গায়েবের পর্দা উঠিয়ে কোনো ব্যক্তির অন্তরে ঢেলে দেয়া হয়। এর দলীল হলো,
قل ان ربي يقذف بالحق

৩. ফিরাসাতও এক প্রকার ইলম। যেটা বিভিন্ন নিদর্শনের দিকে তাকালে অর্জিত হয়।
দলীল: ১
ان في ذلك لايات للمتوسمين
এখানে متوسمين এর তাফসীর করা হয়েছে متفرسين

দলীল: ২

اتقوا فراسة المؤمنين فانه ينظر بنور الله

ফিরাসাত ও ইলহামের মধ্যে পার্থক্য:

এই দুটি জিনিস দিয়েই ইলম অর্জিত হয়, কিন্তু ইলহাম অর্জিত হয় কোন মাধ্যম ছাড়া, আর ফেরাসাত অর্জিত হয় কিছু আলামত বা নিদর্শন দেখে।

ওহী ও ইলহামের মধ্যে পার্থক্য:

ইলহাম ওহীর তাবে, কিন্তু ওহী ইলহামের তাবে না।

মালুমাতের দিক থেকে ইলম আবার দুই প্রকার।
১. ইলমে মুআয়মালা ২. ইলমে মুকাশাফা।

১. ইলমে মুআয়মালা :
ইলমে মুআমালার ভেতর বৈধ অবৈধ বিষয়ের আমল অন্তর্ভুক্ত।
এটা আবার দুই প্রকার :
১. ইলমে জাহের ২. ইলমে বাতেন।

ইলমে জাহের:

ইলমে জাহিরের দ্বারা উদ্দেশ্য اعمال جوارح এর ইলম। যার মধ্যে ইবাদত ছাড়াও এমন অভ্যাস যা আমল আঞ্জাম দেয়  সেটাও অন্তর্ভুক্ত।
যেমন ইবাদত অর্থাৎ নামাজ রোজা যাকাত হজ ইত্যাদীর ইলমেকে ইলমে জাহের বলে।

সুতরাং বোঝা গেল ইলমে জাহির দুই প্রকার।
এক. যেটা ইবাদতের মাধ্যমে আঞ্জাম দেওয়া হয়।
দুই. অভ্যাসের দ্বারা আঞ্জাম দেওয়া হয়।

ইলমে বাতেন:

ইলমে বাতেনের দ্বারা কলবের এলেম উদ্দেশ্য।
যেমন মানুষের বিনয় রেজা বিল কাজা,  তাওয়াক্কুল, সবর, কানাআত ইত্যাদী গ্রহন করা এবং হিংসা, অহংকার, কিনা ধোঁকাবাজি ইত্যাদি থেকে বিরত থাকা।

ইলমে বাতেনও অনুরুপ দুই প্রকার:
এক. মাহমুদ যার দ্বারা মানুষ নিজেকে প্রস্ফুটিত আলোকিত করে ২. মাযমুম। এই প্রকার এল থেকে পরিহার করা বাঞ্ছনীয়

ইলমে মুকাশাফা:

ইলমে মুকাশাফা বলা হয়, যার মাধ্যমে শুধু অর্জিত জ্ঞানটি সম্পর্কে স্পষ্ট হওয়া যায়, কিন্তু আমলের কোন সম্পৃক্ততা থাকে না।

এটা দুই প্রকার:

১. كشف تكوين ২. كشف تشريع

১. كشف تكوين  এর সংগা:
সেটা আল্লাহ তা’আলা প্রদত্ত ঈমানদারদের অন্তরে এমন নূর,  যার দ্বারা অতীত এবং ভবিষ্যতের অনেক ঘটনা সম্পর্কিত জ্ঞান অর্জিত হয়।

১. كشف تشريع এর সংগা:

আল্লাহ তায়ালা তাঁর নিজস্ব গুণাবলীর কিছু গুণ মানুষের অন্তরে প্রকাশ করেন। আর এটাই হাকিকী কাশফ।

بسم الله الرحمن الرحيم

আছলী নুসখায় প্রথম كتاب العلم পরে بسم الله الرحمن الرحيم।

ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি এখানে এলেমের সংজ্ঞা ও প্রকারভেদ ইত্যাদি বর্ণনা করেননি।

কাজী ইবনুল আরাবি বলেছেন, এর কারণ হলো-
১. যেহেতু ইলমে সংজ্ঞা একেবারেই স্পষ্ট এজন্য সংগার জরুরত প্রয়োজন হয়নি।
২. কোনো বিষয়ের হাকিকত অন্বেষণ করা এই কিতাবের উদ্দেশ্য নয়। বরং আবরীরা কোনো জিনিষের হাকিকত স্পষ্ট হলেই তার ফযিলত বর্ণনা করা শুরু করেন। সেই নিয়মের উপরেই ইমাম বুখারী কিতাবটি রচণা করেছেন।

قول الله

ইবনে হাজার আসকালানী রহ. বলেন, قول এর উপর পেশ পড়তে হবে। কারণ-
১. হয়তো كتاب এর উপর আতফ
২. للاستيناف

আল্লামা আইনি রহ. বলেন, قول টা মাজরুর হালতে পড়তে হবে। কারণ-
১. ইলের উপর আতফ
২. ফযলুল ইম না থাকলে কউল হতো

ইমাম বুখারী তারজামা প্রমাণ করতে দটি আয়াত এনেছেন।
১. ইয়ারফায়িল্লাহ…
২. ইয়া আইয়ুহাল্লাযিনা…

ইয়ারফায়িল্লাহ
১. সকল মুমিনের মধ্যে আহলে ইলম রয়েছেন খাছ বাদাত তামিম।

২. রব্বি যিদনি…
আল্লাহ কোনো জিনিষ ফযিলতপূর্ণ হলেই সেটার বৃদ্ধির জন্য দুআ করার হুকুম দেন। এজন্য শুধু ইলমের হুকুম দেননি বরং বৃদ্ধির হুকুম দিয়ে প্রমাণ করতে চান যে এটা বড়ই গুরুত্বপূর্ণ।
আর নবী সা. কে উলমুল আউয়ালীন ওয়াল আখিরিন

ইলমের দ্বারা কি ইলম উদ্দেশ্য:

১. ইলমে দ্বীন উদ্দেশ্য। কারণ  এ আয়াত জিবরাঈল আ. এনেছেন।

হুকুম কি?

১. ফরজ ইলম অর্জন করা ফরজ
২. ওয়াজীব ইলম ওয়াজীব
৩. মাসনুন ও মানদুব সুন্নাহ।
৪. কুরআন-হাদিসের গোটা ইলম ফরজে কিফায়াহ
৫. জেনারেল শিক্ষার মধ্যে যা মাখলুকের ফায়েদার জন্য দরকার এবং খেলাফে শরা না হয়।
৬. নাজায়েয অবৈধ।
দলীল:
ফাআরিয আম্মান তাওয়াল্লা
ইন্না মিনাল ইলমে জাহলা

এ তারজামায় মুসনাতান হাদিস কেন আনেননি?

এটাই প্রথম যেখানে মুসনাদান হাদিস আনেননি।

 

 

 

 

আল্লামা কিরমানী রহ. আহলে শামের ওলামায়ে কেরামের থেকে নকল করে বলেন ইমাম বুখারীর অভ্যাস অনুযায়ী তিনি প্রত্যেক বাবের অধীনে হাদিস আনলেও এখানে আনেন নি। হয়তো তার শর্ত অনুযায়ী কোন হাদিস তিনি পাননি। অথবা অন্য কোন কারণে থাকতে পারে।

হাফেজ ইবনে হাজার রহ. বলেন,
যদি ইমাম বুখারীর শর্ত অনুযায়ী যদি কোন হাদিস না থাকতো, তাহলে তিনি এই বাব কায়েম করে আয়াত এবং হাদিস আনতেন না। বরং তাঁর অভ্যাস হলো, যখন তিনি আয়াত উল্লেখ্য করেন, তখন সে আয়াতের অধীনস্ত রেওয়ায়েত ও আছারের দিকে ইঙ্গিত করেন। এবং সেটা উক্ত হাদিসের শক্তিশালী হওয়ার প্রমাণ বহন করে যদিও তার শর্ত অনুযায়ী না হয়।
২. দুটি আয়াত উল্লেখ্য করেই তিনি যথেষ্ট মনে করেছেন।

গাঙ্গুহী রহ. বলেন,
তরজমাতুল বাবের ইসবাত আগের বাবের হাদিস দিয়েই হয়ে যায়। আগেন বাবে হাদিস হলো,
اذا اسد الامر الي غير اهله الخ

এখানে বুঝানো হয়েছে যে, অযোগ্যদের কাছে দায়িত্ব অর্পন কিয়ামতের আলামত। তার অর্থ হলো বাকায়ে আলম ইলমের মধ্যে লুকায়িত। কারণ অযোগ্যতাই ইলম শুন্যতার প্রমাণ। অথবা আমল না করার মধ্যে।

শাইখুল হাদিস যাকারিয়া রহ. বলেন, দুটি কারণ:
১. ইলমের ফযিলত সংক্রান্ত এত হাদিস রয়েছে যে, দুএকটি উল্লেখ্য করলে কিছু মানুষ ভাবতো এটাই শুধু ফযিলত।
২. আগের বাবের হাদিস এনেছেন ওটাই যথেষ্ট।

শাইখুল হিন্দ রহ. বলেন,
ইমাম বুখারী রহ. মুসনাদ হাদিস উল্লেখ্য না করা তরজমাতুল বাব প্রায় ১০০ এর উপরে আছে। এগুলোকে تراجم مجردة বলে। এটা তিন প্রকার:

১. যেখানে শুধু আয়াত আছে, এবং হাদিসে মুআল্লাক অথবা আছার আছে। এটাকে تراجم مجردة غير محضة বলে। এমন تراجم ৮২ টার মত আছে।

২. যেখানে আয়াতকেই তরজমা বানিয়েছেন। কোনো হাদিস বা আছার আনেননি। এটাকে تراجم مجردة محضة صورية বলে।  এমন তরজমা ১৪ টা আছে।

এখানে صورية বলার কারণ হলো, ছুরাতান দলীল থেকে খালি হলেও বাস্তবে খালি নয়।

৩. শুধু নিজের কওলকেই তরজমা বানিয়েছেন। কোনো আয়াত,হাদিস, আছার আনেননি। এমন تراجم কে تراجم مجردة حقيقية বলে। এমন তরজমা ৯ টা আছে।

প্রথম দুটোর মধ্যে দলীল আনার দরকার নেই। কারণ-
১. প্রথমটার মধ্যে তরজমার পরপরই আয়াত, হাদিসে মুআল্লাক এবং আছার আছে।
২. দ্বিতীয়টার মধ্যে তো আয়াতটাই দলীল।

প্রশ্ন: তাহলে কেন তিনি তাঁর অভ্যাস বহির্ভূত মুসনাদে হাদিস আনেননি?

ক. তাঁর শর্ত মুয়াফিক হয়নি।
খ. আগে পিছে কোনো হাদিস থাকবে। তাকরার থেকে বাঁচতে আনেননি।
গ. تشحيذ اذهان ছাত্রদের গভীর মুতালাআর জন্য ডুবিয়ে দেয়া মাকসাদ।

৩. তাঁর কাছে থাকা কোনো হাদিস থেকেই তিনি মে তরজমাটি বের করেছেন। যে হাদিসটি আগে পিছে অবশ্যই রয়েছে। এজন্য মুসনাদ হাদিস আনেননা।

সুতরাং
১. এ তরজমায় তো দুটি আয়াত আছেই। তরজমা প্রমাণে এটাই যথেষ্ট।
২. সামনে অসংখ্য মুসনাদ হাদিস আছে, ইলমের ফযিলত প্রমাণের মেগুলোই যথেষ্ট।

Check Also

বছরের মধ্যে শ্রেষ্ঠ মাস হলো রমজান, شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِيَ أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ সুরা বাকারা আয়াতত: …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.