Home > হিজবুত তাওহীদ > ইসলাম শান্তি দিতে পারবে না:

ইসলাম শান্তি দিতে পারবে না:

 

প্রিয় পাঠক! আমরা জানি বর্তমান পৃথিবীকে শান্তিময় করার জন্য ইসলামের বিকল্প নেই। ইসলামতন্ত্র ব্যতিরেকে মানবরচিত কোনো তন্ত্রমন্ত্র দিয়ে অশান্ত এ পৃথিবীকে শান্তিময় করা সম্ভব নয়। জাহিলি যুগের বর্বরতা ও অন্ধকার ঘুচিয়ে সোনালী সমাজ গঠণে ইসলামের ভুমিকাই ছিল প্রধান। সেই অবিকৃত দ্বীন ইসলাম সর্বত্র পালন করলে আজও শান্তি আসতে বাধ্য। কিন্তু এ মহাসত্যকে সরাসরি অস্বীকার করেছে হেযবুত তওহীদ।

হেযবুত তওহীদের দাবি:

১. প্রচলিত ইসলাম শান্তি দিতে পারবে না।

সুতরাং তাদের কাছে যে এসলাম আছে সেটা দিয়ে অমন শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠা করার চিন্তাও হাস্যকর।”
আসুন সিস্টেমটাকেই পাল্টাই-১৮

“বর্তমানে তওহীদবিহীন যে ইসলাম দুনিয়াতে চোলছে আমরা সেই বিকৃত বিপরীতমুখী এসলামের কথা বলোছি না। এই এসলাম মানবজাতিকে শান্তি দিতে পারে নাই।”
সূত্র: মহাসত্যের আহ্বান (ছোট) পৃ:১৪

”এখানেই ঘটল বিপত্তি। তারা জানল না তাদের সামনে যে ইসলামটি আছে সেটা আর প্রকৃত রুপে নেই, সেটা বহু আগেই বিকৃত ও বিপরীতমুখী হয়ে গেছে,সেটা দিয়ে আর শান্তি আসবে না।”
সূত্র: চলমান সংকট নিরসনে আদর্শিক লড়াই পৃ:৬

২. প্রচলিত ইসলাম একটি নরকীয় সিস্টেম:

”আসুন, আমরা সবাই মিলে এই (ইসলাম নামক) নারকীয় সিস্টেমটাকে পাল্টাই।”
আসুন সিস্টেমটাকেই পাল্টাই-২০

৩. প্রচলিত ইসলাম সমাজে শান্তি দেবে না বরং প্রতারিত করবে:

”মানুষ এখন জীবন রক্ষার আশায় ধর্মের দিকেই যেতে চাইবে,কেননা তাদের বস্তুত শান্তি দরকার।কিন্তু মরিচিকা যেমন তৃষিতকে তৃপ্ত করতে পারে না,আরো ক্লিষ্ট করে তেমনি ১৩০০ বছর ধরে বহুভাবে বিকৃত হওয়া ইসলাম ও অন্যান্য ধর্মগুলোও মানুষকে কেবল সুখস্বপ্নে বিভোর করে প্রতারিত করে এবং করবে।”
সূত্র: চলমান সংকট নিরসনে আদর্শিক লড়াই পৃ:৫

ইসলাম কি বলে?

এক.
হেযবুত তওহীদের দাবী হলো, ইসলাম যেহেতু বিকৃত হয়ে গেছে, সেহেতু এ ধর্ম দিয়ে আর শান্তি আসবে না। ইতিপূর্বে আপনাদের সামনে হেযবুুুত তওহীদের বই থেকেই প্রমাণ  করেছি যে, এ ইসলাম আজও বিকৃত হয়নি। সুতরাং ইসলাম যেহেতু বিকৃত হয়নি, সেহেতু এ ইসলাম যদি পূর্ণাঙ্গভাবে মানা হয়, তাহলে অবশ্যই শান্তি আসবে। এ কথার অস্বীকার করা কুুুুফরী।

দুই.
মহান আল্লাহ বলেন,

یٰۤاَهْلَ الْكِتٰبِ قَدْ جَآءَكُمْ رَسُوْلُنَا یُبَیِّنُ لَكُمْ كَثِیْرًا مِّمَّا كُنْتُمْ تُخْفُوْنَ مِنَ الْكِتٰبِ وَ یَعْفُوْا عَنْ كَثِیْرٍ قَدْ جَآءَكُمْ مِّنَ اللهِ نُوْرٌ وَّ كِتٰبٌ مُّبِیْنٌ یَّهْدِیْ بِهِ اللهُ مَنِ اتَّبَعَ رِضْوَانَهٗ سُبُلَ السَّلٰمِ وَ یُخْرِجُهُمْ مِّنَ الظُّلُمٰتِ اِلَی النُّوْرِ بِاِذْنِهٖ وَ یَهْدِیْهِمْ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسْتَقِیْمٍ

অর্থ: হে আহলে কিতবাগণ! তোমাদের কাছে আল্লাহর নিকট থেকে এসেছে এক জ্যোতি ও স্পষ্ট কিতাব। যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি পেতে চায় এ দ্বারা তিনি তাদের শান্তির পথে পরিচালিত করেন এবং অন্ধকারসমূহ থেকে আলোর দিকে বের করে আনেন নিজ ইচ্ছায়। আর তাদের পথ দেখান সরল পথ।
সূরা মায়েদা আয়াত-১৫-১৬

উক্ত আয়াতে ইসলামের সংবিধান কুরআনকে শান্তির মাধ্যম হিসাবে উল্লেখ্য করা হয়েছে। সুতরাং কুরআনের ধর্ম ইসলামকে অশান্তি বা নারকীয় সিস্টেম বলা নি:সন্দেহে কুফরী।

তিন.
যারা ইসলামের বিধান মানবে না, তাদের ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন,

فَمَن يُرِدِ اللّهُ أَن يَهْدِيَهُ يَشْرَحْ صَدْرَهُ لِلإِسْلاَمِ وَمَن يُرِدْ أَن يُضِلَّهُ يَجْعَلْ صَدْرَهُ ضَيِّقًا حَرَجًا كَأَنَّمَا يَصَّعَّدُ فِي السَّمَاء كَذَلِكَ يَجْعَلُ اللّهُ الرِّجْسَ عَلَى الَّذِينَ لاَ يُؤْمِنُونَ

অর্থঃ অতঃপর আল্লাহ যাকে পথ-প্রদর্শন করতে চান, তার বক্ষকে ইসলামের জন্যে উম্মুক্ত করে দেন এবং যাকে বিপথগামী করতে চান, তার বক্ষকে সংকীর্ণ অত্যধিক সংকীর্ণ করে দেন-যেন সে সবেগে আকাশে আরোহণ করছে। এমনি ভাবে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে না। আল্লাহ তাদের উপর আযাব বর্ষন করেন।
সুরা আন’য়াম আয়াত-১২৫

উক্ত আয়াতে কাফেরদের জন্য অশান্ত জিবনের কথা বলা হয়েছে। সুতরাং ইসলাম অশান্তির ধর্ম আখ্যায়িত করা কুফরী।

চার.

প্রচলিত ইসলাম ধর্ম যে আজও শান্তি দিতে সক্ষম এ কথা শুধু আমার নয়।বরং খোদ হেযবুত তওহীদেরই।
তারা বিভিন্ন সময় ভিন্নমতাবলম্বীদের দালালাী করতে গিয়ে একটি কথা বলে থাকেন,
“আল্লাহর নাজেলকৃত ধর্মগ্রন্থগুলো এখনো মানুষের কাছে আছে যেগুলো স্রষ্টার অস্তিত্বের স্বাক্ষর বহন করছে। মানুষ সেগুলো ভক্তির সঙ্গে পড়ছে, জানছে, বিচার-বিশ্লেষণ করছে। সেগুলোর মধ্যে সত্য খুঁজে পাচ্ছে, যা তাদের হৃদয়কে প্রশান্তিতে ভরে তুলছে তাদের আত্মার গভীরে প্রভাব ফেলছে।”
সূত্র: আক্রান্ত দেশ আক্রান্ত ইসলাম পৃ:১৯

উক্ত কথায় তারা সুস্পষ্টভাবে দাবি করলেন যে, আল্লাহর নাযিলকৃত ধর্মগ্রন্থ গুলো আজও অনুসরণকারীদের অন্তর শান্তিতে ভরে তুলছে। তারা সব ধর্মকে যদিও এখানে টেনে এনেছেন, কিন্তু অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ বিকৃত হয়েছে বলে তারাই দাবি করে লিখেছেন,
“পূর্ববর্তী কেতাবগুলো ধর্মব্যবসায়ীদের দ্বারা বিকৃত হয়ে গিয়েছিল।”
সূত্র: ইসলাম কেন আবেদন হারাচ্ছে পৃষ্ঠা-৬

কিন্তু ইসলাম ধর্মের মূলগ্রন্থ কুরআন সম্পর্কে তারা লিখেছেন,
“শুধুমাত্র পবিত্র কোর’আনকে বিকৃত করতে পারেনি।”
সূত্র: জঙ্গিবাদ সংকট সমাধানের উপায় পৃষ্ঠা-৫৩।

সুতরাং যেহেতু আল্লাহর নাযিলকৃত কিতাব মানুষকে আজও শান্তি দিচ্ছে বলে তাদের দাবি। আর আল্লাহর নাযিলকৃত কিতাব সমূহের মধ্যে একমাত্র কুরআনই যেহেতু অবিকৃত রয়েছে, সুতরাং এ কুরআনের অনুসরণকারী মুসলিমদেরকে ইসলাম অবশ্যই শান্তি দিতে সক্ষম। এটা তাদের দাবিতেই প্রমাণ হলো। এরপরও যদি কেউ অস্বীকার করে তাহলে তাদের সম্পর্কে মহান রবের ঘোষণা,

أَفَمَن شَرَحَ اللَّهُ صَدْرَهُ لِلْإِسْلَامِ فَهُوَ عَلَى نُورٍ مِّن رَّبِّهِ فَوَيْلٌ لِّلْقَاسِيَةِ قُلُوبُهُم مِّن ذِكْرِ اللَّهِ أُوْلَئِكَ فِي ضَلَالٍ مُبِينٍ

অর্থ: আল্লাহ যার বক্ষ ইসলামের জন্যে উম্মুক্ত করে দিয়েছেন, অতঃপর সে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে আগত আলোর মাঝে রয়েছে। (সে কি তার সমান, যে এরূপ নয়) যাদের অন্তর আল্লাহ স্মরণের ব্যাপারে কঠোর, তাদের জন্যে দূর্ভোগ। তারা সুস্পষ্ঠ গোমরাহীতে রয়েছে।
সুরা যুমার আয়াত-২২

পাঁচ.

উপরন্তু মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন,

الَّذِينَ آمَنُواْ وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ اللّهِ أَلاَ بِذِكْرِ اللّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ الَّذِينَ آمَنُواْ وَعَمِلُواْ الصَّالِحَاتِ طُوبَى لَهُمْ وَحُسْنُ مَآبٍ

অর্থ: যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর যিকির (আল্লাহর বিধানের অনুসরন) দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তর সমূহ শান্তি পায়। যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে, তাদের জন্যে রয়েছে সুসংবাদ এবং মনোরম প্রত্যাবর্তণস্থল।
সুরা রা’দ আয়াত: ২৮-২৯

ছয়.

উপরন্তু যারা আল্লাহর বিধান মানবে না, তাদের ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন,

وَمَنْ أَعْرَضَ عَن ذِكْرِي فَإِنَّ لَهُ مَعِيشَةً ضَنكًا

অর্থ: এবং যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবিকা সংকীর্ণ হবে। সুরা ত্বহা আয়াত: ১২৪

সুৎরাং অবিকৃত ইসলাম পূর্বেও যেমন সর্বত্র শান্তি দিয়েছে, এখনও দিতে পারবে। কিন্তু এ মহাসত্যকে অস্বীকার করছে হেযবুত তওহীদ। যা প্রকাশ্য কুফরী।

Check Also

নবী-রাসুলগণ কি ব্যর্থ ছিলেন?

সকল নবীগণ আল্লাহর দেওয়া দায়িত্ব স্বীয় স্থানে পূর্ণভাবে পালন করেছেন। কেউ তাঁদের দায়িত্বে কোনো ত্রুটি …

One comment

  1. হিযবুত তাওহীদ নামক দলটি একেবারে ফালতু একটি দল। এটিকে দমানো কি সম্ভব নয়?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.